ছবি: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য
বাবা-মায়ের কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে অনেক সন্তানই নানা সম্পত্তি পেয়ে থাকে। বাড়ি, জমি, ব্যাঙ্ক ব্যালান্স, কত কিছু! কিন্তু নটবরের ছেলে হরিনাথ পেয়েছিল মাত্র একটি কাঁথা। অন্য ভাই-বোনেরা সোনা-দানা টাকা-পয়সা বা সামান্য জমির ভাগিদার হলেও হরিনাথ সে সব কিছুই পায়নি এবং দাবিও করেনি। আসলে হরিনাথ চাকরি করে। কলকাতার অফিসে অনেক কষ্টে ক্ল্যারিক্যাল পোস্টের একটি চাকরি পেয়েছিল। চাকরিটাই হয়েছে এখন যন্ত্রণা। ভাই-বোনেরা সবাই মনে করেছে, ‘চাকরি করে, অতএব ওর কিছু দরকার নেই’। জমি বাড়ি সব তারাই ভোগ দখলে রেখে দিল। বাবা-মায়ের চিকিৎসার দায়, মৃত্যু-পরবর্তী শ্রাদ্ধকার্য থেকে লৌকিকতা, সব অর্থনৈতিক দায় চাপল তার ঘাড়ে। কিন্তু তাঁদের স্মৃতি হিসেবে একটি ঘটি-বাটিও তার ভাগ্যে জুটল না। মায়ের মৃত্যুর পর তাঁর বাক্সখানা খুলে সবাই কত কিছু ভাগ করে নিল, একখানি পুরনো কাঁথা শুধু পড়ে রইল। হরিনাথ সযত্নে সেটিই ব্যাগের মধ্যে ঢুকিয়ে নিয়েছিল। যে দিন মায়ের শ্রাদ্ধ সেরে শহরে ফিরে আসার জন্য তৈরি হচ্ছিল, সে দিন তার বৃদ্ধা পিসিমা এসে কানে কানে বললেন, ‘‘তুই পাইছিস আসল জিনিস। এইটা গুছিয়ে রাখিস। টাকা পয়সা সোনা-দানা এই আছে এই নাই। কিন্তু তুই যেটা পাইছিস, সারা জেবন তোর পাশে থাকবে রে বাপ।’’
হরিনাথ কিছু বুঝতে পারে না। সে অবাক হয়ে তাকাতে পিসিমা বললেন, ‘‘শোন, ওই কাঁথা হল সেই কাঁথা, যেখানে তোর ঠাকুরমার শাড়ি, তার শাশুড়ির শাড়ি, এমনকি তোর দিদিমার শাড়িও কোল পেতে রয়েছে। সেবারে বারান্দায় ফেলে এই কাঁথাখানারে কাপড় ঢাকা দেল তোর মা। সেই শেষ। তোর মা বললে, ‘দিদি, আমাগো কয় পিড়ির মাইয়ে-বৌগো চখির জল রুয়েছে এই কাঁথায়?’ তা আমি বললাম, চার পিড়ির তো হবেই। চার-চারটে মাইয়ে জেবনের গল্পকাঁথা ঢাকা সেলাই। তুমি নেচ। দেখবা এ তোমার কাজে লাগবে। নে যাও বাবা, নে যাও।’’
হরিনাথ পিসিমাকে প্রণাম করে সে দিন কাঁথাখানা বুকে জড়িয়ে ধরেছিল। মায়ের ইচ্ছে ছিল হরিনাথ বিয়ে-থা করুক এ বার। কিন্তু সে ভেবেছিল, আর একটু গুছিয়ে নিয়ে ঋণমুক্ত হয়ে তবে বিয়ে করবে। মা আর সে সময় দিলেন না। বাবা চলে গিয়েছিলেন আগে। এখন মা-ও গেলেন। কাঁথাটি ঘরে এনে বিছানায় পেতেছিল হরিনাথ। না, কোনও বেডশিটের আবরণ দিতে তার মন চায়নি। ‘মায়ের কোল কাঁথার মধ্যে... ঠাকুরমার কোল কাঁথার মধ্যে...’ পিসিমার কথাগুলো কানের ভিতর বাজতে থাকে। কাঁথার গায়ে মুখ ঠেকিয়ে মাকে, ঠাকুরমাকে, দিদিমাকে অনুভব করতে চায় হরিনাথ। শীত এলে কাঁথাখানা মুড়ি দিয়ে রাত কাটে। কম্বল বা লেপ তার ভাল লাগে না।
ক’দিন ধরে হরিনাথ বুঝতে পারছে, সে খুব একা হয়ে গিয়েছে। ভাইপোরা লেখাপড়ার খরচার জন্য আসত। ভাগ্নেরাও এসেছে। কিন্তু এখন আর কেউ আসে না। হরিনাথ নিজেকে প্রবোধ দেয়, সবাই ব্যক্তিগত ব্যস্ততায় ডুবে গিয়েছে বলেই হয়তো সময় পায় না। কিন্তু দাদা-বৌদিরা? আগে তো মাসে মাসে... নানা কথা ভাবতে থাকে হরিনাথ। ভাবতে ভাবতে ঘুম এসে যায়। সেই রাতে ঘুমের মধ্যে তার মা, দিদিমা, ঠাকুরমা সকলেই এসে হাজির হলেন। মা মাথায় হাত রাখলেন হরিনাথের।
‘‘বয়স তো অনেক হল বাবা হরিনাথ। এ বার বিয়ে কর।’’
হরিনাথ বলতে চাইল, ‘আমি বিয়ে করতে সাহস পাই নে মা...’ কিন্তু হরিনাথের মা যেন মুখের কথা কেড়ে নিয়ে বললেন,
‘‘কিসির সাহস? জেবনডা খুব বড় নয় হরিনাথ। সময়ের কাজ সময়ে না করলি জেবনের গতি হারিয়ে যায়। আমার আদেশ, তুই সামনের বোশেখের মধ্যি বে করবি।’’
হরিনাথ আর কিছু বলতে পারে না। মায়ের কথা শিরোধার্য করে। হঠাৎ জানালা দিয়ে ঝটকা হাওয়া আসতে ঘুম ভেঙে যায়। উঠে বসে সে। স্বপ্ন! কিন্তু, হরিনাথ স্পষ্ট মনে করতে পারল মায়ের মুখ, তার মা এসেছিল! এর পর আর দেরি করেনি সে। পরের বৈশাখের মধ্যে বিয়ে করেছিল। পাত্রী পেতে তেমন অসুবিধে হয়নি। অফিসের এক টাইপিস্ট তরুণী অনেক দিন ধরেই তার দিকে ঝুঁকে ছিল, হরিনাথ তেমন আগ্রহ দেখায়নি। কোলিগ বন্ধুরা চেষ্টা চালালেও বিষয়টা এগোয়নি। এখন সে রাজি হতেই টাইপিস্ট সুনন্দার সঙ্গে তার বিয়ে হয়ে গেল। না, তেমন ধুমধাম হয়নি। বন্ধু-বান্ধব এবং আত্মীয়-স্বজন মিলে শ’খানেক লোক। হ্যাঁ, দাদা-বৌদি, ভাইপো-ভাগ্নে, সবাই এসেছিল। সকলের সন্তুষ্টি বিধান করেছে হরিনাথ।
বিয়ে করে সংসারজীবন শুরু করার মুহূর্তে মা-ঠাকুরমারকাছে আশীর্বাদ চেয়েছিল হরিনাথ। নতুন ঘর, নতুন মানুষ। অন্য এক জীবন শুরু হল তার। আনন্দময় হাসিখুশি জীবন। কিন্তু সুনন্দা লক্ষ করেছে, কোনও সঙ্কটে পড়লে হরিনাথ আলমারি থেকে একটি কাঁথা টেনে বের করে। পাশের ঘরে চলে গিয়ে মুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকে। সুনন্দা কখনও জিজ্ঞেস করেনি পুরনো ওই কাঁথাখানার মধ্যে কী আছে। কিন্তু বেশ কিছু দিন ধরে তার মনের ভিতর একটি প্রশ্ন ঘুরছে। বেডশিটের সঙ্গে বেমানান জীর্ণ কাঁথা কেন? হরিনাথ শীতে ওই কাঁথা মুড়ি দিয়ে ঘুমোয়। কাঁথার পুরনো কাপড়গুলো সম্ভবত জরাজীর্ণ হয়েছে। ভিতর থেকে একটা গন্ধ বেরোয়। কিন্তু হরিনাথ নাকি কিছুই বুঝতে পারে না।
সে বার অফিসের একটা ফাইল হারিয়ে যাওয়ায় হরিনাথ খুব সমস্যায় পড়ে গিয়েছিল। সমস্ত অফিসের লোক বড়সাহেবের নির্দেশে তন্নতন্ন করে খুঁজেছিল ফাইলটা। কিন্তু হরিনাথ বুঝতে পেরেছিল, ওটা ইচ্ছে করেই হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। কে দিয়েছে তাও অনুমান করতে পারছে, কিন্তু কাউকে কিছু বলার ক্ষমতা নেই তার। বড়সাহেবের কাছ থেকে যখন শো কজ়ের চিঠি এল, তখন তার গায়ে জ্বর, হাত-পা কাঁপছে, গলায় কথা সরছে না। কোনও রকমে বাড়িতে ফিরে শরীর এলিয়ে দিল সে। তার পর সেই কাঁথাটা টেনে নিয়ে মুড়ি দিল। সারা রাত শুধু ‘মা, মা’ শব্দে কাতর আর্তি শুনেছিল সুনন্দা। ও দিকে জ্বর কিছুতেই সারে না। ডাক্তার বললেন, ‘‘মানসিক সমস্যা। কাউন্সেলিং প্রয়োজন।’’
সব রকম চেষ্টা করল সুনন্দা। স্বামীর প্রতি তার বিশ্বাস অটুট। ওই গুরুত্বপূর্ণ ফাইল কিছুতেই হরিনাথ নোংরা কাগজের সঙ্গে ফেলে দেবে না। মানুষটাকে সে চেনে। তবু দোষটা হরিনাথের ঘাড়ে চেপেছে। রাত-দিন জীর্ণ মলিন এক কাঁথা মুড়ি দিয়ে ঘরে শুয়ে কাঁপতে থাকে সে। এ দিকে সুনন্দা সন্তানসম্ভবা। কী হবে? নিজেকে সামলাতে হচ্ছে, আবার ডাক্তারের কথা মতো হরিনাথের চিকিৎসা চলছে, দুঃসহ লাগছে তার। এক দিন বিরক্ত হয়ে কাঁথাখানা নিয়ে সে ছুড়ে ফেলে দিল সিঁড়ির ঘরে। লোকটা ঘরে বসেই পাগল হয়ে গেল! এত সেন্টিমেন্টাল আর সেনসিটিভ লোককে নিয়ে পারা যায়! এর মধ্যে এক দিন খবর এল, হারানো ফাইলটি খুঁজে পাওয়া গেছে অফিসের গুদাম ঘরে। হরিনাথের আর চিন্তা নেই বলে জানিয়েছে এক অফিসার। তাকে দুঃখ প্রকাশ করে চিঠি দিয়ে জয়েন করতে বলা হয়েছে। অসতর্কতার দোষ গায়ে নিয়ে কর্মে যোগদান করতে হল। কিন্তু শরীরটা তার কিছুতেই ভাল হচ্ছে না। অফিস থেকে বাড়ি ফিরে সারা ক্ষণ ঘরের মধ্যে সেই পুরনো কাঁথাটি খুঁজে বেড়ায়। সুনন্দা বলে, ‘‘কী খুঁজছ?’’
‘‘কিছু না, এমনি,’’ হরিনাথ বলে।
‘‘এমনি-এমনি কেউ খুঁজে বেড়ায়?’’ জিজ্ঞেস করে সুনন্দা।
হরিনাথ কোনও উত্তর দেয় না। ডাক্তার বলেছে ওই কাঁথাটি আর কিছুতেই হরিনাথের সামনে না আনতে, ‘‘মায়ের আঁচলের তলায় থাকলে ছেলেপুলে সাবালক হয় না। আপনার স্বামী ওই কাঁথার মধ্যে নিজের মাকে খোঁজেন। ওটা সরিয়ে ফেলুন। না হলে উনি সংসারের দায়িত্ব নেওয়ার উপযুক্ত হবেন না।’’
ডাক্তারের কথা মেনে সুনন্দা কাঁথাটা সরিয়ে ফেলেছে ঘর থেকে।
এর কিছু দিন পর মানুষটার মধ্যে অদ্ভুত এক পরিবর্তন দেখে সুনন্দা। মুখের ভাষা কেমন রুক্ষ। কথায় কথায় রাগ। অফিসের কাউকে বিশ্বাস করে না। প্রোমোশন পাওয়ার জন্য রাত-দিন লেখাপড়া করে। কাগজে রাজনৈতিক নেতাদের ছবি দেখলে রেগে যায়। এখন আবার ইউনিয়নে যোগ দিয়েছে। সুনন্দা অবাক হয়েছিল সে দিন অফিস থেকে বেরনোর পথে হরিনাথকে দেখে। একটা টুলের উপর দাঁড়িয়ে বক্তৃতা দিচ্ছে। সামনে অফিসের জনাতিরিশ কর্মচারী।
‘‘...দাবি আদায় করে নিতে হয়। দয়ার উপর নির্ভর করে দাবি পূরণ হয় না। আপনি যত ভয় পাবেন, ষড়যন্ত্রকারীদের তত সুবিধে। ভয় পাবেন না। আমি আর ভয় পাই না।’’ হাততালি দিচ্ছে শ্রোতারা! কী পরিবর্তন! সুনন্দা মানুষটার দিকে তাকিয়ে দেখে। না, চিকিৎসায় ভালই কাজ হয়েছে।
এ দিকে দেখতে দেখতে ন’মাস কেটে গেল। সুনন্দাকে ভর্তি করা হল নার্সিং হোমে। সন্তান হবে তার। শহরের নামী নার্সিং হোমে তাকে ভর্তি করেছে হরিনাথ। তার কত যোগাযোগ এখন! অন্য একটা জগৎকে সে যেন হাতের কাছে পেয়ে গিয়েছে। কিন্তু বিধি বাম হল। সুনন্দার কন্যাসন্তানটিকে বাঁচানো গেল না। জন্মানোর পর কিছু ক্ষণ বেঁচে ছিল, তার পর সব শেষ। ডাক্তার কিছু করতে পারেননি। শূন্য বুকে ফিরে আসার দিন এক ডাক্তারবাবু মাথায় হাত রেখে বলেছিলেন, ‘‘হতাশ হবেন না। ভগবানের উপর ভরসা রাখুন।’’
বাড়ি ফিরে ঘোরতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিল সুনন্দা। অফিসে যাওয়ার ক্ষমতা ছিল না। সারা ক্ষণ কান্না আর নিজের ভাগ্যকে দোষারোপ। হরিনাথ বোঝানোর চেষ্টা করে, কিন্তু পারে না। ক্রমশ দূরত্ব বাড়ে দু’জনের। সারা দিন পর ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরে প্রতিদিন কান্নাকাটি, অশান্তি আর তার ভাল লাগে না। সুনন্দার মা অভিযোগ করেছেন, জামাই তার মেয়েকে সময় দেয় না। এক দিন বিরক্ত হয়ে হরিনাথ বলে ফেলে, ‘‘তুমি আমাকে বাঁচতে দেবে না ঠিক করেছ না কি?’’
শুয়ে শুয়েই সুনন্দা বলে, ‘‘কেন বলছ এ কথা?’’
‘‘না, সন্তান কি তোমার একার হারিয়েছে? আমার হারায়নি?’’
সুনন্দার মা বলতেন, ‘‘ও সন্তান তোমাদের থাকার ছিল না। হরিনাথের মা ছেলের সংসার দেখতে এসেছিলেন। ছেলের বৌকে দেখে চলে গিয়েছেন। বুঝলি মা, ও সব কথা মনে রাখিস না।’’
কিন্তু মনকে বোঝাতে পারে না সুনন্দা। হরিনাথ বাইরে কিছু প্রকাশ করে না। সারা দিন মিটিং আর অফিস। সুনন্দার শরীরটার কী অবস্থা যে হয়েছে, চোখে দেখা যায় না! কিছুতেই মন শক্ত করতে পারছে না সে। এক দিন বিকেলে একটু তাড়াতাড়ি ঘরে ফিরেছিল হরিনাথ। সুনন্দাকে সঙ্গ দিতে হবে। কিন্তু ঘরে ফিরে সে যা দেখল, তাতে স্তম্ভিত হওয়ার জোগাড়। সুনন্দা হরিনাথের সেই হারিয়ে যাওয়া ময়লা কাঁথাটা মুড়ি দিয়ে ‘মা, মা’ শব্দে করুণ আর্তনাদ কিংবা মিনতি জানাচ্ছে... ‘‘আমায় ক্ষমা করো মা, আমায় ক্ষমা করো...’’ বুকফাটা কান্না।
সুনন্দার মা ছিলেন পাশে, বললেন, ‘‘মাথাটা গিয়েছে গো। কাঁথাটা আগে দূর করো। ছেঁড়া পুরনো জিনিস ঘরে রাখতে নেই। এই সুনন্দা ফেল, এই কাঁথা ফেলে দে।’’
হরিনাথ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এত ক্ষণ দেখছিল, কিংবা কিছু মনে করার চেষ্টা করছিল। বলল, ‘‘আপনি একটু পাশের ঘরে যান তো মা।’’
সুনন্দার মা চলে গেলেন। হরিনাথ সুনন্দার পাশে বসে তার মাথায় হাত রাখল। নরম গলায় বলল, ‘‘কাঁথাটা খুব খুঁজেছিলাম। এখন আর খুঁজি না। দেখো, আমাকে সাত পুরুষের ভিটে ছেড়ে নতুন আশ্রয় গড়তে হয়েছে। কিন্তু আশ্রয় গড়া কি অত সোজা! আমার ঠাকুর্দা খুব বেহিসেবি ছিলেন। ওই ঠাকুরমাকে ছাড়া সংসার দাঁড় করাতে পারতেন না। আমার বাবা চিরকাল অসুস্থ, অকালে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। মা না থাকলে কী হত আমাদের ভাবতেই পারি না। ওই কাঁথাটা আমার ইতিহাস সুনন্দা। ওই কাঁথাটাই আমি... আমাদের ইতিহাস।’’
সুনন্দার দু’চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ে। হরিনাথ বুকে জড়িয়ে ধরে তাকে।