চিনের চন্দ্রযান চ্যাং-৬। ছবি: এক্স।
চাঁদের মাটিতে সফল ভাবে অবতরণ করল চিনের মহাকাশযান চ্যাং-৬। রবিবার তার অবতরণ সফল হয়েছে। চাঁদের অন্ধকার প্রান্তে, অর্থাৎ, যে দিক পৃথিবী থেকে দেখা যায় না, সে দিকে নেমেছে চিনা চন্দ্রযান। চিনের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (সিএনএসএ) জানিয়েছে, এই অভিযানের উদ্দেশ্য, চাঁদের ওই দূরের প্রান্ত থেকে মাটি এবং পাথরের নমুনা তুলে আনা। যা এর আগে বিশ্বের কোনও দেশ করে দেখাতে পারেনি। চিন যদি এই অভিযানে সফল হয়, তবে বিশ্বে প্রথম এই নজির তৈরি হবে।
চাঁদের দক্ষিণ মেরুর একটি গভীর উপত্যকায় নেমেছে চিনের চ্যাং-৬। অবতরণের সময় রবিবার সকাল ৬টা ২৩ মিনিট (ভারতীয় সময়)। চিনা সংস্থা জানিয়েছে, তাদের এই অভিযান অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। পথে অনেক সমস্যা আসার সম্ভাবনা রয়েছে। উন্নত প্রযুক্তিগত কাঠামো প্রয়োজন এই অভিযানের ১০০ শতাংশ সাফল্যের জন্য।
চাঁদের অন্ধকার প্রান্তে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার সফল ভাবে মহাকাশযান নামাল চিন। ওই এলাকা তুলনামূলক বেশি গর্ত, খাদ এবং এবড়োখেবড়ো শিলায় পরিবেষ্টিত। তাই সেখানে মহাকাশযানের চলাফেরায় বাধা আসবে অনেক বেশি।
গত ৩ মে চিনের দক্ষিণ প্রান্তের হাইনান প্রদেশ থেকে লং মার্চ ৫ নামক রকেটে চড়ে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিল চ্যাং-৬। সপ্তাহ খানেকের মধ্যে তা চাঁদের কক্ষপথে পৌঁছে যায়। রবিবার সফল হল অবতরণ। চিনা সংস্থা জানিয়েছে, একটি বেলচা এবং ড্রিল ব্যবহার করে চাঁদের মাটি খুঁড়বে চ্যাং-৬। অন্তত দু’কেজি চন্দ্রপদার্থ (মাটি, পাথর, ধুলো) তুলে পৃথিবীতে নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। ২৫ জুনের মধ্যে পৃথিবীতে ফিরে আসার কথা চিনা চন্দ্রযানের।
চিনের এই অভিযানের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে একাধিক দেশ। পাকিস্তান, ফ্রান্স, ইটালি এবং সুইডেনের বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতিও চাঁদে বহন করে নিয়ে যাচ্ছে চ্যাং-৬। ফলে চিনের পাশাপাশি এই অভিযানের সাফল্যের দিকে তাকিয়ে আছে ওই দেশগুলিও। চিনের এই অভিযানের সাহায্যেই চাঁদে প্রথম চন্দ্র উপগ্রহ (স্যাটেলাইট) পাঠিয়েছে পাকিস্তান। এই অভিযান সফল হলে আগামী দিনে চ্যাং-৭ এবং চ্যাং-৮ অভিযান পরিকল্পনা করে রেখেছে চিন। প্রতি ক্ষেত্রেই তাদের লক্ষ্য চাঁদের দক্ষিণ মেরু, যা পৃথিবীর মানুষের কাছে তুলনামূলক অপরিচিত এবং সম্ভাবনাময়।