-ফাইল ছবি।
অ্যাস্ট্রাজেনেকা বা জনসন অ্যান্ড জনসনের কোভিড টিকা নেওয়ার পর কিছু কিছু ক্ষেত্রে ধমনীতে রক্ততঞ্চন (ব্লাড ক্লটিং) হতে দেখা যাচ্ছে। পরে সেই তঞ্চন বন্ধ করার ওষুধ (মূলত হেপারিন) দিয়েও কাজ হচ্ছে না। ধমনীতে রক্ততঞ্চনের সমস্যা কম-বেশি থেকেই যাচ্ছে। কেন এমন হচ্ছে এই প্রথম তা জানা গেল এক নজরকাড়া গবেষণায়। ফলে, ওই টিকাগুলির ত্রুটিবিচ্যূতি সারানোর পথের হদিশ মিলল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘নেচার’-এ। কানাডার হ্যামিল্টনে ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের গবেষণা।
মূল গবেষক অ্যাঞ্জেলা হুইন জানিয়েছেন, মানুষের ধমনীতে রক্ততঞ্চন ঘটানোর ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা থাকে একটি প্রোটিনের। তার নাম- ‘প্লেটলেট ফ্যাক্টর ফোর’ বা ‘পিএফ-৪’। এটা অনেক আগেই জানা ছিল। গবেষকরা দেখেছেন, কয়েকটি কোভিড টিকা (পড়ুন, জনসন অ্যান্ড জনসন ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা) মানবশরীরে ঢুকে যে সব অ্যান্টিবডি তৈরি করছে, সেগুলি ওই বিশেষ প্রোটিনের এমন একটি অংশে গিয়ে আটকে যাচ্ছে, তঞ্চন বন্ধ করার ওষুধ হেপারিনও প্রোটিনের সেই অংশটিকেই টার্গেট করে। প্রোটিনটিকে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়ার জন্য, যাতে প্রোটিনটি আর ধমনীতে রক্ততঞ্চনে সহায়তা করতে না পারে।
সেই কাজটা করার জন্য হেপারিন ওই পিএফ-৪ প্রোটিনটিকে বেঁধে ফেলে। তাতে শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থার কোষগুলির সুবিধা হয় প্রোটিনটিকে নিষ্ক্রিয় করে দিতে। তাই হেপারিন প্রয়োগে ধমনীতে রক্ততঞ্চন বন্ধ হয়।
কিন্তু জনসন অ্যান্ড জনসন ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা-র টিকা নেওয়ার পর কিছু কিছু ক্ষেত্রে যে রক্ততঞ্চনের ঘটনা ঘটতে দেখা যাচ্ছে তা বন্ধ করা হেপারিনের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। কারণ, প্রোটিনের যে অংশটি হেপারিন বেঁধে ফেলে, সেই অংশেই জুড়ে থাকছে ওই দু’টি টিকা নেওয়ার ফলে মানবশরীরে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলে আগামী দিনে ওই দু’টি টিকা এমন ভাবে তৈরি করতে হবে যাতে তার ফলে জন্মানো অ্যান্টিবডিগুলি আর পিএফ-৪ প্রোটিনের ওই বিশেষ অংশটির গায়ে না জুড়ে যায়।