ছবি: প্রসেনজিৎ নাগ।
মানুষ যে কত রকম স্বপ্ন দেখে! কালকের স্বপ্নটা মনে পড়তেই অভ্রর হাসি পেল। গতকাল স্বপ্নে সে ক্যালিফোর্নিয়া গিয়েছিল। বিশাল একটা বাংলো। তার পিছনে ডোবা, সবুজ জল, ব্যাঙ লাফাচ্ছে, ডোবার পাশে কলমিলতার ঝোপ। নির্মলের দোকানে ধূমায়িত চায়ের গেলাস নিয়ে সে বসে রয়েছে, কয়েকটি অটো ছুটছে রাস্তায়, এক পাল কুকুর নিজেদের মধ্যে তারস্বরে ঝগড়া করছে। অবাক হয়ে সে ভাবল, ক্যালিফোর্নিয়ার ফুটপাতে নির্মল কী করে দোকান করল? তা হলে তো বাংলার সঙ্গে আমেরিকার পার্থক্য কিছুই নেই।
ঘুম ভাঙতে সে এক চোট হেসেছিল। প্রবাসী এক ভারতীয় মহিলা ক্যালিফোর্নিয়ায় বসে ভ্লগ করেন, সেটা সে রাতে ঘুমোনোর আগে দেখেছিল। আমেরিকা তাই সে স্বপ্নের ডানায় চেপে পৌঁছে গিয়েছিল। সে এই বয়সেও এয়ারপোর্ট দেখেনি, আমেরিকা যাওয়া তো অনেক পরের ব্যাপার।
কিছুই করে ওঠা যায়নি এই জীবনে। গত পরশু সন্ধে থেকেই মনের ভিতর কালো ফেনা জমে উঠছিল, গ্রাস করছিল তাকে ক্রমশ, তার চেতনা ঝাপসা হয়ে যাচ্ছিল। আচ্ছন্ন অবস্থায় সে সাংঘাতিক একটা কিছু করতে চেয়েছিল। সেটা ঠিকঠাক করতে পারলে সকালের এই নরম আলোয় সে বিছানায় শুয়ে থাকত না, মর্গের হিমশীতল অন্ধকারে শুয়ে থাকত। হয়তো এত ক্ষণে তার শরীরটার কাটাছেঁড়ার পর্ব শেষ হয়ে যেত। তবে চলে যাওয়া যখন হয়ে ওঠেনি, এই ব্যর্থ বেঁচে থাকাটা হাসিমুখে মেনে নিতে হবে।
অভ্র দীর্ঘশ্বাস ফেলে বিছানা থেকে উঠে বেসিনের দিকে গেল। তার দিনযাপনে কোনও নতুনত্ব নেই, থাকার কথাও নয়। প্রতিদিন ঠিক তার আগের দিনের মতো। সকালে উঠে চায়ের দোকান, বাজার যাওয়া বা টিউশন করা, দুপুরে ভাতঘুম, সন্ধ্যায় টিউশন, বইয়ে মুখ রেখে রাত জাগা— এই রুটিনের কোনও ব্যতিক্রম হয় না। তবে আজ হতে পারত। হয়নি।
সাইকেল চালিয়ে নির্মলের চায়ের দোকানে পৌঁছে গেল অভ্র। নড়বড়ে বেঞ্চে বসে এক প্লেট ঘুগনি অর্ডার করল। নির্মল ফুর্তিবাজ ছেলে। চাপ কম থাকলে নানা স্বাদের গল্প শোনায়। রোজ সকাল ছ’টা থেকে সাতটা তার দোকানে ছ’জন পাগল ভিজ়িট করে, ছ’কাপ চা ফ্রি দিতে হয়।
নির্মল বলল, “অভ্রদা, ভাবছি দোকানের নাম বদলে ‘ভবঘুরে টি স্টল’ রেখে দেব। রাজ্যের পাগল আর ভিখারি দেখি আমার এখানেই আসে।”
“তোর হাতে করা চায়ের প্রেমে পড়ে গেছে ওরা,” অভ্র হালকা গলায় বলল, “তা ছাড়া পাগলদের বিনেপয়সায় চা খাইয়ে কত পুণ্য হচ্ছে বল তো!’’
“ও রকম পুণ্যে কাজ নেই। জানেন দাদা, আজ এক পিস নতুন নমুনা এসেছিল। ঝোলায় রাজ্যের কাগজ ভর্তি, প্রায়ই কাগজ বের করে একমনে পড়ছিল। পড়া হয়ে গেলে ব্যাগে যত্ন করে রেখে দিচ্ছিল। কাগজ তো নয়, যেন সরকারি ফাইল। ওর নাম রেখেছি নিউটন।”
“নিউটন!”
“অত চমকে যাচ্ছেন কেন? আর এক জন রোজ আসে, একটানা বকে যায় শুধু। যত বড় বড় টায়ার কোম্পানি আছে, সব নাকি ওর কাছ থেকেই পরামর্শ নিয়ে বের করেছে। ভদ্রস্থ জামা-প্যান্ট পরে আসে। হাবভাব এমন যে, পাগল বলে ধরতেই পারবেন না। ওর নাম দিয়েছি টেকনো। এক জন একটা নোংরা জামার উপর হাফ জ্যাকেট চড়িয়ে আসে। এক কালে নামী কনট্রাক্টর ছিল। তার আবার এক কাপে হয় না, দু’কাপ চা লাগে।”
মোবাইল ফোনটা টুংটাং শব্দে জেগে উঠতেই ভুরু কুঁচকে অভ্র এক বার তাকাল। মল্লার ফোন করেছে। মল্লার গভীর রাত পর্যন্ত জাগে, বেলা অবধি ঘুমোয়। আজ সকাল সাতটায় সে উঠে পড়েছে!
“হ্যালো...”
“একটা কথা ছিল।’’
“বল, কী ব্যাপার? এত সকালে তো তোর ওঠার কথা নয়।”
“নিয়মের ব্যতিক্রম হতেই পারে। তোর সঙ্গে একটা সিরিয়াস কথা আছে।”
“বল।”
মল্লার গম্ভীর গলায় বলল, “বলছিলাম যে, সুইসাইড করার একটা সহজ উপায় বাতলে দে।”
অভ্র নড়েচড়ে বসে, “কাল কি বারে গিয়ে কয়েক পেগ চড়িয়েছিলি? এখনও হ্যাংওভার কাটেনি? আবোলতাবোল বকছিস কেন?”
“কথাটা যথেষ্ট সিরিয়াসলি বলছি। এই গ্লানির জীবন আর সহ্য হচ্ছে না। বাবা সুযোগ পেলেই খোঁটা দিচ্ছে। আমি কী করব বল? হিস্ট্রি নিয়ে এমএ করেছি। স্কুল সার্ভিস কমিশন পাঁচ বছর পরীক্ষা নেয়নি, যেটা নিয়েছিল সেটা যে প্রহসন, তা প্রমাণ হচ্ছে। শুধু কয়েকটা লোকের মাত্রাছাড়া লোভের জন্য একটা শিক্ষিত প্রজন্ম শেষ হয়ে গেল। ওই বিবেকবর্জিত গন্ডারগুলোকে গালাগালি দিতেও ঘেন্না করে। চাকরি কেমন করে বিক্রি হয়েছে, র্যাকেট কে বা কারা চালাত সবই তো এখন ওপেন সিক্রেট। সব জেনেও কাঠঠোকরা বুড়ো দিনরাত খালি ঠোকরাবে। দয়ামায়া বলে কিচ্ছু নেই!”
“মাথা ঠান্ডা কর। বয়স্ক মানুষেরা ও রকম খিটখিট করে।”
“কেন খিটখিট করবে? কিছু বোঝে না?”
“যে যেমন হয়। তবে বেঁচে থাকতে আমার বাবা কখনও আমাকে খোঁটা দেয়নি। বরং কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারকে গালমন্দ করেছে প্রাণ খুলে।”
“সরকারি চাকরির জন্মনিরোধক বেরিয়েছে যে! বাকি মোচ্ছবের বেলায় তো কোনও সরকারের টাকার অভাব পড়ে না। শুধু চাকরি দিতে গেলেই ওদের ফাটে। টাকার হিসেব শুরু হয়ে যায়।”
“হ্যাঁ, ওতেই নাকি সরকারের সমস্ত টাকা খরচ হয়ে যাওয়ার ভয়। সরকারি অফিসেও কোনও নতুন কর্মচারী রিক্রুট হচ্ছে না। কনট্র্যাক্টে নিয়োগ চলছে। একা তুই রেগে গিয়ে করবিটা কী?”
“রাগব না? এ সব বললেই তেনার অজুহাত মনে হয়,” মল্লার রাগে গরগর করে, “আমার ওল্ড ফাদার একখানা চিজ়। হাত দিয়ে একটা নয়া পয়সা গলে না। হাড়কিপটে লোকটা তো ক্যাপিটাল দিয়ে আমাকে একটা বিজ়নেস খুলে দিতে পারে! তা নয়। শুনলেই বলে যে, আমার দ্বারা নাকি বিজ়নেস হওয়ার নয়। টাকাটা জলে যাবে। এ দিকে আমাকে মেন্টাল টর্চার করবে। সহ্য হয় না। মনে হয় বাড়ি ছেড়ে কোথাও পালাই।”
অভ্র বলল, “কোথায় যাবি? কোথাও যাওয়ার নেই। তুই তো এক রকম সেলফ-এমপ্লয়েড বলা চলে। তোর মার্কেট আস্তে আস্তে বাড়ছে। পরে আরও ভাল হবে। ধৈর্য রাখ।”
“তুই আসল উত্তরটা বাইপাস করে যাচ্ছিস। আত্মহত্যার সহজ উপায় জানতে চেয়েছিলাম।”
“আমি তা কী করে জানব? শেষে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার দায়ে জেল খাটব না কি? তা ছাড়া যত দূর জানি, আত্মহত্যার কোনও মেড-ইজ়ি বাজারে এখনও নেই।”
“শালা হাড়হারামি! শুধু কথার প্যাঁচে এড়িয়ে যাওয়ার মতলব তোর। শোন, আর দু’দিন দেখব। তার পর ফাইনাল ডিসিশন নেব।”
“ফাইনাল ডিসিশন? কোন ব্যাপারে?”
“উজবুক একটা! এত ক্ষণ ধরে কী বললাম তা হলে? আত্মহত্যার ব্যাপারে।”
অভ্র বলল, “তা হলে তো তোর বাড়িতে আগাম জানাতে হচ্ছে।”
“ও বুড়ো গুরুত্বই দেবে না। ঈশ্বর ওকে অন্য ধাতুতে তৈরি করেছেন,” মল্লার ঝাঁঝিয়ে ওঠে, “তুই আমার পথের কাঁটা হতে চাস?”
অভ্র নরম গলায় বলল, “ওটা পথ নয়। তা ছাড়া বেকারের আত্মহত্যা এ দেশে কোনও খবরই নয়। কাগজের এক কোণে দয়া করে কয়েক লাইন বরাদ্দ করতে পারে। ভাল করে চোখেও পড়বে না কারও। তার চেয়ে কোনও নেতা ফুটপাতের দোকানে চা-পান করে কী বললেন, সেটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।”
মল্লার বলল, “মরার পরে খবর হল বা হল না, তা নিয়ে আমার একটুও মাথাব্যথা নেই। ভেবে দেখলাম যে সিলিংফ্যানে ঝুলে পড়াটাই বেস্ট অপশন। ট্রেনে মাথা দেওয়াতে হেভি সাহস লাগে। ওটা আমি পারব না।”
অভ্র চুপ করে যায়। এটা এক রকম দ্বিচারিতা হচ্ছে। বন্ধুকে সে জ্ঞান দিচ্ছে, অথচ নিজেই ও-পথে পা বাড়িয়েছিল গত পরশু। এখনও মনে পড়লেই সারা শরীরে শিহরন জাগছে। ট্রেনে মাথা দিতে সত্যিই সাংঘাতিক সাহস লাগে। এ কথা সে নিজের অভিজ্ঞতা থেকে টের পেয়েছে।
সেই রাত দশটার সময়ে সে বনচৌকি লেভেল ক্রসিং পেরিয়ে রেললাইন বরাবর হাঁটছিল। ফিনফিনে জ্যোৎস্না ছিল, ইউক্যালিপটাসের পাতলা জঙ্গলের ফাঁক দিয়ে চাঁদ দেখা যাচ্ছিল, সে সেই অপরূপ দৃশ্য থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিজের দুর্ভাগ্যের কথা ভাবছিল। চৌত্রিশ বছরেও সে চাকরি পায়নি, কয়েকটি টিউশন সম্বল, প্রেমিকাও ছেড়ে চলে গিয়েছে ন’বছর আগে। কী হবে আর এই জীবনে? আর কবে তার জীবনে আলো আসবে? সে কি কখনও থিতু হতে পারবে না? ধুঁকে ধুঁকে চলা জীবনটাকে আর টেনে নিয়ে গিয়ে কী লাভ? সমস্ত পাট চুকিয়ে দিলেই তো হয়। ট্রেন আসার এক মুহূর্ত আগে লাইনে দাঁড়িয়ে পড়লেই সব খতম। অবজ্ঞা, অবহেলা, হতাশা, ক্ষোভ ইত্যাদি নেগেটিভ ইমোশনগুলি তাকে আর ক্ষতবিক্ষত করতে পারবে না। সেই জন্যই তো মৃত্যুর আর এক নাম প্রশান্তি।
নিরালা সেই জায়গায় সে কয়েক মিনিট দাঁড়িয়ে ছিল। ভেবেছিল এক বার অন্তত বেপরোয়া হয়ে ঝাঁপিয়েই পড়বে। তখনই তার মন দোলাচলে অস্থির হয়ে উঠল। হার মেনে নিয়ে চলে যাবে? চলে যাওয়া না বেঁচে থাকা কোনটা শ্রেয়?
বেঁচে থাকা ঠিক কাকে বলে? কী আশ্চর্য, সেই মুহূর্তেই তার মায়ের কাতর মুখখানা মনে পড়ে গেল। মন বলল যে, মা তার জন্য অপেক্ষায় রয়েছে। সে ছাড়া মায়ের কেউ নেই। বেঁচে থাকা এমন এক মায়া যে, তার টান অগ্রাহ্য করার শক্তি সহজে আসে না। তারও এল না। মায়া, কেমন এক মায়া, তার পা দুটো অবশ করে ফেলল। শেষ মুহূর্তে চকিতে সে রেললাইনের ধার থেকে ছিটকে সরে এল।
ইউ-টার্ন নিয়ে প্রায় ছুটতে শুরু করছিল। ভীষণ ভয় করছিল তার। ছুটে ছুটে সে বনচৌকি লেভেল ক্রসিংয়ে পৌঁছেছিল। গেট পড়ে গিয়েছিল, লেভেল ক্রসিং-এর দু’পাশে যানবাহনের ভিড় ছিল, সে ভিড় এবং কোলাহলের মধ্যে মিশে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল। হৃৎস্পন্দন বেড়ে গিয়েছিল তার, দরদর করে ঘামছিল। মনে হয়েছিল আশপাশের লোকও শুনতে পাচ্ছে তার বুকের ধুকপুকানি। এক্ষুনি হয়তো অবাক চোখে তার দিকে তাকাবে।
“তোকে বোবারোগে ধরল নাকি শালা?”
“তোর প্রলাপ শুনে কি আর কথা বলার কিছু থাকতে পারে?”
মল্লার বলল, “কেউ বুঝতে চায় না। তুইও দেখছি অবুঝের দলে। তা আছিস কোথায় এখন?”
“নির্মলের দোকানে। আসবি নাকি?”
“না। আবার আমি ঘুমোব। বুড়ো দেখুক আর জ্বলুক। তুই নিশ্চয়ই এ বার ছাত্র চরাতে যাবি?”
“হুম। ছাত্র নয়, ছাত্রী।”
“হয়ে গেল তা হলে। দেখিস ভাই, পা হড়কাস না আবার।”
অভ্র হাসল, “পা হড়কানোর সুযোগ বরং তোর বেশি। বারো থেকে বিয়াল্লিশ সমস্ত বয়সের মেয়েরা তোর কাছে শেখে। সুর এবং ভালবাসার একটা সখ্য তো থাকেই।”
“শোন, মল্লার ঘোষ ভুল করেও ওই পথে পা বাড়াবে না। সমস্ত রস বেকারত্ব শুষে নিয়ে ছিবড়ে করে দিয়েছে। তা ছাড়া দেখতে আহামরি নই, একেবারে সাদামাটা। আমার দিকে কেউ কোনও দিন সে ভাবে তাকায়নি। তোর রূপ আছে, মেয়েরা এক বার হলেও তাকাবে। ঈশ্বর তোকে অন্তত রূপটা দিয়েছে, আমার বেলায় ভদ্রলোক চিপ্পুস মোডে ছিলেন। তা তোর ছাত্রীটি তোর দিকে তেমন ভাবে তাকায়-টাকায় নাকি?”
অভ্র বলল, “দূর, সাঙ্ঘাতিক সিরিয়াস পেরেন্টস। যে কোনও মুহূর্তে ছাঁটাই হয়ে যেতে পারি। টিউশনেও আজকাল নিশ্চয়তা নেই। ঘরে গিয়ে বেকার ছেলের টিউশন করা এক রকম দাসত্বের পর্যায়ে পড়ে। বাধ্য হয়ে করতে হয়।”
“আর আমারটা?”
“তুই সুর শেখাস। যন্ত্রীর মর্যাদাই আলাদা। সবাই শখে শেখে। তোরটা শৌখিন ব্যাপার, দাসত্বের প্রশ্নই আসে না। তুই কোনও সাবজেক্টের টিউশনের টিচার হলে হাড়ে হাড়ে টের পেতিস,” অভ্র বলল।
“কী দারুণ ব্যাখ্যা! শুনে মন ভরে গেল,” মল্লারের গলায় বিদ্রুপ, “সিন্থেসাইজ়ার টিচার হল লেবার শ্রেণির, বাড়ি গিয়ে শেখালেও ছ’শোর বেশি দেবে না। এই পোড়া দেশে শিল্প কখনও গুরুত্ব পায়নি, বুঝেছিস?”
অভ্র হাসে, “বেশ, তোর কথাই ঠিক। এখন তুই ঘুমো, ঘুমোলে বিগড়ে যাওয়া নার্ভ ঠান্ডা হবে। আমার ওঠার সময় হয়েছে।”
বেলা বাড়ছে। সাড়ে দশটা বাজে। এই বার বাজারটা যেতেই হয়। স্বর্গত পিতৃদেবের কাছ থেকে এই বিশেষ আইডিয়াটা সে নিয়েছে। বেলা করে বাজারে গেলে সস্তায় আনাজপাতি-মাছ পাওয়া যায়। যে দিন পার্সে টাকা কম থাকে, সে দিন বেলা করেই সে বাজারে ঢোকে। এই সময়ে অনেক মেসমালিক চার-পাঁচটা ব্যাগ নিয়ে বাজারে আসে। রাজ্যের ঘেঁটে যাওয়া মাছ, পোকায় কাটা আধবুড়ো আনাজ কিনে ব্যাগ ভর্তি করে। মেসের বোর্ডারদের কী যে খাওয়ায়, তা ভগবানই জানেন।