চাঁদের মাটিতে তৃতীয় চন্দ্রযানের ল্যান্ডার বিক্রম। ছবি: ইসরো।
চাঁদে ১৪ দিনের কাজ নিয়ে গিয়েছিল চন্দ্রযান-৩। কিন্তু সময়ের আগেই কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। ইসরোর রোভার প্রজ্ঞান তাই বিশ্রাম নিচ্ছে। বিজ্ঞানীরা রোভারটিকে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছেন। সময়মতো তাকে আবার জাগিয়ে তোলা যাবে কি না, সেটাই এখন প্রশ্ন।
শনিবার রাতে ইসরো একটি টুইট করে জানিয়েছে, প্রজ্ঞান রোভার তার কাজ সম্পন্ন করেছে। যে যে কাজের দায়িত্ব দিয়ে তাকে চাঁদে পাঠানো হয়েছিল, তা হয়ে গিয়েছে। এ বার একটি নিরাপদ স্থানে রোভারটিকে পাঠিয়ে ‘স্লিপ মোড’ চালু করে দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। অর্থাৎ, নিরাপদ স্থানে গুটিসুটি মেরে ‘ঘুমোচ্ছে’ প্রজ্ঞান।
ইসরো আরও জানিয়েছে, রোভারের সঙ্গে যে এপিএক্সএস এবং এলআইবিএস পেলোড ছিল, সেগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই পেলোড থেকে সংগৃহীত যাবতীয় তথ্য ল্যান্ডার বিক্রমের মাধ্যমে পৃথিবীতে পাঠানো হচ্ছে।
প্রজ্ঞানের ব্যাটারিতে বর্তমানে সম্পূর্ণ চার্জ রয়েছে। ইসরো জানিয়েছে, তার সোলার প্যানেলটি এমন ভাবে স্থাপন করা হয়েছে, যাতে এর পর চাঁদে সূর্য উঠলে প্যানেলে আলো পড়ে। চাঁদে আবার আগামী ২২ সেপ্টেম্বর সূর্য উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে। পৃথিবীর রিসিভার বা তথ্য গ্রহণকারী যন্ত্রটিকেও চালু রেখেছেন বিজ্ঞানীরা।
চাঁদে আবার সূর্য ওঠার জন্য দিন গুনতে শুরু করেছে ইসরো। টুইটে তারা জানিয়েছে, প্রজ্ঞানকে আবার সফল ভাবে জাগিয়ে তোলা যাবে বলে আশাবাদী বিজ্ঞানীরা। ২০ দিন পর রোভার জেগে উঠলে আরও একগুচ্ছ নতুন কাজ তাকে দিয়ে করিয়ে নেওয়া যাবে।
প্রজ্ঞানকে আর জাগানো না গেলে কী হবে?
ইসরো জানিয়েছে, সে ক্ষেত্রে রোভারটি চাঁদেই থেকে যাবে। চাঁদের দক্ষিণ মেরুর মাটিতে ভারতের দূত হিসাবে আজীবন ইসরোর সাফল্যের সাক্ষ্য বহন করবে প্রজ্ঞান।
গত ২৩ অগস্ট চাঁদের দক্ষিণ মেরুর মাটিতে অবতরণ করে চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডার বিক্রম। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বিক্রমের পেট থেকে বেরিয়ে এসেছিল রোভার প্রজ্ঞান। ছ’চাকা বিশিষ্ট এই ছোট যন্ত্রটি ১০ দিন ধরে চাঁদে ঘুরে ঘুরে অনুসন্ধান চালিয়েছে। সেখানকার মাটির কম্পন পরিমাপ করেছে। পেয়েছে সালফার-সহ বিভিন্ন খনিজের সন্ধান। শনিবারই ইসরো জানায়, চাঁদে ১০০ মিটারের বেশি পথ প্রজ্ঞান অতিক্রম করে ফেলেছে। এ বার তার কাজও শেষ হল।