Sourced by the ABP
পূর্বানুবৃত্তি: হাব্বাডাব্বা খেলা কিংবা লটারির টিকিট কাটা ছেড়ে দিলেও, অভ্র যে শেয়ার কেনাবেচা শুরু করেছে, সে খবরে বিশেষ খুশি হল না রুমকি। অভ্র চাকরির পরীক্ষাগুলো দেওয়ার চেষ্টা করে গেল না কেন, বা এখনও আরও ভাল কিছু করছে না কেন, সেই অনুযোগ বার বার ফুটে উঠল তার বক্তব্যে। কথার শেষে রুমকিকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানায় অভ্র। রুমকি খুশি হয়। সে এক দিন অভ্রর সঙ্গে কোথাও দেখা করতে চায়। অভ্র তখনই তাতে হ্যাঁ-না কিছুই বলে না। সুপ্রীতি অভ্রকে বলেন বিয়ের সম্বন্ধের কথা। অভ্র মোটেই রাজি হয় না। কথায় কথায় উঠে আসে সুমির কথা। তার বিয়েটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক হওয়ায় সে ডিভোর্সের মামলা করে। বিয়ে ভেঙে যায়। গ্রামে তারও পাত্রের সন্ধান চলছে।
সুপ্রীতি বলেন, “হ্যাঁ। ঠিক ধরেছিস। ও নাকি একাই কোর্টে গিয়ে মামলা ঠুকেছিল। বাবা-মা-ভাই কেউ সঙ্গে ছিল না। তারা মানিয়ে নিতে বলছিল।”
অভ্র বলল, “সুমিদের অবস্থা তো ভাল নয় বলছ। তা হলে কোর্ট-কাছারি মামলা এ সবের খরচা কে জোগাল?”
“একটা জমি বিক্রি করে খরচ জুগিয়েছিল। সুমির বাবা-মায়ের শুরুতে ডিভোর্সে মত ছিল না। তেজি মেয়ের জেদের কাছে পরে হার মানতে বাধ্য হয়েছিল। মামলার খরচ না জোগালে গলায় দড়ি দেবে বলেছিল। শুনেছি সুমি ডিভোর্সের টাকা পেয়েই এক বিঘা ধানি জমি কিনে দিয়েছে।”
“কত পেয়েছে?”
“অত জানি না। কেউ বলে পঁচিশ, কেউ বলে তিরিশ, গাঁয়ের লোকজন তো বাড়িয়ে বলায় ওস্তাদ। ছোড়দা বলল যে, লাখ চল্লিশ পেয়েছে। দেশে তো শত্তুরের অভাব নেই, অনেকে বলে রাখহরি বিয়ের নামে মেয়েকে দিয়ে ব্যবসা করিয়ে নিল।”
“বদের হাঁড়িরা সর্বত্রই আছে,” অভ্র বলল, “গাঁ-ঘরে কোনও মেয়ে নিজে থেকে ডিভোর্স চাইছে, এটা অনেকেরই হজম হবে না। তা তোমার বড়দা কেমন পাত্র দেখেছে শুনি? নিশ্চয়ই কোনও ফোর-টোয়েন্টি ছেলে জোগাড় করেছে!”
সুপ্রীতি ক্ষুণ্ণ হলেন, “মামার নামে কিছু বলতে মুখে আটকায় না দেখছি। ছেলে দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টে চাকরি করে, কোয়ার্টার পেয়েছে, বয়স বত্রিশ। বিয়ের দেড় বছরের মধ্যে বৌ মারা গেছে।”
“মারা গেছে, না মেরে দিয়েছে?”
“তুই কি সবেতেই খারাপ দেখতে পাস?” সুপ্রীতি আহত চোখে তাকালেন, “এমন তো তুই ছিলি না। বাচ্চা পেটের মধ্যে মারা গেছিল, বৌটাকেও বাঁচানো যায়নি। ওর বাবা-মা খুব করে খোঁজ নিয়েছে। আর ভুল করতে চায় না ওরা। কিন্তু মেয়েকে সাহস করে বলতে পারছে না। আগে এক বার বিয়ের কথা তুলতেই তিন মাস ঘরমুখো হয়নি, কারও ফোন পর্যন্ত ধরেনি।”
অভ্র হাসল, “হুম, তা কথাটা নিশ্চয়ই তুমিই তুলবে ওর কাছে? তা হলে আর এই বাড়িতেও আসবে না। ওই প্রসঙ্গ ছাড়ো। কারও সঙ্গে আমার বিয়ে হলেও ভাত-কাপড়ের অভাব হবে তার। রাগে-দুঃখে সেই মেয়ে তখন ডিভোর্স চাইবে। তার চেয়ে এই বেশ আছি। তোমার মাথাতেও যেন এ নিয়ে পোকা না নড়ে।”
“তুই বড্ড বাড়িয়ে বলিস। অত অভাব আমাদের কেন হবে? ভাত-কাপড় জুটবে না!”
“না জুটতেও পারে।”
“গোপাল ঠিক জুটিয়ে দেবেন।”
রেগেমেগে কিছু বলতে গিয়েও সংযত হয়ে গেল অভ্র। মাকে আঘাত করে কী লাভ? কুহকিনী আশা নিয়েই তো মানুষটা বেঁচে আছে।
সে শুধু আশার স্ফুলিঙ্গটুকুও দেখতে পাচ্ছে না। সময়ের কাছে হাত পাতলেও দু’হাতের মুঠোয় শুধুই শূন্যতা ছাড়া কিছুই থাকে না। তার নিস্তরঙ্গ জীবনে আশা-নিরাশার দোলাচলও যেন থেমে গিয়েছে। অনেক দিন পরে তার আবার মনে হচ্ছে, কেন সে বেঁচে আছে? কার জন্য বেঁচে আছে?
চৌত্রিশটি বসন্ত পার হয়ে এসে বেঁচে থাকার সংজ্ঞাটাই যে বড় দুর্বোধ্য লাগে।
শিমলা পৌঁছে চিরশ্রী এক বার ফোন করেছিল। কয়েকটি ছবিও পাঠিয়েছিল হোয়াটসঅ্যাপে। তার পরেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। টানা আট দিন চিরশ্রীর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না, ফোন বা মেসেজ কিছুই পায়নি মল্লার। ছটফট করছিল সে। ফোন করে যে খোঁজ নেবে, সে উপায় নেই। চিরশ্রী বারণ করেছে। সিন্থেসাইজ়ার টিচার কেন ফোন করছে, এ রকম পরিস্থিতি তৈরি না হওয়াই নিরাপদ। উত্তরাখণ্ডে পাহাড়ে ধস এবং তিন জন পর্যটকের মৃত্যুর খবর মল্লারের উৎকণ্ঠা বাড়িয়ে দিয়েছিল।
ছ’দিন পরে ইনবক্সে চিরশ্রীর পাশে সবুজ আলো জ্বলে উঠতেই সে খুশিতে লাফিয়ে উঠল।
“কোথায় ছিলে এত দিন?”
“যে জায়গাগুলোয় গেছিলাম, সেখানে আমার ফোনে টাওয়ার ছিল না, নেট ছিল না। রিমোট জায়গা। এক কথায় ভয়ঙ্কর সুন্দর।”
“প্লিজ় ফোন করো এক বার। তোমার গলা শুনতে চাই। মনে হচ্ছে যেন কয়েক জন্ম শুনিনি।”
“মানালিতে সকালে এসে পৌঁছেছি। এখন ম্যালে আছি। আশপাশে অনেকে আছে। এখন ফোন করা যাবে না।”
“হোটেলে ফিরে কোরো তা হলে।”
“সম্ভব নয়।”
“কেন?”
“প্লিজ় তুমি ধৈর্য হারিয়ে ফোন করে বসবে না। বললাম তো সম্ভব নয়।”
মল্লার লিখল, “কাল সকালে?”
“চেষ্টা করব।”
অসহিষ্ণু মল্লার দ্রুত টাইপ করল, “আমার প্রাণ ছটফট করছে। এ দিকে তুমি বলছ চেষ্টা করবে!”
“ভাবতে হচ্ছে।”
“কী ভাবতে হচ্ছে?”
“পরে জানাব।”
“তোমার কথা বুঝতে পারছি না। হেঁয়ালি করছ কেন? তুমি বলেছিলে, এই বাজনার লাইনে আমার উন্নতি হবে। পূজার পরে চারটে ফাংশন আছে। তার মধ্যে একটা আছে আগামী কাল।”
“ভাল খবর।”
সবুজ আলো নিভে গিয়েছিল তার পর। যাওয়ার আগে চিরশ্রী বলেছিল যে, মানালি থেকে চণ্ডীগড় ফিরে রাতটা স্টে করবে, পরের দিন সকালে দিল্লির ট্রেন ধরবে। চিরশ্রীর রুট-চার্ট তার মুখস্থ হয়ে গিয়েছিল। কাঙ্ক্ষিত ফোন আর আসেনি। একটি বার সে চিরশ্রীর গলা শোনার জন্য কাতর ছিল। উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠায় আটচল্লিশ ঘণ্টা কেটে গেলেও চিরশ্রী নীরবই থেকেছে। প্রমিতদা কি কিছু অনুমান করেছে? সেই ভয়েই চিরশ্রী তাকে আর কল করতে পারছে না! আজ দুপুর দেড়টা নাগাদ চিরশ্রীর এই শহরে ফিরে আসা উচিত। ফিরেও তো একটি বার ফোনে জানাতে পারত। মেসেঞ্জার বা হোয়াটসঅ্যাপে জানানোর মধ্যে কী এমন ঝুঁকি থাকে? সঙ্গে সঙ্গে ডিলিট করে দিলেই চলে।
এখন বিকেল সাড়ে পাঁচটা। হলুদ আলো ছড়িয়ে পড়েছে চার দিকে। মল্লার ঘরে চুপ করে বসে থাকতে পারছে না। সে বাইক চালিয়ে অরবিন্দনগরে পৌঁছে গেল। চিরশ্রীর বাড়ি থেকে কয়েক হাত দূরত্বে পিচরাস্তার পাশে বাইক স্ট্যান্ড করে সিটের উপর বসল। এখান থেকে ওদের বাড়ির ব্যালকনিটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। চিরশ্রী এক বার হলেও ব্যালকনিতে এসে দাঁড়াবে, মল্লার একটি মুহূর্তের জন্য তাকে দেখতে চায়। নিশ্চিত হতে চায় যে সে ফিরে এসেছে।
সর্বনাশ! গেট ঠেলে প্রমিত চক্রবর্তী বেরিয়ে আসছে। বাইক স্টার্ট করে এ দিকেই এগোচ্ছে। মল্লার মুহূর্তেই স্মার্টফোনটা কানে ঠেকিয়ে কিছু বলার ভান করল।
বাইকটা তার কাছে এসেই থেমে গেল।
“কী ব্যাপার মল্লার? তুমি এখানে?”
মল্লার যথাসম্ভব ক্যাজ়ুয়াল ভাব ফুটিয়ে তুলল মুখে, “মির্জাবাজার যাচ্ছিলাম। হঠাৎ একটা ফোন এল। ধরার জন্য বাইকটাকে দাঁড় করালাম।”
“ও! বিলম্বিত শুভ বিজয়া।”
“শুভ বিজয়া,” মল্লার অল্প হাসল, “কবে এলে?”
“আজকেই।”
“আজ কখন?”
“দুপুর আড়াইটে নাগাদ পৌঁছেছি।”
“কেমন হল ট্যুর?”
“দুর্দান্ত। মার্ভেলাস এক্সপিরিয়েন্স। আমরা দু’জনেই ট্যুরটা খুব এনজয় করেছি।”
মল্লারের বুক জ্বলে গেল। গত এক মাসে চিরশ্রীর প্রতি তার এক রকম অধিকারবোধ জন্ম নিয়েছে। প্রমিত যেন সেখানে বহিরাগত। মল্লার মৃদু হেসে ব্যস্ত ভাব দেখিয়ে বলল, “প্রমিতদা, এগোচ্ছি এখন। ছাত্র অপেক্ষা করবে। এমনিতেই দশ মিনিট লেট হয়ে গেছে।”
“হ্যাঁ, এসো। আমিও কিছু গেরস্থালির জিনিস আনতে যাচ্ছি।”
মল্লার বাইক নিয়ে মির্জাবাজারের দিকে এগোল। বুক ধুকপুক করছে, মিথ্যে বলা তার অভ্যেস নেই। এ-যাত্রায় সাজিয়ে গুছিয়ে কথাগুলো বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে পেরেছে অন্তত। মির্জাবাজার পেরিয়ে নান্নুর চকে মেন রোডে উঠল সে। ট্রাফিকের ক্যাকোফনি অসহ্য লাগছে, কিছুই ভাল লাগছে না। বুকের ভিতর মেঘলা অভিমান জমে উঠছে। ফিরেও কি একটি বার কল করা যেত না? নাকি প্রমিতদা বাড়িতে ছিল বলেই ঝুঁকি নেয়নি চিরশ্রী।
সে ফোন করল।
ফোন বেজেই চলল। এক সময় যান্ত্রিক ঘোষণা হল, ‘যাকে আপনি ফোন করছেন তিনি ফোনটা ধরছেন না’। পর পর চার বার কল করল মল্লার। ও প্রান্তে কোনও সাড়া নেই, রিং হয়েই চলল। নিজের মনকে প্রবোধ দিল মল্লার। হয়তো ব্যস্ত আছে, হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছে, হয়তো বাথরুমে রয়েছে। অনেক রকম ‘হয়তো’ ভেবেই চলল মল্লার। ধূসর সন্ধে নামল, রাস্তার হ্যালোজেন আলোগুলি জ্বলে উঠল। মল্লারের মনে হল, এত ম্লান দুঃখী আলো সে আগে কখনও দেখেনি।
মল্লার শহরের অন্য প্রান্ত কুইকোটার দিকে বাইক নিয়ে এগোল। তার শেখানো আছে সন্ধে সাড়ে ছ’টায়। ইতস্তত ঘুরতে ঘুরতে আরও কিছু ক্ষণ কেটে গেল। সময় হয়ে গিয়েছে, এ বার ছাত্রের বাড়িতে ঢোকা যায়। শেখাতে বসে টেবিলে রাখা স্মার্টফোনের দিকে বার বার সতৃষ্ণ চোখে তাকাল। নোটেশন লিখতে ভুল করল। রাত আটটা নাগাদ বেরোল মল্লার। আজ এই এক জায়গাতেই শেখানো ছিল। এখন কোথায় যায় সে!
পাঁচটা মিসড কল দেখেও চিরশ্রী তাকে একটি বারের জন্যও রিং ব্যাক করেনি! বুকপকেটে থাকা স্মার্টফোন নীরব, অফ করে দিতেও দ্বিধা হচ্ছে। যদি চিরশ্রী তাকে ফোনে না পায়!
নিজের উদ্বেগ-আশঙ্কা কারও সঙ্গে ভাগ করে নিতে মন চাইছে। কেউই যে তেমন নেই। অভ্র একেবারে চুপচাপ। রাগ হয়েছে বাবুর। ওকে অবশ্য দোষ দেওয়া যাবে না। চিরশ্রীর ব্যাপারে মল্লার শুরু থেকেই তাকে এড়িয়ে যেতে চেয়েছে। জীবনে প্রেম এলে পুরুষ আসলে নিজের অজান্তেই একা হয়ে যাওয়ার রাস্তায় হাঁটা শুরু করে। আচ্ছা, প্রমিতদা কি সত্যিই সন্দেহ করেছে? প্রমিতদার ভয়েই কি নিজেকে পুরোপুরি গুটিয়ে নিয়েছে চিরশ্রী!
নেট খুলল মল্লার। নেট বন্ধ রেখেছে চিরশ্রী। তবু মেসেঞ্জারে লিখল সে, “কেন তুমি ফোন ধরছ না? কী সমস্যা তোমার?”
ঘরে ফিরে চুপচাপ শুয়ে রইল মল্লার। কাতর অপেক্ষা করছে সে, কখন অনলাইনে আসবে চিরশ্রী। রাত সাড়ে ন’টায় মেসেঞ্জারে সবুজ আলো জ্বলতেই তড়াক করে উঠে বসল মল্লার। হৃৎপিণ্ড মুঠোয় নিয়ে সে তাকিয়েই রইল। কয়েক মিনিট বাদেই অফলাইন হয়ে গেল চিরশ্রী। পাণ্ডুর ও ফ্যাকাসে মুখে বসে থাকল মল্লার। অসহ্য লাগছে সমস্ত কিছু। বাইরে বেরোতেই হবে। নিজেকে শান্ত রাখার আর কোনও উপায় খুঁজে পাচ্ছে না সে।
মল্লার জামাপ্যান্ট গলিয়ে ঘর থেকে বেরোতেই কমল অবাক হলেন, “এত রাতে কোথায় চললি?”
“আর বোলো না। সবার এখন খুব চাপ, টাইম ম্যানেজ করতে হিমশিম খাচ্ছে। রাত দশটায় এক ছাত্রের টাইম হবে। তাকে শেখাতে চললাম।”
গত কয়েক মাসে সে মিথ্যে বলায় চোস্ত হয়ে গিয়েছে। এটা উন্নতি না অবনতি? স্বভাব-মিথ্যুক হলে পলিটিক্সের লাইনে উন্নতির যোগ থাকে।
মল্লার এখন বারে যাবে। মনের ভিতর তার ঝড় বয়ে চলেছে। কিছু একটা হারিয়ে যাওয়ার দুঃখ তাকে ক্রমশ কাতর করে দিচ্ছে। একমাত্র মদিরাই তাকে শান্ত করতে পারে। পুজোর সময় থেকে এক বারও সে জলপথে যায়নি। কোনও তাগিদ অনুভব করেনি। অন্য এক নেশা তাকে সুখস্বপ্নে বিভোর করে রেখেছিল। বুকের শূন্য জায়গাটা যেন ব্যাখ্যাহীন আনন্দে ভরাট হয়ে ছিল। উজ্জ্বল এক স্বপ্নসম্ভবের দেশে সে যেন এই তেরোটা দিন মনে মনে ঘুরে বেড়িয়েছে, গান এসেছে তার মনে, নতুন গানের সুর তুলেছে সিন্থেসাইজ়ারে। এখন পকেটে থাকা স্মার্টফোনটা তাকে প্রবল এক অস্থিরতার মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। অপেক্ষায় ক্লান্ত হতে হতে আছড়ে ভেঙে ফেলতে ইচ্ছে করছে ওটাকে। মল্লার সুইচ অফ করে দিল। নিরুপদ্রবে এবং শান্তিতে সে বুঁদ হতে চায় এখন।
বারে পৌঁছে ওয়েটারকে ডেকে পছন্দের পানীয় অর্ডার দিল মল্লার। সঙ্গে বাদাম, পাপড়ি। বারের আলোগুলো আজ বড় দুঃখনীল আর ঝাপসা। আস্তে আস্তে সে শুরু করল সমস্ত দুঃখ আর অপ্রাপ্তি সুরায় ডুবিয়ে দেওয়ার প্রয়াস।
ক্রমশ