সঙ্গীতসাধক: ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য। তাঁর নিজস্ব গায়নবৈশিষ্ট্য মন ছুঁয়ে যেত শ্রোতাদের
উত্তরপাড়া রাজবাড়িতে এক স্কুলের বার্ষিক পুরস্কার-বিতরণী সভা। প্রধান অতিথি কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। এক সাত-আট বছর বয়সি ছেলের মুখে দু’টি গান শুনে মোহিত শরৎচন্দ্র তাকে পুরস্কার হিসেবে দিলেন পাঁচ টাকা। বালকটি মনে করত, এই তার জীবনের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার। শরৎচন্দ্র প্রতিভা চিনতে ভুল করেননি, এই বালকই পরবর্তী কালের কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য (১০ সেপ্টেম্বর ১৯২২-২৭ ডিসেম্বর ১৯৯২)। আজীবন অনায়াস দক্ষতায় তিনি গেয়েছেন আধুনিক, চিত্রগীতি, অধ্যাত্ম-সঙ্গীত, ধ্রুপদ সেই সঙ্গে রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুল-দ্বিজেন্দ্রগীতি। তাঁর আশ্চর্য সরস ও মায়াময় গায়নভঙ্গিতে মুগ্ধ হয়েছেন একের পর এক প্রজন্মের শ্রোতা।
আমতার ভট্টাচার্য-পরিবারের সুরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য ও অন্নপূর্ণা দেবীর অষ্টম সন্তান ধনঞ্জয়ের জন্ম হাওড়ার বালিতে। বাবা-মার গানের চর্চা ছিল বলে গানের অনুকূল আবহে মানুষ। সাত বছর বয়সে বাবার মৃত্যুর পর মা শক্ত হয়ে দাঁড়ালেও পরিবারে আর্থিক সমস্যা ছিল। ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ায় মেধাবী ছিলেন ধনঞ্জয়। স্কুলের শিক্ষকবৃন্দ, বিশেষত সুধাংশুস্যরের সব রকম সহায়তা পেয়েছিলেন তিনি। সুধাংশুস্যরের আগ্রহেই তাঁর প্রথম গান শেখা। পরবর্তী সময়ে সেতারশিল্পী গোকুল নাগ ও উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী সত্যেন ঘোষালের তালিমে প্রশিক্ষণ পেয়ে নিজেকে তৈরি করেছিলেন তিনি। ধনঞ্জয় ছোটবেলা থেকেই শ্রুতিধর। এক বার শুনলেই সে গান তুলে নিতে পারতেন নিজের গলায়। এক ভিখারির মুখে শুনে তুলে নিলেন সেই চিরন্তন গান— ‘একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি’। পরে সেই গান গেয়েছিলেন ‘বিপ্লবী ক্ষুদিরাম’ (১৯৫১) ছবিতে। ধনঞ্জয়ের কথায় ওই ভিখারিই তাঁর প্রথম সঙ্গীতগুরু।
বৃহত্তর ক্ষেত্রে ধনঞ্জয়ের আত্মপ্রকাশ ক্লাস নাইনে পড়ার সময়। বেতারে গাইলেন ‘জোছনা রাতে কেন ডাকে’। পারিশ্রমিক পেলেন পাঁচ টাকা। পাইওনিয়ার ও ভারত রেকর্ড কোম্পানির সুধীর গুহের সৌজন্যে ধনঞ্জয়ের প্রথম রেকর্ড বেরোল ১৯৪০-এর এপ্রিলে, প্রেমের দু’টি নরম গান— ‘যদি ভুলে যাও মোরে’ ও ‘ছিল যে আঁখির আগে’। দু’টি গানই প্রণব রায়ের কথায়, সুবল দাশগুপ্তের সুরে। প্রথমোক্ত গানটি পরে একাধিক শিল্পী
রিমেক করেছেন।
১৯৪১-এ হিমাংশু দত্তের সুরে ‘জীবনসঙ্গিনী’ ছবিতে প্রথম প্লেব্যাকের অভিজ্ঞতা সুখের হল না। প্রিয় শিল্পী শচীন দেব বর্মণ ও সুপ্রভা সরকারের সঙ্গে গাইলেন বটে, কিন্তু শচীনদেবের ভাল লাগল না ধনঞ্জয়ের গান। তবে কয়েক বছরের ব্যবধানে ঘটল উল্টো ঘটনা। ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সেই শচীনকর্তাই ধনঞ্জয়ের গানে মুগ্ধ হয়েছিলেন। তাঁকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলেছিলেন, “গলাডারে রাইখ্য ধনঞ্জয়।” ধনঞ্জয়ের জয়যাত্রা শুরু ১৯৪৩-এ সুবল দাশগুপ্তের সুরে ‘আলেয়া’ ছবিতে ‘মাটির এ খেলাঘরে’ (কথা: প্রণব রায়) ও ‘শহর থেকে দূরে’-তে ‘রাধে ভুল করে তুই’ (কথা: শৈলেন রায়) গেয়ে। কথাকার শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ‘শহর থেকে দূরে’ লোকে একাধিক বার দেখল শুধু ধনঞ্জয়ের গানের আকর্ষণে। অতঃপর কৃষ্ণচন্দ্র দে, শচীন দেব বর্মণ, কে এল সায়গল, পঙ্কজ মল্লিক, জগন্ময় মিত্র, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়দের মাঝে অচিরেই নিজের জায়গা করে নিলেন তরুণ ধনঞ্জয়। তাঁর রেওয়াজি মুক্ত কণ্ঠের দরদ স্পর্শ করল বাংলার আপামর সঙ্গীতপ্রেমীর হৃদয়।
তাঁর সুদীর্ঘ বহুবিচিত্র সঙ্গীতজীবনের অনেকটা জুড়ে আছে বেসিক আধুনিক। অধিকাংশই ভালবাসার গান। সুর কখনও শান্ত মেলডি-ভিত্তিক, কখনও রাগনির্ভর, কখনও বা পাশ্চাত্যধর্মী। সব গোত্রের গানেই তিনি সাবলীল। প্রাথমিক পর্বে রেকর্ডিং-সূত্রে বিশিষ্ট সুরকার-ত্রয়ী— সুবল দাশগুপ্ত, কমল দাশগুপ্ত বা শৈলেশ দত্তগুপ্তের কাছে গানের খুঁটিনাটি ব্যাপারে যা শিক্ষা পেয়েছিলেন, তা তাঁর সাঙ্গীতিক গুণপনাকে আরও সমৃদ্ধ করেছিল। প্রেমের গানে ধনঞ্জয় কখনও বলেন ‘যদি ভুলে যাও মোরে, জানাব না অভিমান’, কখনও ‘আমায় তুমি ভুলতে পারো/ কেমন করে ভুলবে আমার গান’ (কথা: অনিল ভট্টাচার্য, সুর: নির্মল ভট্টাচার্য), পাশেই দৃঢ়তার সঙ্গে ‘ভুলিতে দিব না আমারে’ (কথা: প্রণব রায়, সুর: সুবল দাশগুপ্ত)— সবই বিশ্বাসযোগ্য উচ্চারণ হয়ে ওঠে। কখনও সহজ কথার ছলে বিরহ ফোটে সতীনাথ মুখোপাধ্যায়ের মরমি সুরে ‘আমি চেয়েছি তোমায়’ (কথা: গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার) বা ‘কতদিন দেখা হয়নি’ (কথা: শ্যামল গুপ্ত) গানে। নিবিড় বেদনা জাগায় সতীনাথেরই সুরে ‘শূন্য ঘরে ফিরে এলাম’। এমনই মেলডির ওপর প্রণব রায়ের কথায় ‘শুধু মুখের কথাটি’ (সুর: শৈলেশ দত্তগুপ্ত), ‘মোর জীবনের দুটি’ (সুর: কমল দাশগুপ্ত), গৌরীপ্রসন্নর কথায় ‘বাসরের দীপ’ (সুর: প্রফুল্ল ভট্টাচার্য) বা ‘দোলে শালপিয়ালের বন’ (সুর: শ্যামল মিত্র), নিজের কথায়-সুরে ‘কবির খেয়ালে’। নচিকেতা ঘোষের সুরে ‘যদি চাঁদ ডুবে’ গানে আছে মেলডির সঙ্গে ছন্দের মজা। প্রবীর মজুমদারের লেখায়-সুরে মাটির গন্ধ-মাখা ‘মাটিতে জন্ম নিলাম’ গানে ধনঞ্জয়ের অন্যতর দীপ্তি। স্বতন্ত্র মেজাজের ‘শিল্পীমনের বেদনা’ (কথা ও সুর: জহর মুখোপাধ্যায়) বা ‘হৃদয়ে মোর রক্ত ঝরে’ (কথা: শ্যামল গুপ্ত, সুর: প্রফুল্ল ভট্টাচার্য) শিল্পীর হৃদয়েরই ভাষ্য। ১৯৪৮-এ গাঁধীপ্রয়াণ উপলক্ষে গাওয়া শৈলেন রায়ের লেখায় সুবল দাশগুপ্তের সুরে ‘কে বলে গান্ধী নাই’ ও ‘অশ্রুযমুনা দুলে’-তেও
অন্য স্বাদ।
রাগনির্ভর গান মানেই অলঙ্করণ-বাহুল্য বা ব্যক্তিগত কায়দা প্রদর্শন নয়, তারই উজ্জ্বল পরিচয় ধনঞ্জয় রেখেছেন নির্মল ভট্টাচার্যের সুরে ‘রুমা ঝুমা ঝুম’, সুধীন দাশগুপ্তের ‘এমন মধুর ধ্বনি’ (কথা: সুনীলবরণ) বা নিজের সুরে ‘চলে শ্রীমতী শ্যাম’ (কথা: পবিত্র মিত্র) গানে। রেকর্ড করার সময় ‘রুমা ঝুমা ঝুম’ গানে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে কিছু ইম্প্রোভাইজ়েশন এনেছেন কিন্তু মেলডি অটুট থেকেছে। ধনঞ্জয়ের চর্চিত এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কণ্ঠের কথা ভেবেই সলিল চৌধুরী কলাবতীর ওপর সুর করেন ‘ঝনন ঝনন বাজে’ কিন্তু অন্তরায় স্বকীয় ধরনেই ছন্দ ভাঙেন। রাগাশ্রিত গানের পাশেই পাশ্চাত্য সুরে-ছন্দে ‘ওগো সুচরিতা’, ‘এই ঝির ঝির বাতাসে’ (সুধীন দাশগুপ্ত), ‘অন্তবিহীন এই’ (সলিল চৌধুরী) বা ‘বলেছিল কি যেন’ (অনল চট্টোপাধ্যায়) গানেও ধনঞ্জয় সমান স্বছন্দ। প্রত্যেক সুরকারই বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী এই শিল্পীর গলার ‘রেঞ্জ’কে দারুণ ভাবে কাজে লাগিয়েছেন। এ সব গানের প্রসঙ্গেই মনে পড়ে লতা মঙ্গেশকরের ‘গোরে গোরে’ অবলম্বনে ধনঞ্জয়ের গাওয়া ভার্সন-গান ‘শোনো শোনো কথাটি শোনো’।
সিনেমার নেপথ্যগানে ভক্তিসঙ্গীতেরই প্রাধান্য। তাঁর কাছে প্রশিক্ষণ পেয়ে ছোট ভাই পান্নালাল প্রথমে আধুনিক গান গাইলেও, তাঁর আসল জায়গা হয়ে উঠেছিল ভক্তিগীতি। আশ্চর্য ভক্তিরসসিক্ত কণ্ঠে যত দিন পান্নালাল গেয়েছেন, ধনঞ্জয় কিন্তু বেসিক রেকর্ডে ভক্তিগীতি গাননি। তিনি আগমনি, শ্যামাসঙ্গীত গেয়েছিলেন ভাইয়ের মর্মান্তিক অকাল-মৃত্যুর পর। রাইচাঁদ বড়ালের সুরে ‘স্বামীজী’ (১৯৪৯) ছবিতে ধনঞ্জয়ের প্রথম ভক্তিসঙ্গীত ‘যাবে কি হে’ ও অযোধ্যানাথ পাকড়াশীর সুপরিচিত ‘মন চল নিজ নিকেতনে’। শেষোক্ত গানটি ব্রাহ্মসমাজের প্রথাসিদ্ধ ধরনে না গেয়ে গাইলেন রাইচাঁদের সুরে। হৃদয় ছুঁয়ে যায় অনিল বাগচীর সুরে তাঁর ‘রাণী রাসমণি’-র (১৯৫৫) ‘গয়া গঙ্গা প্রভাসাদি’ ও ‘কোন হিসেবে হর’। তা ছাড়াও মানুষের মন ছুঁয়ে গিয়েছিল প্রবীর মজুমদারের সুরে ‘ভগবান শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ’ (১৯৫৫), সন্তোষ মুখোপাধ্যায়ের সুরে ‘সাধক রামপ্রসাদ’ (১৯৫৬), অনিল বাগচীর সুরে ‘সাধক বামাক্ষ্যাপা’ (১৯৫৮), নিজের সুরে ‘জয় মা তারা’ (১৯৭৯) ইত্যাদিতে বহু গান। কালীপদ সেনের সুরে ‘মেজদিদি’-তে (১৯৫০) কবি সজনীকান্ত দাসের লেখা ‘জনমমরণ পা ফেলা’ বা রবীন চট্টোপাধ্যায়ের সুরে ‘বাবলা’-তে (১৯৫১) ‘জীবনপারাবারের মাঝি’ জীবনদর্শনেরই কথা বলে। ধনঞ্জয়কে চিনতে অসুবিধে হয় না রাজেন সরকারের সুরে ‘ঢুলি’-তে (১৯৫৪) ‘ত্রিনয়নী দুর্গা’, ‘ভাঙনের তীরে’ বা পঙ্কজ মল্লিকের সুরে ‘মহাপ্রস্থানের পথে’ (১৯৫২) ছবিতে ‘ও দিলওয়ালে’, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সুরে ‘বাদশা’-তে (১৯৬৩) ‘ও তুই ঘুমের’ গানে। রবীন চট্টোপাধ্যায় তাঁকে দিয়ে শক্ত চালের গান গাইয়ে নেন ‘সাধারণ মেয়ে’ (১৯৪৮) ছবিতে ‘দাঁড়াও না দোস্ত’ (কথা: প্রেমেন্দ্র মিত্র), ‘সাহেব বিবি গোলাম’-এ (১৯৫৬) ‘কে তীরন্দাজ’, এমনকি ‘তানসেন’-এ (১৯৫৮) ধ্রুপদ। পাশেই ‘পাশের বাড়ি’-তে (১৯৫২) সলিল চৌধুরীর বিদেশি সুর-আঙ্গিকের ‘ঝির ঝির ঝির বরষায়’ স্ফূর্তিময়, তা ছাড়া সাত মাত্রার ‘নয়নে তার’ও (কথা: বিমলচন্দ্র ঘোষ) চমকপ্রদ। এই ছবিতে, এবং ‘শ্বশুরবাড়ি’, ‘নববিধান’, ‘লেডিস সিট’-এ অভিনয়ও করেছিলেন ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য।
একাধিক বার আমন্ত্রণ পেলেও মুম্বইয়ের হিন্দি সঙ্গীত-জগতের সঙ্গে যুক্ত হতে মন সায় দেয়নি ধনঞ্জয়ের। কেবল এক বারই রাইচাঁদ বড়ালের সুরে ‘ভগবান শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য’ ছবিতে গাইতে এবং লতা মঙ্গেশকরকে দিয়ে ওই ছবিরই গান রেকর্ড করাতে মুম্বই গিয়েছিলেন।
রবীন্দ্র-ভক্ত ধনঞ্জয়ের রেকর্ডে মাত্র চারটি রবীন্দ্রসঙ্গীত (বিশ্ব যখন নিদ্রামগন, এবার নীরব করে, গানের ঝরনাতলায়, নিভৃত প্রাণের দেবতা)। তিনি তার পর আর কবির গান কখনও রেকর্ড করেননি। এ অপ্রাপ্তি তাঁর অনুরাগীদের কখনও মোছার নয়। অমৃতলাল গুপ্তের ব্রহ্মসঙ্গীত ‘দিবা অবসান’ বা নজরুলের ‘কেউ ভোলে না’, এমনকি অমর পালের পরিচালনায় লোকগীতি ‘গুরু কই রইলা’ গানেও তাঁর গায়ন-নৈপুণ্য সুপ্রকাশিত।
‘আর্টিস্ট এসোসিয়েশন’-এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ধনঞ্জয় বিভিন্ন সময় শিল্পীদের পক্ষে প্রতিবাদে মুখর হয়েছেন, বেতার বা অন্যত্র, যে কোনও সমস্যায়। সম্ভাবনাময় নবীনদের জন্যে সদা-সক্রিয় তাঁর সহযোগ ছাড়া বেরোতেই পারত না মৃণাল চক্রবর্তী, সনৎ সিংহের রেকর্ড। শিল্পী পিন্টু ভট্টাচার্য, অরুণ দত্ত, সুদাম বন্দ্যোপাধ্যায়রাও নানা ভাবে উপকৃত তাঁর কাছে। উঠতি-তরুণ সতীনাথ মুখোপাধ্যায় বা রতু মুখোপাধ্যায়ের সুরে গান করেও তিনি তাঁদের সহায়তা করেছেন।
মোহনবাগান ক্লাবের সম্মাননীয় সদস্য ক্রীড়াপ্রেমিক ধনঞ্জয় ভট্টাচার্যের হাতের রান্নাও ছিল খুব সুস্বাদু, আড্ডা দিতে ভালবাসতেন কলেজ স্ট্রিটের সিসিল হোটেলে, তাঁর বাসস্থানে।
তাঁর রসবোধসম্পন্ন কথাবার্তা, স্নেহ-সঙ্গ ভোলা যাবে না কখনও।
তাঁর স্ত্রীর নাম রেখা দেবী। তিন পুত্র— শ্যামলাল, দীপঙ্কর, দেবকান্তি। প্রথম দু’জন গানের সঙ্গেই যুক্ত।
রক্তশর্করা রোগে আক্রান্ত ধনঞ্জয় কিছুটা অসময়েই চলে গেলেন, ১৯৯২-এর ২৭ ডিসেম্বর। এক গানে বলেছিলেন: ‘পাবার কিছু নেই শুধু মোর দেবার থাকে দান’— সেই দান অর্থাৎ গান তো অবিরল ধারায় দিয়ে গেছেন তিনি, কিন্তু কী পেলেন? অসংখ্য শ্রোতার ভালবাসা তিনি পেয়েছেন, কিন্তু প্রতি বছর ‘ধনঞ্জয় গীতিমন্দির’ স্মরণ-অনুষ্ঠানের আয়োজন করলেও সে ভাবে কি মনে রাখতে পেরেছি তাঁকে? তাঁকে স্মরণে রেখে তাঁর সঙ্গীতকীর্তির কাছে ফিরতে পারলে, তা-ই হবে তাঁর শতবর্ষের প্রকৃত শ্রদ্ধাঞ্জলি।