নাসার প্রকাশিত সেই ছবি। ছবি সৌজন্য নাসা।
হারিয়ে যাওয়ার প্রায় তিন মাস পরে চন্দ্রযান ২-এর ল্যান্ডার ‘বিক্রম’-এর ধ্বংসাবশেষের খোঁজ মিলল। মঙ্গলবার এক বিবৃতি জারি করে এমনটাই জানিয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। একটি ছবিও টুইট করেছে তারা।
নাসার এই প্রকাশিত ছবিতে বেশ কয়েকটি সবুজ এবং নীল রঙের বিন্দু ধরা পড়েছে। নাসা জানিয়েছে, সবুজ বিন্দুগুলো বিক্রম-এর ধ্বংসাবশেষ। ছবিতে যে বড় নীল বিন্দু দেখা যাচ্ছে, সেখানেই আছড়ে পড়ে বিক্রম। বাকি যে নীল বিন্দুগুলো দেখা যাচ্ছে সেগুলো চাঁদের মাটিতে বিক্রম আছড়ে পড়ার পর ক্ষতিগ্রস্ত স্থান।
চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে বিক্রম যেখানে আছড়ে পড়েছিল সেই জায়গার ছবি তুলেছিল নাসার ‘লুনার রিকনাইস্যান্স অরবিটার’ (এলআরও)। প্রায় কয়েক কিলোমিটার জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল বিক্রম-এর ধ্বংসাবশেষ। অন্তত ২৪টি টুকরো হয়ে বিক্রম ছড়িয়ে পড়ছিলসেদিন চাঁদের মাটিতে। গত ২৬ সেপ্টেম্বর এলআরও-র তোলা সেই জায়গার একটি মোজেইক ছবি প্রকাশ করে নাসা। সঙ্গে বিক্রম-এর ধ্বংসাবশেষ চিহ্নিত করার জন্য বিশ্ববাসীকে আমন্ত্রণও জানায় তারা।
আরও পড়ুন: চাঁদের মাটিতে আছড়ে পড়া ল্যান্ডার ‘বিক্রম’-এর ধ্বংসাবশেষের ছবি প্রকাশ করল নাসা
আরও পড়ুন: ডিজিটাল গতির ফাঁদে বিভ্রান্ত ছোটদের মস্তিষ্ক
সেই ছবির সূত্র ধরেই খোঁজ শুরু হয় বিক্রম-এর। নাসা এ দিন যে বিবৃতি প্রকাশ করেছে তাতে বলে হয়েছে, ভারতের এক মেকানিক্যাল ও কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়র সন্মুগ সুব্রহ্মণ্যন তাঁদের এলআরও প্রজেক্টের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেখানে সন্মুগ দাবি করেন, নাসার প্রকাশিত ওই ছবিতে বিক্রম-এর ধ্বংসাবশেষ চিহ্নিত করতে পেরেছেন তিনি। যেখানে বিক্রম ভেঙে পড়েছিল তার ঠিক ৭৫০ মিটার উত্তর-পশ্চিমে বিক্রম-এর ধ্বংসাবশেষ চিহ্নিত করেন সন্মুগ। এর জন্য পুরো কৃতিত্বই সন্মুগকে দিয়েছে নাসা।
গত ২২ জুলাই অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধবন মহাকাশ কেন্দ্র থেকে ল্যান্ডার বিক্রম-কে নিয়ে চাঁদের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিল চন্দ্রযান ২। ৭ সেপ্টেম্বর চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নামে বিক্রম। কিন্তু চাঁদের মাটি ছোঁয়ার ২.১ কিলোমিটার উপরেই ইসরো-র সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ল্যান্ডারের। তার পর বেশ কয়েক বার বিক্রম-এর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিল ইসরো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হয়নি। পরে নাসা বিবৃতি জারি করে জানিয়েছিল, ভেঙে পড়েছে বিক্রম। বিক্রমের আছড়ে পড়ার জায়গাটি চিহ্নিত করে নাসার এলআরও। কিন্তু ধ্বংসাবশেষের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে সন্মুগের হাত ধরেই সেই ধ্বংসাবশেষের খোঁজ মিলল।