অপরচুনিটি রোভার। মঙ্গলের বুকে।
‘লাল গ্রহ’ মঙ্গলের বুকে কি প্রাণের স্পন্দন থেমে গিয়েছে নাসার পাঠানো রোভার মহাকাশযান ‘অপরচুনিটি’র? সে কি আর নড়াচড়া করতে পারছে না? হারিয়েছে তার ‘বাকশক্তি’?
টানা ১০০ দিন ধরে অপরচুনিটির কোনও সাড়াশব্দ পায়নি নাসা। তার ফলে, অপরচুনিটিকে নিয়ে সন্দেহ, সংশয় উত্তরোত্তর জোরালো হচ্ছে।
মঙ্গলের বুকে তুমুল ধুলোঝড় উঠেছিল এই জুলাইয়ে। তা চলেছিল অনেক দিন ধরে। অপরচুনিটি তখন মঙ্গল ঢুঁড়ে বেড়াচ্ছিল। নামছিল মঙ্গলের পারসিভেরেন্স ভ্যালি ধরে। ওই ভয়ঙ্কর ধুলোঝড়ের সময় থেকেই পাসাডেনায় নাসার জেট প্রোপালসন ল্যাবরেটরি (জেপিএল)-র বিজ্ঞানীরা আর কোনও সাড়াশব্দ পাননি রোভার অপরচুনিটির।
মঙ্গলের পারসিভেরেন্স ভ্যালিতে ‘অপরচুনিটি’র এই ছবি তুলেছে নাসার মহাকাশযান। গত ২০ সেপ্টেম্বর।
নাসার তরফে বুধবার জানানো হয়েছে, কোনও সাড়াশব্দ না মেলায় অপরচুনিটি ‘জীবিত’ না ‘মৃত’, এখনও পর্যন্ত তা বোঝা যাচ্ছে না বটে, তবে টানা ১০০ দিন পর এই প্রথম রোভারটিকে দেখা গিয়েছে মঙ্গলের বুকে ওই পারসিভেরেন্স ভ্যালিতেই। তার হালহদিশ মিলেছে, এইটুকুই শুধু বলা যায়। অপরচুনিটির ওই ছবিটি তুলেছে নাসার পাঠানো মহাকাশযান ‘এমআরও’-র ‘হাইরাইজ’ ক্যামেরা। গত ২০ সেপ্টেম্বর। ছবিতে যে এলাকাটিকে সাদা চতুর্ভূজ দিয়ে ঘিরে রাখা আছে, অপরচুনিটি এখন রয়েছে সেখানেই। এলাকাটি ৪৭ মিটার বা ১৫৪ ফুট চওড়া। ছবিটি মঙ্গলের পিঠ থেকে ২৬৭ কিলোমিটার বা ১৬৬ মাইল ওপর থেকে তোলা হয়েছে।
আরও পড়ুন- ব্রহ্মাণ্ডে এ বার আরও উন্নত সভ্যতা খুঁজবে নাসা
আরও পড়ুন- মঙ্গলে ধুলোর ঝড়, বিপদে ‘অপরচুনিটি’
তবে নাসা এও জানিয়েছে, কোনও সিগন্যাল আসছে না অপরচুনিটির কাছ থেকে। জেপিএল থেকে সিগন্যাল পাঠালে আগে পলক ফেলতে না ফেলতেই সেই ‘কম্যান্ড’-এ সাড়া দিত অপরচুনিটি। কিন্তু ওই ধুলোঝড়ের পর টানা ১০০ দিন ধরে আর কোনও সাড়াও দিচ্ছে না নাসার ওই ১৪ বছর বয়সী রোভার। সূর্যের আলোয় চলত অপরচুনিটি। কিন্তু তুমুল ধুলোর ঝড়ে সব কিছু ঢেকেঢুকে যাওয়ায় স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে অপরচুনিটি। আগে যেখানে তাকে ‘কম্যান্ড’ পাঠানো হত দিনে এক বার করে, এখন ‘ঘুমিয়ে পড়া’ অপরচুনিটিকে জাগিয়ে তোলার জন্য দিনে বেশ কয়েক বার করে ‘কম্যান্ড’ পাঠানো হচ্ছে নাসার রোভারটিকে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও ‘কম্যান্ড’-এরই ‘রিপ্লাই’ আসেনি অপরচুনিটির কাছ থেকে।
ছবি সৌজন্যে: নাসা