ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ২

অচেনা স্রোত

লিফটটা গ্রাউন্ড ফ্লোরে এসে থামল। এ বার দরজা খুলতেই প্রিয়তোষ দেখলেন, একটি সুন্দরী তরুণী দাঁড়িয়ে আছে। মেয়েটাকে অবশ্য মাঝে মাঝে সকালে জগিং করতে দেখেন। মেয়েটা সোমনাথের চেনা।

Advertisement

কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৭ ০৮:৫০
Share:

ছবি: পিয়ালী বালা

পূর্বানুবৃত্তি: রবিবারের সকালে খবরের কাগজ খুলে প্রিয়তোষ চ্যাটার্জি দেখেন, তাঁর লেখা গল্প ‘অপেক্ষা’ প্রকাশিত হয়েছে। বাড়িতে তিনি একা, স্ত্রী আমেরিকায়, খবরটা জানাতে প্রিয়তোষ তাই ফোন করেন ভাগনি ঈপ্সিতাকে। সেও খুশিতে গল্পটা ফেসবুকে শেয়ার করে দেয়। অতিরিক্ত কয়েকটা খবরকাগজের কপি কিনতে বাইরে বেরোন প্রিয়তোষ। লিফটে দেখা হয় আবাসনেরই আর এক বাসিন্দা সোমনাথ বিশ্বাসের সঙ্গে।

Advertisement

সারপ্রাইজ! প্রিয়তোষ আশ্চর্য হলেন। এই হাউজিং-এর অল্প যে ক’জনের সঙ্গে আলাপ হয়েছে, সোমনাথ তাদের মধ্যে এক জন। উনিও কি কাগজ পড়ে নামটা খেয়াল করেছেন? প্রিয়তোষ অপ্রস্তুতের হাসি হেসে বললেন, ‘‘হ্যাঁ বলুন।’’

‘‘না না। এত চট করে হবে না। আচ্ছা, আপনি ফ্রি আছেন এখন? চলুন, নীহার সরখেলের ফ্ল্যাটে যাই তা হলে।’’

Advertisement

নীহার সরখেলকে প্রিয়তোষ চেনেন না। বললেন, ‘‘কী ব্যাপার বলুন তো?’’

সোমনাথ লিফটের ভেতর ঢুকে শূন্যর বোতামটা টিপে বললেন, ‘‘চলুন না মশাই। টাওয়ার-বি’তে আমাদের একটা রোববারের আড্ডা হয়। আজ আপনাকে খুব দরকার।’’

‘‘কিন্তু আমি একটা কাজে বেরোচ্ছিলাম...’’ সোমনাথের মুখের মিটিমিটি হাসি দেখে প্রিয়তোষ গলায় খুব একটা জোর এনে কথাটা বলতে পারলেন না।

‘‘অন্য দিন যাবেন। আরে মশাই, রোববার তো একটাই। সবাইকে একসঙ্গে অন্য দিন পাওয়া যায় না কি?’’

লিফটটা গ্রাউন্ড ফ্লোরে এসে থামল। এ বার দরজা খুলতেই প্রিয়তোষ দেখলেন, একটি সুন্দরী তরুণী দাঁড়িয়ে আছে। মেয়েটাকে অবশ্য মাঝে মাঝে সকালে জগিং করতে দেখেন। মেয়েটা সোমনাথের চেনা। একগাল হেসে সোমনাথকে বলল, ‘‘গুড মর্নিং আংকল।’’ তার পর নিতান্ত ভদ্রতায় প্রিয়তোষকেও সুপ্রভাত জানাল।

‘‘ভেরি গুড মর্নিং হৃষিতা, কোথায় চললে?’’ সোমনাথ জিজ্ঞেস করলেন।

একটু ইতস্তত করে হৃষিতা বলল, ‘‘এই এক বন্ধুর ফ্ল্যাটে।’’

‘‘গুড। বাবাকে বোলো আমি বিকেলবেলায় এক বার যাব তোমাদের বাড়িতে। রবিবার ছাড়া বাবাকে তো বাড়িতে পাওয়াই যায় না। একটা খুব ইম্পর্ট্যান্ট মিটিং আছে। এই তো, মিস্টার চ্যাটার্জিকে তাই ধরে নিয়ে যাচ্ছি।’’

হৃষিতাকে নিয়ে লিফটের দরজাটা বন্ধ হল আর প্রিয়তোষেরও মোহভঙ্গ হল। রবিবারে কাগজে বেরনো লেখকের পরিচয় নিয়ে উত্তেজনা নয়, কিছু একটা মামুলি মিটিং। প্রিয়তোষ উৎসাহ হারালেন। এগোতে এগোতে সোমনাথ বললেন, ‘‘মেয়েটাকে চেনেন? বিরাট বড় ডাক্তারের মেয়ে। ডক্টর বিকাশ বাগচীর নাম শুনেছেন তো? টাওয়ার-বি, ফাইভ-সি আর ডি জোড়া ফ্ল্যাট নিয়ে থাকেন। উকিল, ডাক্তার আর পুলিশের সঙ্গে সব সময় আলাপ করে রাখা ভাল। কী বলেন মশাই?’’

পকেটে মোবাইলটা বেজে উঠল প্রিয়তোষের। আবার ইপ্সি।

‘‘সেজমামা’’, ঈপ্সিতার গলাটা একেবারে আহ্লাদী, ‘‘নাও, এ বার তোমার ফ্যান কল আসতে শুরু করল বলে।’’

গলাটা একদম নিচুতে রেখে প্রিয়তোষ বললেন, ‘‘মানে?’’

‘‘আমার এক ফেসবুক ফ্রেন্ড তোমার গল্প পড়ে ইনবক্সে তোমার ফোন নম্বরটা চেয়েছে। দিয়ে দিয়েছি। দেখো সেজমামা, মহিলা ফ্যান। কী কেত তার ফেসবুকিয়া নাম! মৃগনাভি। সামলে কিন্তু।’’

ফোনটা ছেড়ে সোমনাথের দিকে চেয়ে প্রিয়তোষ একটু অন্যমনস্ক গলায় বললেন, ‘‘আজ নয়। অন্য কোনও রবিবার যাব আপনার সঙ্গে।’’

কলিং বেলের আওয়াজ শুনে দরজাটা খুলতে যেতে গড়িমসি করছিল রৌনক। রবিবার সকালে এই সময় কলিং বেলটা দু’জন বাজায়। এক দুধওয়ালা আর দুই কাগজওয়ালা। এদের কারও জন্যই দরজা খোলার দরকার হয় না। দরজার এক পাশে নিজেদের পণ্যগুলো রেখে বেলটা এক বার লম্বা করে বাজিয়ে ওরা চলে যায়।

আজ ছোট করে দ্বিতীয় বার বেলটা বাজতেই রৌনক বুঝতে পারল, অন্য কেউ এসেছে। দরজার পাশে দেওয়ালে আটকানো এলসিডি স্ক্রিনটার সুইচটা টিপতেই দেখল, দরজায় লাগানো ক্যামেরাটার দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে একটা মেয়ে। মুখটা চেনা চেনা লাগল।

রৌনক রাতে বারমুডা পরে খালি গায়ে শুয়েছিল। চট করে ঘরে গিয়ে একটা ট্র্যাক আর টি-শার্ট গলিয়ে এসে দরজা খুলল। মেয়েটা স্মিত হেসে বলল, ‘‘হ্যালো।’’

‘‘হ্যালো’’, মেয়েটাকে এবার ভালো করে দেখল রৌনক। গড়পড়তা বাঙালিদের চেয়ে উচ্চতা একটু বেশি। ছিপছিপে চেহারা। ধারালো মুখ। চায়ের মগ হাতে বারান্দা থেকে মেয়েটাকে এই কমপ্লেক্সেই কয়েক বার দেখেছে। সকালে কোনও কোনও দিন ঘন নীল একটা জাম্পস্যুট পরে জগিং করে। তবে রৌনক কোনও দিন জগিং করে না বলে কখনও সামনাসামনি হয়নি। তাই মেয়েটাকে রবিবার সাতসকালে দরজার সামনে দেখে খুব অবাক হল।

‘‘আমি হৃষিতা। টাওয়ার-বি’তে থাকি।
ফাইভ-সি।’’

‘‘আসুন।’’ রৌনক দরজার সামনে থেকে সরে দাঁড়াল। হৃষিতা দরজার এক পাশে মাটিতে পড়ে থাকা খবরের কাগজ আর দুধের প্যাকেটটা তুলে রৌনকের হাতে দিল।

‘‘থ্যাংক ইউ।’’ রৌনক ব্যস্ত হয়ে জিনিসগুলো হৃষিতার হাত থেকে নিয়ে আবার ভেতরে ডাকল, ‘‘আসুন।’’

হৃষিতা ঘরের মধ্যে ঢুকে একটু জড়সড় হয়ে দাঁড়াল। চারদিকে চোখ বুলিয়ে দেখল, এই ফ্ল্যাটের মধ্যে সে রকম ফার্নিচার নেই। কোনও সোফা নেই। দেওয়ালের এক ধারে একটা কার্পেট গোল করে পাকানো আছে। ডাইনিং এরিয়ায় একটা চার জনের বসার খাওয়ার টেবিল আর ছোট ফ্রিজ। ফ্রিজের মাথায় মাইক্রোওয়েভ ওভেন বসানো।

খাওয়ার টেবিলে দুধের প্যাকেট আর খবরের কাগজটা রেখে দুটো চেয়ার নিয়ে এসে রৌনক একটাতে হৃষিতাকে বসতে দিল। অন্যটায় নিজে বসে বলল, ‘‘স্যরি। ফ্ল্যাটটা এখনও ফার্নিশড নয়।’

‘‘নেভার মাইন্ড। আমার কিন্তু খুব ভাল লাগছে আপনার ফ্ল্যাটটা। কত বড় লাগছে। ফার্নিচার ঢুকলেই ফ্ল্যাটগুলো কী রকম ছোট হয়ে যায়।’

মেয়েটা ঠিক কী উদ্দেশ্যে এসেছে, কিছুই আন্দাজ করতে পারছে না রৌনক। কথা খুঁজে না পেয়ে বলল, ‘‘কী আশ্চর্য দেখুন, আমরা এক জায়গাতেই থাকি অথচ এখনও অনেকের সঙ্গে আলাপই হয়ে উঠল না।’’

‘‘এগজ্যাক্টলি। আমিও তো জানতাম না যে আপনার মা এখানে একটা মিউজিক স্কুল চালান।’’

রৌনক একটু চুপ করে থেকে মুচকি হেসে বলল, ‘‘মায়ের একটা মিউজিক স্কুল আছে, তবে এখানে নয়। অবশ্য ইদানীং রবিবার সকালে আমার কাছে দু’জন স্টুডেন্ট আসে।’’

‘‘আপনিও শেখান?’’ হৃষিতা সামান্য অবাক।

‘‘কেন? আমাকে দেখে মিউজিক টিচার মনে হচ্ছে না?’’ চোখ বড় বড় করে বলল রৌনক।

‘‘না না। আমি আসলে অন্য কথা শুনেছিলাম। এই হয় জানেন তো, ঠিকমত আলাপ-পরিচয় না থাকলে ভুলভাল ইনফর্মেশন পেতে হয়।’’

‘‘আপনি কি মায়ের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন?’’

‘‘না, মানে ঠিক... আমি শুনেছিলাম আপনার মা এখানে ক্লাস করান। আচ্ছা, উনি তা হলে কোথায় শেখান?’’

‘‘আমাদের অরিজিনাল বাড়ি ভবানীপুরে। মায়ের গানের স্কুল ওখানেই। মঙ্গল আর বৃহস্পতিবার সন্ধেবেলায় ওখানেই শেখান। সাড়ে ছ’টা থেকে আটটা। মা এই ফ্ল্যাটে মাঝে
মাঝে আসেন।’’

‘‘ভবানীপুর... সাড়ে ছ’টা থেকে আটটা।’ হৃষিতা মাথা নিচু করে বিড়বিড় করে বলল, ‘‘তা হলে আর হল না।’’

রৌনক ঈষৎ ভুরু কুঁচকে জিজ্ঞেস করল, ‘‘কী হল না?’’

‘‘আপনি শুনলে হাসবেন। আমি আসলে মিউজিক ক্লাস জয়েন করতে চেয়েছিলাম।’’

‘‘হাসব কেন? মিউজিক শেখাটা কি হাসির ব্যাপার?’’

‘‘না, তা নয়। আচ্ছা, আপনি কি ইন্সট্রুমেন্ট বাজান? না কি ভোকাল... মানে গান করেন?’’

রৌনক এ বার হেসে ফেলল, ‘‘ওই আর কী, সব কিছুই একটু একটু। আসলে আমার কাছে যে বাচ্চাদু’টো শিখতে আসে, তাদের মায়েরা দু’জনেই আমার মায়ের ছাত্রী। এখন ওরা এই নিউটাউন-সল্টলেক অঞ্চলে থাকে। ভবানীপুরটা দূর হয়ে যায়। ওরাই ধরেছিল, যদি রবিবার সকালগুলো বাচ্চাদুটোকে এখানে কিছু শেখাতে পারি। আসলে কী বলুন তো, আজকাল বাচ্চারাও পড়াশোনা, টিউশন নিয়ে এত স্ট্রেসড, যদি একটা ছুটির দিন সকালে মজা করে কিছু গানবাজনা করা যায়।’’

‘‘ওয়াও! ইন্টারেস্টিং।’’

‘‘আপনি গানবাজনা করেন?’’

হৃষিতা লজ্জা পেল, ‘‘বললাম না, আপনি শুনলে হাসবেন। কোনও দিন গান শিখিনি। সুরে গান গাইতে পারি কি না তা-ই জানি না। তবু ভেতর থেকে শেখার একটা তাগিদ মাঝে মাঝে টের পাই। তার পর যখন শুনলাম আমাদের এই কমপ্লেক্সের ভেতরেই একটা মিউজিক স্কুল রবিবার সকালে হয়, ভাবলাম এক বার কথা বলে দেখি। আচ্ছা, আপনার মা নেক্সট কবে আসবেন?’’

সকালবেলায় এ ভাবে হঠাৎ করেই একটা সুন্দরী মেয়ে অযাচিত আলাপ করতে চলে আসায় বেশ ভাল লাগছিল রৌনকের। বলল, ‘‘মায়ের আসার তো কোনও ঠিক নেই। তবে মা’র মোবাইল নম্বরটা আপনি নিয়ে রাখতে পারেন। আমি আপনার কথা বলে রাখব।’’

‘‘উইক ডেজ হলে তো আমারও হবে না। অফিস থেকে ফিরতে ফিরতে এত দেরি হয়ে যায়! আসলে আমি ওঁকে আগে একটু জিজ্ঞেস
করে নিতাম।’’

‘‘কী?’’

‘‘আমার দ্বারা আদৌ হবে কি না।’’

রৌনক মাথা ঝাঁকাল, ‘‘সেই উত্তরটা মায়ের হয়ে আমিই দিয়ে দিচ্ছি। আগে আপনি বলুন আপনি কি রবীন্দ্র সদনে স্টেজ প্রোগ্রাম করতে চান, না টিভির রিয়্যালিটি শো’তে কনটেস্ট্যান্ট হতে চান?’’

‘‘না না, সে সব কিছু না। ওই যে বললাম না, কিছু দিন ধরে মনে হচ্ছে মিউজিক শিখি!’’

‘‘হুম! গভীর সমস্যা। বসুন, একটু চা করে আনি। তার পর ব্যাপারটা নিয়ে ডিসকাস করব।’’

‘‘এ মা, না না আপনাকে আমার জন্য চা করতে হবে না।’’

‘‘আরে আমিও তো সকালের চা’টা খাইনি। আপনার চিনি, দুধ?’’ রৌনক উঠে দাঁড়াল।

‘‘চায়ে দুধ খাই না, তবে চিনি ঠিক আছে। আচ্ছা, আপনার মিউজিক ক্লাস কখন শুরু হয়?’’

কিচেনের দিকে যেতে যেতে রৌনক বলল, ‘‘দশটা থেকে ওরা আসতে আরম্ভ করে। আপনি ইন্টারেস্টেড থাকলে দেখেই যান না আমার স্টুডেন্ট দু’জনকে।’’

হৃষিতা ঘড়ি দেখল। সবে ন’টা কুড়ি। বড্ড আগে চলে এসেছে। ছেলেটা কিছু মনে করতে পারে। তা ছাড়া ওর সকালের চা’টা পর্যন্ত খাওয়া হয়নি। অথচ এখন কিছুতেই নিজের ফ্ল্যাটে ফিরে যেতে ইচ্ছে করছে না। এই আসবাববিহীন ফ্ল্যাটটাতে অদ্ভুত একটা শান্তি ছড়িয়ে আছে।

হৃষিতার খেয়াল হল, ছেলেটার নামটা পর্যন্ত জানা হয়নি। এত ক্ষণ কথাবার্তা হয়ে যাওয়ার পর এ বার নামটা জিজ্ঞেস করতে অস্বস্তি হতে শুরু করল। একা একা বসে থাকতে থাকতে মনের মধ্যে দোলাচলটা হঠাৎ বেড়ে গেল। শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্তটা নিয়েই ফেলল হৃষিতা। গলাটা উঁচু করে বলল, ‘‘আমি তা হলে একটু ঘুরে আসি?’’

রৌনক রান্নাঘর থেকে দুটো চায়ের মগ নিয়ে এসে বলল, ‘‘সে কী! চা তো হয়ে গিয়েছে। আচ্ছা, ডাইনিং টেবিলে এসে বসলে আপনি মাইন্ড করবেন? আসলে আমার কোনও সেন্টার টেবিল নেই তো!’’

‘‘মাইন্ড করার কী আছে?’ হৃষিতা টেবিলের কাছে উঠে এল। চায়ের সুবাসে মনটা যেন আরও তাজা হল। আর্ল গ্রে। এই ফ্লেভারটা হৃষিতারও খুব পছন্দ। চুমুক দিয়ে বলল, ‘‘নাইস টি।’’

‘‘যাক, ক্লিক করে গেল। ভাবছিলাম আপনাকে আর্ল গ্রে খাওয়াব নাকি লেডি গ্রে নাকি দার্জিলিং গ্রিন টি।’’

হৃষিতা ঠোঁট ওলটাল, ‘‘বাবাঃ! আপনি তো দেখছি চা রসিক।’’

‘‘বাড়িতে ফার্নিচার না থাকলে কী হবে, চায়ের কিন্তু ভ্যারাইটি স্টক আছে। ওহ হো! স্যরি, আপনাকে শুধু চা দিলাম, বিস্কিট নিয়ে আসি।’’

হৃষিতা মাথা ঝাঁকিয়ে বলল, ‘‘না না। আমার কোনও বিস্কিট লাগবে না।’’

রৌনক চায়ে চুমুক দিয়ে বলল, ‘‘আপনি মায়ের সঙ্গে দেখা করবেন তো? দেখবেন মা কিন্তু আপনাকে চায়ের সঙ্গে বিস্কিট না খাইয়ে ছাড়বে না। মায়ের মনে হয় দুটো বিস্কিট ছাড়া চা খাওয়ালে অতিথির অপমান হয়।’’

হৃষিতা হেসে উঠল, ‘‘আপনি না...’’ তবে ভেতর ভেতর বুঝতে পারল, প্রথম দিনের আচমকা আলাপেই ছেলেটা যে ভাবে ফ্লার্ট করতে শুরু করে দিয়েছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে হৃষিতা এই অসময়ে চলে আসায় ও একটুও বিরক্ত নয়। ঠিক এ রকমই একটা জায়গার দরকার রবিবারের সকালগুলো কাটানোর জন্য।

ক্রমশ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement