জেনে নিন নেট নিউট্রালিটির সঙ্গে ফেসবুকের বিরোধের কারণ

ফেসবুকের ফ্রি বেসিকের বিরুদ্ধে ফের নেট নিউট্রালিটি ভঙ্গ করার অভিযোগ উঠেছে। জুকারবার্গ আসলে ফ্রি বেসিকের নামে নিয়ে আসছেন সেই ইন্টারনেট ডট অর্গকেই। টেক স্যাভিদের, মতে এই ফ্রি বেসিক বা এয়ারটেল জিরোর মত পরিষেবাগুলো আসলে ধ্বংস করছে নেট নিউট্রালিটির প্রাথমিক শর্তগুলোই।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৫ ১৫:৫৩
Share:

ফেসবুকের ফ্রি বেসিকের বিরুদ্ধে ফের নেট নিউট্রালিটি ভঙ্গ করার অভিযোগ উঠেছে। জুকারবার্গ আসলে ফ্রি বেসিকের নামে নিয়ে আসছেন সেই ইন্টারনেট ডট অর্গকেই। টেক স্যাভিদের, মতে এই ফ্রি বেসিক বা এয়ারটেল জিরোর মত পরিষেবাগুলো আসলে ধ্বংস করছে নেট নিউট্রালিটির প্রাথমিক শর্তগুলোই।

Advertisement

এ বার একটু বুঝে নেওয়া যাক নেট নিউট্রালিটি কাকে বলে। ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারদের ইন্টারনেটের সমস্ত ট্রাফিককে একই ভাবে সুবিধাপ্রদান করতে হবে। নেট নিউট্রালিটির মূল বক্তব্য এটাই। ইন্টারনেট পরিষেবার জন্মলগ্নে কিন্তু এই নিয়মই চালু ছিল।

তাহলে সমস্যাটা ঠিক কোথায়?

Advertisement

ইন্টারনেট ডট অর্গের স্বপক্ষে ঢাক পিটিয়ে জুকারবার্গ আগেই কিন্তু বেশ কয়েক কলম ধরেছেন। তাঁর দাবি ছিল এর মাধ্যমে তাঁরা কমিয়ে দেবেন ইন্টারনেট পরিষেবার খরচ। মানুষের মধ্যে বাড়িয়ে তুলবেন ইন্টারনেটের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জ্ঞান।

বিশেষজ্ঞদের দাবি, ভূতটা আসলে সর্ষের মধ্যেই লুকিয়ে আছে।

আসা যাক, অন্য এক প্রশ্নে। ধরুন আপনার ইচ্ছা হল বিপণীতে যাবেন কেনাকাটা করতে। দু’টি রাস্তা আছে। একটি রাস্তা যায় বহুমূল্য বিপণীর দিকে। অন্যটি অনেক কম খরচের অনান্য দোকানপাটের দিকে। আপনাকে বলা হল, দামি বিপণীতে যেতে আপনার খরচ হবে ১০টাকা, আর কম দামিগুলোতে পৌঁছতে ১২টাকা। খরচ কম হওয়ার আনন্দে আপনি পথ ধরলেন দামি বিপণীর। অবহেলা করলেন কম দামি দোকানগুলির। কী হল ফলাফল? কম খরচে পৌঁছলেন বটে দামী বিপণীতে, কিন্তু ভিতরে ঢুকে গচ্চা গেল অনেক অনেক বেশি টাকা। অন্য দিকে, পথের খরচ বাঁচাতে আপনি যে দোকানগুলি অবহেলা করলেন, খদ্দেরের অভাবে শেষ পর্যন্ত বন্ধই হয়ে গেল সে গুলি। কর্মহীন হলেন বহু মানুষ। ধরে নিলাম তাতেও আপনার 'বয়েই গেল।' কিন্তু ওই দোকান গুলো বন্ধ হওয়ায় তৈরি হল বড় বিপণীর মনোপলি। এ বার ইচ্ছামত তারা দাম বাড়াতে শুরু করল। আপনিও নিরুপায়। সেখানে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই। অতএব, দিনের শেষে ঠকলো কে?

ঠিক এই কায়দাটাই বেছেছে ফ্রি বেসিস বা এয়ারটেল জিরো। ধরুন আপনি এক্স সার্ভিস নিলেন। যারা বাছাই করা কিছু নির্দিষ্ট সাইটের অ্যাক্সেস বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে দিচ্ছে। এবার এই তালিকার বাইরে অন্যকোনও সাইটের খোঁজ করলেই কেটে নিচ্ছে একগাদা টাকা। সেই ভয়ে আপনি যতই দরকার হোক না কেন, পারত পক্ষে আর সেই সাইটগুলোর পথ মাড়াবেন না। অব্যবহারের ফলে হয়ত একদিন উঠেই যাবে সেই সাইট। আপনার প্রয়োজন, জানার ইচ্ছার জগতটা সঙ্কুচিত হয়ে যাবে। আপনি ধীরে ধীরে নির্ভরশীল হয়ে উঠবেন নির্দিষ্ট কিছু সার্ভিস প্রোভাইডারের উপর। তারা যতটুকু চাইবে, যা যা চাইবে সব কিছু ঠিক করে দেবে তারাই। তৈরি হবে মনোপলি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement