মানুষ নেওয়ার মতো রকেটের পরীক্ষায় ইসরো

বস্তুত, মঙ্গল অভিযানের সাফল্যের পর থেকেই মহাকাশে মানুষ পাঠানোর পরিকল্পনা চলছে মহাকাশ গবেষণা দফতরের অন্দরে। এই পরিস্থিতিতে ‘জিএসএলভি মার্ক থ্রি’ যে আগামী দিনে মানব বহনের ভার পেতে পারে, তার ইঙ্গিত দিয়েছেন ইসরোর চেয়ারম্যান এ এস কিরণকুমারও।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৭ ০৫:১২
Share:

চাঁদে-মঙ্গলে যান পাঠানোর সাফল্য তাদের ঝুলিতে। আর এক ধাপ এগিয়ে ইসরো এ বার মহাকাশে মানুষ নিয়ে যাওয়ার মতো রকেট বানাচ্ছে। কিছু দিনের মধ্যেই পরীক্ষা হবে সেই রকেটের। কিন্তু এর প্রস্তুতি পর্বের গোড়া থেকেই একটি প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে শ্রীহরিকোটার সতীশ ধবন মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের অন্দরে। তা হল, প্রথম পরীক্ষার গেরো কাটবে তো এ বার!

Advertisement

আর ক’দিন পরেই পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ হবে ‘জিএসএলভি-মার্ক থ্রি’ রকেটের। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো-র ইতিহাসে যা সব থেকে বড় রকেট। যার সাফল্যে লুকিয়ে রয়েছে আগামী দিনে ভারতের মাটি থেকে ভারতীয়দের মহাকাশে পাড়ি দেওয়ার চাবিকাঠি। ইসরো জানাচ্ছে, ‘জিএসএলভি মার্ক থ্রি’ ভারতের তৈরি সব থেকে শক্তিশালী রকেটে। লম্বায় ৪৩ মিটার। ওজনে ৬৪০ টন। অর্থাৎ শ’দুয়েক পূর্ণবয়স্ক হাতির ওজনের সমান। প্রায় ৮ টন ওজনের কৃত্রিম উপগ্রহকে কক্ষপথে পৌঁছে দিতে পারবে এটি। মহাকাশচারীদের গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া তো এর কাছে নস্যি!

বস্তুত, মঙ্গল অভিযানের সাফল্যের পর থেকেই মহাকাশে মানুষ পাঠানোর পরিকল্পনা চলছে মহাকাশ গবেষণা দফতরের অন্দরে। এই পরিস্থিতিতে ‘জিএসএলভি মার্ক থ্রি’ যে আগামী দিনে মানব বহনের ভার পেতে পারে, তার ইঙ্গিত দিয়েছেন ইসরোর চেয়ারম্যান এ এস কিরণকুমারও। তাঁর কথায়, ‘‘জিএসএলভি মার্ক থ্রি আগামী দিনে মানুষের বাহন হতেই পারে।’’

Advertisement

আশঙ্কাটা তবে কী নিয়ে?

ইসরোর ইতিহাসে সব থেকে সফল রকেট পিএসএলভি এবং পরবর্তী কালে জিএসএলভি—দু’টোই পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণে মুখ থুবড়ে পড়েছিল। ১৯৯৩ সালে প্রথম পরীক্ষায় ফেল করলেও পরে অবশ্য ৩৮টি অভিযানে সফল হয়েছে পিএসএলভি। তার মধ্যে রয়েছে ইসরোর সব থেকে বড় সাফল্য মঙ্গল অভিযানও। ২০০১ সালে ‘জিএসএলভি মার্ক-১’ রকেটও পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণে ব্যর্থ হয়েছিল। কিন্তু পরে ১১ বার সফল ভাবে কাজ শেষ করেছে সে।

এ বারেও তাই উৎকণ্ঠা রয়েছে জিএসএলভি মার্ক থ্রি-র প্রথম পরীক্ষা নিয়ে। কিরণকুমার বলছেন, ‘‘পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ যাতে সফল হয় তার জন্য সব রকম চেষ্টা চলছে।’’

ইসরো সূত্রের খবর, এই নতুন রকেট তৈরি করতে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা খরচ পড়বে। কিন্তু এই রকেট ব্যবহার করলে দেশের বহু টাকা বাঁচবে। তার উদাহরণ, আজই ৪ টনের একটি টেলি-যোগাযোগ উপগ্রহকে পাঠিয়েছে ভারত। এত ভারী উপগ্রহের দেশি বাহন না থাকায় সেটিকে দক্ষিণ আমেরিকার কুরু থেকে ফ্রান্সের ‘অ্যারিয়ানে-৫’ রকেটে চাপিয়ে পাঠাতে হয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ‘জিএসএলভি মার্ক ৩’-র জমানা শুরু হলে ভারী রকেট পাঠাতে আর আর বিদেশের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না। বাঁচবে বিদেশি মুদ্রা। মহাকাশ বাণিজ্যেও ভিত আরও চওড়া হবে ভারতের।

আপাতত প্রশ্ন শুধু একটাই, দৈত্যাকার ‘জিএসএলভি-মার্ক থ্রি’ পারবে তো এক লাফেই উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে পাড়ি জমাতে?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement