Comet

আজ থেকে কলকাতার আকাশে দেখা দেবে সেই আগন্তুক, ফিরবে ৬৮০০ বছর পরে

ধূমকেতু সূর্যকে অতিমাত্রায় উপবৃত্তাকার পথে পরিক্রমণ করে। এক বার পাক খেতে যে সময় লাগে তাকে বলে পরিক্রমণ কাল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২০ ০৫:৩৬
Share:

মাল্টার আকাশে ধুমকেতু নিয়োওয়াইজ।—ছবি রয়টার্স।

দেশে লকডাউনের বয়স তখন মাত্র চার দিন। এমন সময় চলতি বছরের ২৭ মার্চ আচমকাই নাসার ওয়াইডফিল্ড ইনফ্রারেড সার্ভে এক্সপ্লোরার স্পেস টেলিস্কোপ জানান দিয়েছিল, পৃথিবীর কাছে আসতে চলেছে নতুন এক আগন্তুক। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানান, আজ, মঙ্গলবার থেকেই কলকাতা-দেশের আকাশে দেখা দেবে সেই ধূমকেতু। তার নাম নিয়োওয়াইজ (সি/২০২০-এফ৩)।

Advertisement

কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা পজিশনাল অ্যাস্ট্রোনমি সেন্টারের অধিকর্তা সঞ্জীব সেন জানান, জুলাইয়ের মধ্যভাগ থেকে শেষ পর্যন্ত সূর্যাস্তের পরে উত্তর-পশ্চিম দিগন্তের কাছে কিছুক্ষণ এই ধূমকেতুকে উজ্জ্বল অবস্থায় দেখা যাবে। অন্ধকারাচ্ছন্ন এলাকা থেকে খালি চোখে দেখা গেলেও শহরাঞ্চলে দূরবিনের সাহায্যেই দেখা যেতে পারে। অগস্টেও দূরবিনের সাহায্যে দেখা যেতে পারে মাসের মধ্যভাগ পর্যন্ত।

ধূমকেতু সূর্যকে অতিমাত্রায় উপবৃত্তাকার পথে পরিক্রমণ করে। এক বার পাক খেতে যে সময় লাগে তাকে বলে পরিক্রমণ কাল। নিয়োওয়াইজের পরিক্রমণ কাল এইমুহূর্তে গণনা করে জানা গেছে প্রায় ৬৮০০ বছর। অর্থাৎ সে আবার দেখা দিতে পারে ৬৮০০ বছর পরে।

Advertisement

বিজ্ঞানীরা জানান, 'শর্ট পিরিয়ড কমেট' বা যে সব ধূমকেতুর পরিক্রমণকাল ২০০ বছরের কম (যেমন হ্যালির ধূমকেতুর প্রায় ৭৬ বছর) তাদের উৎপত্তি ধরা হয় কুইপার বেল্ট থেকে। পৃথিবী থেকে তার দূরত্ব ৩০ থেকে ৫০ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট। কিন্তু 'লং পিরিয়ড কমেট' বা যে সব ধূমকেতুর পরিক্রমণকাল ২০০ বছরের বেশি (যেমন এই নিয়োওয়াইজ) তাদের উৎপত্তি ধরা হয় প্রায় ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট দূরে থাকা উর্ট ক্লাউড অঞ্চলে। নিয়োওয়াইজের সেই এলাকা থেকেই উৎপত্তি হয়েছে বলে ধরে নেওয়া যায়।

আরও পড়ুন: ব্ল্যাক হোল থেকে আলোর ঝলক দেখল নাসা, মিলল আরও এক বার্তাবাহক

সঞ্জীববাবু জানান, ধূমকেতুর কেন্দ্রে থাকে বরফ ও ধুলো। সূর্যের কাছাকাছি এলে বরফ বাষ্পীভূত হয়ে গ্যাস তৈরি করে এবং গ্যাসীয় কণাগুলি তড়িদাহত হয়। ধুলো ধূমকেতুর কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে সূর্য যে দিকে রয়েছে তার বিপরীতে ছুটতে থাকে। তাকেই লেজ বলে। গত ৩ জুলাই সূর্যের কাছ দিয়ে যাওয়ার বেশ কিছু দিন আগে থেকেই নতুন আগন্তুকেরও দুটি লেজ তৈরি হয়েছে। একটি আয়নিত গ্যাসের, অন্যটি ধুলোর। ধুলোর উপরে সূর্যালোক প্রতিফলিত হয়ে উজ্জ্বল করে তুলেছে।

আরও পড়ুন: আজীবন অবদানের জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেলেন এই বাঙালি বিজ্ঞানী

সঞ্জীববাবু জানান, ২২ থেকে ২৪ জুলাই পৃথিবীর সব থেকে কাছে থাকবে এই ধূমকেতু। তখন পৃথিবী থেকে তার দূরত্ব হবে প্রায় ১০ কোটি ৩০ লক্ষ কিলোমিটার। সে সময় তার অবস্থান হবে উত্তর-পশ্চিম আকাশে সপ্তর্ষিমণ্ডল নক্ষত্রপুঞ্জে। জুলাই পেরোনোর পরেই ধীরে ধীরে সে দূরে যাত্রা করবে। আবার হয়তো ফিরবে ৬৮০০ বছর পর!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement