এ বার একটু ভেবে কিনুন। -ফাইল ছবি।
কমলালেবু দেখলেই বাজার থেকে কিনে ফেলেন তো? আঙুর দেখলেও আহ্লাদে ভরে ওঠে মন, তাই না? তা সে দোকানদার যে দামই হাঁকুন, পকেট থেকে টাকা বার করতে দেরি হয় না।
তবে এ বার একটু সতর্ক হন। কমলালেবু, আঙুর বা বিশেষ কয়েকটি শুকনো ফল বা কিছু আনাজপাতি বা ভেষজ উদ্ভিদ খাওয়ার জন্য বাড়ি নিয়ে আসার আগে একটু ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিন।
কারণ, যে ফলগুলির মধ্যে কীটনাশক সবচেয়ে বেশি পরিমাণে মিলছে, তাদের তালিকায় প্রথমেই রয়েছে আঙুরের নাম। তার পরেই কমলালেবু। তালিকায় আরও অনেকেই রয়েছে। রয়েছে কিছু আনাজপাতি, শুকনো ফল, মটরশুঁটি, লেটুস, বিন্স, গাজর। কয়েকটি ভেষজ উদ্ভিদও।
আর এই সব ফল, কিছু শুকনো ফল, আনাজপাতি আর ভেষজ উদ্ভিদে যে শুধু দু’-একটি অত্যন্ত বিষাক্ত কীটনাশক থাকে, তা কিন্তু নয়। থাকে আমাদের শরীরের পক্ষে বিপজ্জনক অন্তত ১২২ রকমের কীটনাশক।
এই উদ্বেগজনক তথ্য দিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের অধীনস্থ সংস্থা ‘পেস্টিসাইড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক (পিএএন)’। যার সদর দফতর ব্রিটেনে।
সংস্থার সাম্প্রতিক সমীক্ষা জানিয়েছে, এই কীটনাশকগুলির প্রায় ৬৭ শতাংশই খুব বিষাক্ত। রাষ্ট্রপুঞ্জ যা মানবস্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত বিপজ্জনক কীটনাশক (‘হাইলি হ্যাজার্ডাস পেস্টিসাইডস’ বা ‘এইচএইচপি’)-এর তালিকাভুক্ত করেছে। এই কীটনাশকগুলি যে শুধুই স্বাস্থ্যের পক্ষে বিপজ্জনক তা নয়, অত্যন্ত বিপজ্জনক সুস্থ পরিবেশের পক্ষেও।
সমীক্ষার রিপোর্ট জানিয়েছে, এই ১২২টি কীটনাশকের মধ্যে ৪৭টির যে ক্যানসারে বড় ভূমিকা রয়েছে তা আগেই প্রমাণিত। ১৫টি কীটনাশক যৌনশক্তি ও প্রজনন ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। ১৭টি কীটনাশক শ্বসনতন্ত্রে জটিলতার সৃষ্টি করে। অন্তত ৩০টি কীটনাশক মানবশরীরে বিভিন্ন হরমোনের ক্ষরণের স্বাভাবিক মাত্রা বদলে দেয়। তার ফলে নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়।
গবেষকরা মূলত ব্রিটেনেই এই সমীক্ষা চালালেও বিশ্বের সর্বত্রই এই কীটনাশকগুলির ব্যবহার কৃষকরা করেন বলে এই সমীক্ষার ফলাফল সব দেশের পক্ষেই উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।