ডাইনোসরের আমলের প্রাচীন পাখির জীবাশ্ম। প্রায় ১১ কোটি বছরের প্রাচীন তো হবেই। তাও ডিমসমেত। চিনের উত্তর-পশ্চিমে একটি এলাকায় এমনই একটি পাখির জীবাশ্মের খোঁজ মিলেছে।
ক্রিটেশিয়াস যুগের এই পাখির মৃত্যুর কারণ ছিল পেটের ডিমটি, মনে করছেন ইনস্টিটিউট অব ভার্টিব্রেট প্যালিয়েন্টোলজি ও প্যালিওঅ্যানথ্রোপলজির বিজ্ঞানীরা।
পাখির দেহের পেটের একটা অংশ নিয়ে পরীক্ষা করতে গিয়ে দেখা যায় সেটি ডিম। সুস্থ পাখির ক্ষেত্রে ডিমের একটা আবরণ থাকলেও এটির ছিল দুটি আবরণ। দীর্ঘদিন পেটে ছিল ডিমটি, তারই প্রমাণ এটি। তবে অত্যন্ত পাতলা আবরণ, ফলে বোঝা যায় পাখিটি সুস্থ ছিল না।
ডিমটি পাড়া যায়নি, তাই মারা যায় মা পাখি, আবরণ-সহ ডিমটি জীবাশ্মে পরিণত হয় সময়ের সঙ্গে। প্রোটিনের অংশ কিংবা ডিমের আবরণ জীবাশ্মে পাওয়া প্রায় অসম্ভব। তাই এটি বিরল আবিষ্কার, বলছেন চিনের গবেষকরা।
স্ক্যানিং ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপি বলছে, ডিমের আবরণের সবচেয়ে বাইরের স্তর কিউটিকলে ছিল আকরিকও, বলেন গবেষক ও. কোনর।
কোনও গবেষকের মত এটি মেডুলারি বোন। শুধু পাখির জীবাশ্ম নয়, ডাইনোসর ও টেরোসরের জীবাশ্মেও মিলেছে এগুলি।
এই প্রাচীন পাখির প্রজাতির নাম আভিমায়া স্কিউইৎজেরে। এটি সম্পূর্ণ নতুন প্রজাতি। এটি এনানশিঅরনিথিস গোষ্ঠীর পাখি। ডাইনোসরের সঙ্গে পৃথিবীতে বাস করত এরাও, বলেছেন বিজ্ঞানীরা। (প্রতীকী ছবি)
আভিমায়ার পায়ের হাড়ের অংশ বিশ্লেষণ করে মেডুলারি বোনের অস্তিত্ব প্রমাণ করেছেন বিজ্ঞানীরা। এটি একমাত্র মেসোজোয়িক যুগের জীবাশ্ম, যেখানে জনন প্রক্রিয়ার প্রমাণ মিলেছে। অর্থাৎ ডিম।
ডিম আবিষ্কারের কারণেই স্পষ্ট এটি মা পাখির জীবাশ্ম। এর ফলে প্রাচীন আমলের পাখির জনন প্রক্রিয়া সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা তৈরি হবে বলে মনে করছেন গবেষকরা। ‘বিশ্বের মধ্যে প্রথম’ ডিমসমেত পাখির জীবাশ্মের খোঁজ মিলল, বলছেন গবেষকরা।
তবে এই পাখিটির সঙ্গে ডাইনোসরের ভূতাত্ত্বিক বিবর্তনের সম্পর্ক নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। (প্রতীকী ছবি)