প্রতীকী ছবি।
মহাকাশেও এ বার ওপেন হার্ট সার্জারি! ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনকে ‘সুস্থ’ রাখার জন্য ওপেন হার্ট সার্জারির প্রয়োজন হল মহাকাশেও।
ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনের যাবতীয় কাজকর্ম করে কম্পিউটার। সেই ২০০০ সাল থেকে কতগুলো ইউরোপিয়ান কম্পিউটার ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনকে জীবিত রেখেছে। স্পেস সংক্রান্ত বিভিন্ন ডেটা সংগ্রহ, নেভিগেশন এবং যোগাযোগের জন্য কম্পিউটারগুলো খুবই প্রয়োজনীয় স্পেস স্টেশনের জন্য।
কারণ এই কম্পিউটার ছাড়া স্পেস স্টেশন সম্পূর্ণ অজেকো হয়ে পড়বে। এমনকি ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন নিজের কক্ষপথ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েও পড়তে পারে। আবার কম্পিউটারগুলোকে পৃথিবীতে নিয়ে এনে মেরামতি করাও সম্ভব ছিল না। কারণ পুরো সেটআপ এমন ভাবেই করা হয়েছিল, সেগুলো কোনও ভাবেই স্পেস স্টেশন থেকে বিচ্ছিন্ন করা যাচ্ছিল না। বিচ্ছিন্ন করলে খুব বড় বিপর্যয়ের সম্ভাবনা ছিল।
আরও পড়ুন: নৌবাহিনীকে আরও শক্তিশালী করতে ২৪টি ডুবোজাহাজ তৈরির কাজ শুরু করে দিল ভারত
ফলে ইউরোপীয় ইঞ্জিনিয়ার এবং রাশিয়ার মহাকাশচারীরা অন্য উপায় বার করেন- ওপেন হার্ট সার্জারি।
ঠিক যে ভাবে শরীরে হৃৎপিণ্ডকে উন্মুক্ত করে তার শিরা-ধমনী, পেশী অস্ত্রোপচার করা হয়। অনেকটা সে ভাবেই ওই কম্পিউটারগুলোর সার্জারি করা হল স্পেসেই।
২০১৫ সালে এর জন্য উপযুক্ত নতুন সার্কিট বোর্ড বানানো হয়। প্রথমে ইউরোপীয় ইঞ্জিনিয়ারদের সাহায্যে রাশিয়ার মহাকাশচারীরা কম্পিউটার বন্ধ না করে কী ভাবে এই নতুন সার্কিট তাতে প্রতিস্থাপন করা যায়, তা অনুশীলন করেন পৃথিবীতে।
২০১৮ সালের শেষের দিকে নতুন সার্কিট বোর্ড-সহ ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনের উদ্দেশে রওনা দেন প্রশক্ষিত মহাকাশচারীরা। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে সফল ভাবে প্রতিস্থাপন করা হয় ওই সার্কিট বোর্ড। কিন্তু এতেও সন্তুষ্ট হতে পারছিলেন না মহাকাশচারীরা। তাঁদের অপারেশনকে সফল ঘোষণার জন্য আরও অপেক্ষা করতে হয়। গত নভেম্বরে আরও একটা কম্পিউটার বিগড়ে যায় একই ভাবে। তাতেও নতুন ইউনিট প্রতিস্থাপন করা হয়েছে ‘ওপেন হার্ট সার্জারি’র মাধ্যমে। স্পেস স্টেশনের সমস্ত কম্পিউটারই ঠিকঠাক কাজ করছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
স্পেস স্টেশনের ওপেন হার্ট সার্জারির ফলে খরচ এবং সময় দুইই বেঁচে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন ইঞ্জিনিয়াররা।
সার্কিট বদলানোর ফলে কম্পিউটারের যা পরিণতি, তাতে ২০৩০ সাল পর্যন্ত আর কোনও সমস্যা হবে না বলেই মনে করছেন ওই ইঞ্জিনিয়াররা।