রাজনীতি আছে, হুল্লোড় নেই

প্রার্থী রাস্তায় একা বিলি করছেন প্রচারপত্র। ভোটে নেতা-কর্মীদের কোনও আর্থিক সুবিধা দেওয়া হয় না, বিজয়ী প্রার্থী বড়জোর স্বেচ্ছাসেবকদের রেস্তরাঁয় খাওয়ান। অস্ট্রেলিয়ায় নিউ সাউথ ওয়েলস স্টেট পার্লামেন্ট নির্বাচনে এমনই ছবি। ভোটারদের সাধারণ প্রবণতা হচ্ছে, কোনও দলকে কমপক্ষে দুই মেয়াদে, অর্থাৎ ছ’বছর তাঁরা ক্ষমতায় রাখতে চান।

Advertisement

ফজলুল বারী

শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৯ ০০:০১
Share:

অধিকার: নিউ সাউথ ওয়েলস স্টেট পার্লামেন্ট নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন নাগরিকরা। ছবি: গেটি ইমেজেস

অস্ট্রেলিয়ার কোগরা রেল স্টেশনের বাইরের রাস্তায় দাঁড়িয়ে ভোটের প্রচারপত্র বিলি করছেন এক ভদ্রলোক। একাই। পরিচয় হতে জানা গেল, তিনি এখানকার নিউ সাউথ ওয়েলস স্টেট পার্লামেন্ট নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির প্রার্থী। ভারতের লোকসভা আর বিধানসভার মতো অস্ট্রেলিয়ার ফেডারাল পার্লামেন্ট এবং স্টেট পার্লামেন্ট। ভারত-বাংলাদেশে নির্বাচন ব্যাপক ঢাকঢোল পেটানোর ব্যাপার। ভারতে কোনও বিধানসভার নির্বাচনে প্রধান এক জন প্রার্থী এ ভাবে একলা রেল স্টেশনে ভোটের প্রচারপত্র বিলি করছেন, ভাবা যায়?

Advertisement

বাংলাদেশের চট্টগ্রাম থেকে যাওয়া তরুণ জামিল তাই ওই ভদ্রলোককে প্রস্তাব দিল, সে তার প্রচারপত্র বিলিতে সাহায্য করতে চায়। এমপি প্রার্থী ভদ্রলোক তো অবাক। অস্ট্রেলিয়ায় এমন সচরাচর ঘটে না। ভারতে দলের বা প্রার্থীদের অনুগত কর্মী-সমর্থকের বাহিনী থাকে। তাঁরাই প্রচারের কাজ করেন। টাকাকড়ির বিষয়ও আছে। অস্ট্রেলিয়ায় সেটা নেই। সরাসরি সক্রিয় রাজনৈতিক নেতা-কর্মী এখানে নগণ্য। দলীয় সমর্থক আছেন। কিন্তু সবাই যে যাঁর রুটি-রুজির সন্ধানে ব্যস্ত। সপ্তাহ শেষে কমপক্ষে হাজার ডলার আয় না হলে সংসার চলে না। এ দেশে ভোটে রাজনৈতিক কর্মীদের কোনও ধরনের আর্থিক সুবিধা দেওয়া হয় না। দল বা প্রার্থীদের সে সামর্থ্যও নেই। রাজনৈতিক দলের ব্যয়ের প্রতিটি অর্থের উৎসের পাইপয়সা হিসাব দিতে হয়। এ জন্যে দলের একান্ত কর্মী ছাড়া কেউ নির্বাচনে স্বেচ্ছাসেবকের কাজও করেন না। আরও কঠোর ভাষায় বহুল ব্যবহৃত বাক্যটি হল, ‘নাথিং ইজ় ফ্রি ইন অস্ট্রেলিয়া’।

তাই জামিলের প্রস্তাবে বিস্মিত এই প্রার্থী। তাঁকে জড়িয়ে ধরেন আবেগে। নিজের গাড়ি থেকে নিয়ে আসেন লেবার পার্টির টি-শার্ট। এর পর থেকে ক্লাসের ফাঁকে জামিল যে দিনই সময় পেয়েছে, সেই প্রার্থীর সঙ্গে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে প্রচারের কাজ করেছে। গত ২৩ মার্চ ছিল নিউ সাউথ ওয়েলস স্টেট পার্লামেন্টের নির্বাচন। ওই দিন লেবার পার্টির হয়ে একটি কেন্দ্রে স্বেচ্ছাসেবকের কাজ করেছে জামিল। সকাল আটটা থেকে দুপুর দুটো পর্যন্ত শিফট। স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে এই প্রাক্তন ছাত্র লীগ কর্মীর পরিশ্রমী ভূমিকা সবার নজর কাড়ে।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

নির্বাচনে জয়ী হন সেই প্রার্থী। ভোটের চূড়ান্ত ফল জানার পরে জামিলকে জড়িয়ে ধরে ধন্যবাদ জানান বিজয়ী। এর পর হাতে গোনা স্বেচ্ছাসেবক সদস্যদের নিয়ে প্রার্থী যান একটি রেস্তরাঁয় নৈশভোজে। এটিই অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচনী সংস্কৃতি। নগদ টাকা কাউকে দেওয়া যায় না। ভোট শেষে বিজয়ী অথবা বিজিত প্রার্থী স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে বড়জোর সাধারণ নৈশভোজ করান। এর খরচও পার্টির নির্বাচনী তহবিল থেকে মেটাতে হয়। সদস্যদের অনুদান এবং এলাকায় এলাকায় ‘ফান্ড রেজ়িং লাঞ্চ-ডিনার’-এর মাধ্যমে গড়া হয় এই তহবিল। ভোটের রাতের ভোজে সেখানে ফলাফলের চুলচেরা বিশ্লেষণও করা হয়।

বিজয়ী প্রার্থী নৈশভোজে জমায়েত সকলের সঙ্গে জামিলের পরিচয় করিয়ে দেন। তাঁর সঙ্গে আলাপ, ভোটের প্রচার কার্যক্রমে তাঁর আন্তরিক একাগ্রতার কথা শুনে সবাই মুগ্ধ। জামিল অস্ট্রেলিয়ায় নতুন আসা ছাত্র, এখনও কোন কাজ পাননি শুনে অনেকে নিজেদের ই-মেল জানিয়ে তাঁর বায়োডেটা পাঠাতে বলেন।

অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচনের একটা দিক বলা গেল এক জন জামিলের গল্পে। কিছু তথ্য অপ্রাসঙ্গিক হবে না। আড়াই কোটি জনসংখ্যার দেশ অস্ট্রেলিয়ায় ভোটার সংখ্যা ১ কোটি ৬৮ লাখ ৭৫৬। ভোটার পরিচয়পত্র মূলত ড্রাইভিং লাইসেন্স। তিন বছর অন্তর এই ধর্মনিরপেক্ষ দেশের ফেডারাল ও স্টেট পার্লামেন্টের ভোট হয়। ৬টি স্টেট, ২টি টেরিটরির অবস্থান এ দেশে। যেমন ক্যানবেরা এ দেশের রাজধানী। এক আসন বিশিষ্ট ক্যানবেরার প্রশাসনের নাম অস্ট্রেলিয়ান ক্যাপিটাল টেরিটরি। অপরটি নর্দার্ন টেরিটরি। রাজধানী ডারউইন। ফেডারাল পার্লামেন্টের আসন সংখ্যা ১৫০। এর মাথার ওপর উচ্চকক্ষ, সেনেট। তার আসন সংখ্যা ৭৬। প্রতি রাজ্য থেকে ১২ জন করে সেনেটর। দুটি টেরিটরি থেকে দুজন করে মোট চার জন সেনেটর। ফেডারাল পার্লামেন্টের নির্বাচনের সময় একই সঙ্গে সেনেট নির্বাচনও হয়। সে দিন প্রতি ভোটারকে দেওয়া হয় দুটি করে ব্যালট পেপার।

‘কী ভাবে ভোট দেবেন’ কার্ড হাতে এক স্বেচ্ছাসেবক। ছবি: গেটি ইমেজেস

একটি সেনেটর, অপরটি ফেডারাল এমপি-র। ব্যালটে এমপি পদে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার পর দ্বিতীয়-তৃতীয় পছন্দ হিসাবে টিক চিহ্ন দিয়ে ভোটার জানাতে পারেন অন্য দলগুলোর প্রতি তার আস্থা-অনাস্থার বিষয়টি।

ভারতের উত্তরপ্রদেশের মতো অস্ট্রেলিয়ার রাজনৈতিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্টেট নিউ সাউথ ওয়েলসের ভোটার সংখ্যা ৫৩ লাখ ১৯ হাজার ৬৪০। বলা হয়, অস্ট্রেলিয়ার প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যার বাস এখানে। রাজধানী সিডনি। তাসমান সাগর পাড়ের সিডনি অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্যিক রাজধানী।

অস্ট্রেলিয়ায় ভোট দেওয়াটা বাধ্যতামূলক। যৌক্তিক কারণ ছাড়া ভোট না দিলে ২০ ডলার জরিমানা হয়। ভোটের দিনটিও শনিবার ছুটির দিন দেখে ঠিক করা হয়। ফেডারাল নির্বাচনের দিন ঘোষণার পরে প্রত্যেক ভোটারকে ডাকযোগে পাঠানো হয় পোস্টাল ব্যালট। ভোটের দিনের এক সপ্তাহ আগে থেকে এলাকায় এলাকায় চালু করা হয় ‘আর্লি ভোট সেন্টার’। এই সেন্টারের মাধ্যমে রাজ্যের যে কোন নির্বাচনী আসনের ভোটার তাঁর ভোটটি দিতে পারেন। সিল-করা খামে এই ভোট চলে যাবে সংশ্লিষ্ট এলাকার নির্বাচন কমিশনের অফিসে। অর্থাৎ, ভোট আপনাকে দিতেই হবে।

এ বার প্রার্থী বাছাইয়ের পদ্ধতি। নির্বাচনী জেলাভিত্তিক পার্টির শাখা প্রাথমিক ভাবে প্রার্থী ঠিক করে। একাধিক প্রার্থী থাকলে শাখা পার্টির সদস্যদের মধ্যে গোপন ভোটাভুটিতে ঠিক হয় প্রার্থী। এই যে প্রার্থী ঠিক করার পার্টি সদস্য, এঁদের নিয়মিত বার্ষিক চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা বকেয়া পড়লে সদস্যপদ বাতিল হয়। এখন তৃণমূল স্তর থেকে ঠিক করা প্রার্থী, প্রতিদ্বন্দ্বীদের প্রাপ্ত ভোট-সহ চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্যে পাঠানো হয় পার্টির সদর দফতরের ককাসে। তৃণমূল স্তর থেকে নির্বাচিত প্রার্থীকেই কেন্দ্র চূড়ান্ত মনোনয়ন দেবে, এমন কোনও গ্যারান্টি নেই। প্রার্থীর এলাকায় প্রভাব এবং ভোটে জয়ী হওয়ার সামর্থ্য খতিয়ে দেখবে কেন্দ্র। কেন্দ্র থেকে মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থীও হওয়ার ঘটনাও ঘটে। তবে খুবই কম। বিদ্রোহী প্রার্থী অবশ্যই আগেভাগেই দলের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করেন। এক দলের টিকিটে জিতে অন্য দলে যোগ দেওয়া চলে না এখানে।

কাজপাগল অস্ট্রেলিয়ার মানুষজন রাজনীতিসচেতন হলেও সরাসরি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে অনাগ্রহী। এ জন্য এ দেশে কোনও নির্বাচনী জনসভা, মিছিল বা মাইকে প্রচার হয় না। শব্দদূষণ এবং অন্যের বিরক্তির সৃষ্টি হতে পারে বলে এ দেশে কোনও মসজিদ থেকে মাইকে আজান দেওয়াও বন্ধ। মন্দির-গির্জায় উৎসবের শব্দও বাইরে আসতে পারে না। নির্বাচনও তাই এখানে ভারতের মতো হইহল্লার নয়। নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশ বা গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ঘোষণার প্রচলিত স্থান ক্যানবেরার ন্যাশনাল প্রেস ক্লাব। টেলিভিশন-বিতর্কও প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দলের নেতার প্রচারে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শতবর্ষপ্রাচীন অস্ট্রেলিয়ার রাজনীতি-ক্ষমতার মাঠে এক ধরনের দ্বি-দলীয় ব্যবস্থার আধিপত্য গড়ে উঠেছে। লিবারাল-ন্যাশনাল কোয়ালিশন বনাম অস্ট্রেলিয়ান লেবার পার্টি। লিবারাল-ন্যাশনাল কোয়ালিশন এখন ক্ষমতায়। বনেদি সাদা এবং ধনী ব্যবসায়ী ভোটারদের মধ্যে চলতি ক্ষমতাসীনদের সমর্থন বেশি। কর্মজীবী, শ্রমিক এবং নতুন অভিবাসীদের মধ্যে জনপ্রিয় আবার লেবার পার্টি।

তবে ভোটারদের সাধারণ প্রবণতা হচ্ছে, কোনও দলকে কমপক্ষে দুই মেয়াদে, অর্থাৎ ছ’বছর তাঁরা ক্ষমতায় রাখতে চান। এক ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন না। ক্ষমতাসীন দল ভোটে হেরে গেলে তার দায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শুধু দলের প্রধান পদ থেকে নয়, সংসদ থেকেও পদত্যাগ করে নিভৃতে চলে যান। তবে গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা হচ্ছে, দলের অভ্যন্তরীণ অভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রী আস্থা হারিয়ে মেয়াদ শেষ করার আগেই ছিটকে যাচ্ছেন। এর জন্যে নানা সংস্থার সমীক্ষা, এমনকি পত্রপত্রিকার সমীক্ষাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কোনও বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী জনপ্রিয়তা হারালে দলের অভ্যন্তরে তাঁর নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘটে। বিদ্রোহীরা মনে করেন, এমন এক জন অ-জনপ্রিয় নেতার নেতৃত্বে দল পরবর্তী নির্বাচনে জিততে পারবে না। তখন দলের এমপিদের মধ্যে ভোটাভুটি হয়। ভোটাভুটিতে নতুন নেতা ঠিক হলে তিনি গভর্নর জেনারেলের কাছে পার্টির সিদ্ধান্ত নিয়ে গেলে নতুন প্রধানমন্ত্রী এবং নতুন মন্ত্রিসভার শপথের ব্যবস্থা করা হয়। গভর্নর জেনারেল এ দেশে রানির প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করেন। রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথ এখনও অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড-কানাডারও রানি। আলঙ্কারিক রাষ্ট্রপ্রধান।

পোস্টার-লিফলেট বা অনলাইন হল ভোট প্রচারের প্রধান মাধ্যম। তবে প্ল্যাকার্ড আকারের পোস্টার আপনার বাড়ির সামনে রাখতে গেলে আপনার আগাম অনুমতি নিতেই হবে। আপনি যদি অনুমতি না দিয়ে থাকেন এবং অভিযোগ করেন, তা হলে প্ল্যাকার্ড-প্রতি মোটা জরিমানা হবে। গ্রাফিতি বা দেওয়াল লিখন এ দেশে নিষিদ্ধ, সামাজিক অপরাধ। প্রচারের জন্য প্রার্থীরা রেল স্টেশন বা বাস স্টপে সকালে লিফলেট হাতে দাঁড়িয়ে ‘গুডমর্নিং’, ‘হাউ আর ইউ’ বলে তা লোকজনের হাতে ধরিয়ে দেন। এ ছাড়াও শপিং মল, পাব-এ ঘুরে বেড়ান। ধর্মীয় অনুষ্ঠান থাকলে প্রার্থীরা মসজিদ-মন্দিরেও যান।

দলের প্রধানরা বিমানে বা বাসে ঘুরে বেড়ান সারা দেশ। তবে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ বিমান ব্যবহার করেন না নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান। স্কুল, হাসপাতাল, কারখানা বা শপিং মলের সামনে, বা পার্কে মিডিয়ার লোকজন প্রতিদিন দেশ-বিদেশের নানা বিষয়ে মানুষের প্রতিক্রিয়া জানতে চান। নির্বাচনী জনসভা বা মিছিল হয় না বলে প্রচারের পুরোটাই মিডিয়ানির্ভর। এই নিত্য জরিপে কে কোথায় এগিয়ে যাচ্ছে, কে-ই বা পিছিয়ে যাচ্ছে তা নিয়ে জেরবার হতে হয় নেতৃত্বকে। এ সব সামলেই এগিয়ে যাওয়ার পথ খুঁজতে হয় নেতাদের। ভোটের পরে ভিড় জমিয়ে বিজয় উৎসব উদ্‌যাপন হয় না এখানে। পার্টি অফিসেও কেউ ভিড় করে না।

এ দেশের পার্টি অফিসগুলোও অফিসের সময় মেনে চলে। কর্মচারীরাও সেখানে বেতনভুক। অস্ট্রেলিয়ার ভোটে প্রার্থীর গাড়ির তেলের খরচ, ছাপার খরচই শুধু সংশ্লিষ্ট এলাকার দলের নির্বাচনী তহবিল থেকে দেওয়া হয়।

স্টেট পার্লামেন্টে বিজয়ী এমপি বছরে এক লাখ ডলার বেতন ও ভাতা, সঙ্গে স্টাফ-অফিস-প্রিন্টিং এবং স্টেশনারির খরচ পান। মনে করুন এমপি এলাকার কোনও স্কুল বা হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়েছেন। সেখানে তাঁর কাছে কিছু দাবি-দাওয়া পেশ করা হল। এমপি তখন বলেন, বিষয়টি তিনি সংসদের নজরে আনবেন। সংসদ অনুমোদন দিলে তবেই আপনারা তা পাবেন।

কিন্তু এমপি-র দাতার ভূমিকা নেওয়ার কোনও সুযোগ একেবারেই নেই এখানে। টাকাকড়ির লেনদেন না-থাকায় এ দেশের রাজনীতি মোটামুটি দুর্নীতিমুক্ত। আবার দুর্নীতি যে নেই, তা-ও জোর গলায় বলা যাবে না। কিন্তু সামান্য কোনও আর্থিক অসঙ্গতি প্রকাশ হলে অভিযুক্তকে পদত্যাগ করতেই হয়। তার পরে তদন্ত। ভারত বা বাংলাদেশে এমন হাজার অভিযোগ নিয়েও বহু জনপ্রতিনিধি কিন্তু বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement