ছবি কুণাল বর্মণ।
পূর্বানুবৃত্তি: অন্ধকারে লুকিয়ে থেকে নলিনী আর মতিলাল দেখতে পায় চন্দননগরের ঘাটে নৌকো থেকে নেমে সিঁড়ি বেয়ে উঠে আসছে টেগার্ট সাহেব। সে-খবর পৌঁছয় অমরেন্দ্রনাথের কাছে। মতিলালের প্রতিবেশী হারুকাকার মেয়ের বিয়ের আসরে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে মিশে গিয়ে গা-ঢাকা দেওয়ার পরিকল্পনা করেন অমরেন্দ্রনাথ। সকলে তাই করে। কিন্তু সেখানে অমরেন্দ্রনাথের সঙ্গে দেখা হয়ে যায় তাঁর পিসতুতো বোন ঝাঁকড়ির স্বামী রাজশেখরের সঙ্গে। রাজশেখর সব শুনে অমরেন্দ্রনাথকে সহায়তা করার আশ্বাস দেন। রাতের দিকে খবর আসে টেগার্ট সাহেব সম্ভাব্য সমস্ত স্থানে তল্লাশি চালিয়েও বিপ্লবীদের না পেয়ে কলকাতার দিকে রওনা দিয়েছে। সে দিন রাতে শোওয়ার জন্য রাজশেখরদের বাড়ি পৌঁছন অমরেন্দ্রনাথ। কিন্তু সেখানে পৌঁছনোর পরই জানতে পারেন, সে-বাড়ি ঘিরে ফেলেছে পুলিশবাহিনী। রাজশেখরদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ধরা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন অমরেন্দ্রনাথ।
হঠাৎ ইরাবতীর মুখচোখ বদলে গেল। শাড়িটাকে কোমরে ভাল করে জড়িয়ে নিয়ে বলল, “আমি থাকতে কোন পুলিশের সাধ্য দেখি তোমাকে ধরে!”
“ঝাঁকড়ি, পাগলামি করিস না। আমার কথা শোন। এতে তোদের বিপদ বাড়বে।”
ইরাবতী কান দিল না অমরেন্দ্রনাথের কথায়। অমরেন্দ্রনাথের একটা হাত ধরে তাকে নিয়ে এল একটা তালাবন্ধ ঘরের সামনে। মরচে ধরা তালায় চাবি ঘোরাতে ঘোরাতে ইরাবতী বলল, “এটা আবর্জনা ঘর। যত পুরনো, ফেলে দেওয়া জিনিস এই ঘরে রাখা হয়। এই ঘরে লুকিয়ে থাকলে পুলিশের লোক বুঝতেই পারবে না।”
ঘর খুলতে ঢুকেই অমরেন্দ্রনাথ দেখলেন, চার দিকে আবর্জনার স্তূপ। পুরনো ভাঙা জিনিসপত্রে ঠাসা একটা ঘর। ইঁদুরের নাদির গন্ধে আর আরশোলার জ্বালায় এখানে টেকা দায়।
ইরাবতী অমরেন্দ্রনাথের দিকে তাকাল। বোধহয় তার মনের ভাবটা বোঝার চেষ্টা করল। না পেরে বলল, “কী করব দাদা, এর থেকে ভাল লুকোনোর জায়গা আর নেই আমাদের বাড়িতে। তুমি ওই পুরনো আলমারিটার পিছনে গিয়ে বসে পড়ো। বাকিটা আমার উপর ছেড়ে দাও।”
অমরেন্দ্রনাথ ঘরে প্রবেশ করলেন ও আলমারির পিছনে একটুখানি জায়গা পরিষ্কার করে বসে পড়লেন। কত ক্ষণ বসে ছিলেন খেয়াল নেই। দু’রাত্রি ভাল করে না ঘুমোনোর ফলে একটু চোখটাও লেগে গিয়েছিল। হঠাৎ ঘুমটা ভেঙে গেল ভারী বুটের শব্দে। বুঝলেন, সদলবলে ঢুকে পড়েছে পুলিশ। এ বার শুধু সময়ের অপেক্ষা। না, কিছুতেই ধরা দেওয়া চলবে না। সে রকম বুঝলে, নিজের রগেই পিস্তলটা চালাবেন।
বসে বসেই সব বুঝতে পারছিলেন অমরেন্দ্রনাথ। রাজশেখর নয়, ঝাঁকড়ির গলা পাচ্ছিলেন তিনি। অর্থাৎ, ঝাঁকড়ি পুলিশকে খানাতল্লাশিতে সাহায্য করছে। শান্তিপিসির মেয়েটা এত স্মার্ট হল কবে— অমরেন্দ্রনাথ ভাবেন। ভাবতে ভাবতেই টের পেলেন, ভারী বুটের শব্দ ক্রমশ নিকটবর্তী হচ্ছে। ঝাঁকড়ি কি এ ঘরে নিয়ে আসছে পুলিশকে? কিন্তু কেন? পিস্তলটা বার করে হাতে রাখলেন অমরেন্দ্রনাথ। সিদ্ধান্ত বদল করলেন একটু। লড়াই করেই মরবেন। বিনা যুদ্ধে আত্মসমর্পণ নয়।
আর তখনই শুনলেন, ঝাঁকড়ি বলছে কোনও এক পুলিশ অফিসারকে, “আমি আপনাকে সব ঘর দেখিয়েছি। এটাই শেষ। এটা আমাদের আবর্জনার ঘর। আসুন, দেখে নিন।”
দরজা খোলার শব্দ পেলেন অমরেন্দ্রনাথ। তার পরই শুনলেন, সেই পুলিশ অফিসার বলছেন, “ইস! ঘরটাকে নরককুণ্ড বানিয়ে রেখেছেন দেখছি। নিন, বন্ধ করে দিন। এই ঘরে মানুষ কেন, কোনও জন্তুও থাকতে পারবে না।”
দরজা বন্ধ হওয়ার শব্দ শুনলেন অমরেন্দ্রনাথ। নিশ্চিন্ত হলেন। মনে মনে তারিফ করলেন ঝাঁকড়ির বুদ্ধি ও সাহসের।
আরও খানিক ক্ষণ পর আবার দরজা খোলার শব্দ হল। ঘরের বাইরে ঝাঁকড়ির গলা, “দাদা, বেরিয়ে এসো। আর চিন্তা নেই। ওরা চলে গেছে।”
অমরেন্দ্রনাথ আলমারির আড়াল থেকে বেরিয়ে এসে ইরাবতীকে বললেন, “সত্যিই তোর বুদ্ধির প্রশংসা করতে হয়। আমি তো ভাবতেই পারিনি, তুই এই ভাবে পুলিশকে বোকা বানাবি।”
“আর তোমার প্রশংসা কে করবে?” হাসতে হাসতে বলল ইরাবতী।
“আমার প্রশংসা! পুলিশের ভয়ে আলমারির পিছনে লুকিয়ে থাকা পলাতকের আবার প্রশংসা! ভাল কথা বললি রে ঝাঁকড়ি!” অমরেন্দ্রনাথ গায়ের ধুলো ঝাড়তে ঝাড়তে বললেন।
রাজশেখর এসে গিয়েছিল। সে বলল, “ইরাবতী তো ঠিকই বলছে, অমরদা। তোমার সহ্যক্ষমতার প্রশংসা করতে হয়। ওই ভয়ঙ্কর নোংরা আবর্জনা ঘরে থাকার বদলে যে কেউ পুলিশের কাছে ধরা দেওয়াটাই সহজ মনে করবে। তাই তো ইরাবতী?”
“অবশ্যই...” হাসতে হাসতে বলে ইরাবতী। তার পরই হঠাৎ হাসি থামিয়ে বলে ওঠে, “দাদা, এ বার একটু ঘুমিয়ে নাও। তোমার ঘুম দরকার।”
“আমার চা দরকার। আকাশ ফর্সা হয়েছে। আর ঘুমোব না...” অমরেন্দ্রনাথ বললেন।
ইরাবতী ও রাজশেখর অমরেন্দ্রনাথকে নিয়ে সিঁড়ি দিয়ে উঠে দোতলার একটি ঘরে আসে। সুন্দর সাজানো ঘর। যদিও বোঝা যাচ্ছে, এ ঘরটিও পুলিশের খানাতল্লাশি এড়াতে পারেনি। ঘরের এক পাশে গদি মোড়া কয়েকটি চেয়ার, একটা ছোট গোল শ্বেতপাথরের টেবিল ও সোফাসেট রাখা আছে। অমরেন্দ্রনাথ সোফাটাই দখল করে নিলেন। খানিক ক্ষণের মধ্যে চা নিয়ে ইরাবতী এলে, চায়ে চুমুক দিতে দিতে, এই নিঃসন্তান দম্পতির সঙ্গে গল্পে মশগুল হয়ে গেলেন। দেখে কে বলবে, খানিক ক্ষণ আগে তাঁর স্নায়ুর উপর দিয়ে একটা ঝড় বয়ে গেছে!
২৩
জেল থেকে ফিরে নীলমণি আবার কাজকর্ম শুরু করে দিয়েছেন। সব সময়ই ব্যস্ত। এক দিন রমানাথ নীলমণিকে বললেন, “বড়দা, বাবার বাৎসরিক কাজ তো হল। এ বার কনকের বিয়েটা তো দিতে হবে, উমার বিয়ের কথাবার্তাও তো আর ফেলে রাখা ঠিক হবে না...’’
নীলমণি বললেন, “দিয়ে দাও না। গণেশ পুরোহিতকে ডেকে দিন দেখো। তার পর নেমন্তন্ন করে লোকজন ডেকে খাইয়ে দাও। এটা আর এমন কী কাজ? তুমি একাই পারবে, পারবে না?”
“সে পারব। কিন্তু উমানাথের জন্য তুমি এক জন পাত্রীর কথা বলেছিলে, তার পর তো আর কথা এগোল না। তুমি বাড়ি ছাড়লে। বাবা চলে গেলেন। তুমিও চলে গেলে জেলে।”
“তাই তো! এটা একদম খেয়াল ছিল না। কালই এক বার সামতাবেড়ে যেতে হবে।”
“পাত্রী কি সেখানকার?”
“না, পাত্রীর বাড়ি হাওড়া। সামতাবেড়ে যাব তার মামার সঙ্গে দেখা করতে। বিখ্যাত লোক। সাহিত্যিক শরৎ চাটুজ্জের নাম শুনেছ তো?”
“হ্যাঁ, শুনব না কেন? ওঁর তো খুব নাম।”
“ওঁর এক ভাগ্নির কথা বলেছিলেন ভদ্রলোক। দেখি কী হয়। বছর খানেক আগের কথা। সে পাত্রীর কি আর এত দিনে বে হয়নি? তা তুমিও চলো না কাল আমার সঙ্গে!”
“না বড়দা, কাল আমার পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয়। আমাকে এক বার মায়ের বাড়ি যেতে হবে।”
“শুনছি তুমি নাকি এখন খুবই ওখানে যাও?”
“ঠিকই শুনেছ বড়দা, এ রকম শান্তির জায়গা আর দ্বিতীয়টি নেই।”
“আমাকে এক দিন নিয়ে যাবে সেখানে? ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের বহু ঘটনা শুনেছি। ও পাড়ায় দেওয়ান বাড়িতে এসেছিলেন। বাবা দেখতে গেছিলেন।”
“আমি তোমাকে সারদামণির কাছে নিয়ে যাব। তোমার পরিচিত অনেকে যান মায়ের কাছে। বেলঘরে থাকি শুনে, এক দিন এক জন তোমার কথা জিজ্ঞেস করলেন।”
“তাই নাকি? কী নাম তার?”
“ধনগোপাল। পদবিটা ঠিক মনে পড়ছে না।”
“মুখোপাধ্যায়। যাদুগোপালের দাদা। যাদুগোপালকে মনে পড়ছে তোমার?”
“না। আমি কি দেখেছি তাকে?”
“অবশ্যই। ছদ্মবেশে এ বাড়িতেই ছিলেন।”
“সেই সন্ন্যাসী?”
“হ্যাঁ, সেই সন্ন্যাসীই যাদুগোপাল মুখোপাধ্যায়। সে রাতে ডাক্তার বেশে তোমাকে দেখে গিয়েছিলেন যিনি, তিনিও যাদুগোপাল।”
“উনি কি সত্যি ডাক্তার?”
“না, এখনও ডাক্তার হয়নি। ডাক্তারির ছাত্র। কলকাতা মেডিকেল কলেজে পড়ে। পড়াশোনা শিকেয় তুলে দেশের কাজে নেমে পড়েছে। এখন জার্মান ষড়যন্ত্র মামলায় ফেঁসে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। ধরা পড়ার আগে আমরা চন্দননগরে এক সঙ্গেই থাকতাম। স্বাধীন ভারতবর্ষে যাদুগোপাল এক দিন খুব বড় ডাক্তার হবে। যাক, তুমি ধনগোপালের কথা কী বলছিলে?”
“উনি তোমার কথা জিজ্ঞেস করলেন। তার পর তোমার সম্বন্ধে এমন কিছু বললেন, যা আমি জানতাম না।”
“তাই নাকি? যেমন?”
“তুমি নাকি এক বার দু’জন গোরা ছিনতাইবাজকে দৌড়ে ধরে এনে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিলে?”
হাসলেন নীলমণি। বললেন, “এটা আবার বলার মতো ঘটনা হল নাকি? ধনগোপাল জানে, কারণ ও সে দিন যুগান্তরে উপস্থিত ছিল। আমি শেয়ালদা স্টেশন থেকে যুগান্তরে গিয়ে যখন সবাইকে বলছিলাম, ও শুনেছিল। জানো রমা, ধনগোপালও খুব গুণী মানুষ। এই বয়সেই জাপান, আমেরিকা ঘুরে এসেছে। যেমন ইংরেজি সাহিত্যে অগাধ পাণ্ডিত্য, তেমনই যন্ত্রবিদ্যায়। আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে তুলনামূলক সাহিত্যে বিএ পাশ করলেও, আমেরিকা যাওয়ার মূল উদ্দেশ্য গুপ্ত সমিতি গড়ে, ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ভিত নড়িয়ে দেওয়া। ভাবো এক বার!”
“সত্যিই তাই!” রমানাথ উঠতে উঠতে বললেন। তার পর আবার বললেন, “তুমি তা হলে কাল ঘুরে এসো সামতাবেড়। তার পর নয় পাত্রী দেখতে যাওয়া যাবে।”
নীলমণিও তার সাধের আরামকেদারায় গা এলিয়ে দিয়ে বললেন, “ঠিক আছে।”
অনেক রাতে বিভাবতী বললেন, “তুমি কি কাল সামতাবেড়ে যাচ্ছ শরৎবাবুর বাড়িতে?”
“হ্যাঁ,” পান চিবোতে চিবোতে বললেন নীলমণি।
“জানো, আমি ওঁর অনেক গল্প, উপন্যাস পড়েছি...” বিভাবতী লাজুক মুখ করে বলে।
“তাই নাকি! এ তো ভাল কথা। আমি চাটুজ্জেমশাইকে বলব। উনি খুশি হবেন। সাহিত্যিকরা তাঁদের পাঠকদের খুব সম্মান করেন।”
“আর একটা কথা বলব?”
“বলো না।”
“তুমি রাগ করবে না তো?”
“কী এমন কথা যে, রাগ করার প্রশ্ন আসছে?”
“শরৎবাবুর কাছ থেকে ওঁর সই করা একটা কাগজ নিয়ে আসবে?”
“অটোগ্রাফ? সে তো উনি আমাদের কুটুম হলে, তুমি বাড়িতে বসেই পাবে।”
“তা উনি কবে আমাদের কুটুম হবেন, সেই আশায় বসে থাকতে পারব না বাপু। তুমি কালই নিয়ে এসো।
“বেশ আনব। এখন একটু কাজ করতে দাও। তুমি ঘুমোও।”
নীলমণি তাঁর ঘরের ছোট্ট টেবিলটা টেনে নেন তার চেয়ারের কাছে। লণ্ঠনের আলো বাড়িয়ে কয়েকটি চিঠি লিখতে বসেন। একটি ডাকে যাবে। বাকিগুলো লোক মারফত। সেই লোক দু’-এক দিনের মধ্যে বাড়িতে আসবে। চিঠিগুলো লিখে নিভার কাছে দিয়ে রাখতে হবে।
ও দিকে বিভাবতীর ঘুম আসে না। এক পাশ ফিরে শুয়ে থাকেন। খোলা জানালা দিয়ে আকাশ দেখেন। শরৎকালের আকাশ। মেঘেরা দল বেঁধে ঘুরে বেড়াচ্ছে আকাশে। জ্যোৎস্নার আলোয় চার দিক ভেসে যাচ্ছে। জানালা দিয়ে সেই আলো বিছানাতেও এসে পড়েছে। বিভাবতী অনেক ক্ষণ আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকেন। তার পর এক সময় অন্য পাশ ফেরেন। হঠাৎ কী মনে হতে বিছানায় উঠে বসেন। নীলমণির নজরে আসে সেটা। বলেন, “কী হল, উঠে বসলে যে!”
“ঘুম আসছে না,” বিভাবতী বললেন।
“শুয়ে থাকো, ঠিক ঘুম এসে যাবে,” নীলমণি আবার চিঠিতে মনোনিবেশ করে বললেন।
বিভাবতী কোনও উত্তর দিলেন না। বসেই রইলেন এক ভাবে।
খানিক বাদে হঠাৎ বলে উঠলেন, “তোমার আবার জেল হতে পারে, না?”
“হতে পারে, কিন্তু কেন জিজ্ঞেস করছ?” চিঠিতে মুখ গুঁজেই উত্তর দিলেন নীলমণি।
“সামনের ওই ভূতের বাড়িতে পুলিশ এসেছিল। বোমা তৈরির সরঞ্জাম পেয়েছে অনেক। একটি মেয়েছেলেকে নাকি ধরে নিয়ে গেছে।”
চিঠি লেখা বন্ধ করে বিভাবতীর দিকে তাকিয়ে রইলেন নীলমণি।
বললেন, “তোমায় কে বলল?”
“বিকেলে দাশুখুড়োর বৌ এসেছিল, তার থেকেই শুনলাম। মেয়েছেলেটি নাকি স্বদেশি করে। ও বাড়িতে নাকি আরও কারা আসে। খুড়োর বৌ বললে, ‘তোর কর্তাকে না আবার ধরে!’ তাই তোমাকে জিজ্ঞেস করলাম।”
নৃপময়ী তা হলে ধরা পড়ল! আর ভূত সেজে থাকতে পারল না, ভাবেন নীলমণি। তার চেহারাটা চোখে ভেসে উঠল নীলমণির। যদিও অনেক আগে দেখেছিলেন। ছাদের আলসেতে দাঁড়িয়ে থাকত প্রতিদিন বিকেলে। লম্বা চুলের বেণি ঝুলত দু’পাশে।
নীলমণি তখন কলেজে পড়েন। এক অমোঘ আকর্ষণে ওই রাস্তা দিয়ে তার আসা চাই-ই। এক দিন এক নেমন্তন্নবাড়িতে দেখা দুজনের। নীলমণির সঙ্গে নিজে এসে আলাপ করে গিয়েছিল নৃপময়ী। নীলমণি নাম জিজ্ঞেস করতে বলেছিল, “এক দিন বাড়িতে এসো, নাম বলব।”
ক্রমশ