পৌষের শুরুর দিকের শীত। তবু পড়ন্ত দুপুরে নোনাবাদার চিটচিটে গরমটা জ্বালা ধরাচ্ছিল পিঠে। বাতাসে নোনাখাল থেকে ভেসে আসা মেছো সোঁদা গন্ধ। সুন্দরবনের অজস্র দ্বীপ, আর সেই দ্বীপে অগুনতি ছোট-বড় গ্রামগুলোয় এই গন্ধটা ভাসতে থাকে শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা... বারো মাস। বিশেষ করে দুপুরবেলার দিকে। উবু হয়ে বসে সার লাগিয়ে পোঁতা পালংয়ের বেডের মাটিগুলো খুরপি দিয়ে ভাল করে খুঁচিয়ে দিচ্ছিল রুদ্র। পাতলা সুতির ফতুয়াটা ঘামে সেঁটে বসেছে পেশিবহুল শরীরে। দ্রুত নিঃশ্বাসের তালে তালে উঠছে নামছে বৃষস্কন্ধ-সহ বিস্তৃত সমতল পিঠ। মাটি খোঁড়ার শব্দ উঠছে খপ খপ। দ্রুত হাতে খুরপি চালাচ্ছিল রুদ্র। সন্ধে নামার আগেই সেরে ফেলতে হবে কাজটা। কাল সকালে রাসুদা এলে ওকে দিয়ে বোনমিল ছড়িয়ে দিতে হবে ভাল করে।
আরও ঘণ্টাখানেক একই ভাবে এক নাগাড়ে চলল কাজটা। পাশে পড়ে থাকা ন্যাকড়াটায় ভাল করে খুরপিটা মুছে নিয়ে উঠে দাঁড়াল রুদ্র। রুদ্রনারায়ণ ব্যানার্জি। বয়স বছর পঁয়তাল্লিশ। ছ’ফুটের ওপর দীর্ঘকায় পেটানো চেহারাটায় পেশিগুলো ফুটে বেরোচ্ছে ঘামে ভেজা সপসপে ফতুয়ার আবরণ ভেদ করে। এক নজরেই বোঝা যায় এই বয়েসেও শারীরিক পরিশ্রমের অভ্যেস রয়েছে রীতিমতো। উঠে দাঁড়িয়ে কোমরটাকে ক্লক আর অ্যান্টি ক্লকওয়াইজ় কায়দায় বারছয়েক ঘোরাল রুদ্র। নিচু হয়ে, হাঁটু না ভেঙে দু’হাত দিয়ে পায়ের বুড়ো আঙুল দুটোকে ছুঁয়ে নিল বারচারেক। হাতজোড়া ছড়িয়ে দিল দু’পাশে। ফের নমস্কারের ভঙ্গিতে ফিরিয়ে নিয়ে এল নাক বরাবর। কপালের দু’পাশ বেয়ে অঝোরে গড়িয়ে নামছে স্বেদধারা। এর মধ্যেও হালকা পরিতৃপ্তির ছাপ চোখেমুখে। হাত নামিয়ে পালংয়ের বেডগুলোর দিকে তাকাল রুদ্র। মাটি ফুঁড়ে তরতরিয়ে বেড়ে উঠেছে চকচকে সবুজ পালং চারা। পর পর চারটে লাইনে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে। ঘন বনতুলসীর বেড়া দেওয়া বিঘেচারেক জমির আর এক পাশে অনেকটা জায়গা জুড়ে বেগুন, মুলো, ফুলকপি আর বাঁধাকপি। সবুজে সবুজ হয়ে আছে সমস্ত জায়গাটা। দেখলেও মন ভাল হয়ে যায়।
ঘাড় ঘুরিয়ে পিছনে তাকাল রুদ্র। জমির বাঁ পাশে একটা খড়ের ছাউনির চারচালা। চারচালার গা ঘেঁষে ওঠা কয়েতবেল গাছটার ডালে ঝোলানো ব্ল্যাকবোর্ডটার ওপর চক-পেন্সিলে লেখা অক্ষরগুলো আবছা পড়া যাচ্ছে ভিজে ন্যাকড়া দিয়ে ঘষে মুছে ফেলার পরও। হাতদশেক দুরে দু’কামরার ছোট একটা ঘর। ইট সিমেন্টের গাঁথনি। মাথায় টালির চাল। সামনে বাঁশের গায়ে বাঁধা একটা সাইনবোর্ড। হলুদের ওপর কালো লেটারহেডে বড় বড় হরফে বাংলায় লেখা— অন্নপূর্ণা স্বনির্ভর গোষ্ঠী। ব্লক-চামটা। সুন্দরবন। দঃ ২৪ পরগনা।
এগিয়ে গিয়ে ঘরের দাওয়ায় উঠল রুদ্র। শীতের বিকেল শেষ হয়ে আসছে দ্রুত। পড়ন্ত দুপুরের রোদের চিড়বিড়নো তাপটা কেটে গিয়ে বেশ একটা শিরশিরানি ভাব বাতাসে। আলো কমে আসার গায়ে লেগে লেগে উত্তরোত্তর বাড়ছে সেটা। ঘামে ভেজা ফতুয়াটা ছেড়ে দাওয়ার দড়িতে টাঙানো গামছাটা পেড়ে নিয়ে ভাল করে মুছে নিল সারা গা। দড়ির এক কোণে টাঙানো কাচা পাট করা একটা বুশশার্ট। তার ওপরে রাখা একটা মুগার চাদর। শার্টটা পরে চাদরটা জড়িয়ে নিল গায়ে। টালি আর বাঁশের ফাঁকে গোঁজা সস্তা সিগারেটের প্যাকেট আর পনেরো টাকার লাইটার। সিগারেট খাওয়ার ব্যাপারটা নিয়ে মাঝে মাঝেই খিচমিচ করে শ্রীপর্ণা। ওর কথা মনে পড়তেই ভ্রুজোড়া কুঁচকে গেল রুদ্রর। সেই ভোর থাকতে উঠে দলের, মানে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মেয়েদের সঙ্গে বেরিয়েছে পর্ণা। এখান থেকে কমপক্ষে মাইলপাঁচেক দূরে আরও প্রত্যন্ত অঞ্চলে গ্রামটা। গাঁয়ের বেশির ভাগ পুরুষমানুষ প্রাণ খুইয়েছে জঙ্গলে মাছ-কাঁকড়া ধরতে, কাঠ কাটতে আর মধু পাড়তে গিয়ে। এই পুরো সোঁদরবন এলাকায় লোকে গ্রামটাকে ‘বিধবাদের গাঁ’ নামে চেনে অথবা ডাকে। তো সেই গাঁয়ে আজ ওই সব স্বামী-হারা মহিলাদের মধ্যে সেল্ফ হেল্প গ্রুপ খোলা হবে একটা। সেই কাজেই সংস্থার মেয়েদের যাওয়া ওখানে। আজ প্রথম দিন, তাই সঙ্গে গেছে পর্ণা। মাইলপাঁচেকের মেঠো দুর্গম রাস্তা। সাইকেলে যেতে-আসতে কমপক্ষে ঘণ্টাতিনেক তো বটেই। ঘরে ঢোকার দরজার সোজাসুজি টাঙানো দেয়ালঘড়িটার দিকে তাকাল রুদ্র। চারটে চল্লিশ। চারপাশে আলো কমে আসছে খুব তাড়াতাড়ি। মাঠ, গাছপালা, খেতের ফসল সব কিছুর ওপর যেন পাতলা সরের মতো একটা কুয়াশার চাদর বিছিয়ে দিচ্ছে কোনও অদৃশ্য হাত। চিন্তা বাড়ছিল রুদ্রর। একটা বাঘ, ও পারের জঙ্গল খেকে খাল টপকে ঢুকে পড়ছে ওই অঞ্চলের গ্রামগুলোয়, ক’দিন আগে। গোয়াল থেকে গরু-মোষ টেনে নিয়ে যাচ্ছে থেকে-থেকেই। খালের পাশের ওই লম্বা রাস্তাটা ধরেই ফিরতে হবে পর্ণাদের। সন্ধেবেলা, নির্জন জঙ্গুলে পথঘাট... চিন্তা কাটাতে একটা সিগারেট ধরাল রুদ্র। ঘন ঘন কয়েকটা টান। চোখজোড়া বন্ধ, কপালের রেখাগুলো এখনও কুঁচকে রয়েছে, চিন্তাটা পিছু ছাড়ছে না কিছুতেই। ঠিক এই সময় অনেকটা দূর থেকে একটা লম্বা হাঁক—“স্যা-অ্যা-অ্যা-র !” শোনামাত্র শিরদাঁড়া বেয়ে উঠে আসা দুরন্ত থরথরে কাঁপুনি একটা! অনেক দিন, প্রায় বছরতিনেক হল এই ডাক অনেক পিছনে ফেলে চলে এসেছে সে। এত দিন বাদে হঠাৎ আবার সেই ভীষণ চেনা গলার চেনা সম্বোধন! নোনাবাদা আর জলজঙ্গলে ঘেরা সুন্দরবনের এই পাণ্ডববর্জিত গাঁয়ে। কেন?
দূরে বাঁধের ধারের রাস্তা ধরে এগিয়ে আসছে লোকটা। বলিষ্ঠ চেহারা, বয়সের জন্য একটু ভারীর দিকে। হাঁটার গতিও সামান্য শ্লথ, ওই একই কারণে সম্ভবত। ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে অবয়বটা। আর অন্য দিকে রুদ্র, আলোকবর্ষগতির অদৃশ্য একটা সময়রথে চড়ে ক্রমাগত পিছিয়ে যাচ্ছে এ-নদী, ও-নদী, মাতলা, বিদ্যেধরী, মেছোনৌকো, ভুটভুটি, শুলো উঁচিয়ে থাকা কাদামাটি, অগুনতি সব নোনাবাদা, শুঁড়িখাল আর সুন্দরী, বাইন, গরানের জঙ্গল। পেরিয়ে যাচ্ছে সেই কবেকার রেল কোম্পানির পেতে রাখা মাইলের পর মাইল ডাউন শিয়ালদা রেললাইন… রেল এসে পড়ছে শহরে, লোকজন, বাস-ট্রাম, ট্যাক্সি, প্যাঁ-পোঁ, হইহল্লা, চিৎকার... সল্টলেকের সেই পুলিশ স্টেশন, জিপ নিয়ে সন্ধে সাতটা নাগাদ রাউন্ডে বেরিয়েছিল ইন্সপেক্টর রুদ্রনারায়ণ ব্যানার্জি। হঠাৎই চোখে পড়েছিল সেক্টর ফাইভের কাছে নির্জন রাস্তায় এক মহিলার হার ছিনতাই করে পালাচ্ছে বাইক-আরোহী তিন ছিনতাইবাজ। ড্রাইভারকে গাড়ি ঘোরাতে বলে বাইকের পিছু ধাওয়া করেছিল রুদ্র। পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে শেখা কারাটের প্যাঁচ। জিপ থেকে বাঁ পা-টা ছুড়ে দিয়ে একটা সাইড কিক মাথার পিছনে! বাইক থেকে উড়ে গিয়ে ফুটপাতে ছিটকে পড়েছিল বাইকচালক। বাকি দু’জনকে কব্জা করে ফেলেছিল কনস্টেবলরা।
অতঃপর ঘটনা এগিয়েছিল দ্রুতগতিতে। ছিনতাই হওয়া হার ফেরত পেতে থানায় আসা, অপরাধী তিন জনকে আইডেন্টিফাই করা, রিকভারি পেপারে সইসাবুদ, এফআইআর… আরও একাধিক আইনি প্রক্রিয়া। জেনে ফেলা একে অপরের নাম। রুদ্রনারায়ণ ব্যানার্জি আর শ্রীপর্ণা মিত্র। শ্রীপর্ণার ভাল লেগে লেগে গিয়েছিল আপাতদৃষ্টিতে কাঠখোট্টা স্বভাবের আড়ালে লুকিয়ে থাকা কালেভদ্রে ঠোঁটের কোণে ভারী মিষ্টি একটা হাসির ঝিলিক দেওয়া লোকটাকে। রুদ্রও জেনে গেছিল সেক্টর ফাইভে একটা মাল্টিন্যাশনাল আই টি কোম্পানিতে দায়িত্বপূর্ণ পদে কাজ করে মেয়েটি এবং ওকে দেখলে ভরা নদীর ওপর লম্বা ব্রিজ পেরনো মেল ট্রেনের শব্দের মতো গুমগুম একটা শব্দ হয় বুকের মধ্যে।
এর পর স্বাভাবিক ভাবেই সম্পর্কটা এগিয়েছিল অত্যন্ত দ্রুত গতিতে। রেস্তরাঁ, কফি শপ, মাল্টিপ্লেক্স, নন্দন-অ্যাকাডেমি চত্বর… অতঃপর এক দিন এক হয়ে যাওয়া চার হাত… মধ্য কলকাতার দু’কামরার ছোট পুলিশ অফিসার্স কোয়ার্টার্সে এসে উঠেছিল শ্রীপর্ণা। রুদ্রর বাবা, একদা দুঁদে দারোগা রাঘবনাথ ব্যানার্জি গত হয়েছেন বছরদুয়েক হল। বাড়িতে দ্বিতীয় মানুষ বলতে রুদ্রর মা স্মৃতিকণা। এমন এক জন মানুষ, যাঁর সঙ্গে কথা কাটাকাটি, ঝগড়া তো দূরস্থান, জোরে একটা কথা বলতেও কেমন যেন বাধো-বাধো ঠেকে। সারা দিন চুপচাপ সংসারের কাজ করে চলেছেন নিজের মনে। ঠোঁটের কোণে লেগে থাকা সেই একই রকম ভারী মিষ্টি হাসিটা। তবে সর্বদা, ছেলের মতো কালেভদ্রে নয় মোটেই। এহেন এক জন মানুষকে প্রথম থেকেই ভাল না লেগে উপায় ছিল না শ্রীপর্ণার।
তার পর তো সুখের জোড়া ডানা ঝাপটে উড়ে যাওয়া দু-একটা বছর। হনিমুনে গোপালপুর অন সি, ছুটির দিনে ঘুরতে যাওয়া এ দিক-ও দিক, রাতে বাইরে খাওয়া, বছরদুয়েক বাদে সংসারে এসেছিল মিমো। ঠাকুমা স্মৃতিকণা আদর করে একমাত্র নাতির নাম রেখেছিলেন রাজনারায়ণ। চাকরিতে পদোন্নতি হয়েছিল রুদ্রর। এসিপি, ডিডি ডিপার্টমেন্ট হয়ে সোজা লালবাজার। প্রোমোশন আর মোটা অঙ্কের স্যালারি হাইক হয়েছিল শ্রীপর্ণারও। ব্যস্ততা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছিল দু’জনেরই। দেখা হত রাতে, শুধু খাওয়ার টেবিলে। অনেক সময় সেটাও নয়। ভীষণ উষ্ণ আর জীবন্ত একটা সম্পর্কের মজবুত তারে একটু একটু করে যেন মরচে ধরে যাচ্ছিল কোথাও। ফট করে সেই তারটা ছিঁড়ে গেল এক দিন।
মিমো তখন বছরতিনেক। কিন্ডারগার্টেন স্কুলে যায় পুল কারে চড়ে। এক দিন ইশকুল থেকে ফেরার পথে বড় রাস্তায় নিজেদের মধ্যে রেষারেষি করে মারণদৌড় লাগানো দু’টো প্রাইভেট বাসের মধ্যে একটা, সোজা এসে চড়ে গেল পুল কারের ওপর। হাসপাতালের হিমঠান্ডা মর্গে শুইয়ে রাখা ছ’টা কচি কচি নিথর লাশের মধ্যে মিমোও ছিল।
প্রাণাধিক প্রিয় একমাত্র নাতির মৃত্যুশোকের ধাক্কা সামলাতে পারেননি স্মৃতিকণা। ঘটনার বছরখানেক বাদে এক রাত্তিরে কলকাতার এক নার্সিংহোমে ঘুমের মধ্যেই চলে গিয়েছিলেন, রুদ্র-শ্রীপর্ণার সংসার থেকে বরাবরের জন্য ছুটি নিয়ে। আর এ দিকে শোকে পাথর হয়ে যাওয়া দু’টো মানুষ। নিজেদের মধ্যে হু-হু করে বেড়ে যাওয়া দূরত্ব, প্রতি মুহূর্তে আরও, আরও বেশি করে নিজেদের ডুবিয়ে দেওয়া কাজের মধ্যে। রুদ্র। গোয়েন্দা দপ্তরের দক্ষ অফিসার। ব্রেভেস্ট অ্যান্ড ডেডলিয়েস্ট এনকাউন্টার কপ। আদ্যন্ত সৎ। “আমার স্বর্গত পিতৃদেব টাউন থানার মেজো দারোগা রাঘবনাথ ব্যানার্জি বলতেন উৎকোচের সঙ্গে মেরুদণ্ডের একটা গভীর সম্পর্ক আছে। উৎকোচ গ্রহণ করলে সেটা বেঁকে যায়।”— ঘুষের প্রস্তাব এলে প্রস্তাবকারীর মুখের ওপর সপাটে জানিয়ে দিত কথাটা। ডিপার্টমেন্টে ওর আন্ডারে ছিল দুর্দান্ত একটা টিম। লড়াকু দুই কনস্টেবল গোপাল আর সুনীল। দুর্ধর্ষ ড্রাইভার তারক আর বাঘের মতো মজবুত একটা সুমো। সবার ওপরে মজিদ সাহেব। ইনস্পেক্টর আব্দুল মজিদ। রুদ্রর অন্যতম বিশ্বস্ত সহচর, দীর্ঘ দিনের সহযোদ্ধা। একই সঙ্গে ভয়ঙ্কর রকম সাহসী আর মাথাটা বরফের মতো ঠান্ডা। বিশাল ইনফর্মার বেস। কলকাতার আন্ডারওয়ার্ল্ডের প্রতিটি ইঞ্চির খবর মজিদের নখদর্পণে। এই রকম একটা টিম নিয়ে কলকাতার অন্ধকার জগৎ দাপিয়ে বেড়াত রুদ্র। শহরের হার্মাদ থেকে হার্মাদ সব ক্রিমিনালদের শিরদাঁড়া বেয়ে ঠান্ডা স্রোত নেমে যেত টিম-রুদ্রর নাম শুনলে। কাজের শেষে পুলিশ ক্লাবে বা কোনও বারে পেগের পর পেগ। গভীর রাতে তারক, গোপাল, সুনীল বা মজিদ সাহেবের কাঁধে ভর দিয়ে সেঁধিয়ে যাওয়া কোয়ার্টার্সের লিফটে। তিন তলায় সাড়ে সাতশো স্কোয়ার ফিটের সরকারি ফ্ল্যাট। কি-হোলে হাতড়ে হাতড়ে ঢুকিয়ে দেওয়া ডুপ্লিকেট চাবি। টলতে টলতে ঘরে ঢুকেই ধপাস করে শরীরটাকে আছড়ে ফেলা বিছানায়। পাশে কি শুয়ে আছে কেউ? হুঁশ নেই। বেহেড মাতাল হয়ে ঘুমে তলিয়ে যাওয়া মুহূর্তের মধ্যে। বিছানার দু’পাশে দু’টো শরীর। দু’টো মৃত মানুষের!
ক্রমশ