মঙ্গলে ধুলোর ঝড়,বিপদে ‘অপরচুনিটি’

সৌরশক্তিতে চলে অপরচুনিটি। ধুলোঝড়ে ঢেকে গিয়েছে আকাশ। মঙ্গলযানের সোলার প্যানেলে সূর্যের আলো পৌঁচ্ছছে না। ফলে নিস্তেজ হয়ে পড়েছে যান। দুর্যোগ কাটতে সপ্তাহ, এমনকি মাসও ঘুরে যাবে। আপাতত ঘোর অন্ধকারে মাঝপথে আটকে রয়েছে নাসার যান।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৮ ০৩:০২
Share:

নাসার মঙ্গলযান ‘অপরচুনিটি’। ছবি: এপি।

ধুলোঝড়ে ঢেকে গিয়েছে লালগ্রহ। বিপদে নাসার মঙ্গলযান ‘অপরচুনিটি’। অমঙ্গলজনক কিছু না হয়ে যায়, চিন্তায় বিজ্ঞানীরা।

Advertisement

গত ১৫ বছর ধরে লালগ্রহে নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে অপরচুনিটি। তার ঘুরে দেখা হয়ে গিয়েছে গ্রহের এক-চতুর্থাংশ। বিজ্ঞানীদের আশা, আরও বেশ কিছু দিন কাজ চালিয়ে যেতে পারবে সে। কিন্তু ঝড় কবে থামবে, কবে সূর্যের আলো গ্রহের মাটি ছোঁবে, অপরচুনিটির ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে তার উপর। কারণ, সৌরশক্তিতে চলে অপরচুনিটি। ধুলোঝড়ে ঢেকে গিয়েছে আকাশ। মঙ্গলযানের সোলার প্যানেলে সূর্যের আলো পৌঁচ্ছছে না। ফলে নিস্তেজ হয়ে পড়েছে যান। দুর্যোগ কাটতে সপ্তাহ, এমনকি মাসও ঘুরে যাবে। আপাতত ঘোর অন্ধকারে মাঝপথে আটকে রয়েছে নাসার যান।

সেই মে মাসের শেষে ঝড় শুরু হয়েছে। অপরচুনিটির প্রজেক্ট ম্যানেজার জন ক্যালাস বলেন, ‘‘আমাদের হাতে কিছুই নেই। ভয়াবহ ঝড়। কত দিনে থামবে, জানা নেই। মঙ্গলের আকাশ যখন পরিষ্কার হবে, তখনও পরিস্থিতি কেমন থাকবে, জানা নেই।’’ গত মঙ্গলবার গভীর রাতে নাসার বিশেষজ্ঞেরা অপরচুনিটির সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কোনও সাড়া মেলেনি।

Advertisement

২০০৩ সালে জোড়া মঙ্গলযান পাঠিয়েছিল নাসা— ‘অপরচুনিটি’ ও ‘স্পিরিট’। ২০০৪ সালের মঙ্গলের মাটিতে নামে যান দু’টি। স্পিরিট বেশি দিন কাজ করতে পারেনি। অপরচুনিটি এখনও তার কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। নাসার আর এক যান ‘কিউরিওসিটি’ও মঙ্গলে রয়েছে। কিন্তু তাকে নিয়ে অতটা চিন্তায় নেই বিজ্ঞানীরা। প্রথমত তার বয়স কম, দ্বিতীয়ত গ্রহের অন্য প্রান্ত রয়েছে সে।

মঙ্গলযানের সোলার প্যানেলে সূর্যের আলো পৌঁচ্ছছে না।আপাতত ঘোর অন্ধকারে মাঝপথে আটকে রয়েছে নাসার যান। ছবি: এএফপি।

ধুলোঝড় মঙ্গলে নতুন নয়। মাঝেমধ্যেই হয়। যখন হয়, বায়ুমণ্ডলের দশ-বিশ কিলোমিটার ধুলোর আস্তরণে ঢেকে যায়। দিনের বেলায় অন্ধকার নেমে আসে। মঙ্গলের কক্ষপথে ঘুরতে থাকা যানগুলির তাই বিপদ কম নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধুলোয় হয়তো চাপা পড়ে যাবে না যান। চাকাও হয়তো আটকে যাবে না। মূল চিন্তা, ওর কিছু বিশেষ যন্ত্রাংশ নিয়ে। তা ছাড়া মঙ্গলযানের ব্যাটারির ক্ষমতাও কমে এসেছে। একটিমাত্র ঘড়ি কাজ করছে। সেটা অফলাইন হয়ে গেলে, সময়ের হিসেব গুলিয়ে ফেলবে সে। পৃথিবীতে আর খবর পাঠাতে পারবে না অপরচুনিটি।

তবে এই প্রথম নয়। ২০০৭ সালেও এক ভয়াবহ ধুলোঝড়ের মুখে পড়েছিল অপরচুনিটি। বেশ কিছু দিন কাজ করতে পারেনি। কিন্তু এ বার মঙ্গলযানে সঞ্চিত শক্তি (চার্জ) খুবই কম। সেটাই আশঙ্কার অন্যতম কারণ। নাসার ‘মার্স এক্সপ্লোরেশন প্রোগ্রাম’-এর ডিরেক্টর জিম ওয়াটজিন বলেন, ‘‘মনে রাখবেন, আমরা যে যানটির কথা বলছি, সেটার ১৫ বছর হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বানানো হয়েছিল মাত্র ৯০ দিনের জন্য!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement