ছবি: পিয়ালী বালা
টিউউ...টিউউ... টিউটিউ... প্রিয়তোষের ঘুমটা ভেঙে গেল অদ্ভুত একটা পাখির সুরেলা ডাকে। বেডরুমের খোলা দরজাটা থেকে সোজা দেখা যাচ্ছে পুব দিক থেকে আসা রোদ-ছড়ানো উত্তরের বারান্দাটা। প্রিয়তোষ ঝাপসা চোখে দেখলেন, ছোট্ট একটা পাখি বসে আছে বারান্দার রেলিংয়ে। দু’মাসের ওপর হয়ে গেল নিউটাউনের এই নতুন ফ্ল্যাটটায় এসেছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনও দিন এগারো তলার এই ফ্ল্যাটের বারান্দায় পাখি এসে বসতে দেখেননি। প্রিয়তোষ কাক, চড়ুই, টিয়া-শালিকের বাইরে খুব একটা পাখি চেনেন না। কিন্তু আজ এই খুদে পাখিটার টরটরে ঘুমভাঙানি নিষ্পাপ ডাকটা দিব্যি লাগতে আরম্ভ করল।
এমনিতে এই খাঁ-খাঁ ফ্ল্যাটে ঘুম ভেঙে ওঠার পর প্রিয়তোষের খানিক ক্ষণ কী রকম যেন বিপর্যস্ত লাগে। চট করে দিনক্ষণ ঠাহর করে উঠতে পারেন না। অবশ্য ঠাহর করারও বিশেষ প্রয়োজনও হয় না। কারণ কয়েকটা ফোন করা ছাড়া প্রিয়তোষের সারা দিন কোনও অবশ্যকর্তব্য নেই। যত দিন না সুতপা আমেরিকা থেকে ফিরে আসছে, বা মুক্তারামবাবু স্ট্রিটের সাবেকি বাড়িটা ভেঙেচুরে ঘুপচি আর একটা ফ্ল্যাট তৈরি হয়ে ফিরে যাওয়ার ডাক আসছে, এ ভাবেই এখানে দিনক্ষণের হিসেব ছাড়া পরিযায়ী জীবনটা কাটানোর মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে নিয়েছেন।
প্রিয়তোষ বেডসাইড টেবিলের ওপর থেকে চশমাটা তুলে নিয়ে পরলেন। পাখিটা স্পষ্ট হল। শরীরটা ছোট্ট হলেও পাখিটার লেজটা লম্বা। শরীর থেকে তেরচা হয়ে উঠে তিরতির করে কাঁপছে। প্রিয়তোষের হঠাৎ মনে হল, পাখিটার একটা ছবি তুললে বেশ হয়। মোবাইলটা হাতে নিয়ে সন্তর্পণে বারান্দার দিকে এগোতেই পাখিটা হুস করে উড়ে গেল।
বারান্দায় এসে দাঁড়ালেন প্রিয়তোষ। বারান্দা থেকে বাইরেটা সত্যিই সুন্দর। কংক্রিটের জঙ্গলের মধ্যে থেকেও এগারো তলার বারান্দা থেকে নীচটা দেখতে চোখের আরাম হয়। হাউজিং-এর ল্যান্ডস্কেপটা যত্ন করে করেছে বিল্ডার। নীচে সবুজ চিনে ঘাসের গালিচার মধ্যে টলটলে নীল সুইমিং পুল। কেয়ারি করা গাছগাছালি। পাঁচিল ঘেঁষে ওয়াকওয়ে।
কাল রাতে বৃষ্টি হয়েছে। গোটা জায়গাটা ধুয়েমুছে আরও ঝকঝক করছে। নিউটাউনের এই এলিফ্যান্টা হাউজিং সোসাইটির তিনটে টাওয়ার। তবে এখনও খুব বেশি লোক আসেনি। প্রিয়তোষ শুনেছেন, সব ফ্ল্যাটই নাকি বিক্রি হয়ে গিয়েছে। অনেকেই পিকলুর মতো রিয়েল এস্টেটে ইনভেস্ট করার জন্য কিনে রেখেছে। তবে লোক কম থাকলেও সকালের এই সময়টায় অনেকে ওয়াকওয়ে দিয়ে মর্নিং ওয়াক, জগিং করে। আজ একেবারে ফাঁকা। এটা দেখেই হঠাৎ প্রিয়তোষের খেয়াল হল, আজ রবিবার। রবিবার লোকে দেরি করে ঘুম থেকে ওঠে। স্বাস্থ্যচর্চা থেকে অনেকেই শরীরটাকে বিশ্রাম দেয়।
রবিবার সকালে কাজ করতে ঝর্নাও দেরি করে আসে। অবশ্য রবিবারের সকালের চা-জলখাবারটা গত দু’মাসে প্রিয়তোষ নিজেই করতে শিখে গিয়েছেন। এই বাষট্টি বছর বয়স পর্যন্ত প্রিয়তোষের কস্মিনকালেও এ সব করার অভ্যাস ছিল না। এখানে আসার পর, সুতপা আমেরিকায় যাওয়ার আগে রীতিমত হাতেকলমে সব ধরে ধরে শিখিয়ে দিয়ে গিয়েছে। প্রিয়তোষ তখন বলতেন, এই সব আধুনিক ফ্ল্যাট, আধুনিক জীবন, আধুনিক গ্যাজেটগুলো ওঁর মতো মুক্তারামবাবু স্ট্রিটে জীবন-মুড়োনো গুহামানুষের জন্য নয়। তবে কালের প্রয়োজনে সেই আধুনিক গ্যাজেটগুলো দিব্যি রপ্ত করে নিয়েছেন তিনি। ঝর্না এখন টানা তিন দিন কামাই করলেও ওয়াশিং মেশিনে কাপড় কাচা, মাইক্রোওয়েভে খাবার গরম করা থেকে ডিশ ওয়াশারে বাসন ধোওয়া— সব একাই চালিয়ে নিতে পারেন।
ইন্ডাকশন টি-মেকারে জল ফুটিয়ে নিয়ে, কাপে ফুটন্ত জল ঢেলে টি-ব্যাগ চুবিয়ে, খবরের কাগজটা হাতে করে বারান্দার আরামকেদারায় এসে বসলেন প্রিয়তোষ। এগারো তলার এই বারান্দাটাতে প্রচুর হাওয়া। সেই হাওয়া সামলে পাট মেলে খবরের কাগজের পাতা ওলটাতে ওলটাতে একটা পাতায় এসে চমকে উঠলেন। অবিশ্বাস্য! পাতাটা আগাগোড়া পড়লেন প্রিয়তোষ। প্রতিটা শব্দ। তবু যেন বিশ্বাস হচ্ছে না।
ছটফট করতে থাকলেন প্রিয়তোষ। খবরটা তো কাউকে একটা জানাতে হবে! কিন্তু কাকে? সুতপা? সে তো এখন পৃথিবীর অন্য গোলার্ধে। বলেছিল শনিবার রাতে কোথায় একটা নিয়ে যাবে পিকলু। সুতপার পরে কাউকে খবরটা জানানোর তাড়নায় মোবাইলের ফোনবুক ঘাঁটতে ঘাঁটতে ভাগনি ঈপ্সিতার নামের ওপর এসে থেমে গেল আঙুলটা।
রবিবার সকাল পৌনে আটটায় সেজমামার ফোনে ঘুমটা ভেঙে বুকটা ছ্যাঁত করে উঠল ঈপ্সিতার। সেজমামা নিউটাউনের ফ্ল্যাটে একা আছে। ফোনটা ধরেই গলা দিয়ে বেরিয়ে গেল, ‘‘কী হয়েছে সেজমামা?’’
সেজমামার গলায় অবশ্য কোনও উদ্বেগ খুঁজে পেল না ঈপ্সিতা। বরং একটু অপরাধী গলা করে প্রিয়তোষ বললেন, ‘‘ঘুম থেকে উঠেছিস?’’
‘‘হ্যাঁ, তুমি ঠিক আছ তো?’’
‘‘হ্যাঁ রে, ঠিক আছি।’’ তার পর প্রিয়তোষ একটু হেঁয়ালির গলায় বললেন, ‘‘রবিবার তোদের পিজি-তে অনেকগুলো খবরের কাগজ দেয়, তাই তো?’’
‘‘হ্যাঁ, কেন বলো তো?’’
‘‘বাংলা কাগজগুলো খুলে দেখ তো ইপ্সি, কোনও কাগজে এক্সাইটিং কিছু পাস কি না?’’
ঈপ্সিতা সেজমামার গলা শুনে এত ক্ষণে বুঝে গেল, রাতে সেজমামার বুকে ব্যথা বা আমেরিকায় প্লেন নিয়ে আর একটা সন্ত্রাসবাদী হামলা জাতীয় কিছু হয়নি। গলাটা কপট গম্ভীর করে নিয়ে বলল, ‘‘ভাবছি, কাল কি কোনও ডার্বি ছিল? মোহনবাগান আবার বাঙালগুলোকে হারিয়েছে? সব কাগজ বাঙালগুলোকে ধুনেছে আর তুমি টগবগ করে ফুটছ!’’
‘‘না না, ডার্বি নয়। ভাল করে বাংলা কাগজগুলো দেখ। একটা ছবি দেখবি।’’
‘‘ছবি? ও আচ্ছা, বুঝতে পেরেছি। কোনও কাগজে হ্যান্ডু কোনও পাত্রের ছবি দেওয়া অ্যাড বেরিয়েছে। তার গলায় তুমি আমাকে লটকে দিতে চাও। দাঁড়াও,’’ ফোনের মধ্যেই প্রিয়তোষ ঈপ্সিতার গলার আওয়াজ পেলেন, ‘‘চিন্টি ডার্লিং, বাংলা খবরের কাগজগুলো দে তো!’’
প্রিয়তোষ ফোনটা ছেড়ে অল্প নিশ্চিন্ত হলেন। একটা কাউকে তাও জানানো হল। ইপ্সি নিশ্চয়ই খুঁজে পাবে। এত ক্ষণ চায়ের কাপটার কথা খেয়াল ছিল না। টি-ব্যাগটা এত ক্ষণ ডুবে থেকে চায়ের রংটা গাঢ় কালো হয়ে গিয়েছে। ঠান্ডাও হয়ে গিয়েছে। তবে ঠাণ্ডা কষা চা’টা বিস্বাদ লাগল না প্রিয়তোষের। কয়েক চুমুকে সেটা শেষ করে বারান্দার রেলিংয়ে অল্প ঝুঁকে ফুরফুরে মনে খুঁজতে থাকলেন পাখিটাকে।
মোবাইলটা বেজে উঠল। ধরার আগেই অভ্রান্ত অনুমান করলেন, ইপ্সি। ফোনটা ধরতেই প্রচণ্ড উত্তেজিত গলায় ঈপ্সিতা বলে উঠল, ‘‘প্রিয়তোষ চট্টোপাধ্যায় মানে তুমি সেজমামা?’’
‘‘কেন, বিশ্বাস হচ্ছে না?’’
‘‘ওয়াও! তোমার লেখা গল্প বেরিয়েছে রবিবারের কাগজে? সত্যি বিশ্বাস হচ্ছে না! তোমাকে তো কোনও দিন লিখতে দেখিনি। জিও সেজমামা! উফ, অ্যাট লাস্ট একটা কাণ্ড করে গত রোববার মিতালি রাজদের ওয়ার্ল্ড কাপ ফসকে যাওয়ার দুঃখুটা থেকে তুমি মনটা ঘোরালে! ইউ আর গ্রেট! একেবারে জগ্গা জাসুসের মতো মনটা ভাল করে দিলে। কবে লিখলে?’’
‘‘লিখেছিলাম। পড়েছিস, নাকি না পড়েই ফোন করছিস?’’
‘‘দু’টো প্যারাগ্রাফ পড়েছি। কিন্তু পড়ব কী, বারবার তো গল্পের নামের তলায় তোমার নামটার দিকে চোখ চলে যাচ্ছে। প্রিয়তোষ চট্টোপাধ্যায়। গল্পের নামটা লা-জবাব দিয়েছ, ‘অপেক্ষা’। আর ছবিটাও আর্টিস্ট ঝিনচ্যাক এঁকেছে। ছবিটা দেখে মনে হচ্ছে, ফাটাফাটি প্রেমের কেস।’’
প্রিয়তোষ লজ্জা পেতে শুরু করলেন। এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা যতটা সহজ বড়দের সঙ্গে, বড়রা এখনও পাল্লা দিয়ে ততটা সহজ হয়ে উঠতে পারেনি। গলাটা অল্প খাঁকরিয়ে পরিষ্কার করে উঠে বললেন, ‘‘শোন, খবরটা তোর সঙ্গে শেয়ার করলাম। তুই আবার সবাইকে বলে বেড়াস না।’’
‘‘সেটা আমার ওপর ছেড়ে দাও সেজমামা। দাঁড়াও, অন্য কেউ ব্রেকিং নিউজটা দেওয়ার আগে আমি ফেসবুকে টুক করে স্টেটাস আপডেটটা দিয়ে দিই। তার পর জমিয়ে তোমার লেখাটা পড়ে শেষ করব। সেলিব্রেশন চাই সেজমামা।’’
ফোনটা ছাড়ার পর মনটা আরও খুশি-খুশি হয়ে উঠল প্রিয়তোষের। মনের মধ্যে হঠাৎ একটা প্রবল উৎসাহ আসছে। আরও গল্প লিখতে হবে। কাগজে, পত্রপত্রিকায় পাঠাতে হবে। এই দু’মাস কী সময়ই না নষ্ট করেছেন! সদ্ব্যবহার করলে এত দিনে আরও খানকতক গল্প লেখা হয়ে যেত।
ঘণ্টাখানেকের মধ্যে ঈপ্সিতার সৌজন্যে ভাইবোন, আত্মীয়স্বজনদের বেশ কয়েকটা ফোন পেলেন প্রিয়তোষ। তবে একটা ব্যাপারে একটু দমে গেলেন। গল্পটা কেউই পুরোটা পড়েনি। বোন মিনুর কথা, ‘‘বউদি নেই, বড্ড একা একা লাগছে, তাই না রে সেজদা? এই বৃষ্টির মধ্যে বাড়িতে বসে বসে গল্প লিখছিস! বললাম আমার বাড়ি এসে থাক।’’ শোনার পর ঈষৎ অভিমানী গলায় ঈপ্সিতাকে আবার ফোন করে বললেন, ‘‘শোন, তোর আর কাউকে বলার দরকার নেই।’’
‘‘ও মা! কেন? জানো, আমি ফেসবুকে আপডেট দিয়েছি! অনেককে ট্যাগিয়ে দিয়েছি। এর মধ্যেই ঢিসক্যাঁও ঢিসক্যাঁও করে চব্বিশটা লাইক পড়ে গিয়েছে। তিনটে ‘ওয়াও’ ‘ওয়াও’ কমেন্ট। কেউ খিল্লি করেনি।’’
‘‘কী সব যে তোদের ভাষা আজকাল! কী লিখেছিস?’’
‘‘তোমার গল্পের ছবিটার ফটো তুলে পোস্টিয়ে লিখেছি, আমার সেজমামার লেখা ঝক্কাস প্রেমের গল্প। বন্ধুরা জানিও কেমন লাগল। সঙ্গে গল্পটার হাইপারলিংকও দিয়ে দিয়েছি। ছানাপোনারা অনলাইনই পড়ে নিতে পারবে। তুমি একেবারে ধুম মচিয়ে দিয়েছ!’’
‘‘যারা লাইক দিয়েছে, তারা কেউ পড়েছে কি?’’
‘‘আহ্, সেজমামা! লাইক দেওয়া মানে ওরা তোমাকে কংগ্র্যাচুলেট করছে। আর একটু সময় যেতে দাও, ছানাপোনাগুলো কমেন্টে বলবে কেমন লাগল। তোমাকে কত বার বলেছি, একটা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট করে নাও! আমার ফ্রেন্ডলিস্টে থাকলে নিজেই দেখতে পারতে। উফ সেজমামা, হোয়াট্সঅ্যাপ নেই, ফেসবুক নেই, তুমি না দুনিয়াসে দো কদম পিছেই রইলে! আচ্ছা তুমি স্কাইপ করতে পারো তোমার মাধুরী দীক্ষিতের সঙ্গে, ফেসবুক কেন পারো না?’’
প্রিয়তোষ হাসলেন, ‘‘তোর মামির জন্য স্কাইপটা ওই ওয়াশিং মেশিন চালানোর মতো শিখতে হয়েছে। ফেসবুকের এখনও দরকার পড়েনি।’’
তবে চব্বিশটা লাইক, সংখ্যাটা প্রিয়তোষকে তৃপ্ত করল। লাইক, অর্থাৎ এই গ্রহে চব্বিশ জনের ভাল লেগেছে খবরটা। রবিবারের কাগজটা টাটকা কিনতে পাওয়া যায় বড়জোর দুপুর পর্যন্ত। কাছেই একটা শপিং মলের বাইরে এক জন খবরের কাগজের হকার সকালের দিকটায় বসে। ওর থেকে কয়েকটা কপি কিনে রাখতে হবে। যদি কেউ চায়! প্রিয়তোষের মুক্তারামবাবু স্ট্রিটের পুরনো পাড়াটাও মনে পড়ল। সুরেনের চায়ের দোকানে প্রত্যেক রবিবার সকালে বাজার-ফিরতি আড্ডা বসে। প্রথম পাতার রাজনৈতিক খবর থেকে আরম্ভ করে খেলার পাতা হয়ে রবিবারে প্রকাশিত গল্প, সব কিছুর চুলচেরা বিশ্লেষণ চলে। সেখানেও নিশ্চয়ই গল্পটার প্রসঙ্গ উঠবে। ওখানে গিয়ে বসলে বিশ্বেশ্বররা কি খেয়াল করতে পারবে, আজকের কাগজের গল্পের লেখক স্বয়ং ওদের মাঝে চায়ের কাপ নিয়ে বসে আছে?
দশটা দশ পর্যন্তও যখন ঝর্না এল না, খবরের কাগজের কপিগুলো কিনতে যাওয়ার জন্য ফ্ল্যাটটা তালাবন্ধ করে লিফটের বোতাম টিপলেন প্রিয়তোষ। পাঁচ তলায় লিফটের দরজাটা খুলতেই দেখলেন, সামনে দাঁড়িয়ে আছেন সোমনাথ বিশ্বাস। প্রিয়তোষকে দেখেই বললেন, ‘‘এই যে মিস্টার চ্যাটার্জি, আপনার কাছেই যাচ্ছিলাম। হোয়াট আ সারপ্রাইজ, আপনার সঙ্গে এখানেই দেখা হয়ে গেল।’’
ক্রমশ