পিএসএলভি-র পঞ্চাশতম উৎক্ষেপণ। বুধবার শ্রীহরিকোটার সতীশ ধবন মহাকাশ কেন্দ্র থেকে দেশের সবচেয়ে আধুনিক নজরদারি কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে পাঠাল ইসরো। ছবি: পিটিআই।
ন’টি বিদেশি বাণিজ্যিক উপগ্রহকে সঙ্গে নিয়ে আজ মহাকাশে সফল ভাবে পাড়ি দিল ভারতের সব চেয়ে আধুনিক নজরদারি স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ ‘রিস্যাট-২বিআর১’। আজই ‘হাফ সেঞ্চুরি’ করল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো-র পিএসএলভি রকেটও। বুধবার দুপুরে ৫০তম উৎক্ষেপণ হল তার। পিএসএলভি-সি৪৮ রকেটে চেপে রওনা দিল কৃত্রিম উপগ্রহগুলি।
আজ শ্রীহরিকোটার আকাশ পরিষ্কারই ছিল। দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ রাজকীয় ভঙ্গিতে রওনা দেয় ৪৪.৪ মিটার লম্বা পিএসএলভি-সি৪৮। তার পর ১৬ মিনিটের সফর। ওর মধ্যেই সে পৃথিবীর মাটি থেকে ৫৭৬ কিলোমিটার উপরে কক্ষপথে পৌঁছে দেয় ‘রিস্যাট-২বিআর১’কে। আগামী পাঁচ বছর পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে গ্রহের উপরে নজরদারি চালাবে সে। দেশের কৃত্রিম উপগ্রহটিকে কক্ষপথে পাঠানোর পরে বিদেশি উপগ্রহগুলিকে একে একে কক্ষপথে পাঠানো হয়। ২১ মিনিটের মাথায় শেষ হয় পরো ‘মিশন’।
৬২৮ কেজির ‘রিস্যাট-২বিআর১’ প্রতিরক্ষা-সহ আর বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহায্য করবে। বিশেষ করে কৃষি দফতর, বন দফতর, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে সাহায্য করবে কৃত্রিম উপগ্রহটি। তবে এর সব চেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হল— ৩৫ সেন্টিমিটার ব্যবধানে থাকা দু’টি বস্তুকেও আলাদা আলাদা করে চিহ্নিত করতে সক্ষম এটি। সেনাবাহিনীর একটি সূত্রের দাবি, এ বছর ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানের বালাকোটে জঙ্গি শিবিরে হামলার সময়ে যদি ভারতের হাতে এই কৃত্রিম উপগ্রহটি থাকত, তা হলে হামলা প্রমাণে বিদেশি রাষ্ট্রের পাঠানো উপগ্রহ-চিত্রের উপরে নির্ভর করতে হত না (উপগ্রহ-চিত্রগুলি অবশ্য প্রকাশ করা হয়নি)।
ইসরোর রিস্যাট-২বিআর১ ছাড়া অন্য কৃত্রিম উপগ্রহগুলির মধ্যে ছ’টি আমেরিকার, বাকি তিনটি ইটালি, জাপান ও ইজ়রায়েলের। এ বছর ‘চন্দ্রযান ২’-সহ মোট ছ’টি উৎক্ষেপণ করল ইসরো।
পিএসএলভি-ও তার ‘ট্র্যাক রেকর্ড’ অক্ষুণ্ণ রাখল আজ। ৫০টি উৎক্ষেপণের মধ্যে ৪৮ বারই সফল হয়েছে দেশীয় রকেটটি। ১৯৯৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এ পর্যন্ত ৩১০টি বিদেশি কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে পাঠাল সে।
এ দিনের উৎক্ষেপণ-অভিয়ানে যুক্ত বিজ্ঞানীদলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ইসরোর চেয়ারম্যান কে শিবন। মিশন কন্ট্রোল সেন্টার থেকে বলেন, ‘‘আজকের অভিযান ইতিহাস গড়েছে... আমি ভীষণ খুশি আজ।। পিএসএলভি ৫০তম উৎক্ষেপণ করল ও ভারতের রিস্যাট-২বিআর১ সফল হল।’’ আরও জানান, রিস্যাট-২বিআর১ খুবই ‘জটিল’ উপগ্রহ, কিন্তু খুব কম সময়ে তৈরি করা হয়েছে। এর জন্য অভিযানের সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানীদেরই সব কৃতিত্ব দিয়েছেন তিনি।