শনির চাঁদে এমন ফোয়ারা, ধোঁয়া দেখেছে ক্যাসিনি। ছবি- নাসার সৌজন্যে।
প্রাণ থাকতেই পারে শনির একটি চাঁদ ‘এনসেলাডাস’-এ। অ্যান্টার্কটিকার চেয়েও পুরু বরফের আস্তরণের নীচে শনির চাঁদে রয়েছে অতলান্ত মহাসাগর। তাদের বিশালত্ব পৃথিবীর মহাসাগরগুলির চেয়ে অনেক বেশি। আর সেই মহাসাগরেই প্রাণের অস্তিত্ব টিঁকে থাকার সম্ভাবনা জোরালো হয়ে উঠেছে নাসার মহাকাশযান ‘ক্যাসিনি’-র পাঠানো ছবি ও তথ্যাদি বিশ্লেষণ করে।
আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘নেচার অ্যাস্ট্রোনমি’-তে প্রকাশিত সাম্প্রতিক একটি গবেষণাপত্র এই খবর দিয়েছে।
শনির চাঁদটিকে প্রদক্ষিণের সময় এনসেলাডাসের পিঠ থেকে মিথেনের ফোয়ারা আর ধোঁয়া উঠে আসতে দেখেছিল ক্যাসিনি।
সেই মিথেন আসছে কোথা থেকে, তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের কৌতূহল ছিল। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের অনেকেরই ধারণা, শনির চাঁদের পুরু বরফের আস্তরণের নীচে থাকা অতলান্ত মহাসাগরগুলিতে রয়েছে তরল মিথেন। সেই মিথেনই ফোয়ারার মতো উঠে আসছে, বাষ্পীভূত হয়ে যাচ্ছে। তাই মিথেনের ধোঁয়া দেখতে পেয়েছিল নাসার মহাকাশযান।
পৃথিবীর মহাসাগরগুলির তলদেশেও এই মিথেনই অসংখ্য অগণ্য অণুজীবের অস্তিত্বের প্রমাণ। অণুজীবই সেই মিথেন বানায় পৃথিবীর মহাসাগরগুলির তলদেশে।
আরও পড়ুন
রাজ্যে নতুন আক্রান্ত এক ধাক্কায় ন’শোর নীচে, মৃত্যু ১৮, সক্রিয় রোগী ১৮ হাজারের কম
আরও পড়ুন
মহারাষ্ট্রে মহারাজনীতি, শিবসেনার চালে কি আপাতত ‘নিরাপদ’ উদ্ধব সরকার
তাই মিথেন প্রাণের অস্তিত্ব প্রমাণের অন্যতম হাতিয়ার। পৃথিবীর অভিজ্ঞতা থেকেই গবেষকদের অনুমান, শনির চাঁদ এনসেলাডাসে মিথেনের প্রাবল্য যখন এত বেশি, তখন সেখানে থাকতেই পারে প্রাণ। আর সেটা হতে পারে অজানা প্রজাতির অণুজীব। তা যদি হয়, তা হলে এটাও বলা যায় সেই মিথেন যখন ফোয়ারার মতো শনির চাঁদের পিঠে উঠে আসছে, পরে বাষ্পীভূত হচ্ছে, তখন সেই প্রাণ বা অণুজীব এখনও টিকে রয়েছে এনসেলাডাসে।
বিজ্ঞানীরা অবশ্য আরও একটি সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেননি। সেই মিথেন বেরিয়ে আসতে পারে শনির চাঁদের মহাসাগরের তলদেশেরও নীচে থাকা বিশাল বিশাল ছিদ্রপথের (ভেন্ট) মাধ্যমে। পৃথিবীতেও এমনটাই হয়েছে, হয়ে চলেছে। মহাসাগরের একেবারে নীচের স্তরের কনকনে ঠান্ডা জল। তারও অনেক নীচে পৃথিবীর অন্দরে থাকে ম্যাগমা। সেই ম্যাগমার তাপে উষ্ণ হয়ে গিয়ে ওই সব ছিদ্র তৈরি হয়। সেই পথেই বেরিয়ে আসে ম্যাগমা। শনির চাঁদেও সেই প্রক্রিয়া ঘটে চলার সম্ভাবনা বিজ্ঞানীরা কিন্তু উড়িয়ে দেননি।