পূর্বানুবৃত্তি: অভিমন্যু ভালবাসে নয়নিকাকে, কিন্তু কোনও দিন তাকে বা নিজের বাবা-মা’কেও সে কথা বলে উঠতে পারেনি। তীর্থময় অভিমন্যুকে ডেকে নিজেদের পারিবারিক আভিজাত্যের কথা বলতে থাকেন, অভিমন্যুকে বলেন আজ অনুষ্ঠানে ধুতি-পাঞ্জাবি পরতে। টিটান ফোন করে টুইটিকে ছাদে ডাকে, টুইটি না বলে। প্রিয়তোষ ফোনে কস্তুরীকে কবিতা আবৃত্তি করে শোনান, তার সঙ্গে গল্প করতে থাকেন।
ফোনটা কানে নিয়ে বারান্দায় বসে আছেন প্রিয়তোষ। মাথার পাতলা হয়ে আসা চুলে হাত বুলিয়ে বললেন, ‘‘রিটায়ার্ড মানুষদের অবশ্য আলাদা করে রবিবার নেই। প্রত্যেকটা দিনই রবিবার। তবু আমি রবিবারটা বুঝতে পারি। কী রকম যেন অলস একটা দিন। চার দিকে সব ঢিমে লয়ে চলছে। তোমরা অবশ্য কাজের মানুষ। সারা সপ্তাহ খাটাখাটনির পর রবিবার বিশ্রাম নেওয়ার দিন।’’
‘‘ঠিক বলেছেন। রবিবার সবাই বিশ্রাম চায়। কত লেখা মাথায় আসে, ভাবি রবিবার লিখে ফেলব। কিন্তু এ দিনটায় কলমটাও যেন বিশ্রাম চায়।’’
‘‘নতুন কিছু লিখলে, কস্তুরী?’’
‘‘আপনাকে সে দিন যে গল্পটা বলেছিলাম, সেটা শেষ করতে পেরেছি। কী সুন্দর একটা নাম দিয়েছেন আপনি, শ্রীতমা। জানেন, চরিত্রটার নাম বদলে দিতেই গল্পটা তরতর করে শেষ হয়ে গেল।’’
বেশ কয়েকটা আগের রবিবারে কস্তুরীর সেই অসমাপ্ত গল্পটা মনে পড়ে গেল প্রিয়তোষের।
একটা ছোট্ট রেল স্টেশন। একই সময় একটা আপ ট্রেন আর একটা ডাউন ট্রেন যায়। একটা ছেলে আপ ট্রেনটায় যায়। আর একটা মেয়ে ডাউন ট্রেনটায়। দু’জনের মধ্যে আলাপ নেই। কিন্তু উলটো দিকের প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে ছেলেটা রোজ মুগ্ধ হয়ে মেয়েটাকে দেখে। কস্তুরীর গল্পটা আটকে গিয়েছিল চরিত্রদু’টোর মনমত নাম খুঁজে না পাওয়ায়। প্রিয়তোষ মেয়েটার নাম দিয়েছিলেন। শ্রীতমা। ছেলেটার নামটা আর দেওয়া হয়নি। প্রিয়তোষ আগ্রহী গলায় জানতে চাইলেন, ‘‘বাহ্! আর ছেলেটার নাম কী রাখলে?’’
‘‘অর্জুন।’’
‘‘অর্জুন আর শ্রীতমা। খুব সুন্দর নাম হয়েছে। তা লেখাটা শেষ করে কোথাও পাঠালে?’’
‘‘এখনও পাঠাইনি। পাঠিয়েই বা কী হবে? কেউ তো ছাপবে না। তা ছাড়া গল্পটার নাম এখনও দেওয়া হয়নি। আসলে আমার আর একটা জিনিস মনে হয়েছে জানেন, গল্পটার নাম দিই ‘অপেক্ষা’। ছোট্ট স্টেশনের দু’দিকের দু’টো প্ল্যাটফর্মে অর্জুন আর শ্রীতমা অপেক্ষা করছে, কখনও ট্রেন আসার, কখনও বা একটা সম্পর্ক তৈরির। কিন্তু ‘অপেক্ষা’ তো আপনার গল্পের নাম। গল্পটার অনুপ্রেরণাও আপনার কাছ থেকে নেওয়া। আমি তো লিখতে গিয়ে আটকেই গিয়েছিলাম।’’
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন প্রিয়তোষ। কত মাস হয়ে গেল? কতগুলো রবিবার পেরিয়ে গেল? সেই রবিবারের খবরের কাগজে প্রথম গল্পটার পর অনেক চেষ্টাতেও আর একটা গল্প লিখতে পারলেন না। একটার পর একটা গল্প যেন লাল সিগনালে আটকে আছে। কস্তুরী কিন্তু হুইস্ল বাজিয়ে সবুজ আলোর রেললাইন ধরে এগিয়ে যেতে পারল। তবু একমাত্র গুণমুগ্ধ পাঠিকার কাছে প্রিয়তোষ ভাঙলেন না।
‘‘আমি বুঝি কস্তুরী। আসলে লিখতে গিয়ে আটকে গেলেই কী হয় বলো তো? একটা ছটফটানি হয়। কিছুতেই আর সময় কাটতে চায় না। তবে কিছুতেই আটকে থেকো না। আটকে যাওয়া পাতাগুলো দলা পাকিয়ে ছুড়ে ফেলে দেবে। নতুন সাদা পাতায় নতুন ভাবে শুরু করবে।’’
‘‘আপনি এত উৎসাহ দেন। সত্যি বলছি, কখনও কখনও যখন লিখতে লিখতে মনে হয়, ধুস, লিখে কী হবে? তখনই আপনার কথা মনে হয়। যেন আপনি বলছেন, কস্তুরী লেখো, লেখো। ‘অপেক্ষা’-র মতো একটা গল্প লেখ। গল্পের ছবিটা আমি চোখ বুজলেই দেখতে পাই। ওদের কথা শুনতে পাই।’’
প্রিয়তোষ চোখ বুজলেন। ইদানীং চোখ বুজলে কস্তুরীর একটা মুখচ্ছবি ভেসে ওঠে। জানেন না, রক্তমাংসের কস্তুরীর মুখটার সঙ্গে মানসপটে আঁকা কস্তুরীর আদৌ কোনও মিল আছে কি না। মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে, একটা রবিবার ভোরের ফার্স্ট বাসে হাওড়া গিয়ে কাটোয়ার ট্রেনে উঠে বসেন। নিঃসঙ্গ এই জীবনে অদ্ভুত এক মানসিক সঙ্গ দেয় মেয়েটা। পৃথিবীতে এখন আর কেউ মনে রাখেনি, এক বর্ষাভেজা শ্রাবণের রবিবারে প্রিয়তোষ চট্টোপাধ্যায়ের লেখা একটা গল্প বেরিয়েছিল কাগজে। কস্তুরীই শুধু এখনও সেই লেখাটার প্রশংসা করে। আর কোন লেখা হল, আন্তরিক ভাবে খোঁজ নেয়।
‘‘মাঝে মাঝে এত ফাঁকা লাগে কস্তুরী, সময় কাটতে চায় না। তুমি ফোন করলে ভালো লাগে।’’
‘‘আমিও বুঝি, নিঃসঙ্গতা কী। তবে একটা জিনিস বলতে পারি। যখন খুব একা লাগবে, রেডিয়ো শুনবেন। আপনাদের ওখানে কত এফএম চ্যানেল আসে। আমাদের এখানে অতগুলো পাওয়া যায় না। রেডিয়ো শুনতে আমার দিব্যি লাগে। বিশেষ করে টক শো। কত রকম মানুষ আসেন, জীবনের কত কথা বলেন। সব যেন আলাদা আলাদা গল্প। তার মধ্যে এক-একটা কী সুন্দর গান! কোথা দিয়ে সময় কেটে যায়।’’
‘‘বাহ্!’’ মুগ্ধ প্রিয়তোষ বললেন, ‘‘এটা তো ভেবে দেখিনি! এমনিতে মাঝে মাঝে ফুটবল দেখা ছাড়া টিভিতে আমার আসক্তি নেই। তবে রেডিয়ো নেই বাড়িতে। কিনব একটা।’’
‘‘কিনবেন কেন? আপনার ফোনেই আছে। দেখে নেবেন। শুধু ইয়ারফোনটা লাগিয়ে নিতে হবে, না হলে চলবে না।’’
‘‘হ্যাঁ, হ্যাঁ। মোবাইল ফোনে আছে বটে। এত দিন খেয়াল করিনি। আজকেই শুনব।’’
‘‘আমার আকাশবাণী সব থেকে ভাল লাগে। সকালবেলায় আকাশবাণীর সিগনেচার টিউনটা শুনলে মন ভাল হয়ে যায়!’’
‘‘ঠিক বলেছ। ছোটবেলায় তো আমরা রেডিয়ো বলতে আকাশবাণীই বুঝতাম। জানো, অনেক আগে রেডিয়োতে গান শেখানো হত। রবিবার সকালে পঙ্কজ মল্লিক শেখাতেন। আমার মা আর কাকিমা দরজা বন্ধ করে রেডিয়ো চালিয়ে শিখতেন। বাবা-কাকারা তো সব বাড়িতে সে দিন। মল্লিকমশাই প্রথমে গানের কথাগুলো লিখিয়ে দিতেন। এক-দু’বার আমিও লিখেছি। তার পর অবশ্য মা-কাকিমারা আর ঘরে থাকতে দিতেন না। আমাদের সামনেও রেডিয়োয় গলা মেলাতে লজ্জা।’’
‘‘কী সুন্দর! এটা জানতাম না তো!’’
‘‘জয়েন্ট ফ্যামিলিতে জীবনটা এত কমপ্লিকেটেড ছিল না কস্তুরী। অনেক সহজ-সরল ছিল। আমাদের পুরনো বাড়িটা ভেঙে এখন ফ্ল্যাট তৈরি হচ্ছে। আমার আর নতুন বাড়িটায় কোনও আগ্রহ নেই। পুরনো বাড়ির সঙ্গে ছোটবেলার স্মৃতিও গুঁড়িয়ে গেল।’’
‘‘কদ্দূর এগোল আপনার ফ্ল্যাট?’’
‘‘খোঁজ রাখার আর খুব একটা আগ্রহ নেই কস্তুরী। ওখানে আর যেতে ইচ্ছে করে না। ভাইপো-ভাগনেরা আছে, ওরাই দেখছে।’’
‘‘আপনার সঙ্গে কথা বললে শেষ হতে চায় না। কত কী জানতে ইচ্ছে হয়! আপনার কত সময় নষ্ট করি।’’
‘‘আমার আর কী কাজ? তোমার সঙ্গে কথা বলে আমিও অনেক কিছু জানতে পারি। আর একটা সত্যি কথা শুনবে? ওখানে ছেড়ে এসে এখানে আমার ভাল লাগছে না।’’
‘‘কেন?’’
‘‘মেশার মতো লোক খুঁজে পেলাম না কস্তুরী। সব জায়গায় পলিটিক্স।’’
‘‘ভাল লোকও নিশ্চয়ই আছে!’’
‘‘আছে হয়তো। খোঁজার চেষ্টা করিনি। আমি তো ক’দিনের পরিযায়ী পাখি। তার চেয়ে এই যে তোমার সঙ্গে লেখা নিয়ে আলোচনা করছি, জীবন নিয়ে কথা বলছি, দিব্যি লাগছে। আচ্ছা, তোমার লেখাটা কি অনেক বড় হয়েছে?’’
‘‘না। চার পাতার মধ্যে রাখার চেষ্টা করেছি। রবিবারে কাগজগুলো তো খুব বড় গল্প ছাপে না।’’
‘‘আমাকে পুরোটা শোনাবে? শুধু শুরুটা শুনিয়েছিলে।’’
‘‘আপনি শুনবেন?’’ কস্তুরী খুব খুশি হল, ‘আমি তো কত বার ভেবেছি, আপনাকে আমার গল্প পুরোটা পড়াব। কিন্তু আমি কি পারব গল্পপাঠ করতে?’’
প্রিয়তোষের বলতে ইচ্ছে করছিল, তোমার প্রত্যেকটা শব্দ নূপুরের মত সুরেলা, কস্তুরী। আমি দু’চোখ বুজে সেই সুর শুনতে চাই। কিন্তু মনের কথা তো বলা যায় না। মুখে বললেন, ‘‘গল্পটাই তো আসল, কস্তুরী। সে দিন তো বেশ পড়েছিলে।’’
‘‘আমি বের করছি ফাইলটা। কী যে ভালো লাগছে! এই প্রথম কেউ আমার নিজের লেখা গল্প শুনতে চাইছেন।’’
কস্তুরী পুরো গল্পটা পড়ে শোনাল। ছোট্ট রেলস্টেশন। লাইনের দু’ধারে অপেক্ষায় অর্জুন আর শ্রীতমা। কী নিখুঁত পাঠ! কী স্পষ্ট উচ্চারণ! রেলস্টেশনের গন্ধ, পাতা ঝরার আওয়াজ...প্রিয়তোষ সম্মোহিত হয়ে গেলেন।
কস্তুরী দ্বিধাগ্রস্ত গলায় জিজ্ঞেস করল, ‘‘কেমন লাগল?’’
‘‘অ্যাঁ!’’ প্রিয়তোষ অন্যমনস্কতা কাটিয়ে উঠে বললেন, ‘‘তুমি এই গল্পটা কাগজে পাঠিয়েছ?’’
‘‘না, পাঠাইনি। আমার কী মনে হয় জানেন? আমি এত গল্প পাঠিয়েছি যে বাতিল করতে করতে সব সম্পাদকদের আমার নাম মুখস্থ হয়ে গিয়েছে। আমার নাম দেখলেই আর গল্প পড়ে দেখেন না। যাই হোক, আপনার কেমন লাগল? ভুলত্রুটি?’’
একটু সময় নিয়ে প্রিয়তোষ বললেন, ‘‘আমার প্রতিক্রিয়াটা জানানোর জন্য আমাকে একটু সময় দাও কস্তুরী।’’
কস্তুরী নরম গলায় বলল, ‘‘অপেক্ষায় থাকব। আজ ছাড়ি তা হলে, ভাল থাকবেন।’’
‘‘তুমিও ভাল থেকো, কস্তুরী।’’
প্রিয়তোষ খানিক ক্ষণ চুপ করে বসে থাকলেন। কস্তুরীর গলাটা এখনও যেন বেজে চলেছে। মনে হচ্ছে ওর গল্পের চরিত্রদু’টো— অর্জুন আর শ্রীতমা— এখানেই কোথাও আছে। এক্ষুনি বেল বাজিয়ে দেখা করতে আসবে। অদ্ভুত যত্ন নিয়ে গল্পটা লিখেছে মেয়েটা। আসলে গল্পের চরিত্ররা তো বাস্তবেও চলে আসে। না হলে সে দিন নীচের ফ্ল্যাটে বন্ধ দরজার সামনে প্রিয়তোষের গল্প থেকে তুলে ছাতাটা কে নিয়ে এসে রেখেছিল?
টিউউ...টিউউ... টিউটিউ...
চমকে উঠলেন প্রিয়তোষ। সেই পাখিটা! প্রায় ভুলতেই বসেছিলেন পাখিটার কথা। ও যাতে আবার আসে, তাই কিছু দিন বাটিতে জল, গম রাখছিলেন। কিন্তু পাখিটা আসেনি। ইদানীং চাল-গম রাখা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। আজ পাখিটা আবার ডাকছে। এটা কি হেমন্তের ডাক? আরামকেদারা ছেড়ে বারান্দায় ঝুঁকে খোঁজার চেষ্টা করলেন পাখিটাকে। দেখতে পেলেন না। অথচ ডাকটা ভেসে আসছে, টিউউ...টিউউ...
‘‘সেজমামা!’’ পেছন থেকে একটা চিৎকারে চমকে উঠলেন প্রিয়তোষ। মুখ ঘুরিয়ে দেখলেন, ইপ্সি।
‘‘তুমি এ ভাবে ডেঞ্জারাসলি ঝুঁকে কী করছ?’’
‘‘কিছু না। আয়, কখন এলি? কে দরজা খুলে দিল?’’
‘‘কেন, ঝর্নাদি! এসো, দেখো কাদের নিয়ে এসেছি।’’
প্রিয়তোষ বসার ঘরে এলেন। হাসি-হাসি মুখে দাঁড়িয়ে আছে ঈপ্সিতারই বয়সি আরও দু‘জন মেয়ে। ঈপ্সিতা আলাপ করিয়ে দিল, ‘‘ওরা হচ্ছে স্নিগ্ধা আর দিঠি। আমার পিজি-মেট। ওদের কথা বলেছি না তোমাকে?’’
ঈপ্সিতা ও আরও পাঁচ-ছ’জন মেয়ে পেয়িং গেস্ট থাকে যাদবপুরের একটা বাড়িতে। মেয়েগুলোর নাম হয়তো কখনও বলেছিল। খেয়াল করতে পারলেন না প্রিয়তোষ।
প্রিয়তোষ ওদের বললেন, ‘‘বোসো।’’ একটু বিরক্ত হলেন ভাগনির ওপর। বন্ধুদের নিয়ে আসছে, আগে একটা ফোন করবে তো! একটু মিষ্টি, কোল্ড ড্রিংক এনে রাখতেন!
ঈপ্সিতা বলে উঠল, ‘‘না, আমরা এখন কেউ বসব না। তোমাকে নিতে এলাম।’’
‘‘নিতে এলি মানে?’’
‘‘তোমাকে নিয়ে বেরব। সবাই মিলে পার্টি করব।’’
‘‘কিসের পার্টি?’’
‘‘সেটা সারপ্রাইজ। চট করে রেডি হয়ে নাও।’’
‘‘কোথায় যাব?’’
‘‘আরে এই তো, কাছেই। রাস্তার মোড়ে একটা রেস্তরাঁ আছে। আসার সময় দেখে এসেছি।’’
১৪
রবিবারের তাসের আড্ডাটা আজ বসেছে সৌমিত্র দত্তর বাড়িতে। তবে সৌমিত্রর গৃহিণী শকুন্তলা নীহারের গৃহিণী শ্রাবন্তীর মতো নন। মদ, তাস, জুয়া— তিনটেই ঘোরতর অপছন্দ। সৌমিত্রর ব্যবসা বেশ কিছু বছর ভাল চলছে না। তার ওপর এই ফ্ল্যাটের ইএমআই দিতে দিতে নাভিশ্বাস উঠছে। কিন্তু সৌমিত্রর লোক-দেখানো বড়লোকিয়ানা কমছে না। এটা কিছুতেই মেনে নিতে পারেন না শকুন্তলা।
অবশ্য শকুন্তলা কী ভাবলেন, সেটা সৌমিত্র কোনও দিন গুরুত্ব দেন না। প্রত্যেক রবিবার নীহার সরখেলের বাড়িতে যেতে যেতে মনে হয়েছে, নীহার সরখেল মাছভাজা আর বিয়ার খাইয়ে খাইয়ে যেন নিজের বড়লোকি উদারতা দেখিয়ে নিজের প্রতিপত্তি জাহির করছেন। তিনি নিজেও যে সেই উদারতা দেখাতে পারেন, সেটা বোঝাতে সবাইকে আজ নিজের বাড়িতে ডেকেছেন। নীহার সরখেল যে ব্র্যান্ডের বিয়ার খাওয়ান, তার চেয়ে দামি ব্র্যান্ডের বিয়ার আনিয়েছেন, তিন রকমের চিকেন কাবাব আর চিকেন তন্দুরি আনিয়েছেন।
ক্রমশ