ঠাকুরমার ঝুলিতে ডেঙ্গি, চিকুনগুনিয়া

দু’টো রোগই আজকের নয়। বাঙালির রূপকথার গল্পেও কিন্তু তাদের প্রবল প্রতাপ। দু’টো রোগই আজকের নয়। বাঙালির রূপকথার গল্পেও কিন্তু তাদের প্রবল প্রতাপ।

Advertisement

নীলোৎপল বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:০০
Share:

‘পাঁ-টা কঁট্কঁট্ কঁচ্ছে’। চিকুনগুনিয়ার ‘ক্রনিক’ অস্থিসন্ধি যন্ত্রণা

গত কয়েক বছর ধরে কলকাতা তথা সারা দেশেই প্রবল মাথাব্যথা হয়ে উঠেছে ডেঙ্গি। এ কি কোনও নতুন রোগ? আগে তো নাম শুনিনি, এত ঘটাপটা দেখিনি? তবে পঞ্চাশের দশকে, বিশেষত যারা দমদম, বেলগাছিয়া, বরানগরে থাকতেন তারা হয়তো মনে করতে পারবেন এক জ্বরের কথা, যে জ্বরের সঙ্গে ছিল গাঁটে গাঁটে অসহ্য যন্ত্রণা।

Advertisement

রবীন্দ্রগানের প্রখ্যাত শিল্পী প্রসাদ সেনের কাছে শুনেছিলাম তাঁর কলেজবেলার কথা। ১৯৪১ সাল, সদ্য শান্তিনিকেতনে এসেছেন তিনি, সঙ্গী বন্ধু অশোকতরু বন্দ্যোপাধ্যায়। দু’জনেই তরুণ, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী। এমন সময় শান্তিনিকেতনে হল ‘ডেঙু’। এই উচ্চারণই বলেছিলেন। হোস্টেলসুদ্ধু সবাই ‘ডেঙুজ্বর’-এ কাবু। প্রায় হামাগুড়ি দিয়ে হাঁটতেন।

১৯৫২-তে আফ্রিকার মোজাম্বিক ও তানজানিয়ার সীমান্তে মাকোন্ডে উপত্যকায় শনাক্ত হল নতুন ভাইরাস। স্থানীয় জনজাতির ভাষায় নাম ‘চিকুনগুনিয়া’। মূল শব্দ ‘কুনগুনিয়ালা’, অর্থ ‘যা বেঁকে যায়’। তা থেকেই ভাইরাসটির নাম হয়েছে চিকুনগুনিয়া। কারণ, এই জ্বর হলে রোগী সোজা হয়ে হাঁটতে পারে না। হাঁটতে হয় খুঁড়িয়ে, লেংচে। তা হলে শান্তিনিকেতনে ওঁদের যে ‘ডেঙু’ হয়েছিল, তা কি সত্যি ডেঙ্গি, না চিকুনগুনিয়া? এই ভাইরাসেরও বহু নাম— চিকেন গুনিয়া, চিকেন গিনি।

Advertisement

বাংলায় ‘আরবোভাইরাস’ অর্থাৎ মশাবাহিত ভাইরাসদের মধ্যে তিনটের প্রকোপ বেশি— ডেঙ্গি, চিকুনগুনিয়া আর জাপানি এনসেফালাইটিস (জে ই)। জে ই মূলত আক্রমণ করে শিশুদের। মস্তিষ্কের সংক্রমণ বলে বাচ্চারা অজ্ঞান হয়ে যায়। মেরুদণ্ডের রস নিয়ে পরীক্ষা করতে হয়। মৃত্যুহারও বেশি। তবে গত ক’বছরে যে হারে ডেঙ্গিতে মানুষ মারা যাচ্ছে তাতে মনে পড়ে যায় রবীন্দ্রনাথের ছোটবেলার কথা। তখন কলকাতায় এত লোক মরছিল যে ঠাকুর পরিবারের সবাই পানিহাটিতে আশ্রয় নেন।

তখন ডিএনএ-আরএনএ আবিষ্কার হয়নি। তাই জানা যায়নি, ডেঙ্গির কোন কোন সেরোটাইপ তখন কলকাতায় সার্কুলেট করছিল। এখন জানা গিয়েছে, কলকাতায় ডেঙ্গির ২ আর ৪ সেরোটাইপে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন বেশি, সেগুলোরই মৃত্যুহার বেশি। চার দিকে ডেঙ্গি নিয়ে হইচই, তার পাশে আলোচনাতে প্রায় আসেই না চিকুনগুনিয়া। যেহেতু (সৌভাগ্যক্রমে) চিকুনগুনিয়ায় মৃত্যু হয় না বললেই চলে, তাই মিডিয়ার উৎসাহ নেই। তবে একেবারেই হয় না বললে ভুল হবে। এগুলো আরএনএ ভাইরাস, যে কোনও দিন রূপ বদলে ফিরে আসতে পারে প্রাণঘাতী হয়ে। ডেঙ্গির পাশাপাশি চিকুনগুনিয়া নিয়েও মানুষের সচেতনতা জরুরি।

দুঃখের কথা, চিকিৎসকরাও তেমন সচেতন নন। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ‘আরবোভাইরাল’ জ্বরের লক্ষণ দেখলেই ডাক্তাররা ডেঙ্গির এনএস১ বা আইজিএম এলাইজা করতে দিচ্ছেন। রিপোর্ট ভাল হলে রোগীকে ছেড়ে দিচ্ছেন। পরে যখন রোগী গাঁটের প্রচণ্ড যন্ত্রণায় ভুগছেন, তখন পাড়ার ওষুধের দোকান থেকে ব্যথা কমানোর ওষুধ কিনে খেয়ে শরীরের সাড়ে সর্বনাশ করছেন। চিকিৎসক যদি ডেঙ্গির পাশাপাশি চিকুনগুনিয়ারও পরীক্ষা করালে হয়তো এই বিপদ কিছুটা হলেও এড়ানো যেত। সেখানেও সমস্যা। চিকুনগুনিয়া আইজিএম এলাইজা পশ্চিমবঙ্গে হাতে-গোনা বেসরকারি ল্যাব-এ হয়। সরকারি জায়গাতে খুব কমই হয় এই পরীক্ষা। যেহেতু মৃত্যুহার কম, তাই নজরও কম!

কিন্তু কথা হল, চিকুনগুনিয়াও কম ভয়ানক নয়। ডেঙ্গিতে ভুগলে মোটামুটি ১৫টা কাজের দিন নষ্ট। কিন্তু চিকুনগুনিয়া হলে? রোগীদের আকুতি শুনেছি, ‘‘কবে অফিস যেতে পারব? আমার যে প্রাইভেট অফিস, চাকরি চলে যাবে!” শুধু ২০০৬ সালেই চিকুনগুনিয়ার জন্য অর্থনীতির হিসেবে ক্ষতি হয়েছে ভারতীয় মুদ্রায় ৩৯ কোটি ১০ লক্ষ। ‘ডিসেবিলিটি এডজাস্টেড লাইফ ইয়ারস’ বা ‘ডালি’ একটা বিশেষ সূচক, যা দিয়ে বোঝা যায় কোনও রোগের কারণে এক জন মানুষের কতটা সময় নষ্ট হল। সেই হিসেবে শুধু ২০০৬ সালেই চিকুনগুনিয়ার জন্য ভারতে ২৫,৫৮৮ টি ‘ডালি’ নষ্ট হয়েছে। মানবসম্পদের কী অপূরণীয় ক্ষতি! এখন শনাক্তকরণের হার বেড়েছে, ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব ভাইরোলজি-তে সঠিক এলাইজা কিট তৈরি হয়েছে। তবু চিকুনগুনিয়া নিয়ে সেই সচেতনতা কোথায়?

আফ্রিকান নামটা খটোমটো, তবে এক্ষুনি ‘হাড়মুড়্‌মুড়ী ব্যারাম’-এর নাম করলে অনেকেই বলবেন, এ রোগের কথা শুনেছি তো, ‘ঠাকুরমার ঝুলি’-তে! দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদারের ‘ঠাকুরমার ঝুলি’-তে ছিল ‘সোনার কাটি রূপার কাটি’ গল্প। রাজপুত্র, মন্ত্রীপুত্র, কোটালপুত্র, সদাগরপুত্র দেশ ছেড়ে বেরিয়ে, তেপান্তরের মাঠ পেরিয়ে পৌঁছন বনে। বনের ভূপ্রকৃতি আর গাছপালার বর্ণনা শুনলে মনে হয়, এ বাংলারই বন, ‘কেবল পাথর কাঁকর আর বড় বড় বট পাকুড় তাল শিমুলের গাছ!’ খাবারের খোঁজ করতে করতে সামনেই হরিণের মাথা দেখা, এবং তা কাটতে গিয়ে রাজপুত্র ছাড়া বাকিরা সবাই তাদের ঘোড়াসহ রাক্ষসীর পেটে। রাক্ষসী রাজপুত্রকেও খেতে চায়। রাজপুত্র আর এক রাজার রাজত্বে পালিয়ে এসে, এক আমগাছের ভিতর লুকিয়ে থাকে, আর রাক্ষসী আমগাছের নীচে পরমাসুন্দরী সেজে কাঁদতে থাকে। সে দেশের রাজা বনে এসে কান্না শুনে সেই সুন্দরীকে বিয়ে করলেন। এই বার শুরু রাক্ষসীর খেলা। সেই রাজপুত্রকে খাওয়ার জন্য বা তাকে মারার জন্য গল্পে কিসের অবতারণা হয়, সেটাই আসলে দেখার। দক্ষিণারঞ্জন সারা বাংলা খুঁজে, দিদিমা-ঠাকুরমাদের মুখের গল্প সংগ্রহ করে, অবিকল সেই মুখের ভাষাতেই রচনা করেছিলেন ‘ঠাকুরমার ঝুলি’।

অসুখ: ‘হাড়মুড়্‌মুড়ীর ব্যারাম’, মানে চিকুনগুনিয়ার ‘অ্যাকিউট’ অবস্থা।

এ বার ঠাকুরমাদের মুখের ভাষায় সেই হাড়মুড়্‌মুড়ী ব্যারামের ‘ইটিওলজি’ দেখা যাক। রাক্ষসী ‘সাত বাসি পান্তা, চৌদ্দ বাসি তেঁতুলের অম্বল খাইয়া অসুখ বানাইয়া বসিল।’ কী অসুখ? গা-গরম। সাবক্লিনিক্যাল ফিভার। মানে ওই একটু জ্বর আর কী। এ রকম বাসি খাবার খেয়ে পেটের রোগ হওয়াই স্বাভাবিক। টাইফয়েডে তা-ই হয়। আর তেঁতুলের জলের সঙ্গে জ্বরের একটা যোগাযোগ বাংলার মানুষের মনে চিরকালই রয়েছে। পশ্চিম বাংলার মানুষেরা খুব পুরনো তেঁতুলের টক খেতে ভালবাসেন। কথামৃতে পাই: ‘জ্বর বিকারের রোগীর ঘরে তেঁতুল আর জলের জালা’। রানি যে রোগী সাজতে চাইছেন তার প্রথম লক্ষণ, হালকা জ্বর। আর? ‘রাক্ষসী বিছানার নীচে শোলাকাটি পাতিল। পাতিয়া সেই বিছানায় শুইয়া রঙ্গীমুখ ভঙ্গী করিয়া...’ এখানে একটু থামা দরকার। ঠাকুরমা কিন্তু বলছেন না, ‘রঙ্গী মুখভঙ্গী করিয়া’। বলছেন ‘রঙ্গীমুখ ভঙ্গী করিয়া’। মানে রাঙা মুখে নানা বিকৃতি করে, উঃআঃ করে। এ বার আসুন চিকুনগুনিয়ায়। জ্বরের সঙ্গে রোগীর (বিশেষত মেয়েদের) নাক আর গালের দু’পাশ লাল হয়ে যায়। হেমারেজিক ডেঙ্গির ক্ষেত্রেও কিন্তু জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে মুখ লাল হয় না। হয় জ্বরের কিছু দিন বাদে, যখন ‘হেমারেজিক ম্যানিফেস্টেশন’ শুরু হয়। চিকুনগুনিয়ায় মুখ লাল হয়ে মুখে র‌্যাশ দেখা যায়, শরীরের অন্য জায়গার মতোই। তবে লাল হওয়াটা মুখেই সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।

আরও পড়ি। ‘একবার ফিরে এ-পাশ, একবার ফিরে ও-পাশ’। রাক্ষসী রানির শরীরের চাপে শোলাকাঠি ভাঙে আর রাজা ভাবেন, রানির হাড়গুলো মুড়মুড় করছে। ভাইরাল জ্বরে রোগীর অস্বস্তির কী সুন্দর উপস্থাপন: ‘রাজা আসিয়া দেখেন, রাণী খান না, দান না, শুক্‌ন ঘরে জল ঢালিয়া চাঁচর চুলে আঁচড় কাটিয়া, রাণী শুইয়া আছেন।’ চিকুনগুনিয়াতেও রোগী সারা শরীরে অস্বস্তি অনুভব করেন। চিকিৎসা পরিভাষায় যাকে ‘সাইন’ ও ‘সিম্পটম’ বলা হয়, রাক্ষসী রানি দুয়েরই অবতারণা করেছেন সফল ভাবে। শেষে ডায়াগনোসিসও নিজেই করে ‘কোঁকাইয়া কোঁকাইয়া’ বলছেন ‘আমার হাড়মুড়্‌মুড়ীর ব্যারাম হইয়াছে’ (কারণ ওকে তো রাজপুত্রকে মারতে হবে)। শুনে ‘রাজা বলিলেন— হায় কি হইবে!’ রাজ্যের রাজা যখন রোগের নাম শুনে বলেন ‘কী হবে’, তখন এটা নিশ্চিত যে এর ওষুধ জানা নেই। আর রোগটাও সে রাজ্যে খুব সাধারণ, কারণ রাজা বলছেন না, বদ্যি ডেকে পরীক্ষা করাই তোমার কী রোগ হয়েছে। মানে, এ রোগের লক্ষণ ঠাকুমা-দিদিমাদের ভালই জানা ছিল। ‘কত ওষুধ, কত চিকিৎসা; রাণীর কি যে-সে অসুখ? অসুখ সারিল না!’ রাক্ষসী তো আসলে রোগের অভিনয় করছে। দু’টো ব্যাপার স্পষ্ট: এ রোগের কোনও চিকিৎসা ছিল না, আর এ রোগ বহু দিন ভোগায়। ‘পারসিস্টিং পলিআরথ্রালজিয়া’র সঙ্গে মিলে যাচ্ছে? মানে— ছ’মাস থেকে এক বছর গাঁটে গাঁটে যন্ত্রণা।

তখনকার দিনে আরও বহু রোগ জানা ছিল সবার। তার কিছু না কিছু চিকিৎসাও জানা ছিল। কিন্তু যে রোগ বাংলায় প্রায়ই হয় অথচ ওষুধ নেই, সেটাই রানির অভিনয়ের জন্য আদর্শ রোগ। এ বার মোক্ষম কথা বলল রাক্ষসী: ‘ওষুধে তো কিছু হইবে না, বনের সেই আমগাছ কাটিয়া তাহার তক্তার ধোঁয়া ঘরে দিলে তবে আমার ব্যারাম সারিবে।’ একেবারে অ্যাসিড টেস্ট। মানে এ ব্যাপারটা জানা, ওষুধে এ রোগ সারে না, কিন্তু ঘরে ধোঁয়া দিলে প্রকোপ কমে। তা হলে কি মশা থেকে এ রোগ হয়, সে ধারণা ছিল? নিশ্চয়ই ছিল, তাই রাজপুত্রকে মারার ফন্দিতে রাক্ষসী এমন রোগের রোগী সাজলেন যার কোনও চিকিৎসা নেই, অথচ এটা জানা যে ঘরে ধোঁয়া দিলে তার প্রকোপ কমে!

এই গল্পেই পরে দেখি ওই রাক্ষসীর মা, বুড়ি ‘আয়ীমা’-কে। সকাল হতেই সে ‘কাজে’ বেরিয়ে যায়, ফিরে রাজকন্যাকে বলে পায়ে প্রদীপের তেল মালিশ করে দিতে। বুড়ি মানুষ, বাতের ব্যথা থাকাই স্বাভাবিক। আমরা যাকে বলি গেঁটে বাত। কিন্তু যে বুড়ো মানুষের বাত, সে কি সারা দিন ‘হাঁপাইয়া হুঁপাইয়া’ খাবারের সন্ধান করতে পারে?

বয়স্ক বাতের রোগী মোটেই দৌড়ঝাঁপ করতে পারেন না। বরং চিকুনগুনিয়া রোগীদের দেখেছি, সারা দিন কাজের পর ঘরে ফিরলে তাঁরা ব্যথাটা বেশি টের পান। ক্লান্ত অস্থিসন্ধি প্রদাহ জানান দেয়। সারা দিন কাজের তোড়ে ব্যথা টের পান না। স্টেরয়েড দিয়ে ব্যথা কমানোর কথা মনে পড়ে যাচ্ছে? একটু পুরনো চিকুনগুনিয়া রোগীদের এই কথাই আমরা বলতে শুনি। বরং বাত রোগীরা ‘মর্নিং স্টিফনেস’-এর কথা বলেন। ঘুম থেকে উঠে গাঁটে ব্যথা থাকলে কিন্তু রাক্ষসী বুড়ি আয়ীমা কাজে বেরোতে পারত না। তাই সন্ধ্যায় ফিরে এসে বলে ‘হ্যাঁ লো হ্যাঁ নাঁত্‌নি, পাঁ-টা তোঁ কঁট্‌ কঁট্‌ই কচ্ছে। একটু টিঁপিয়া দিঁবি।’ তর্কের খাতিরে কেউ অস্টিওআরথ্রাইটিস-এর কথা তুলতে পারেন। এটুকুই বলার, সেই রোগীরা দৌড়ঝাঁপ করতে পারেন না। অতএব বোঝাই যাচ্ছে, বুড়ির কিছু কাল আগে হাড়মুড়্‌মুড়ীর ব্যারাম হয়েছিল। সেই ব্যথায় তিনি এখনও ভুগছেন। আর তার মেয়েটি মায়ের রোগেরই অভিনয় করছে। এই গল্পে আমরা ‘অ্যাকিউট’ ও ‘ক্রনিক’, দু’রকম চিকুনগুনিয়ারই বর্ণনা পাচ্ছি।

‘শিবের গীত’-এর মাহাত্ম্য বোঝা গেল? বাংলায় প্রাচীনকাল থেকেই চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ ছিল। হালে আফ্রিকায় ভাইরাসটিকে ডেঙ্গির থেকে জেনেটিক্যালি আলাদা করা গেছে। আগে পশ্চিমের দেশগুলোতে ডেঙ্গিকেই ‘বোন-ব্রেকিং ফিভার’ বলা হত। সেই রোগীরা ডেঙ্গির নয়, চিকুনগুনিয়ার শিকার ছিলেন। এটা পরিষ্কার যে মশাবাহিত রোগ বাংলায় নতুন নয়। আগে আধুনিক প্রযুক্তি ছিল না বলে রোগের ঠিক শনাক্তকরণ সম্ভব ছিল না। মশাবাহিত প্রতিটি রোগ সম্পর্কেই জনসচেতনতা দরকার। আমরা ক্রান্তীয় অঞ্চলের মানুষ, ‘রেতে মশা দিনে মাছি’ নিয়েই আমাদের বাস করতে হবে। দরকার শুধু ঠিক জ্ঞান, আর ঠিক রোগের ঠিক চিকিৎসা। সঙ্গে মশারির নিত্য ব্যবহার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement