—প্রতীকী ছবি।
টানা সাতটি সেশন ধরে নিম্নমুখী শেয়ার সূচক। এর জেরে লগ্নিকারী থেকে শুরু করে আর্থিক বিশেষজ্ঞ— সকলেরই কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। সেনসেক্স ও নিফটির এ হেন পতনের জন্য বিদেশি বিনিয়োগকারীদের (ফরেন পোর্টফোলিও ইনভেস্টরস বা এফপিআই) বাজার থেকে টাকা তুলে নেওয়াকেই দায়ী করেছে অধিকাংশ ব্রোকারেজ ফার্ম।
তথ্য বলছে, চলতি বছরের অক্টোবরে বাজার থেকে উবে গিয়েছে ১ লক্ষ ১৩ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকা। নভেম্বরের প্রথমার্ধে সেই অঙ্ক বেড়ে ২২ হাজার ৪২০ কোটিতে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অর্থের সিংহভাগই বিদেশি লগ্নিকারীরা তুলে নিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। হঠাৎ করেই তাঁদের ভারতের বাজার থেকে মুখ ফেরানোর নেপথ্যে একাধিক কারণের কথা বলেছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিষয়টিকে বিশদ ব্যাখ্যা করেছেন ব্রোকারেজ ফার্ম ‘জিওজিৎ ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস’-এর চিফ ইনভেস্টমেন্ট স্ট্যাটেজিস্ট ভি কে বিজয়কুমার। তাঁর কথায়, ‘‘এফপিআইদের টাকা তুলে নেওয়ার প্রবণতার নেপথ্যে মূলত তিনটি কারণ রয়েছে। সেগুলি হল, ভারতের উচ্চ মূল্যায়ন, আয় হ্রাসের উদ্বেগ এবং নবনির্বাচিত আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি।’’
এ বছরের নভেম্বরে বিদেশি লগ্নিকারীরা এখনও পর্যন্ত অফলোডিং করেছেন ৩২ হাজার ২৫১ কোটি টাকা। কিন্তু মজার বিষয় হল, প্রাথমিক বাজার থেকে মাত্র ৯ হাজার ৯৩১ কোটি টাকা তুলেছেন তাঁরা। ফুড ডেলিভারি সংস্থা ‘সুইগি’ এবং গাড়ি নির্মাণকারী কোম্পানি ‘হুন্ডাই’-এর বিপুল অঙ্কের আইপিওর আকর্ষণ এখনও তাঁদের চুম্বকের মতো টানছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের কথায়, সেকেন্ডারি মার্কেটে বড় আইপিওর মাধ্যমে বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক লগ্নিকারীদের (ফরেন ইনস্টিটিউশনাল ইনভেস্টর বা এফআইআই) কিছু স্টক বিক্রি প্রাথমিক বাজারে ভারসাম্য আনতে সাহায্য করেছে। বছর শেষ হয়ে আসায় এফআইআইগুলি যে বিক্রির পরিমাণ কমিয়ে দেবে, সেটাই প্রত্যাশিত।
বিজয়কুমার জানিয়েছেন, ট্রাম্পের জয় আমেরিকার ইক্যুইটি এবং বন্ড মার্কেট দু’টিকেই প্রভাবিত করেছে। নির্বাচনে কর্পোরেট কর কাটা কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এই রিপাবলিকান নেতা। এর ফলে তিনি জেতায় ইক্যুইটি শেয়ারের দাম বাড়তে শুরু করেছে। অন্য দিকে সম্ভাব্য ক্রমবর্ধমান রাজস্ব ঘাটতির কারণে বন্ডের বাজার প্রভাবিত হয়েছে। এই দু’টি কারণে বিদেশি লগ্নিকারীরা ভারতের থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন।
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: শেয়ার বাজারে লগ্নি বাজারগত ঝুঁকি সাপেক্ষ। আর তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনেই স্টকে বিনিয়োগ করুন। এতে আর্থিক ভাবে লোকসান হলে আনন্দবাজার অনলাইন কর্তৃপক্ষ কোনও ভাবেই দায়ী নয়।)