ছবি: কুনাল বর্মণ।
ঘটনা এগোতে সময় লাগে, স্মৃতিচারণ ততটা সময়সাপেক্ষ নয়। স্মৃতিচারণ সেই সময়ের মান, অভিমান, গন্ধ আর আবেশকে এই সময়ে এনে দেয়। গোটা ঘটনার স্মৃতিচারণ করে তার কর্তব্য বিশ্লেষণে বসে তমা। ভাবে, ঘটনা যদি অমুক ভাবে হত, তা হলে কেমন হত? যদি সেই সন্ধ্যায় হাতে এক রাশ জুঁইফুল নিয়ে এসে হাজির হত বিপ্লব? যদি সে তাকে যেচে এসে বলত, ‘ওহে প্রিয়তমা, চলো একটু ভিজে আসি!’ হতেও তো পারত! ভেবেই চমকে যায় তমা, তাকে তো ‘তুমি’ বলে সম্বোধন করে না বিপ্লব। পরক্ষণেই মনে হয় ‘প্রিয়তমা’ শব্দটার আলাদা একটা বৈশিষ্ট্য আছে, সেটা কী তা মনে পড়ল না তার। কিন্তু ভাবনা থেমে থাকে না। তমা উঠল। স্নান করল। শীত-শীত ভাবটা আরও জেঁকে বসল। জিনিসপত্র তুলল। ঘরদোর সাজাল। আর মাথায় ঘুরতে থাকল সেই সব ছবি। তার কল্পনা তখন অন্য ভাবে আঁকছে সে দিনের ঘটনাক্রম। এই তো ডোরবেল বাজল, এই তো এল বিপ্লব। তমা বলছে, ‘ভিজলি কী করে? ছাতা খুলিসনি?’
সে বলল, ‘ছাতাটাও হয়েছে প্যারাশুটের মতো। খুব দরকার না হলে খোলেই না।’
তমা বলছে, ‘এ তো ভালই বৃষ্টি হচ্ছে! ভিজে গেছিস যে!’
সে বলছে, ‘বর্ষার প্রথম বৃষ্টিকে ফেরাতে নেই, তুই-ই তো বলিস।’
তমা বলে, ‘আমার সব কথা মনে রাখিস?’
সে বলছে, ‘স-অ-ব!’
তমা বলছে, ‘বল তো, প্রথম বার আমার বাড়ি আসার দিন কী বলেছিলাম!’
সে বলছে, ‘বলেছিলি সিঁড়ি দিয়ে না এসে বাথরুমের পাইপ বেয়ে আসতে!’
তমা হেসে বলবে, ‘হতচ্ছাড়া!’ তার পর বায়না করে বলবে, ‘আজ এখানে থাকবি?’
সে বলবে, ‘পাগল! তা হলে তুই আমায় দিয়ে রান্না করাবি, বাসন মাজাবি।’
তমা বলবে, ‘কোনও কাজ করাব না।’
সে বলবে, ‘তা হলে আর থেকে কী করব?’
তমা বলবে, ‘গান শোনাবি।’
সে বলবে, ‘গান তো আমি পারি না! বরং আমি তোকে চাঁদ দেখাব। আজ মাঝরাত্তিরে ক্ষয়াটে
চাঁদ উঠবে, জানিস! সুন্দর চাঁদ নয়, আধখানা। আমার মতো!’
ভাবতে ভাবতে চমকে ওঠে তমা! বিপ্লব কোথায়! এ তো অন্য লোকের কথা হয়ে যাচ্ছে! বিপ্লবকে বয়লারে গলিয়ে ডাইসে ফেলে নতুন মানুষ গড়লেও সে এ রকম কথা বলবে না। তার মনের দরজায় সে যত তালা দিচ্ছে, তত সিঁধ কেটে ঢুকে আসছে সেই অন্য লোকটা। এখন বিপ্লবের জায়গায় এল বল্লাল সেন! সেন নয় বোস। ঠিক সেই মুহূর্তে তমার মনে পড়ে প্রিয়তমা কথার প্রসঙ্গ। ‘ডিয়ার তমা বলতে গিয়ে আপনাকে প্রিয়তমা বললাম!’ কিন্তু তার ওই কথার, উচ্চারণ বড় বেশি স্পর্শ করেছিল তমাকে। এখন কেন যে তার লোভ হচ্ছে ওই সম্বোধন আবারও শোনার, আরও শোনার, তা কে জানে!
বিপদের নাম কল্পনা
একা থাকার সুবিধে অনেক। বিশেষ করে যারা নিয়মনিষ্ঠ নয়, মাঝরাতে যাদের হঠাৎ গান পায়, ডিনারের সময় চা-তেষ্টা পায়, কোনও দিন শুধু চানাচুর দিয়ে রাতের খাওয়া সারার ইচ্ছে জাগে, তাদের জন্য একা থাকাই সবচেয়ে ভাল, সবচেয়ে নিরাপদ। তমা তাই ভালই ছিল। সেই সন্ধ্যার পর বেশ অনেক দিন বিপ্লব তার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। যোগাযোগ করেনি তমাও। বেশ বুঝতে পারছিল, বিপ্লবের অভাবে দুঃখে বুক ফেটে যাওয়ার মতো কষ্ট তার হচ্ছে না। মাস দুই-আড়াই পর এক দিন ফোন করে ভাল-মন্দ খবরাখবর জেনেছিল বিপ্লব। তার পর এক দিন দেখা করতে চাইল। দেখা হল একটা চিনে রেস্তরাঁয়। সেখানে আগেও তারা বহু বার দেখা করেছে। সেখানে দেখা হওয়ার পর আয়কর দেওয়া নিয়ে কিছু আলোচনা করল বিপ্লব। তমা দেখল, এক বারও পুরনো কোনও প্রসঙ্গ তুলছে না সে। মনে হচ্ছে, তাদের মাঝখানে কোনও পাঁচিলই নেই। অবাক হয়েছিল তমা। এটা উদারতা না মানিয়ে নেওয়া, ভুলে যাওয়া না তুলে রাখা, তাও ধরতে পারেনি। ধরার চেষ্টাও সে করেনি। তার পর আবার মাঝেমধ্যে বাইরে দেখা করতে চায় বিপ্লব। কখনও কথা রাখে তমা, কখনও কাটিয়ে দেয়৷ তবে বুঝতে পারে, বড় বেশি আনুষ্ঠানিক হয়ে গেছে বিপ্লব। মেপে কথা বলে, হিসেব করে আচরণ করে। তাদের সম্পর্কটা কি টিকে আছে? জানে না তমা। তবে জানে, যদি থাকে, তা হলে তা নিষ্প্রাণ। বহুজাতিক সংস্থার রিসেপশনে বসে থাকা লাস্যময়ীর হাসির মতো। তবে, তার পর থেকে বিপ্লব আর তার আবাসনের দিকে পা রাখেনি। আসার কথা বলেনি। এটা কি তার অভিমান? তমা কী অন্যায় করছে তার সঙ্গে? সেই-ই কি তার ডানা মেলা জোড়? জানে না সে। ভাবার চেষ্টা করে। আর চেষ্টা করলেই ভাবনাকে গ্রাস করে কল্পনা। বড় মোহ সেই কল্পনায়। সেই কল্পনার রাশ থাকে না তার হাতে।
সে দিন সে বসে ছিল টিচার্স রুমে। তাদের কলেজের এই ঘরটায় সকলের অবারিত দ্বার। হঠাৎ এক জন এসে বলল, “ম্যাডাম, একটু বিরক্ত করব?”
তমা খুব চমকে গিয়ে তাকাল। দেখল, প্রকাশন সংস্থার একটি ছেলে এসেছে প্রথম বর্ষ, দ্বিতীয় বর্ষের জন্য কিছু পাঠ্যপুস্তক নিয়ে৷ কথা বলে, বই দিয়ে সে চলে গেল। কিন্তু তমা বুঝতে পারল, প্রবল প্রত্যাশা নিয়ে সে তাকিয়েছিল। সে ভেবেছিল বল্লালের কথা। ওই বিরক্ত করার মনোপলি তো একমাত্র সে-ই নিয়েছিল। ছেলেটা চলে যাওয়ার পরও তমা দেখল, উত্তেজনায় তার বুক কাঁপছে। তমা বুঝল, বিদায়ের মুহূর্তে কথা বন্ধ করে নিজের মনের পাঁচিল সে আদৌ তুলতে পারেনি। বল্লাল ঘুরছে তার চার পাশে হাওয়া, বাতাস, কথাবার্তা, উক্তি-প্রত্যুক্তির হাত ধরে।
সেখানে বসে থাকতে থাকতে তমার মনে পড়ে যায় আর একটা ঘটনা। তমা চলে যায় মুন্সিয়ারিতে। সে দিন তাদের সংক্ষিপ্ত ট্রেকিং ছিল। তার আগের দিনই প্রথম সে দীর্ঘ নৈশ সংলাপ সেরেছে বল্লালের সঙ্গে। পরের দিন সকাল-সকাল ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে বেরিয়েছিল তারা মুন্সিয়ারি থেকে রড়গোড়ির পথে। ডান পাশে খাদ। খাদের তলদেশে নদী। নদীর নাম রামগঙ্গা। কী নির্জন সেই পথ! কী গভীর সেই গিরিখাত! সদাচঞ্চল ছাত্রছাত্রীরাও সেখানে কথা বলতে ভুলে যায়। এই তো তারা একটা চটিতে ঢুকল। সেখানে তারা দুপুরের খাবার খাবে। আগে থেকে কথা বলা ছিল। সেখানে পরিচ্ছন্ন কাচের ঘরে তাদের বেশির ভাগ সদস্য চেয়ার-টেবিলে বসে খাচ্ছিল। হঠাৎ একটা ছেলে এসে বলল, “ম্যাডাম, এখানে খেতে হবে না, থালা হাতে আমাদের সঙ্গে চলুন।” ছেলেটা তাদের কলেজের।
তমা অবাক হয়ে বলল, “কোথায় যাব?”
ছেলেটি বলল, “আসুন না, আপনাকে বল্লালস্যর ডাকছেন।”
সে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল জীবেশ, গরিমা অন্য ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলতে বলতে খাচ্ছে। তন্দুরি রুটি আর নিরামিষ তরকারি। সে ছেলেটার সঙ্গে খাবারের থালা হাতে টলমল করতে করতে সেই চটির পিছন দিকের দরজায় গেল। তার পর ছেলেটার পিছু পিছু ঘাসভরা রাস্তা ধরে বেশ কয়েক ধাপ নীচে নামল। তার পর দশ-বারো পা হেঁটেই চমকে গেল। কী অপার্থিব দৃশ্য!
পাহাড়ের ধাপে বেশ কিছুটা জায়গা পরিষ্কার করা। তার পরই পাহাড় শেষ। শুরু হয়েছে সুগভীর খাদ। চার পাশে গভীর অরণ্য। এই ধাপের জায়গাটা যেন জাহাজের ডেক। সেই রকম রেলিংও আছে। রেলিং টপকালেই গভীর খাদের অতল মহাসাগর। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যটাই শেষ কথা নয়, জায়গাটা সাজানোও হয়েছে সামঞ্জস্যপূর্ণ ভাবে। বড় বড় পাথর কাটা হয়েছে, গোলাকৃতি সেই পাথরগুলোই টেবিল। বসা যাবে এমন বড়সড় আকারের পাথর এনে চেয়ার করা হয়েছে। ছেলেমেয়েরা কয়েক জন সেই রকম চেয়ার টেবিলে বসে খাচ্ছে। আর সব চেয়ে দূরের পাথুরে টেবিলে থালা নিয়ে বসে আলুথালু বেশে বল্লাল তার জন্য অপেক্ষা করছে। থালা হাতে সে গিয়ে বসল সেখানেই। বল্লাল শুধু হাসল।
বসতেই তমা বুঝল অসহ্য ঠান্ডা, হাড়কাঁপানো হাওয়া বইছে সেখানে। এই হাওয়াটা কাচের ঘরে নেই। সে অস্ফুটে বলল, “অপূর্ব!”
বল্লাল ফিসফিস করে বলল, “তাড়াতাড়ি খান। এখানে খাবার চট করে ঠান্ডা হয়ে যাবে,” তার পর বলল, “সামনের ওই পাহাড়ের ঢালের জন্য জায়গাটা খোলতাই হল না তমা। ওই আড়ালটা না থাকলে এখান থেকেই পঞ্চচুল্লি দেখা যেত!”
তমা তখন কিছু বলেনি। এখন মনে হচ্ছে, বললে হত, ‘আড়ালটাই ভাল বল্লালবাবু। একটু আধটু আড়াল ভাল। সব সুন্দর দৃশ্য এক বারে দেখে নিতে নেই।’ সে কিছু না বললেও বল্লাল যেচেই বলল, “এখান থেকে দু’দিনের হাঁটাপথে একটা জায়গা আছে। নাম মারতোলি। সেখানে এ রকম একটা চটি আছে। নাকের ওপর রামগঙ্গা। আর চোখের ওপর হিমালয়...” আরও কী সব বলছিল বল্লাল, খেয়াল করেনি তমা। সে তখন তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছিল লোকটাকে। দাড়ি কামায়নি বেশ কয়েক দিন। চুল আঁচড়ায়নি পরিপাটি করে। পোশাকআশাক কী প্রচণ্ড আটপৌরে। কিন্তু চোখদুটো কী অসম্ভব গম্ভীর! আর কথা বলা! তার সঙ্গে কথা বললেও যেন সে হারিয়ে আছে হিমালয়ে। আচ্ছা, এই লোকটা কার জুড়ি? যার জুড়ি সে মানিয়ে নেবে তো এই পাগলটাকে? সে পরম মমতায় আঁচড়ে দেবে তো এর চুল? যে সব পুরুষ নিজেরাই সম্পূর্ণ, তাদের তো আর নারীর মায়া-মমতার অপেক্ষা থাকে না। যেমন বিপ্লবের নেই। সে ছাতা নিতে ভোলে না। সে বর্ষায় ভেজে না কখনও। কিন্তু একে দেখে মনে হয়, ব্যাগে ছাতা থাকলেও তা খুলতে হয়তো ভুলে যাবে। তখন ওড়না অথবা আঁচল দিয়ে পরম যত্নে তার মুখ, মাথা মুছিয়ে দিতে ইচ্ছে করবে তার প্রিয়দর্শিনীর। সে দিন দুপুরেই হৃদয়ে এই পুরুষের পদধ্বনি টের পেয়েছিল তমা।
টিচার্স রুমে বসে বড় একটা শ্বাস ফেলে সে। লোকটার সম্বন্ধে প্রায় কিছুই জানে না সে। সে কি পাহাড়ি? সে কি হিমালয়বাসী? কিছুই জানে ন। এক এক সময় মনে হয়, লোকটা পুরোটাই তার কল্পনা। মুন্সিয়ারিতে যে বল্লাল ছিল, সে আর পাঁচ জনেরই মতো। কিন্তু বিপ্লবের বৈপরীত্য কল্পনায় সে-ই হয়তো কাল্পনিক সংলাপ আরোপ করেছে মনে মনে। মধ্যরাতের যাবতীয় সংলাপ হয়তো সেই রকমই কল্পনা! অমন কেউ যায়ইনি তাদের সঙ্গে।
তাদের কলেজে স্কুলের মতো শৃঙ্খলা। ছেলেমেয়েদের নিয়মিত আসতে হয়, নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ক্লাস করতে হয়। বেরোতে বেরোতে প্রায় পাঁচটা বাজে। আজ সাড়ে চারটে থেকেই গরিমা উড়ু-উড়ু। বেশ সেজেওছে সে। আজ তমালের সঙ্গে দেখা করবে বাইরে। বল্লাল কিন্তু বুঝতে পেরেছিল। বলেছিল জোড়-এর কথা। কী আশ্চর্য! তার সুখুচরের বুড়িদির দর্শন আর এই উজবুক বল্লালের দর্শন কী ভাবে মিলে মিশে যায় কে জানে! নাকি কোথাও জুড়ে আছে তাদের শিকড়? মেলাতে পারে না তমা। এ রকম কত সূত্র না মেলানো থেকে যায়। কে যে তাকে শিমুল ফুল পাঠিয়েছিল, জানে না সে। সত্যিই জানে না। জানা না থাকলে লোকে কল্পনা করে। সে তা-ই করতে শুরু করল।
লোকটা বাউন্ডুলে
এখন দু’-এক দিন অন্তর এক বার ফোন করে বিপ্লব। খোঁজখবর নেয়। প্রাণের সাড়া পায় না তমা। সপ্তাহে এক দিন করে দেখা করে তারা। কোনও রেস্তরাঁ বা উদ্যানে। অথবা বসে আড্ডা দেওয়া যায় তেমন মলে। আড্ডা তেমন জমে না। তমা অনেক সময় কথাই খুঁজে পায় না। কথা বলায় বিপ্লবের ভাঁড়ার বড় একঘেয়ে। আয়কর, বিনিয়োগ, খেলা, সিনেমা, রাজনীতি, সহকর্মীদের সঙ্গে বেড়ানো। কথা বলার ক্ষেত্রে একটা জঘন্য জাদুক্ষমতা আছে বিপ্লবের, খুব আকর্ষক কোনও বিষয়ও ও এমন ভাবে বলে যায়, যে তার হাই উঠতে থাকে। নতুন কোনও বিষয়ও ও এমন ভাবে শুরু করে যে, মনে হয় ও কী কী বলবে তার সবটা ও জানে। এবং দীর্ঘ সংলাপ শেষ হলে মিলেও যায় তার আশঙ্কা, নতুন কিছুই সে পায় না। কখনও কখনও বিপ্লবের কথা বলার সময় তার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে চোখ একটুও না সরিয়ে অন্য চিন্তায় চলে যায় তমা। বিপ্লব হঠাৎ কথা থামিয়ে জিজ্ঞেস করে, “এই, তুই শুনছিস তো? কী ভাবছিস বল তো?”
তমা বলে, “কিছু না।” বলে শব্দ না করে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে। তার পর নিজেকে প্রশ্ন করে, ‘আমি কী করে এই লোকটাকে পছন্দ করেছিলাম?’ উত্তরে নিজেই নিজেকে বলে, ‘মনে হয়, এই লোকটা যেন একটা বই যার প্রতিটি পাতা পড়ে সিলেবাস শেষ হতে দু’বছর লাগল।’ মানে এই লোকটার মস্তিষ্কে যে গুটিকয় বিষয় আছে, লোকটার আস্তিনে যে সামান্য বৈচিত্রের তাস আছে, এই দু’বছরে তার সবটাই চেনা ও জানা, মুখস্থ ও কণ্ঠস্থ হয়ে গিয়েছে। আচ্ছা, সে যদি ভবিষ্যতে অন্য কোনও পুরুষকে পছন্দ করে, তা হলে কি দু’বছর কিংবা চার বছর পর সেই বেআক্কেলে লোকটাকেও তার পড়া হয়ে যাবে? তখন কি তাকেও তার একঘেয়ে লাগবে?