ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ৬

অচেনা স্রোত

একটু আগেই প্রিয়তোষের ওদের দেখে দারুণ একটা দম্পতি মনে হচ্ছিল, সেই ধারণাটা যেন চুরমার হতে থাকল। লিভ-ইন শব্দটাই এত দিন শুনেছেন, লিভ-ইন করা কাউকে চোখের সামনে দেখেননি।

Advertisement

কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৮:৩০
Share:

ছবি: পিয়ালী বালা

পূর্বানুবৃত্তি: মলয় কম্পিউটার খুলে মেয়েকে দিয়ে গুগল থেকে ছবি ডাউনলোড করায়, প্রিন্টআউট নিয়ে সেবন্তীকে দেখায়। শ্রীতমা-নীলেশ আসে প্রিয়তোষের ফ্ল্যাট দেখতে, ভাড়া নেবে বলে। ফ্ল্যাটের বারান্দাটা শ্রীতমার খুব পছন্দ হয়। নীলেশ জানতে চায় কবে থেকে তারা এই ফ্ল্যাটে থাকতে পারে। প্রিয়তোষ ওদের বলেন আমেরিকায় তাঁর ছেলের সঙ্গে স্কাইপ বা ইমেলে যোগাযোগ করতে। কস্তুরীর ফোন আসে, প্রিয়তোষ ধরেন না।

Advertisement

Advertisement

পিকলুর স্কাইপ আর ইমেল আইডি একটা কাগজে লিখে দিলেন প্রিয়তোষ। কাগজটা নিয়ে নীলেশ বলল, ‘‘আর একটা ব্যাপার আপনাকে বলে রাখি। আমরা কিন্তু ম্যারেড কাপ্‌ল নই। পরে যেন এটা কোনও ইস্যু না হয়।’’

প্রিয়তোষ একটু থমকে গিয়ে নিজেকে সামলে নিলেন। শ্রীতমাও একটা কাগজে ওর মোবাইল নম্বর লিখে দিয়ে বলল, ‘‘প্ল্যান চেঞ্জ হলে আমাকে জানাবেন আংক্‌ল। আগের ফ্ল্যাটটার তুলনায় আমার অনেক বেশি পছন্দ এই ফ্ল্যাটটা।’’

একটু আগেই প্রিয়তোষের ওদের দেখে দারুণ একটা দম্পতি মনে হচ্ছিল, সেই ধারণাটা যেন চুরমার হতে থাকল। লিভ-ইন শব্দটাই এত দিন শুনেছেন, লিভ-ইন করা কাউকে চোখের সামনে দেখেননি। বিয়ে না করে ওরা এই বাড়িতে থাকবে? ইপ্সি বোধহয় সে জন্যই বলেছিল, ‘‘সেজমামা, তুমি না দুনিয়াসে দো কদম পিছেই রইলে।’’

যাবার আগে শ্রীতমা বলে গেল, ‘‘আংক্‌ল, আপনার সঙ্গে আলাপ করে খুব ভাল লাগল। আমরা এখানে থাকতে আসি বা না আসি, মাঝে মাঝে কিন্তু আপনার সঙ্গে দেখা করতে চলে আসব। ব্যালকনিতে বসে আপনার সঙ্গে গল্প করে যাব।’’

শ্রীতমা কেমন যেন ঘেঁটে দিয়ে গেল প্রিয়তোষকে। দু’মাসের ওপর এই ফ্ল্যাটে আছেন। কিন্তু ওরা চলে যাওয়ার পর যে রকম শূন্যতা গ্রাস করল, কখনও তা অনুভব করেননি। প্রায় সাড়ে বারোটা বাজে। এখানকার সময় ধরলে সুতপাকে আমেরিকায় একটা পর্যন্ত ফোন করা যায়, স্কাইপে নাতিটাকেও দেখা যায়। সব জানাতে হবে ওকে। কিন্তু সুতপাকে ফোন করতে একটা আলসেমি এল।

লিভ-ইন আর বিবাহিত দাম্পত্যের তফাতটা ঠিক কোথায়, মনের মধ্যে প্রশ্নটা ভেসে উঠল প্রিয়তোষের। সুতপার সঙ্গে এই দীর্ঘ দাম্পত্যজীবনে যে প্রশ্নগুলো কখনও বিব্রত করেনি, সেগুলোই হঠাৎ জবাবদিহি চাইতে শুরু করল। সুতপা শুধু এখানকার খবর চায়, ঠিক করে খাওয়াদাওয়া করছে কি না জানতে চায়, শরীরস্বাস্থ্যের খোঁজ নেয়, এয়ার কন্ডিশনার থেকে ওয়াশিং মেশিন ঠিক চলছে কি না জানতে চায়। কী করতে হবে, কী করা উচিত নয়, জানাতে চায়। কিন্তু তার বাইরে?

সুতপার ফেসবুক আছে। ইপ্সি তো ওর ফেসবুকে গল্পের লিংকটা দিয়েছিল। সেটাও সুতপার কাছে ছিল একটা খবর। গল্পটা পড়ে এক বারও জানায়নি কেমন লেগেছে। এক বারও বলেনি, তুমি নিজের গলায় এক দিন গল্পটা পড়ে শুনিও, আমি চুপ করে বসে শুনব। গল্পের কথাটা হয়তো এত দিনে ভুলেও গিয়েছে। আদৌ পড়েছে কি? বিয়ের পঁয়ত্রিশ বছর পর প্রিয়তোষের আজ হঠাৎ করে মনে হচ্ছে, দাম্পত্য মানে কী শুধুই বাঁধাধরা রুটিনে করে যাওয়া কিছু শারীরিক আর সাংসারিক কর্তব্য?

রুটিন অনুযায়ী এখন স্নান করতে যাওয়ার কথা। যেতে ইচ্ছে করছে না প্রিয়তোষের। ফাঁকা বাড়িতে বুকের মধ্যে অভিমানের বাষ্পগুলো বাড়তে থাকল। মোবাইল নিয়ে বারান্দায় এসে বসলেন। অভিমান থেকেই কস্তুরীর কথা মনে পড়ল। মেয়েটা হোয়াট্‌সঅ্যাপ নম্বর চেয়েছিল। গল্প পাঠাত। আমেরিকায় কথা বলা আর ছবি দেখার জন্য প্রিয়তোষ ল্যাপটপে স্কাইপটা শিখে নিয়েছেন। হোয়াট্‌সঅ্যাপের দরকার হয়নি। এ বার শিখতে হবে। সুতপাও এক দিন বলেছিল, ‘‘ঝর্নার পর্যন্ত আছে, তোমার নেই! এত কিছু শিখলে আর এটা শিখতে পারলে না? এটা আজকের দিনে কত দরকারি জানো? নাতিটার কত ছবি, ভিডিয়ো পাঠাতে পারতাম তোমাকে!’’

ছবি! কস্তুরী দেখতে কেমন? মনের মধ্যে অবশ্য ওর একটা ছবি আঁকা হয়ে আছে। কিন্তু বাস্তবে কস্তুরী দেখতে কেমন? আনমনা হয়ে প্রিয়তোষ ফোন করে ফেললেন কস্তুরীকে। ও প্রান্তে রিং হতেই মনের মধ্যে একটা দোলাচল শুরু হয়ে গেল। একটু আগে মেয়েটা যখন ফোন করেছিল, তখন ফোনটা কেন ধরেননি, মেয়েটাকে যুক্তিগ্রাহ্য কী বলবেন? মনে মনে আওড়ালেন, ‘‘স্যরি, স্নান করতে গিয়েছিলাম বলে তোমার ফোনটা ধরতে পারিনি।’’

ফাঁকা বাড়িতে এই অনায়াস মিথ্যার রিহার্সালটা বুঝি আকাশের মেঘগুলো শুনে ফেলল। গুড়গুড় আওয়াজ করে ঝিরঝির বৃষ্টি নামাতে শুরু করল। এ এক অদ্ভুত সময় এখন, বর্ষার মেঘের সঙ্গে শরতের মেঘের লুকোচুরি খেলা চলছে।

বাইরে ঝমঝম বৃষ্টি। বালিশচাপা ফোনটা যে বাজছে, প্রথমে শুনতেই পায়নি রৌনক। ফোনের স্ক্রিনে ‘কলিং হৃষিতা’ দেখে বেশ অবাকই হল। মাসখানেক আগে এক রবিবার সকালে মোবাইল নম্বরটা আদানপ্রদান করেছিল, তার পর থেকে মেয়েটা আর একটাও ফোন করেনি। বারান্দায় দাঁড়িয়ে সকালে জগিং করতেও দেখেনি বেশ কিছু দিন। রৌনক প্রায় ভুলতেই বসেছিল হৃষিতাকে। খাটে শুয়েই ফোন ধরে ঘুমজড়ানো গলায় বলল, ‘‘হ্যালো! কেমন আছ?’’

‘‘গুড মর্নিং। গলা শুনে তো রবিবারের ঘুমটা ভাঙেনি মনে হচ্ছে।’’

‘‘মর্নিং। ক’টা বাজে?’’

‘‘সাড়ে ন’টা বাজতে চলল। আজ কি তোমার স্টুডেন্টরা আসবে না?’’

রৌনক আড়মোড়া ভেঙে বলল, ‘‘ওদের সামনের সপ্তাহ থেকে পরীক্ষা। শেষ হতে হতে সেই মহালয়া। পুজোর আগে আর ওদের ক্লাস হবে না।’’

একটু চুপ করে থেকে হৃষিতা বলল, ‘‘আমি ডিসাইড করে ফেলেছি।’’

‘‘কী?’’

‘‘আমি ওদের সঙ্গে তোমার কাছে মিউজিক শিখব। ভেবেছিলাম আজ থেকেই শুরু করব। কিন্তু আজ তো তোমার ক্লাস হচ্ছে না। তুমি তো বলছ, আবার সেই পুজোর পর।’’

দু’টো ঋতুর সন্ধিক্ষণ চলছে এখন। বর্ষাটা যাব যাব করেও যাচ্ছে না, শরৎটা আসব আসব করেও যেন আসার জায়গাটা পোক্ত করে উঠতে পারছে না। আচমকা এ রকম বৃষ্টি। ফাঁকা বাড়িতে রবিবারটা স্যাঁতসেঁতে হয়ে আছে। রৌনকের মনটা খুশি হয়ে উঠল। বলল, ‘‘উমম, শেখার ব্যাপারে তুমি সত্যি সিরিয়াস হলে, ইউ আর অলরেডি ওয়ান মান্থ লেট। সত্যি ইন্টারেস্টেড হলে আর একটা সানডে মিস কোরো না। আজ থেকেই শুরু করে দাও। পুজোর পর পর্যন্ত অপেক্ষা কোরো না। উৎসাহটা হয়তো অত দিন না-ও থাকতে পারে।’’

হৃষিতা একটু চিন্তিত গলায় বলল, ‘‘সবই বুঝলাম। কিন্তু আমার তো গিটার নেই!’’

হেসে ফেলল রৌনক, ‘‘আরে ও ভাবে মিউজিক শেখা হয় না কি? দোকানে গিয়ে বললাম, দাদা একটা গিটার দিন তো! দোকানদার দেখাল একটা কিছু। সেটা কিনে ফেললাম। তার পর এক জন মাস্টারমশাইয়ের কাছে সেটা নিয়ে গিয়ে বললাম, স্যর, এটা কী করে বাজাতে হয় শিখিয়ে দিন তো!’’

হৃষিতা মনে মনে হাসল। ও পক্ষের শেখানোর আগ্রহটা ওর শেখার আগ্রহের চেয়ে কিছু কম নয়। বলল, ‘‘বুঝেছি স্যর। ঠিক আছে, কখন আসব?’’

‘‘চলে এসো। আমি ওয়েট করছি। আর্ল গ্রে’টা একসঙ্গে খাব।’’

মিনিট কুড়ির মধ্যে চলে এল হৃষিতা। বাইরে বৃষ্টিটা ধরে এসেছে। হৃষিতা অন্য টাওয়ারে থাকে। ছাতা নিয়ে এলেও বৃষ্টির ছাঁটের বিন্দু বিন্দু চিহ্ন গোলাপী টি-শার্টে ফুটে রয়েছে। ফ্ল্যাটে ঢোকার আগে প্যাসেজে ছাতাটা শুকোতে দিল হৃষিতা।

‘‘ভেতরে রাখো। বাইরে যদি চুরি হয়ে যায়?’’

‘‘কিচ্ছু হবে না।’’ হৃষিতা রৌনকের সাবধানবাণীকে পাত্তা দিল না।

‘‘এসো, চা খেতে খেতে কথা বলে নিই।’’

ডাইনিং টেবিলে হৃষিতাকে বসিয়ে চা করে এনে রৌনক বলল, ‘‘তা হলে, তুমি গিটার শিখতে চাও। কিন্তু, অব অল দ্য ইন্সট্রুমেন্টস, গিটার কেন?’’

হৃষিতা হাসল, ‘‘অ্যাকচুয়ালি আমি নিজেই শিয়োর ছিলাম না কী শিখতে চাই। আমি জানতামই না তুমি গিটার শেখাও। শুনেছিলাম তোমার মা এখানে গান শেখান। কিন্তু যে রবিবার তোমার স্টুডেন্টদের দেখলাম এত সুন্দর ‘ভারত হমকো জান সে প্যায়ারা হ্যায়’ গাইছে, মনে হল আমিও যদি ওদের মতো গিটার বাজিয়ে গান শিখতে পারি! একটু হেজিটেশন ছিল। পরে ডিসিশনটা নিয়েই ফেললাম। তোমার কাছে শিখতে চাই। অবশ্য তুমি যদি শেখাও।’’

‘‘এক মাস লাগল ডিসিশন নিতে?’’

‘‘ইচ্ছেটা ছিলই। কিন্তু উপায় ছিল না। লাস্ট এক মাস আমি মুম্বইতে ছিলাম। ওখানে গত সপ্তাহে কী রকম বৃষ্টি হয়েছিল, জানোই তো। হোটেলে আটকে আছি, চারদিক ভেসে যাচ্ছে। হোটেলের জানলা দিয়ে বানভাসি মুম্বইকে দেখতে দেখতে ডিসিশনটা নিয়ে ফেললাম। এক বার ট্রাই তো করে দেখি!’’

‘‘বেটার লেট দ্যান নেভার। গান শোনো তুমি?’’

‘‘একটা সময়ে প্রচুর শুনতাম। কানে সব সময় ইয়ারফোন লাগানো থাকত। রক, মেটাল, জ্যাজ, সব কিছু। এখন সময় পেলে শুনি।’’

‘‘মানে পিংক ফ্লয়েড থেকে জাস্টিন বিবার,
এড সেরন।’’

‘‘পুরনো গানও। নীল ডায়মন্ড আমার ভীষণ প্রিয়, স্যুইট ক্যারোলাইন, হোটেল ক্যালিফর্নিয়া।’’

‘‘আমারও এক জন সাহেবের পুরনো দিনের গান খুব প্রিয়। লায়োনেল রিচি। কিন্তু তুমি মায়ের কাছে কী শিখবে ভেবে এসেছিলে?’’ রৌনক হাসতে থাকল, ‘‘মা কিন্তু এ সব শেখায় না। ওনলি রবীন্দ্রসঙ্গীত, তাও হারমোনিয়ামে।’’ রৌনক গেয়ে উঠল, ‘দাঁড়িয়ে আছ তুমি আমার গানের ও পারে...’

ছেলেটা ইমপ্রেস করার চেষ্টা করছে। তবে গলাটা সত্যিই ভাল। হৃষিতা প্রশংসা করল, ‘‘বাহ্‌! তোমার গলা তো দারুণ!’’

‘‘আমি ছোটবেলা থেকে মায়ের কাছে গান শিখেছি। এখনও মায়ের কাছে শিখতে বসলে হারমোনিয়াম নিয়েই বসি।’’

‘‘তা হলে গিটার কবে শিখলে?’’

‘‘ওই নাইন-টেন থেকে। ওই বয়সে সবাই যেমন স্বপ্ন দেখে, আমিও দেখতাম। ভাবতাম একটা ব্যান্ডের লিড গিটারিস্ট হব। তার পর সব কিছু ঘেঁটে গেল।’’ রৌনক চুপ করে গেল।

হৃষিতা কৌতূহলী হল, ‘‘মানে?’’

একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে রৌনক বলল, ‘‘থাক, আর এক দিন বলব। আমি এখন একটা স্টুডিয়োতে সাউন্ড ডিজাইনারের কাজ করি। বাই দ্য ওয়ে, আমার জানা হয়নি তুমি কী করো?’’

হৃষিতা মজা করল, ‘‘পুরো বায়ো দিতে হবে?’’

‘‘ঠিক তা নয়। আমি আসলে জানতে চাইছিলাম, তুমি প্র্যাকটিস করার জন্য কত ক্ষণ সময় দিতে পারবে?’’

‘‘আমিও চাকরি করি। একটা আই-টি ফার্মে। এইচআর ম্যানেজার। আটটার মধ্যে বাড়ি ফিরে আসি। আমাদের অ্যাকচুয়ালি দু’টো ফ্ল্যাট। একটায় বাবা-মা থাকে, আর একটায় আমি। কেউ ডিস্টার্ব করার নেই। আই হোপ, অফিস থেকে ফিরে নিরিবিলিতে কিছু ক্ষণ প্র্যাকটিস করতে পারব। আচ্ছা, গিটারটা কিনতে তুমি হেল্প করতে পারবে?’’

রৌনক হাসল, ‘‘কী গিটার কিনবে?’’

‘‘সেটা তো তুমি বলবে। ওই আগের দিন তুমি যে রকম তোমার স্টুডেন্টদের শেখাচ্ছিলে।’’

‘‘অ্যাকোয়াস্টিক সিক্স-স্ট্রিং গিটার। দাঁড়াও।’’ রৌনক ভেতর থেকে একটা গিটার নিয়ে এসে বলল, ‘‘এই নাও, দেখো।’’

হৃষিতা গিটারটা একটু ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দেখে সাবধানে কোলে নিয়ে তারগুলোর ওপর হাত বুলিয়ে অল্প আওয়াজ তুলল। ওর মুগ্ধ চোখমুখের দিকে তাকিয়ে রৌনক বলল, ‘‘একটু টেকনিক্যাল এরর আছে, কিন্তু গিটারটা মোটামুটি ঠিক ধরেছ। আর একটু কোলের দিকে নিয়ে বসো। আজ থেকেই শুরু করা যাক। দাঁড়াও, আর একটা গিটার নিয়ে আসি। তুমি চেয়ারটা নিয়ে বসার ঘরে গিয়ে বসো।’’

রৌনক ভেতর থেকে আর একটা গিটার নিয়ে এসে চেয়ার টেনে হৃষিতার মুখোমুখি বসে বলল, ‘‘শুরু করার জন্য আজ একটা ওয়ান্ডারফুল দিন। বাইরে কী সুন্দর বৃষ্টি! চলো, আজকের ফার্স্ট লেস্‌নটা আমরা বৃষ্টিকে ডেডিকেট করি।’’

উদাস গলায় হৃষিতা বলল, ‘‘বৃষ্টি তত ক্ষণই রোম্যান্টিক, যত ক্ষণ না সেটা বানভাসি হয়ে জীবন দুর্বিষহ হয়ে যায়।’’

‘‘মানে?’’

‘‘চার দিকের বন্যার ছবিগুলো দেখেছ? নর্থ বেঙ্গল টু মুম্বই?’’

রৌনক ঠিক বুঝল না, হৃষিতা কী প্রসঙ্গে এটা বলছে। গিটারে ফিরে বলল, ‘‘টু স্টার্ট উইথ, আমরা স্টাফ নোটেশনে শিখব। স্টাফ নোটেশন কী ভাবে লিখতে হয়, পরে শেখাব। আপাতত বলি, সারেগামার মতো ওয়েস্টার্ন মিউজিকেও বারোটা নোট। এ, বি, সি, ডি থেকে জি পর্যন্ত সাতটা। তা ছাড়া, এ, সি, ডি, এফ, জি’র একটা করে মোট পাঁচটা শার্প নোটও আছে। এই বারোটা নোট নিয়ে একটা অক্টেভ। তুমি যে তারগুলো এখুনি বাজালে, ওগুলোকে ওপ্‌ন স্ট্রিং বলে। স্ট্যান্ডার্ড টিউনিংয়ে এক-একটা তার এক-একটা নোটে টিউন করা আছে। এগুলো ই, বি, জি, ডি, এ, ই। আরও অনেক ভাবে টিউন করা যায়, যেমন ধরো, ই, বি, জি, ডি, এফ...’’

ক্রমশ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement