Russia Luna-25 Mission

উৎক্ষেপণের পর মাত্র ১২ দিনে কী ভাবে চাঁদে পৌঁছবে রুশ ল্যান্ডার? কোথায় পিছিয়ে ভারত?

চাঁদের উদ্দেশে আগেই রওনা দিয়েছে ইসরোর চন্দ্রযান-৩। কিন্তু পরে গিয়েও তাকে টক্কর দেবে রাশিয়ার লুনা-২৫। ২৩ অগস্টেই তারও চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছনোর কথা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২৩ ০৮:৩২
Share:
০১ ২০

ভারতের মতো চাঁদে মহাকাশযান পাঠাল রাশিয়াও। প্রায় একই সময়ে দুই দেশের ল্যান্ডারের চাঁদের মাটি ছোঁয়ার কথা। ফলে চাঁদকে কেন্দ্র করে ভারত বনাম রাশিয়ার টক্কর দেখতে চলেছে বিশ্ব।

০২ ২০

রাশিয়া তাদের এই চন্দ্র অভিযানের নাম দিয়েছে ‘লুনা-২৫’। শুক্রবার সকালে পূর্ব রাশিয়ার ভসথোচ্‌নি উৎক্ষেপণকেন্দ্র থেকে লুনা-২৫ উৎক্ষেপণ করা হয়েছে।

Advertisement
০৩ ২০

উৎক্ষেপণের পাঁচ দিনের মধ্যে চাঁদের কক্ষপথে পৌঁছবে লুনা-২৫। তার পর চাঁদের কক্ষপথ ধরে পৃথিবীর উপগ্রহের দক্ষিণ মেরুর কাছাকাছি পৌঁছতে আরও পাঁচ থেকে সাত দিন সময় নেবে। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ২৩ অগস্ট চাঁদের মাটিতে নামবে লুনা-২৫-এর ল্যান্ডার।

০৪ ২০

অন্য দিকে, চাঁদের উদ্দেশে আগেই রওনা দিয়েছে ইসরোর চন্দ্রযান-৩। গত ১৪ জুলাই দুপুর ২টো ৩৫ মিনিটে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধওয়ান স্পেস সেন্টারের ‘লঞ্চিং প্যাড’ থেকে সফল উৎক্ষেপণ হয়েছিল মহাকাশযানটির। উৎক্ষেপণের ২২ দিন পর তা চাঁদের কক্ষপথে পৌঁছেছে।

০৫ ২০

ইসরোর পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী ২৩ অগস্ট বিকেল ৫টা ৪৭ মিনিটে রোভার প্রজ্ঞানকে পেটের ভিতরে নিয়ে ‘পাখির পালকের মতো অবতরণ’ (সফট ল্যান্ডিং) করার কথা চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডার বিক্রমের। অর্থাৎ, লুনা-২৫ এবং চন্দ্রযান-৩-এর চাঁদে নামার সময় প্রায় একই।

০৬ ২০

রাশিয়া অবশ্য জানিয়ে দিয়েছে, ল্যান্ডিংয়ের সময় প্রায় একই হওয়া সত্ত্বেও ভারতের চন্দ্র অভিযানের পথে রুশ ল্যান্ডার কোনও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে না। চন্দ্রযান-৩ এবং লুনা-২৫-এর একে অপরের সঙ্গে ধাক্কা খাওয়ারও কোনও আশঙ্কা নেই।

০৭ ২০

তবে ভারত না রাশিয়া, কে আগে চাঁদে নামবে, কার অভিযান সফল হবে, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। কারণ, উভয়েরই গন্তব্য চাঁদের দক্ষিণ মেরু। যা এখনও পর্যন্ত অনাবিষ্কৃত। যে আগে সেই মাটিতে বিজয়চিহ্ন আঁকতে পারবে, তারই মাথায় বসবে ইতিহাসের মুকুট।

০৮ ২০

কিন্তু কেন চাঁদের অভিযানে ভারত এবং রাশিয়ার মধ্যে এত ফারাক? ভারতের চন্দ্রযান-৩ চাঁদে পৌঁছতে সময় নিচ্ছে প্রায় ৪১ দিন। সেখানে, রুশ অভিযানে সময় লাগছে মাত্র ১২ দিন! দুই দেশের সময়ের এত ফারাক কেন? ভারতের পরে শুরু করেও কি শেষ হাসি হাসবে রাশিয়া?

০৯ ২০

চন্দ্র অভিযানের ক্ষেত্রে ভারত এবং রাশিয়ার মূল ফারাক প্রযুক্তিতে। কম খরচে অপেক্ষাকৃত বেশি পথ ঘুরে ভারতের চন্দ্রযান-৩ চাঁদে পৌঁছবে। রাশিয়ার প্রযুক্তি অনেক উন্নত এবং বেশি খরচসাপেক্ষ।

১০ ২০

উৎক্ষেপণের ২২ দিন পর চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশ করেছে চন্দ্রযান-৩। তার আগে পর্যন্ত মহাকাশযানটি পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের টানে তার চারপাশে পাক খাচ্ছিল। ধাপে ধাপে পাঁচ বার কক্ষপথ পরিবর্তন করে এগিয়েছে চন্দ্রযান-৩।

১১ ২০

চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশের পরেও একই ভাবে এগোচ্ছে ভারতের চন্দ্রযান। সেখানেই ধাপে ধাপে পাঁচ বার কক্ষপথ পরিবর্তন করছে সে। পঞ্চম কক্ষপথে পৌঁছনোর পরেই চন্দ্রযান-৩ পৌঁছে যাবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে।

১২ ২০

যাত্রাপথে পৃথিবী এবং চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ শক্তিকে কাজে লাগাচ্ছে চন্দ্রযান-৩। কম জ্বালানি খরচ করে মাধ্যাকর্ষণের শক্তির মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে ইসরো। সেই কারণেই অভিযানে এত বেশি সময় লাগছে।

১৩ ২০

রাশিয়ার ক্ষেত্রে বিষয়টি তেমন নয়। অধিক জ্বালানি খরচ করে সংক্ষিপ্ত পথেই চাঁদে যাচ্ছে লুনা-২৫। চাঁদে সফল ভাবে নামতে পারলে রাশিয়া এবং ভারতের মহাকাশযানের উদ্দেশ্যতেও প্রযুক্তিগত ফারাক আছে।

১৪ ২০

চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডার বিক্রমের ওজন ১,৭৫২ কেজি। রুশ ল্যান্ডারের ওজন মাত্র ৮০০ কেজি। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নেমে চন্দ্রযান-৩ গবেষণার জন্য নানা তথ্য সংগ্রহ করবে ১৪ দিন ধরে। রুশ ল্যান্ডার চাঁদে থাকবে অন্তত এক বছর।

১৫ ২০

চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পাথরের নীচে জল থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে প্রাণের উপযোগী পরিবেশের সন্ধানও মিলতে পারে। তাই দক্ষিণ মেরু বিজ্ঞানীদের আকর্ষণের কেন্দ্রে। এক বছর ধরে দক্ষিণ মেরুতে ঘুরে ঘুরে সেই সন্ধানই চালাবে রাশিয়ার লুনা-২৫।

১৬ ২০

লুনা-২৫-এর ভর ১.৮ টন। পেটের মধ্যে ৩১ কেজি ওজনের বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি বহন করছে এই ল্যান্ডার। চাঁদের মাটির অন্তত ৬ ইঞ্চি গভীর থেকে পাথুরে উপাদান সংগ্রহ করবে লুনা-২৫।

১৭ ২০

রাশিয়ার এই লুনা-২৫ অভিযানের পরিকল্পনা করা হয়েছিল ২০২১ সালের অক্টোবরে। তখনই মহাকাশযানটির উৎক্ষেপণের কথা ছিল। নানা কারণে এই অভিযান দু’বছর পিছিয়ে যায়।

১৮ ২০

১৯৭৬ সালের পর এই প্রথম রাশিয়া আবার মহাকাশযান পাঠাচ্ছে চাঁদে। ইউরো নিউজের রিপোর্ট অনুযায়ী, এ বার ইউরোপীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইএসএ)-র সহায়তা ছাড়াই হচ্ছে রুশ অভিযান। রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পর ইএসএ তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে।

১৯ ২০

ল্যান্ডার লুনা-২৫-কে নিয়ে রাশিয়ার সোয়ুজ় রকেট শুক্রবার চাঁদে পাড়ি দেবে। তার আগে উৎক্ষেপণস্থলের আশপাশের গ্রাম খালি করা হয়েছে। কোনও কারণে রকেটের কোনও অংশ যদি ভেঙে পড়ে, তা হলে গ্রামবাসীদের যাতে সমস্যা না হয়, সেই কারণেই এই তৎপরতা। তবে রকেটের অংশ ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা এক লক্ষের মধ্যে এক বার মাত্র।

২০ ২০

এর আগেও চাঁদের মাটিতে সফল ভাবে ল্যান্ডার নামিয়েছে রাশিয়া। আমেরিকা এবং চিনেরও সেই কৃতিত্ব রয়েছে। ইসরোর অভিযান সফল হলে এই তালিকায় চতুর্থ দেশ হিসাবে নাম লেখাবে ভারত।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement