প্রজাপতি নীহারিকা। ছবি: নাসা-র ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে সংগৃহীত।
কয়েক হাজার আলোকবর্ষ দূরের কুয়াশামাখা এক জগৎ। প্রজাপতি রূপে ধরা দিয়েছে টেলিস্কোপে। সেই ‘প্রজাপতি নীহারিকা’-র দখলেই সেরা মহাজাগতিক সুন্দরীর খেতাব। নেটপাড়ায় ফের চর্চায় তার সম্মোহনী শক্তি।
পৃথিবী থেকে ৩ হাজার ৩৯২ আলোকবর্ষ দূরে রয়েছে এই ‘প্রজাপতি নীহারিকা।’ জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভাষায় তার নাম এনজিসি-৬৩০২। তিন দশক ধরে ব্রহ্মাণ্ডে নজরদারি চালানো হাবল টেলিস্কোপ (এইচএসটি) তার রূপ বন্দি করে পৃথিবীতে পাঠায়।
২০২০ সালে হাবল-স্কোপের পাঠানো মাহাকাশের সৌন্দর্য নিয়ে একগুচ্ছ ছবি প্রকাশ করে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা(নাসা)। তার মধ্যে শামিল ছিল ‘প্রজাপতি নীহারিকা’র ছবিও। তাদের মধ্যে থেকে সেরা ছবি বেছে নিতে বলা হয়। বছরের শেষ দিন, ৩১ ডিসেম্বর শেষমেশ ‘প্রজাপতি নীহারিকা’র মাথাতেই সেরার শিরোপা ওঠে।
বিগত কয়েক বছরে, নেটমাধ্যমকে কাজে লাগিয়েই বিজ্ঞানকে ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছে নাসা। তাতেই মহাকাশের অন্যতম আকর্ষণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ‘প্রজাপতি নীহারিকা’। ইংরেজিতে নীহারিকাকে ‘নেবুলা’ বলা হয়, যার আক্ষরিক অর্থ মেঘ। প্রজাপতির মতো আকৃতি বলে নাম হয়েছে ‘বাটারফ্লাই নেবুলা’।
মূলত আন্তঃনাক্ষত্রিক উপাদান ধূলিকণা এবং হাইড্রোজেন এবং হিলিয়ামের সংমিশ্রণে মহাজাগতিক মেঘের সৃষ্টি হয়। ‘প্রজাপতি নীহারিকা’র বাইরে তেমনই মেঘের আচ্ছাদন রয়েছে। সেই আবছা মেঘের ভিতরে রং-বেরংয়ের জোনাকির খেলা। তাতেই অপরূর সৌন্দর্য ‘প্রজাপতি নীহারিকা’র।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, কোনও নক্ষত্রের আয়ু যখন ফুরিয়ে যায়, তার ভিতরকার জ্বালানিও ফুরিয়ে আসে। তখন ভিতরের কণাগুলি একে অপরকে টানতে থাকে। এ ভাবে চুপসে যেতে যেতে একসময় দুম করে ফেটে যায় নক্ষত্রটি, যাকে বলা হয় ‘সুপারনোভা’। এর পর তার ভিতরে থাকা মৌলগুলি মহাকাশে ছড়িয়ে পড়ে। সেই আন্তঃনাক্ষত্রিক উপাদানগুলি অভিকর্ষজ সঙ্কোচন থেকেই নীহারিকা গঠিত হয়। যুগ যুগ ধরে এ ভাবে আন্তঃনাক্ষত্রিক উপাদানগুলি সংঘবদ্ধ হয়ে পরবর্তী কালে নতুন গ্রহ-নক্ষত্রও তৈরি হয় বলে দাবি বিজ্ঞানীদের।