ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ৩

অচেনা স্রোত

একটা পাখির ডাক। হৃষিতা চোখ তুলে দেখল, বারান্দার রেলিংয়ে ছোট্ট একটা পাখি বসে। লম্বা লেজটা তেরচা হয়ে উঠে তিরতির কাঁপছে। আর মাঝে মাঝে টিউউ... করে ডাকছে। পাখির ডাকটা শুনে মনটা কী রকম আনমনা হয়ে উঠল।

Advertisement

কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৭ ০৭:৩০
Share:

ছবি: পিয়ালী বালা

পূর্বানুবৃত্তি: লিফটে নামার সময় সোমনাথ প্রিয়তোষকে বলেন, টাওয়ার-বি’তে রবিবারের আড্ডায় প্রিয়তোষকে নিয়ে যেতে চান তিনি। ভাগনি ঈপ্সিতা ফোনে জানায়, ‘মৃগনাভি’ নামের এক মহিলা ফ্যান প্রিয়তোষকে ফোন করতে পারেন। লিফটে প্রিয়তোষের দেখা হয় হৃষিতার সঙ্গে। হৃষিতা যাচ্ছে রৌনকের ফ্ল্যাটে, সে শুনেছে, রৌনকের মা সেখানে একটা গানের স্কুল চালান। রৌনক চা বানিয়ে নিয়ে আসে, খেতে খেতে কথা হয় দু’জনের।

Advertisement

রৌনক গলাটা একটু পরিষ্কার করে নিয়ে বলল, ‘‘আজ আপনি এসে ভালো হয়েছে। আপনি থাকলে দুটো উপকারও হবে আমার।’’

Advertisement

‘‘উপকার?’’ অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল হৃষিতা।

‘‘আপনি অ্যাট লিস্ট বলতে পারবেন, আমরা মিউজিকের নামে নয়েজ পলিউশন করছি কি না। জানেন, পাশের ফ্ল্যাট থেকে কমপ্লেইন করেছে, আমি গিটার বাজিয়ে শব্দদূষণ করে প্রতিবেশীর শান্তি নষ্ট করছি। তা ছাড়া সামনের স্বাধীনতা দিবসে একটা প্রোগ্রামের জন্য ওদের একটা গান তুলিয়েছি। শুনে বলবেন কেমন পারফর্ম করছে।’’ রৌনক ঘড়ি দেখে বলল, ‘‘আপনি বসুন। আমি একটু রেডি হয়ে নিই। ওরা এক্ষুনি আসবে।’’

রৌনক ভেতরের ঘরে যেতে হলটা নিস্তব্ধ হয়ে গেল। একা একা টেবিলে বসে কিছু করার নেই। খবরের কাগজটা টেবিলের ওপর পড়ে ছিল। হৃষিতা আলগোছে পাতা ওলটাতে লাগল।

টিউউ...টিউউ... টিউটিউ...

একটা পাখির ডাক। হৃষিতা চোখ তুলে দেখল, বারান্দার রেলিংয়ে ছোট্ট একটা পাখি বসে। লম্বা লেজটা তেরচা হয়ে উঠে তিরতির কাঁপছে। আর মাঝে মাঝে টিউউ... করে ডাকছে। পাখির ডাকটা শুনে মনটা কী রকম আনমনা হয়ে উঠল। হৃষিতা পাখিটার দিকে তাকিয়ে ঠোঁট সরু করে শিস দেওয়ার চেষ্টা করল। শিসটা ফুটে উঠল না।

কলিং বেলটা বেজে উঠল। বেলের আওয়াজে পাখিটা উড়ে গেল। হৃষিতা উঠে গিয়ে দরজাটা খুলল। বাইরে দু’জন মহিলা দাঁড়িয়ে আছেন। সঙ্গে বছর দশেকের একটা বাচ্চা ছেলে, আর সমবয়সি একটা মেয়ে। তাদের পিঠে গিটারের বাক্স। হৃষিতার বুঝতে অসুবিধা হল না, এরাই এই মিউজিক স্কুলের ছাত্রছাত্রী।

‘‘রৌনক নেই?’’ এক ভদ্রমহিলা জিজ্ঞেস করলেন। হৃষিতা ওদের মুখচোখ দেখে বুঝতে পারল, ওরা যেন এই সকালবেলায় ওকে দেখে একটু অবাকই হয়েছে। তবে একটা জিনিস জানা হয়ে গেল, ছেলেটার নাম। রৌনক।

‘‘আসুন, রৌনক ভেতরে আছে।’’

মহিলা দু’জন হাসলেন। তার পর ভেতরে ঢুকে খাওয়ার টেবিলের ওপর নিজেদের ব্যাগগুলো রাখলেন। বাচ্চাদু’টো শান্ত। এক জন এক দিকে গোল করে গুটিয়ে রাখা কার্পেটটা বিছিয়ে দিয়ে গিটারের বাক্স থেকে গিটার বার করল। তার পর টুংটুং করে একমনে গিটারের তারগুলো বাঁধতে থাকল।

গিটারের আওয়াজ শুনে ভেতরের ঘর থেকে রৌনক উঁচু গলায় বলল, ‘‘রেডি? শুরু কর তোরা। আমি শুনছি।’’

ওরা গিটার বাজিয়ে গাইতে শুরু করল, ‘‘ভারত হমকো জান সে প্যায়ারা হ্যায়, সবসে নিয়ারা গুলিস্তাঁ হমারা হ্যায়...’’

হৃষিতা দেওয়ালের এক দিকে পিঠ ঠেস দিয়ে বসে পড়ল। বিভোর হয়ে গানটা শুনতে শুনতে চোখ দু’টো বন্ধ হয়ে গেল। বোজা চোখেও যেন দেখতে পাচ্ছে, ভারতবর্ষের তেরঙা পতাকাটা পতপত করে উড়ছে। তার সামনে গিটার হাতে গানের সুরে ওর ঠোঁটদু’টো কেঁপে চলেছে।

দু’সপ্তাহ আগে এক রবিবারে সোমনাথ বিশ্বাসকে ঠেকাতে পেরেছিলেন প্রিয়তোষ। আজ পারলেন না। একদম বাড়ি বয়ে জবরদস্তি প্রিয়তোষকে ধরে নিয়ে নীহার সরখেলের ফ্ল্যাটে ঢুকে সোমনাথ উদাত্ত গলায় বললেন, ‘‘দেখুন নীহারদা, কাকে পাকড়াও করে নিয়ে এলাম। মিস্টার প্রিয়তোষ চ্যাট্যার্জ্জি।’’

‘‘আসুন, আসুন।’’ নীহার সরখেল সাদর আপ্যায়ন করলেন, ‘‘সোমনাথ কালই বলছিল আপনার কথা।’’

পরিপাটি ইন্টিরিয়র করা ফ্ল্যাটে ঢুকে প্রিয়তোষ দেখলেন, আরও কয়েক জন বসে রয়েছেন। অনেকেরই মুখ চেনা তবে আলাপ নেই। আলাপ করার পর্বটা সোমনাথই মিটিয়ে দিলেন। সৌমিত্র দত্ত, অতনু পাল, হিমাংশু ঘোষ। প্রিয়তোষ খেয়াল করলেন, এদের নিজেদের মধ্যে বেশ ভালই আলাপ আছে। পরিচয়ে জানা গেল, সকলে বেশ গণ্যমান্য চাকুরে বা প্রতিষ্ঠিত ব্যবসাদার। নিজেকে একটু খাপছাড়া মনে হল। নিজে একটা বেসরকারি সংস্থার সামান্য পদ থেকে রিটায়ার করেছেন। গর্ব করে বলার মতো আছে আমেরিকা প্রবাসী ছেলে পিকলু, যে এখানকার ফ্ল্যাটটা কিনে রেখেছে।

হিমাংশু ঘোষ বললেন, ‘‘দাদা, তাস চলে? ব্রিজ বা রামি?’’

ব্রিজটা অল্পস্বল্প খেলতে জানেন প্রিয়তোষ। তবে অস্বস্তির জন্য মুখটা নামিয়ে বললেন, ‘‘না।’’

‘‘আপনাকে দেখেই অবশ্য মনে হচ্ছে নিপাট ভালোমানুষ আপনি। রাম, রামি কিছুই চলে না।’’

শুকনো হেসে প্রিয়তোষ মাথাটা নিচু করলেন। সেন্টার টেবিলের কাচের নীচে একটা পূজাবার্ষিকী। প্রিয়তোষের মনে হল, এই পূজাবার্ষিকীর কোনও এক আগামী বছরে হয়তো নিজেরও একটা লেখা থাকবে। তার পরেই মনটা দমে গেল। গল্পটা কাগজে বেরনোর পর দু’সপ্তাহ ধরে অনেক চেষ্টা করছেন। কিন্তু কিছুতেই কোনও গল্প শেষ আর হচ্ছে না।

গৃহকর্ত্রী শ্রাবন্তী সরখেলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার পর সোমনাথ আবদারের সুরে বললেন, ‘‘বউদি, মনে আছে তো? আজ কিন্তু লুচি আর কালোজিরে দিয়ে সাদা আলুর তরকারি। দাদাও এসেছেন আজকে। একাই থাকেন।’’

প্রিয়তোষ মৃদু প্রতিবাদ করে উঠলেন, ‘‘আমি কিন্তু ব্রেকফাস্ট করে এসেছি।’’

‘‘আরে ছাড়ুন তো মশাই ওই খটখটে পাউরুটির ব্রেকফাস্ট! বাঙালির রবিবারের সকালে জলখাবারে লুচি আর দুপুরে কচি পাঁঠার মাংসের ঝোল ছাড়া হয়
না কি!’’

অতনু যোগ করলেন, ‘‘তার পরেই একটা জমিয়ে ভাতঘুম। ঘুমটা ভাঙলেই রবিবার শেষ। উফ মশাই, সেই স্কুল লাইফ থেকেই রবিবার সন্ধে হলেই আমার মনখারাপ শুরু হয়ে যায়।’’

কিছু ক্ষণ হাসিঠাট্টা-আড্ডার পর প্রিয়তোষ বুঝতে পারলেন, সোমনাথ কেন জোর করে এই ফ্ল্যাটে ধরে নিয়ে এলেন। ‘‘শুনুন মিস্টার চ্যাটার্জ্জি, এ বার কিন্তু আমাদের এখানকার এই সোসাইটির একটা স্ট্রং কমিটি করা দরকার। সিরিয়াসলি। প্রদীপ বর্মন প্রোমোটার বলে নিজের পছন্দের লোক নিয়ে একটা গ্রুপ করে রেখেছে। এখন ওদের নিয়েই সোসাইটির কমিটি করার মতলবে আছে। ভেস্টেড ইন্টারেস্ট, বোঝেনই তো! আরে মশাই, আমাদের জায়গার ওয়েলফেয়ার অ্যাক্টিভিটি কী হবে সেটা আমরা ঠিক করব। আমরা কি বসে থাকব? ওরা করলে আমরাও পালটা করব। আমি অফিসে সিরিয়াস রাজনীতি-করা লোক। সব প্ল্যান মাথায় ছকে নিয়েছি।’’

প্রিয়তোষের পকেটে ফোনটা বেজে উঠল। সিএলআই-তে অচেনা নম্বর। প্রিয়তোষ ফোনটা ধরে অনুচ্চ গলায় ‘হ্যালো’ বললেন।

‘‘নমস্কার। আমি কি প্রিয়তোষ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলছি?’’ এক অচেনা নারীর গলা।

প্রিয়তোষ খেয়াল করলেন, ফোনটা আসাতে অন্যরা চুপ করে গিয়েছেন। তাতে অস্বস্তিটা আরও বাড়ল। কোনও রকমে বললেন, ‘‘বলছি।’’

‘‘আমার নাম কস্তুরী গুপ্ত। আপনার ‘অপেক্ষা’ গল্পটা পড়েছি। অপূর্ব লেগেছে আমার। অনেক দিন পরে একটা গল্প পড়ে মনটা একেবারে ভরে গিয়েছে। তার রেশটা আজও মনে রয়ে গিয়েছে। অনেক দিন আগেই ঈপ্সিতার থেকে আপনার নম্বরটা পেয়েছিলাম। ফোন আর করা হয়ে উঠছিল না।’’

যে রবিবার কাগজে গল্পটা বেরিয়েছিল, সে দিনই ইপ্সি বলেছিল, এক জন মহিলা ফ্যান ফোন করবে। নামটা বলেছিল মৃগনাভি। প্রিয়তোষ ভেবেছিলেন ঠাট্টা। মৃগনাভির সঙ্গে কস্তুরী নামের ইঙ্গিতটা মিলে গেল। দু’সপ্তাহ পরে রবিবারের সেই কাগজটা যখন ঠোঙা হয়ে গিয়েছে, তখন এক জন পাঠিকা গল্পটা মনে রেখে সত্যিই ফোন করাতে প্রিয়তোষের প্রচণ্ড আক্ষেপ হতে শুরু করল, কেন আজই নীহার সরখেলের ফ্ল্যাটে এলেন। আজ পর্যন্ত বন্ধুবান্ধব-আত্মীয়স্বজন যে ক’জন ফোন করেছে, কেউ গল্পটা পড়ে ফোন করেনি। এই প্রথম এক জন সত্যিকারের পাঠিকা ফোন করেছে। কোনও রকমে নিচু গলায় বললেন, ‘‘আমি আসলে এখন একটা জায়গায় আছি। আমি যদি একটু পরে আপনাকে ফোন করি, কিছু মনে করবেন?’’

কস্তুরী ব্যস্ত হয়ে বলে উঠল, ‘‘স্যরি, স্যরি। আমিই আপনাকে পরে ফোন করব।’’

ফোনটা ছাড়তে সোমনাথ বিশ্বাস প্রিয়তোষকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘‘আপনার কী প্ল্যান বলুন তো মশাই?’’

প্রিয়তোষ থতমত খেলেন, ‘‘প্ল্যান মানে?’’

‘‘ওই নাতির ন্যাপি পালটাতে ফুড়ুৎ করে কবে আমেরিকায় উড়ে যাবেন? বউদি কবে ফিরে আসছেন? তার পরই তো আপনার পালা, সে দিন বলছিলেন।’’

কথাটা সত্যি হলেও, সোমনাথ বিশ্বাসের বলার ভঙ্গিটা প্রিয়তোষের ভালো লাগল না। নাতিটার এক মাস মোটে বয়স। ছেলে-বউমা দু’জনেই চাকরি করে। বাচ্চাটাকে দেখার একটা নিজের লোক চাই। মুক্তারামবাবু স্ট্রিটের বাড়ি থেকে আমেরিকা— পিকলুর সব প্ল্যান করা আছে। তবে এতগুলো অপরিচিত লোকের সামনে সেটা আর বললেন না।

‘‘ঠিক করিনি কিছু এখনও।’’

‘‘ওয়ান্ডারফুল!’’ নীহার বলে উঠলেন, ‘‘শুনুন, এ বার আমরা ঠিক করেছিলাম এখানে দুর্গাপুজো করব। সেটা হল না। তার কারণ ওরা। যেটা বলছিলাম, এ বার আঁটঘাট বেঁধে একটা সোসাইটির কমিটি করব। ডক্টর বাগচী চেয়ারম্যান, আমাকে এরা সবাই ধরেছে সেক্রেটারি হওয়ার জন্য। সৌমিত্র ট্রেজারার আর আপনি হবেন আপনার টাওয়ারের রিপ্রেজেন্টেটিভ।’’

নীহার সরখেল, সৌমিত্র দত্ত, হিমাংশু ঘোষরা একসঙ্গে হইহই করে সমর্থন করে উঠলেন, ‘‘হ্যাঁ, হ্যাঁ। এত দিনে একটা জব্বর প্যানেল কমপ্লিট হল। পুজো হচ্ছে না তো কী হয়েছে? আমরা বিজয়া সম্মিলনী দিয়ে শুরু করব।’’

প্রিয়তোষ ঘোরতর আপত্তি করে উঠলেন, ‘‘আমার এ সব কোনও অভিজ্ঞতা নেই। একেবারে টাওয়ারের রিপ্রেজেন্টেটিভ? আমি কস্মিনকালেও কোনও কমিটিতে ছিলাম না। তা ছাড়া এটা আমার ছেলের ফ্ল্যাট। টাওয়ারের সবাইকে চিনিই না।’’

নীহার সরখেল প্রিয়তোষকে থামিয়ে দিয়ে বললেন, ‘‘ছিলেন না তো কী হয়েছে? এ বার থাকবেন। আর চেনা না-চেনাটা কোনও ফ্যাক্টর নয়। আস্তে আস্তে সব আলাপ হয়ে যাবে। প্রতিবেশীদের সমস্যাগুলো তুলে ধরবেন। বি-টাওয়ারটায় হিমাংশু থাকবে, সি-তে সুব্রত। সুব্রতর সঙ্গে আলাপ করিয়ে দেব আপনার। আপনার টাওয়ারটাতেই এত দিন উপযুক্ত কাউকে খুঁজে পাচ্ছিলাম না।’’

‘‘কিন্তু সোসাইটির কমিটি...’’ আমতা আমতা করে প্রিয়তোষ কিছু বলার চেষ্টা করতেই নীহার সরখেল প্রিয়তোষকে থামিয়ে দিয়ে বললেন, ‘‘শুনুন দুর্গাপুজোর ব্যাপারটা নিয়ে আমরা অনেক দিন ধরেই ভাবছিলাম। কত জায়গায় রথের দিন খুঁটিপুজো হয়ে গিয়েছে। আমরা নাহয় কাল জন্মাষ্টমীর দিনই খুঁটিপুজো করতাম। ছোট করে হাউজিং-এর পুজো, যাতে এখানে যারা আমরা বসবাস করছি, তারা নিজেদের কনসলিডেশনটা বোঝাতে পারতাম। ওরা কিছুতেই হতে দিল না। তবে আপনি ভাববেন না আমরা মাত্র এই ক’জন-ই আছি। পরশু ইন্ডিপেনডেন্স ডে’র ফ্ল্যাগ হয়েস্টিং-এ দেখবেন, আরও অনেকে এগিয়ে আসবে বলেছে।’’

সোমনাথ প্রিয়তোষের হাতে মৃদু চাপড় দিয়ে বলে উঠলেন, ‘‘আর না এগিয়ে এলেই বা কী? দাদা, ফিদেল কাস্ত্রো অত বড় একটা বিপ্লব করেছিলেন কত জন ফলোয়ারকে নিয়ে জানেন? ওনলি ফাইভ।’’

হিমাংশু মেকি গম্ভীর গলা করে বললেন, ‘‘ফাইভ সংখ্যাটা কোথায় পেলে সোমনাথদা?’’

‘‘সংখ্যায় কী এসে যায় ব্রাদার? পাঁচ জন মহিলার একটা লেডিজ ক্লাব কত ভোল্টেজের হয় জানো?’’

শ্রাবন্তী এক ডুকরি লুচি আর প্লেট নিয়ে এসে সেন্টার টেবিলে নামিয়ে বললেন, ‘‘লেডিজ ক্লাব হচ্ছে না কি এখানে?’’

অতনু পাল আড়মোড়া ভেঙে বললেন, ‘‘নট আ ব্যাড আইডিয়া। এক দিকে সোসাইটির কমিটি, আর এক দিকে লেডিজ ক্লাব। এক্কেবারে সাঁড়াশি।’’

নীহার সরখেল বললেন, ‘‘তার আগে ব্যাপারটা সবাইকে বোঝাতে হবে, আমরা কী চাইছি। ডাকো, একটা বড় করে মিটিং ডাকো। পরশু ওরা শুনছি তীর্থময় গাঙ্গুলিকে দিয়ে ফ্ল্যাগ তোলাবে। আমাদের পালটা দিতে হবে।’’

সোমনাথ গলা চড়ালেন, ‘‘কোনও ব্যাপার নয়। পরের পরের রবিবারেই আমরা একটা জেনারেল মিটিং ডাকছি। তার আগে গ্রাউন্ডওয়ার্কটা তলে তলে করে নিতে হবে। মিটিং-এ কেউ না এলে, শেষে এক গাল মাছি হয়ে যাবে ওদের কাছে। মিস্টার চ্যাটার্জ্জি, আপনি আজ থেকেই লেগে পড়ুন।’’

ক্রমশ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement