ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ৬
Novel

মায়াডোর

উত্তীয়র চোয়াল শক্ত হল, চোখ বন্ধ করল সে। চমৎকার প্রস্তাব। স্থায়ী সম্পর্ক, নিবিড় বন্ধন, দীর্ঘকালীন বিশ্বস্ততা

Advertisement

অভিনন্দন সরকার

শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২২ ০৭:০০
Share:

ছবি: বৈশালী সরকার

পূর্বানুবৃত্তি: উত্তীয়কে তার সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ দিতে আসে মঞ্জীরা। আলাপ-পরিচয়ের সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠতা বাড়ে, পরস্পরের প্রতি আকর্ষণ তৈরি হয়। নরনারীর সম্পর্ক এক জায়গায় থেমে থাকে না, পরিণতি পেতে চায়। এ সব কথাই উঠে আসে উত্তীয়র স্মৃিতচারণে। জুঁই আর অভিরাজের বাড়িতে বসে মদ্যপান করছে উত্তীয়। সে একটু অগোছালো, অস্থির। কী হয়েছিল তার আর মঞ্জীরার মধ্যে? জুইঁয়ের প্রশ্নের উত্তরে সে দিনের ঘটনা বলতে শুরু করে অভিরাজ।

Advertisement

মঞ্জীরা একটু ভেবে বলেছিল, “বাই এনি চান্স, আমি কি কখনও তোমায় এমন ইমপ্রেশন দিয়েছিলাম যে, আমি অথৈ জলে পড়ে আছি, প্লিজ় এসে আমায় উদ্ধার করো! দিয়েছিলাম কি?”

Advertisement

“না মঞ্জীরা, দ্য প্রোপোজ়াল ইজ় এনটায়ারলি ফ্রম মাই সাইড। তুমি চাইলে সময় নাও।”

“উত্তীয়, আমাকে ঠিক এক বছরের মধ্যে এক জন কলেজ স্টুডেন্ট, হাসিখুশি মেয়ে
থেকে পাকা গৃহিণী, বাচ্চার মা হয়ে যেতে হয়েছিল। তুমি পারবে?”

উত্তীয় জিজ্ঞাসু চোখে তাকিয়েছিল, “মানে?”

মঞ্জীরা ধারালো হাসি হেসেছিল, “মানে, ধরে নাও আমি রাজি হয়ে গেলাম। কিন্তু আমি তো একুশ বছরের মেয়ে নই। আমার কিছু রেসপন্সিবিলিটি আছে, যেগুলো তোমার কাছে অবলিগেশন মনে হতেই পারে। আই মিন, মিহিকা, ডাম্বো... এরা আমার ইন্টিগ্রাল পার্ট, উত্তীয়। আমার পক্ষে ওই এস্টাবলিশমেন্ট ছেড়ে চলে আসা সম্ভব হবে না। আর তা ছাড়া ভাবো, ম্যারেজ পেপারে একটা সই করা মাত্র তুমি একটা এগারো বছরের ছেলের বাবা হয়ে যাবে... আর ইউ রেডি ফর দ্যাট?”

কথাগুলো বলে মঞ্জীরা আবার সেই তীক্ষ্ণ চোখে তাকিয়েছিল। সেই মুহূর্তটার আক্ষেপ উত্তীয়র হয়তো বাকি জীবনেও যাবে না।

মঞ্জীরার পিছুটান তার অজানা নয়, মঞ্জীরা যে এই প্রসঙ্গ তুলবে তাও সে জানত। সে ঠিক করেই এসেছিল কী বলবে এর উত্তরে। কিন্তু সেই মুহূর্তে মঞ্জীরার সামনে একেবারে স্তব্ধ হয়ে গেছিল উত্তীয়। মঞ্জীরার প্রশ্নের উত্তরে নীরবতা ছাড়া আর কিচ্ছু দিতে পারেনি সে দিন। কেন যে উত্তর খুঁজে পায়নি! কোন দ্বিধা গ্রাস করেছিল তাকে!

মঞ্জীরাও এক সময় চোখ সরিয়ে নিয়েছিল, “বাদ দাও। ইট’স নর্মাল। কেউ চাইবে না বিয়ের পর যৌতুকে একটা এগারো বছরের বিচ্ছু আর জঘন্য অ্যাটিটিউডের এক বদমেজাজি কলেজ স্টুডেন্ট তার ঘরে এসে ঢুকুক।”

সংবিৎ ফিরে পেয়ে উত্তীয় বলে উঠেছিল, “আমি এক বারও বলিনি আমি ওদের...”

মঞ্জীরা হেসে উঠেছিল। বাধ্য হয়ে কথা থামিয়ে দিতে হয়েছিল উত্তীয়কে। মঞ্জীরা হাসতে হাসতেই হালকা চালে বলেছিল, “আই অ্যাম নো মোর অ্যান অ্যাসেট টু আ ম্যান, আই অ্যাম মিয়ার লায়াবিলিটি। আর তা ছাড়া ম্যারেজ নামের ইনস্টিটিউশনটাতেও
আমার বিশেষ শ্রদ্ধা নেই। তার চেয়ে আমরা বন্ধুই ভাল, কী বলো?”

উত্তীয়র গলার স্বর কঠোর হল, সম্ভবত তার ভিতরটা এই নারীর কাছে নগ্ন হয়ে পড়েছে বলেই, “লুক মঞ্জীরা, ফর মি ইট’স অল অর নান। তুমি ভেবে দেখো, শুধু শুধু একটা মরা ঘোড়াকে চাবুক মারার অর্থই হয় না। ব্যথা বাড়িয়ে কী লাভ বলো। আমাদের আর যোগাযোগ না রাখাই ভাল।”

মঞ্জীরা আঁতকে উঠেছিল। সে ঘন হয়ে এসেছিল উত্তীয়র কাছে, তার পর তার হাত জড়িয়ে
ধরে বলেছিল, “কী যা তা বলছ, থাকতে পারবে আমায় ছেড়ে?”

উত্তীয় হাত ছাড়িয়ে নিল, “কেউ কাউকে ছাড়া মরে যায় না। দ্যাট’স লাইফ। চলি।”

উত্তীয় উঠতে যাচ্ছিল, মঞ্জীরা তার হাত
টেনে তাকে বসিয়ে নিয়েছিল। হঠাৎই নরম হয়ে এসেছিল তার দৃষ্টি, সে উত্তীয়র গালে, কপালে মৃদু আঙুল ছুঁইয়ে মৃদু গলায় বলেছিল, “কী হয়েছে তোমার? আমি আছি তো। আমায় বলো, কী চাই। তোমার কি মনে হয়, তুমি কিছু চাইলে আমি ‘না’ বলতে পারব?”

উত্তীয়র চোয়াল শক্ত হল, চোখ বন্ধ করল সে। চমৎকার প্রস্তাব। স্থায়ী সম্পর্ক, নিবিড় বন্ধন, দীর্ঘকালীন বিশ্বস্ততা... এ সবের উপর নারীর একচেটিয়া অধিকার। পুরুষ কেন এ সব চাইবে! তার জন্য বরাদ্দ পনেরো মিনিটের শরীরী সান্নিধ্য। তার বেশি আর এক জন পুরুষের কী-ই বা চাওয়ার থাকতে পারে!

উত্তীয় হাত সরিয়ে নিয়েছিল। তার পর সত্যি সত্যিই উঠে হাঁটতে শুরু করেছিল কাফের দরজার দিকে।

এত ক্ষণ খেয়াল করেনি। কখন যেন কাফের বাইরে প্রবল বৃষ্টি নেমেছে, জল দাঁড়িয়ে গেছে সামনের রাস্তায়। উত্তীয় বেরোতে গিয়েও বেরোতে পারল না।

উত্তীয় ঘাড় ঘুরিয়ে দেখেছিল মাথা নিচু করে টেবিলে বসে আছে মঞ্জীরা, গির্জায় প্রার্থনার ভঙ্গিতে। প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর পুরুষ সচরাচর নারীদের সম্পর্কে হীন মনোভাবে ভরে থাকে। কিন্তু উত্তীয়র মনে হয়েছিল এই মেয়েটি পৃথিবীর সেরা মেয়ে, এ চলে গেলে পৃথিবীতে এমন মেয়ে আর আসবে না কোনও দিন।

রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ উত্তীয় পুরোপুরি মাতাল হয়ে গেল। রাতের খাওয়া সেরে উঠেই আবার পেগ বানাল সে। জুঁই শব্দ করে ফ্রিজ বন্ধ করল, “আরে! আর কত খাবে? বন্ধ করো এ বার!”

অভিরাজ মৌরি মুখে দিয়ে মিটিমিটি হাসছে, “আরে ধুস। ওর এটুকুতে কিস্যু হবে না। হি ইজ় আ স্পোর্টসম্যান। একটা সময় ও মিনিটে পনেরো বার রানিং বিটুইন দ্য উইকেটস করত, জানো তুমি?”

জুঁই মুখ বেঁকাল। বিরস মুখে রাতের খাবার তুলছে ফ্রিজে। কখনও উত্তীয়কে বেসামাল
হতে দেখেনি সে। পালাপার্বণে দু’পাত্তর চড়াত না তা নয়, কিন্তু ডিনারের পরও তেষ্টা মিটছে না, এমনটা আগে হয়নি।

তার ওপর বিচ্ছিরি এক গাল দাড়ি গজিয়েছে, লাল লাল চোখ... উত্তীয়কে আজকাল রীতিমতো অচেনা লাগে তার।

জুঁই শুয়ে পড়ল, অভিরাজ আর উত্তীয় বিশাল ফ্ল্যাটের অন্য প্রান্তে আর একটা শোওয়ার ঘরে বসল। মাঝে মাঝে বন্ধুর বাড়িতে এলে এই ঘরেই রাত কাটায় উত্তীয়। এই ঘরের আলনায় তার শর্টস, টিশার্ট, তোয়ালে রাখা থাকে।

উত্তীয় পেগ শেষ করার আগেই টলছে ভাল রকম। অভিরাজ এই ঘরের লাগোয়া ব্যালকনিতে গিয়ে দাঁড়াল। এই ঘর দুই বন্ধুর অতি ঘনিষ্ঠ আস্তানা।

দূরে বড় রাস্তার রাতজাগা আলোগুলো যেন পাহারা দিচ্ছে শহুরে রাতটাকে। অভিরাজের বেশ ফুরফুরে লাগছে খাওয়া শেষ হওয়ার পর থেকে, সে অন্যমনস্ক ভাবে বলল, “সো, হোয়াট নেক্সট? এ ভাবেই থাকবি ভাবছিস?”

উত্তীয় উত্তর দিল না, বিছানায় আধশোয়া হয়ে খুব মন দিয়ে মদ খাচ্ছে সে।

অভিরাজ এসে তার পাশে বসল, “আন্ডার সিক্সটিন-এ ইস্টার্ন শিপিং-এর এগেনস্টে লিগের ম্যাচটা মনে আছে তোর?”

উত্তীয় ম্লান হাসল। সেই ম্যাচ ভোলা যাবে না। অপ্রয়োজনীয় ম্যাচ। পর্যাপ্ত পয়েন্ট পেয়ে আগেই সেমিফাইনালের জন্য কোয়ালিফাই করে গেছিল সিএবি। শেষ পাঁচ ওভারে ম্যাচ জিততে ৭২ রান দরকার ছিল সিএবি-র। ম্যানেজমেন্ট সিদ্ধান্ত নেয় তারা রান চেজ় করবে না, কোনও মতে বাকি ওভারগুলো খেলে দিলেই হবে।

পঞ্চম উইকেট পড়লে ব্যাট হাতে নেমেছিল সিএবি-র অধিনায়ক অভিরাজ সেন, তত ক্ষণে ওপেনার উত্তীয় মজুমদার রীতিমতো সেট ব্যাটসম্যান।

ওভারের মাঝে ক্যাপ্টেন অভিরাজ তার জুনিয়র উত্তীয়কে বলেছিল, “চাপ নিস না, লেট’স প্লে ইট আউট। ম্যানেজমেন্ট বলছে ড্র-এর খেলা খেলতে।”

উত্তীয় বলেছিল, “ক্যাপ্টেন, আই ওয়ান্ট টু গো ফর ইট।”

আপাত অবিশ্বাস্য টার্গেট, তবু সে দিন নন-স্ট্রাইকার এন্ডে দাঁড়িয়ে পরবর্তী পঁচিশ মিনিট অভিরাজ এক আশ্চর্য তাণ্ডবের সাক্ষী হয়েছিল।

স্ট্রোক-প্লের ফুলঝুরি ছুটিয়েছিল উত্তীয়। মরা বিকেলের ইডেন গার্ডেন্সের প্রতিটি ঘাস থেকে শুরু করে গ্যালারির শ’পাঁচেক দর্শক অভিবাদন জানিয়েছিল উত্তীয়দের।

দু’বল বাকি থাকতে জিতে গেছিল সিএবি। উত্তীয়র শেষ শটটা আজও চোখের সামনে ভাসে অভিরাজের। অমানুষিক শক্তি ছিল উত্তীয়র কব্জিতে। স্টেপ আউট করত না বিশেষ, জায়গায় দাঁড়িয়ে গল্ফ প্লেয়ারদের মতো শট নিত। সেই শটটাও তেমনই ছিল, ‘অন দ্য রাইজ়’ খেলেছিল উত্তীয়, আর অন্য প্রান্তে অভিরাজ দুটো শব্দ শুনেছিল।

প্রথম শব্দটা ক্রিকেট বলে উইলো কাঠের ব্যাট সপাটে লাগার মধুর শব্দ আর দ্বিতীয় শব্দটা ছ’-সাত সেকেন্ড পরে... ইডেনের ক্লাব হাউসের পাশে, বি-ব্লকে সেই বলের আঘাতে একটা প্লাস্টিকের চেয়ার ভেঙে যাওয়ার শব্দ।

ম্যাচ শেষে উত্তীয় অভিরাজকে বলেছিল, “হ্যাপি, ক্যাপ্টেন?”

একটা দীর্ঘশ্বাস পড়ল অভিরাজের। সেই ম্যাচের পর দু’বছরের মাথায় রঞ্জি টিমে ডাক পেয়েছিল অভিরাজ। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে একটু একটু করে হারিয়ে গেছিল উত্তীয়। আর এক পা-দু’পা করে সাফল্যের সিঁড়ি দিয়ে উঠছিল অভিরাজ। অথচ এক দিনের জন্যেও দুই বন্ধুর মধ্যে কমপ্লেক্সের দেওয়াল গজিয়ে ওঠেনি।

দু’জনের পথ আলাদা হয়ে গিয়েছিল। অভিরাজ যখন বিদর্ভের মাঠে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তার দশম সেঞ্চুরি করছিল, তখন ঘাড় গুঁজে সরকারি চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছিল উত্তীয়। তবু বন্ধুত্বে চিড় ধরেনি এতটুকু।

অভিরাজ একদৃষ্টে উত্তীয়কে দেখতে দেখতে আপন মনেই বিড়বিড় করল, “আই ওয়ান্ট টু গো ফর ইট, ক্যাপ্টেন।”

উত্তীয় চমকে তাকাল, “তোর মনে আছে?”

অভিরাজ হাসল, “ও সব কি ভোলা যায়? ওয়ান্স ইন এ লাইফটাইম মেমরি।”

ঠোঁটের কোণে সামান্য হাসি নিয়েই উত্তীয় আবার মন দিয়েছে মদ্যপানে।

অভিরাজ বলল, “মঞ্জীরার ছেলে জাগরণী সঙ্ঘে ট্রেনিং করে, তাই না? আর ওর বোনটা কী করে যেন?”

“সে আর এক গল্প। পড়াশোনায় মন নেই। স্টার্ট-আপ করবে নিজের, এই পাগলামি মাথায় চেপেছে। খুব অ্যারোগ্যান্ট শুনেছি। দিদির সঙ্গে তেমন বনিবনা নেই। যে কারণেই হোক দিদির থেকে একটু ডিসট্যান্স রেখে চলে।”

অভিরাজ যেন শুনতেই পেল না, “বলছি, লাস্ট বলটা পিচে পড়ার আগে তো হার স্বীকার করিসনি কোনও দিন। আজ হঠাৎ থেমে যাবি! খেলাটা কি শেষ হয়ে গেছে উত্তীয়? কিছুই কি বাকি নেই?”

উত্তীয় পেগ শেষ করল, “ধুস, আর হয় না কিছু। ইট’স এ লস্ট ম্যাচ।”

“আসলে কী জানিস, তুই কত ক্ষণ প্যাড পরে ড্রেসিংরুমে বসে রইলি কেউ জানতে চাইবে না, আউট হয়ে ফেরার পর কী করলি সেটারও গুরুত্ব নেই। শুধু বাইশ গজে তোর আসা-যাওয়াটা অমলিন থাকবে বস। আর ওই আসা আর যাওয়ার মাঝে তুই কী করলি সেটুকুই আসল, নাথিং এল্‌স।”

উত্তীয় মাথা নিচু করে বসে আছে, অভিরাজ তার চোখের সামনে একটা আশ্চর্য দৃশ্য দেখছিল। পঁচানব্বই গজ দূর থেকে উড়ে আসা একটা সেলাই করা লাল বল ভেঙে দিচ্ছে গ্যালারির চেয়ার।

একটানা অনেক ক্ষণ কথা বলে অভিরাজের মাথা ঝিমঝিম করছে। তবু সে উত্তীয়কে হালকা পায়ে ধাক্কা দিল, “ওই দেবদাস! ওই শালা সিমপ্যাথি কাউ। শোন এ দিকে। আরে শুনেই যা, না... ক্যাপ্টেন ইজ় কলিং।”

উত্তীয় আড়মোড়া ভাঙল, তার পর বাধ্য ছাত্রের মতো এসে বাবু হয়ে বসল অভিরাজের সামনে। বাইরে তখন এক নিপাট শহুরে রাত্রি। গাড়িঘোড়া কমে এসেছে রাস্তায়।

শাটার নামছে দোকানপাটের, নিঝুম হচ্ছে লোকালয়। একা একটা লক্ষ্মীপেঁচা কখন যেন উড়ে এসে বসে আছে অভিরাজদের ফ্ল্যাটের কারনিশে। সেই পেঁচার চোখের সামনে ফ্ল্যাটবাড়ির সব আলো নিভে গেল একে একে। শুধু একটা ঘরে
আলো নিভল না। সেই ঘরের মানুষ দুটো জেগে রইল রাতভোর।

হরিসাধন চক্রবর্তীকে দু’চক্ষে দেখতে পারে না মিহিকা। অথচ অপছন্দ করার কোনও কারণ নেই। কিছু কিছু মানুষ এমনই হন, কারও ক্ষতি করেন না কোনও দিন, তবু কোনও কারণ ছাড়াই তাঁরা মানুষের অপছন্দের লিস্টে চলে যান।

আজও হরিসাধন চক্রবর্তী চুপচাপ ক্লাস নিলেন, প্রয়োজনের বেশি কিছুই বললেন না, অ্যাটেনডেন্সের সময় কেউ প্রক্সি দিচ্ছে কি না খেয়ালও করলেন না, উপরন্তু যাওয়ার সময় প্রতি দিনের মতো বলে গেলেন, “আশা করি, তোমরা আজকের পড়া সব বুঝতে পেরেছ। কড়া কথা কিছু বলে থাকলে খারাপ ভেবো না। আবার দেখা হবে পরের ক্লাসে।”

ক্রমশ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement