Earth

৫০ বছরে সবচেয়ে বেশি গতি পৃথিবীর, ভাইরাল ভিডিয়ো নিয়ে চর্চা

লাট্টুর মতো পৃথিবী যখন পাক খাচ্ছে, সেই সময় চোখের সামনে গাছপালা, আকাশও যদি সরে সরে যেত? সেই অসাধ্য সাধন হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২১ ১৬:১২
Share:

ছায়াপথকে সামনে রেখে পৃথিবীর ঘূর্ণন ক্যামেরাবন্দি করেন আরিয়াই নারেনবার্গ। ছবি: ভিডিয়ো গ্র্যাব।

এই মুহূর্তে পৃথিবীর গতি গত ৫০ বছরে সবচেয়ে বেশি। বিজ্ঞানীদের অনুমান, ২০২১ সালে নিজের অক্ষের চার দিকে পাক খেতে খেতে ২৪ ঘণ্টার কম সময়ে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করবে পৃথিবী। এই খবর নিয়ে যখন জোর চর্চা, তেমনই সময় নিজের অক্ষে পৃথিবীর ঘুরপাক খাওয়ার একটি ভিডিয়ো ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। পৃথিবীর উপরিতলে বসবাস করেও সাধারণ মানুষ সেই আহ্ণিক গতি অনুভব করতে পারেন না। কিন্তু লাট্টুর মতো পৃথিবী যখন পাক খাচ্ছে, সেই সময় চোখের সামনে গাছপালা, আকাশও যদি সরে সরে যেত? ৩ বছর আগে সেই অসাধ্য সাধন করে দেখিয়েছিলেন এক চিত্রগ্রাহক। সেই টাইম ল্যাপস ভিডিয়ো ঘিরেই নতুন করে চর্চা নেটপাড়ায়।

Advertisement

বর্তমানে মহাকাশকে নিয়ে ডিজিটাল মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় যাঁরা, তাঁদের মধ্যে অন্যতম আরিয়াই নারেনবার্গ। নেটাগরিকদের কারও কারও মতে, মহাকাশকে মোবাইলবন্দি করে ফেলেছেন তিনি। মহাকাশ উৎসাহী হিসেবে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে চাঁদ, তারা, ছায়াপথের গতিবিধি সংক্রান্ত ছবি ও ভিডিয়ো তোলেন তিনি। ইউটিউব এবং অন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় নিয়মিত তা পোস্টও করেন। ২০১৭-য় তাঁর তোলা পৃথিবীর ঘুরপাক খাওয়ার একটি ভিডিয়োই এখন রীতিমতো ভাইরাল।

সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, গত ৫০ বছরের তুলনায় এই মুহূ্র্তে পৃথিবীর গতি সবচেয়ে বেশি। তাঁরা বলেছেন, গত কয়েক দশক ধরে নিজের অক্ষের উপর পাক খেতে ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় লাগছিল পৃথিবীর। তবে ২০১৯-এর জুন থেকে সেই ঘূর্ণন ০.৫ মিলি সেকেন্ড কম সময়ে শেষ হচ্ছে। তার ফলে দিনের দৈর্ঘ্যও কমে যাচ্ছে। ২০০৫ সালের ৫ জুলাই ২৪ ঘণ্টা অর্থাৎ ৮৬ হাজার ৪০০ মিলি সেকেন্ডের চেয়ে ১.০৫১৬ মিলি সেকেন্ড কম ছিল। এখনও পর্যন্ত ওই তারিখেই দিনের দৈর্ঘ্য সবচেয়ে কম ছিল। কিন্তু ২০২০-তে মোট ২৮ বার সেই রেকর্ড ভেঙে গিয়েছে। ২০১৯-এর ১৯ জুলাই দিনটি এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে কম দৈর্ঘ্যের। ওই দিনের দৈর্ঘ্য ৮৬ হাজার ৪০০ মিলি সেকেন্ডের চেয়ে ১.৪৬০২ মিলি সেকেন্ড কম ছিল। বিজ্ঞানীদের দাবি, নতুন বছর এই গতি আরও বেশি হতে চলেছে। অর্থাৎ, নিজের অক্ষের উপর পাক খেতে আরও কম সময় লাগবে পৃথিবীর।

Advertisement

আরও পড়ুন: কাল সন্ধ্যায় আকাশে চোখ, শনি-বৃহস্পতি এত কাছে আসছে ৪০০ বছর পর​

বিষয়টি সামনে আসতেই পৃথিবীর ঘূর্ণন নিয়ে আলোচনা নেটপাড়ায়। সেই সঙ্গে ছবি দেখার হুড়োহুড়ি পড়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাতেই আরিয়াইয়ের তোলা ভিডিয়োটি নিয়ে নতুন করে সাড়া পড়ে গিয়েছে। বিদেশ বিভুঁই তো বটেই ভারতেও অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিয়োটি শেয়ার করেছেন, যাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন অভিনেতা রিতেশ দেশমুখ। টুইটারে রিতেশ লেখেন, ‘আমরা জানি, নিজের অক্ষে পাক খেতে খেতেই পৃথিবী সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। কিন্তু আমরা তা অনুভব করতে পারি না। কিন্তু অ্যাস্ট্রোফোটোগ্রাফার আরিয়াই নারেনবার্গ অসাধারণ সুন্দর এই ভিডিয়োটি ক্যামেরাবন্দি করেছেন, যেখানে পৃথিবীর ঘূর্ণন দেখতে পাচ্ছি আমরা’।

কী ভাবে ভিডিয়োটি তুলেছেন আরিয়াই, তা-ও বিশদে তুলে ধরেছেন রিতেশ। তিনি জানিয়েছেন, পৃথিবীর ঘূর্ণন ক্যামেরাবন্দি করতে ‘ইকুইটোরিয়াল ট্র্যাকিং মাউন্ট’ প্রযুক্তি ব্যবহার করেছেন আরিয়াই। ধ্রুবতারার সঙ্গে সমান্তরাল ভাবে ক্যামেরা বসিয়ে রাখেন তিনি। সেই অবস্থায় ৩ ঘণ্টা ধরে প্রতি ১২ সেকেন্ড ক্যামেরা বন্দি করতে থাকেন। ছায়াপথের দিকে মুখ করে ক্যামেরা স্থির ভাবে বসিয়ে রেখেছিলেন বলেই সুন্দর ভবে পৃথিবীর ঘূর্ণন ধরা পড়েছে।

আরও পড়ুন: ১০০ বছরে পা রাখল বিসিজি টিকা​

ইউটিউবে আরিয়াইয়ের অ্যাকাউন্টেই ওই ভিডিয়োটি ১৭ লক্ষ ৬৮ হাজার ৬৩৪ বার দেখা হয়েছে। রিতেশের পোস্টটি দেখেছেন ৬৮ হাজারের বেশি মানুষ। আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা-র তরফেও সেই ছবি শেয়ার করা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement