চাঁদের দিকে এগিয়ে চলেছে ইসরোর চন্দ্রযান-৩। —ফাইল চিত্র।
চাঁদের কক্ষপথে তার চারদিকে পাক খাচ্ছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর তৈরি চন্দ্রযান-৩। পৃথিবীর উপগ্রহের কাছে পৌঁছতে এখনও বেশ খানিকটা পথ অতিক্রম করতে হবে তাকে। ইতিমধ্যে চাঁদের পথে ইসরোর ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ হয়ে দেখা দিয়েছে রাশিয়ার ‘লুনা-২৫’। গতির ঝড় তুলে সে-ও চাঁদের দক্ষিণ মেরুর দিকে এগোচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে অনেকেরই প্রশ্ন, চাঁদের মাটি কে আগে ছোঁবে? ভারত না রাশিয়া?
ইসরোর পরিকল্পনা অনুযায়ী, চন্দ্রযান-৩ চাঁদের মাধ্যাকর্ষণের অধীনে মোট পাঁচ বার কক্ষপথে পরিবর্তন করবে। তার মধ্যে প্রথম এবং দ্বিতীয় ধাপ ইতিমধ্যেই অতিক্রান্ত। আর তিনটি ধাপে কক্ষপথ পরিবর্তন বাকি। তা হলেই চাঁদের কাছে চন্দ্রযান-৩-এর প্রাথমিক গন্তব্য (চাঁদের মাটি থেকে ১০০ কিমি দূরে) ছুঁয়ে ফেলা যাবে। সোমবার তৃতীয় পর্যায়ে কক্ষপথ পরিবর্তন করার কথা চন্দ্রযান-৩-এর। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টার মধ্যে ওই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছে ইসরো। আগামী ১৬ অগস্টের মধ্যে পাঁচটি কক্ষপথই অতিক্রম করে ফেলবে চন্দ্রযান-৩।
এই মুহূর্তে ইসরোর চন্দ্রযান রয়েছে চাঁদ থেকে ১,৪৩৭ কিলোমিটার দূরের কক্ষপথে। সোমবার কক্ষপথ পেরিয়ে দূরত্ব আরও কিছুটা কমিয়ে ফেলবে মহাকাশযানটি।
অন্য দিকে, রাশিয়ার লুনা-২৫ এখনও চাঁদের কক্ষপথে পৌঁছয়নি। সেটি পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের টানে পৃথিবীর চারপাশেই এখনও পাক খাচ্ছে। তবে শীঘ্রই তা গতি বাড়িয়ে পৃথিবীর কক্ষপথের বাইরে বেরিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তার পর ক্রমে চাঁদের মাধ্যাকর্ষণের আওতায় প্রবেশ করে দক্ষিণ মেরুর দিকে এগোবে লুনা-২৫।
রাশিয়ার মহাকাশযানটি শুক্রবার উৎক্ষেপিত হয়েছে। মাত্র ১২ দিনের মধ্যেই চাঁদের মাটিতে পৌঁছে যাওয়ার কথা তার। সেখানে ভারতের চন্দ্রযান-৩-এর সময় লাগছে ৪১ দিন। এর অন্যতম কারণ দুই দেশের মধ্যে প্রযুক্তিগত তারতম্য। রাশিয়া যে পথে চন্দ্রে যান পাঠাচ্ছে, সেটি অনেক সংক্ষিপ্ত। তাতে তাদের জ্বালানি বাবদ খরচও হচ্ছে বেশি। অন্য দিকে, ভারত জ্বালানির খরচ বাঁচাতে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ বল কাজে লাগিয়েছে। সেই কারণে তাদের যাত্রাপথ তুলনামূলক দীর্ঘ।
রাশিয়া অবশ্য জানিয়েছে, লুনা-২৫ ভারতের চন্দ্রযান-৩-এর গতিপথে কোনও বাধা সৃষ্টি করবে না। ইসরোও রুশ ল্যান্ডারের সাফল্য কামনা করে টুইট করেছে।