—ফাইল চিত্র।
একই রকম প্রশিক্ষণ নিয়ে তৈরি ছিলেন রবীশ মলহোত্রও। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সয়ুজ টি-১১ রকেটে মহাকাশে গিয়েছিলেন ভারতের রাকেশ শর্মা। সেটা ১৯৮৪ সালের ৩ এপ্রিল।
ভারতীয় ২-৩ জন নভশ্চর এ বার পাড়ি দেবেন ভারতেরই গগনযানে চেপে। কার কার ভাগ্যে শিকে ছিঁড়বে, সে ভাবনা সরিয়ে রেখে রাশিয়ায় জোরকদমে প্রশিক্ষণ নিয়ে চলেছেন বায়ুসেনার চার পাইলট। রুশ মহাকাশ সংস্থা রসকসমসের অধীনে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজটি দেখভাল করছে ‘গ্লাভকসমস’। তারা জানিয়েছে, ‘অ্যাবনর্মাল ডিসেন্ট মডিউল ল্যান্ডিং’ (অস্বাভাবিক অবতরণ)-এর ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের প্রথম তিনটি ধাপ বা মডিউল সফল ভাবে পেরিয়ে এসেছেন চার জনই। বাকি শুধু চুড়ান্ত পর্বের প্রশিক্ষণ। ২০১৯ সালের ২৭ জুন ভারতীয় নভশ্চরদের প্রশিক্ষণের জন্য ইসরোর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে রুশ সংস্থাটি।
‘গ্লাভকসমস’ বিবৃতিতে বলেছে, প্রথম ধাপে ছিল গাছপালায় ঢাকা জলাভূমি অঞ্চলে অবতরণের প্রশিক্ষণ। ফেব্রুয়ারিতে শেষ হয়েছে তা। পরের ধাপটি ছিল ভারহীনতার অভিজ্ঞতা। যা জুন মাসে শেষ করেছেন চার পাইলট। তৃতীয় ধাপ ছিল ঘাসে ঢাকা সমতলভূমিতে অবতরণ। এটি শেষ হয়েছে জুলাইয়ে। ভারতের ভাবী নভশ্চরেরা সকলেই সুস্থ রয়েছেন এবং নিয়মিত তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। আগামী পর্যায়ের প্রশিক্ষণ শুরুর জন্য উন্মুখ হয়ে রয়েছেন ইসরোর বাছাই করা চার পাইলট।
আরও পড়ুন: চিনা আগ্রাসনের নথি গায়েবে মুখে কুলুপ কেন্দ্রের
শরীর অক্সিজেন কম পেলে (হাইপক্সিয়া) বা রক্তচাপ হঠাৎ কমে গেলে, সেই পরিস্থিতির সঙ্গেও যুঝতে পারা চাই। চতুর্থ ধাপে থাকবে এই ধরনের বেশ কিছু শারীরিক ক্ষমতার পরীক্ষা। এ ছাড়া গগনযানের গঠন ও কাজের পদ্ধতি ইত্যাদি বিষয়েও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। যোগাযোগের জন্য রপ্ত করে নিতে হবে রুশ ভাষা।
রাশিয়ায় গিয়ে এ বছর ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রশিক্ষণ শুরু করেন চার পাইলট। কোভিড অতিমারির কারণে রাশিয়ার গ্যাগারিন কসমোনট ট্রেনিং সেন্টারে প্রশিক্ষণ বন্ধ রাখতে হয়েছিল। মে মাসের শেষ থেকে ফের তা শুরু হয়। রাশিয়ার প্রশিক্ষণ পর্ব শেষ হওয়ার কথা ২০২১ সালের মার্চ নাগাদ। রাশিয়া থেকে ভারতে ফেরার পরে যে মহাকাশযানে চেপে মহাকাশচারীরা যাবেন, তার সিমুলেটরে প্রশিক্ষণ শুরু হবে। সেটাও প্রায় বছরখানেক ধরে চলার কথা।
আরও পড়ুন: নামতে গিয়ে পিছলে খাদে, দু’টুকরো বিমান, কেরলে মৃত ১৭
তবে এই ধরনের অভিযানের ক্ষেত্রে গোপনীয়তা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তাই বিষয়টি নিয়ে সবিস্তারে এখনও কিছুই জানায়নি ইসরো। ২০২২ নাগাদ যাত্রা করার পরিকল্পনা গগনযানের। যদিও একটি সূত্র বলছে, অতিমারি ও কোভিড-পরবর্তী পরিস্থিতির কারণে যাত্রা কিছুটা পিছোতেও পারে বলে ইসরোর তরফে ইঙ্গিত মিলেছে।