ছবি- টুইটারের সৌজন্যে।
এক মানবশিশুর জন্ম হল ৩টি পুরুষাঙ্গ নিয়ে। বিশ্বে এই প্রথম। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শিশুটির ৩টি পুরুষাঙ্গের মধ্যে মাত্র ১টির সঙ্গেই মূত্রনালী ছিল। বাকি দু’টি পুরুষাঙ্গের সঙ্গে কোনও মূত্রনালী ছিল না।
ঘটনাটি ঘটেছে ইরাকের দুহোক শহরে। চিকিৎসক মহল এই বিরল শিশুর কথা প্রথম জানতে পারে যখন তার বয়স মাত্র ৩ মাস। অস্ত্রোপচার করে বাকি দু’টি পুরুষাঙ্গ বাদ দেওয়া যায় কি না তার পরামর্শ নিতে যখন মা, বাবা চিকিৎসকদের কাছে নিয়ে যান শিশুটিকে।
চিকিৎসকদের বক্তব্য, মাতৃগর্ভে ভ্রূণ থাকা অবস্থাতেই শিশুটির শরীরে ৩টি পুরুষাঙ্গ গড়ে ওঠে।
জন্মের পর দেখা যায় শিশুটির ১টি স্বাভাবিক পুরুষাঙ্গের গোড়ার দিকে দু’পাশে ছোট ছোট আরও ২টি পুরুষাঙ্গ রয়েছে।
তবে কেন একটির পরিবর্তে ৩টি পুরুষাঙ্গ শিশুটির দেহে গড়ে উঠল, কেনই বা ৩টির মধ্যে ১টি পুরুষাঙ্গের সঙ্গেই মূত্রনালী থাকল, বাকি দু’টির সঙ্গে কেন মূত্রনালী থাকল না, তা জানতে শুরু হয়েছে গবেষণা। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক চিকিৎসা গবেষণা পত্রিকা ‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব সার্জারি কেস রিপোর্টস’-এ।
গবেষণাপত্রটি জানাচ্ছে, বাড়তি বা ‘সুপারনিউমার্যারি’ পুরুষাঙ্গ নিয়ে কোনও শিশুর জন্ম সত্যি সত্যিই অত্যন্ত বিরল ঘটনা। প্রতি ৫০ লক্ষ থেকে ৬০ লক্ষ সুস্থ শিশুর জন্মের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটে সাকুল্যে ১টি। বাড়তি পুরুষাঙ্গগুলির গঠনও এমন সব শিশুদের ক্ষেত্রে একই রকম হয় না।
পুরুষাঙ্গে সাধারণত দু’ধরনের কলা (‘টিস্যু’ বা কোষের সমষ্টি) থাকে। একটির নাম ‘কর্পাস ক্যাভারনোসাম’। অন্যটি ‘কর্পাস স্পঞ্জিওসাম’। প্রথম কলাগুলি পুরুষাঙ্গকে খাড়া করতে সাহায্য করে। আর দ্বিতীয় কলাগুলি ‘ইউরেথ্রা’ বা মূত্রনালী গড়ে তোলা ও তার মধ্যে দিয়ে বাধাহীন ভাবে মূত্র পরিবহণে সাহায্য করে।
গবেষকরা দেখেছেন, এই বিরল শিশুটির ৩টি পুরুষাঙ্গের মধ্যে ১টি-তে দু’ধরনের কলাই ছিল। কিন্তু বাকি দু’টি পুরুষাঙ্গে দ্বিতীয় কলা কর্পাস স্পঞ্জিওসাম ছিল না। ফলে ওই দু’টি পুরুষাঙ্গের সঙ্গে কোনও মূত্রনালী গড়ে ওঠেনি। তার ফলে অস্ত্রোপচার করে বাকি দু’টি পুরুষাঙ্গ বাদ দিতে সুবিধা হয়েছে, জানিয়েছেন গবেষক চিকিৎসকরা।
গবেষকরা জানাচ্ছেন, ২০০০ সালে ৮৪ বছর বয়সি এক মানুষের দু’টি পূর্ণাঙ্গ পুরুষাঙ্গের হদিশ মিলেছিল। কিন্তু তাঁর দু’টি পুরুষাঙ্গের সঙ্গেই ছিল মূত্রনালী। তাই তাঁর অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হয়নি। পরে তাঁর মৃত্যুও হয়।