১৯৬৩ সাল। ইংল্যান্ডের এক শহরে, শান্ত সুদৃশ্য রাস্তায় মাইক দেখতে পেল ফ্রেডকে। ওরা স্কুলফ্রেন্ড।
মাইক ফ্রেডকে ডেকে বলে, ‘কী খবর?’
শান্ত, অন্তর্মুখী ফ্রেড বলে, ‘আমার মা মারা গেছে।’
ফ্রেডের এই সংক্ষিপ্ত উত্তর মনে করিয়ে দেয় আলব্যেয়র কামুর ‘দ্য স্ট্রেঞ্জার’ উপন্যাসের কথা। ফ্রেডের বয়স তখন মাত্র সতেরো। তার মা দীর্ঘ দিন লাং ক্যান্সারে ভুগে মারা যান। এক ডাক্তার তাঁকে নিয়মিত দেখতে আসতেন, যন্ত্রণা কমাতে মরফিন ইঞ্জেকশন দিতেন। প্রত্যাশিত মৃত্যু যেন সব যন্ত্রণার উপশম করে দিল।
তার পর ফ্রেড যেন পাল্টে গেল। যার কোনও দিন মেডিসিন নিয়ে পড়ার আগ্রহ ছিল না, সেই ফ্রেড বহু চেষ্টায় ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেল।
সাড়ে তিন দশক পর...
১৯৯৮ সাল। ইংল্যান্ডে হাইড নামে এক ছোট্ট, সুন্দর, সাজানো শহরে নিজের বাড়িতেই হঠাৎ মারা গেলেন ক্যাথলিন গ্র্যান্ডি নামে এক মহিলা। তাঁর যা বয়স হয়েছিল, তাতে এই মৃত্যু প্রত্যাশিত। কিন্তু গোল বাঁধল, যখন তাঁর কন্যা অ্যাঞ্জেলা জানতে পারলেন যে, তার মা অদ্ভুত এক উইল করে গেছেন! সেই উইলে ক্যাথলিন গ্র্যান্ডি তাঁর বিশাল অর্থমূল্যের সম্পত্তি দিয়ে গেছেন তাঁর ডাক্তার হ্যারল্ড শিপম্যানের নামে। অ্যাঞ্জেলার কাছে এটা নিতান্তই অপ্রত্যাশিত। তিনি ছুটলেন পুলিশের কাছে। পুলিশ অফিসার দেখলেন, এই ডাক্তার শিপম্যানের উপর বেশ কিছু দিন আগে একটি গোপন তদন্ত হয়েছিল। কারণ কেউ এক জন পুলিশকে জানিয়েছিলেন যে, ডাক্তার শিপম্যানের কাছে চিকিৎসাধীন রোগীর মৃত্যুর সংখ্যা অস্বাভাবিক বেশি! অথচ এই ব্যক্তি হাইড শহরের খুবই নামকরা ডাক্তার। খুবই পরিচিত, এবং অনেকেই তাঁর কাছে চিকিৎসা করাতে চান। পুলিশ সেই তদন্তে কিছু খুঁজে পায়নি। কিন্তু অ্যাঞ্জেলা যখন পুলিশের কাছে গেলেন, পুলিশ আবার নতুন করে তদন্ত শুরু করে। তদন্তে উঠে আসে একাধিক অদ্ভুত তথ্য। ক্যাথলিনের উইলটি জাল! এমনকি তার সইও নকল! এই কাঁচা হাতের জালিয়াতি কুকর্মটি করা হয়েছে শিপম্যানের নিজস্ব টাইপরাইটার দিয়ে।
কেঁচো খুঁড়তে কেউটে
এর পর পুলিশের তত্ত্বাবধানে ক্যাথলিনের মৃতদেহ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্ত করা হয়। দেখা যায়, তার দেহে যথেষ্ট পরিমাণে ডিয়ামরফিন (হেরোইন) রয়েছে। এই ডিয়ামরফিন অনেক সময় ক্যান্সার রোগীদের যন্ত্রণা উপশমের জন্য প্রয়োগ করা হয়। মরিয়া শিপম্যান দাবি করলেন, ক্যাথলিন নেশা করতেন, এবং কম্পিউটারে তাঁর মেডিক্যাল রেকর্ডেও সে তথ্য রয়েছে। এ দিকে কম্পিউটার পরীক্ষা করে দেখা গেল, ক্যাথলিনের মৃত্যুর পর কম্পিউটারে সেই সব তথ্য রেকর্ড করা হয়েছে, আর দুষ্কর্মটি করেছেন শিপম্যান নিজে! এর পর শিপম্যানকে গ্রেফতার করা হয়।
তদন্ত এগিয়ে চলে আর উঠে আসে আরও মারাত্মক তথ্য! ডক্টর শিপম্যানের কাছে চিকিৎসাধীন আরও পনেরো জন রোগীর সন্ধান মেলে যাদের মৃত্যু সন্দেহজনক। এদের মধ্যে ন’জনের দেহ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্ত করে দেখা গেল, সকলের দেহেই ডিয়ামরফিন রয়েছে। শুধু তাই নয়, সকলেরই প্রেজ়েন্ট রেকর্ড বদল করে তাঁদের নেশাগ্রস্ত দেখানো হয়েছে। পুলিশের কাছে ছবিটা পরিষ্কার হয়ে গেল।
পুরনো যোগসূত্র
হাইড শহরের নামকরা ডাক্তার শিপম্যান, যে ছোটবেলায় বন্ধুদের কাছে ফ্রেড নামে পরিচিত ছিল, সে এক জন সিরিয়াল কিলার! এক জন ডাক্তার, যিনি মানুষের প্রাণ বাঁচান, যাকে মানুষ ঈশ্বর মনে করে, সে সিরিয়াল কিলার! এই কথাগুলো বিশ্বাস করতে অসুবিধে হলেও ইতিহাসে এ রকম একাধিক উদাহরণ আছে। এইচ এইচ হোমস, মাইকেল সোয়াঙ্গো, জন অ্যাডামস, মারসেল পেটিওট, এদের সকলের পেশাই ছিল ডাক্তারি, কিন্তু এরা সকলেই সিরিয়াল কিলার। তবে শিপম্যান যে সিরিয়াল কিলার, সেটা হাইড শহরের বেশির ভাগ বাসিন্দাদের কাছে অপ্রত্যাশিত। শহরের হাতে গোনা কয়েক জন আঁচ করেছিলেন, শিপম্যানের কোথাও একটা গন্ডগোল আছে!
সন্দেহের উৎস
শিপম্যান যে সব রোগীর ডেথ সার্টিফিকেটে সই করেছিলেন, তাঁদের বয়স পঁয়ষট্টি-সত্তর অতিক্রান্ত। ফলে মৃত্যু আসতেই পারে। আবার রেকর্ড অনুযায়ী তাঁরা সকলেই ছিলেন বেশ অসুস্থ। অথচ তাঁদের মৃত্যু ঘটছে নিজের বাড়িতে সোফায় বা চেয়ারে বসে। খুব অসুস্থ রোগী তো শয্যাশায়ী থাকবেন। শিপম্যান সাধারণত রোগীদের বাড়ি গিয়ে চিকিৎসা করতে পছন্দ করতেন। এক ট্যাক্সিচালক দাবি করেছিলেন যে, তাঁর বেশ কয়েক জন যাত্রী পর পর মারা যান, যাঁরা সকলেই ছিলেন শিপম্যানের চিকিৎসাধীন। চালকের সন্দেহ হলেও তিনি তা চেপে যান, কারণ শিপম্যান হাইড শহরের নামকরা মানুষ। শিপম্যানের হাতে ক’জনের মৃত্যু হয়েছিল, সেটা নিশ্চিত বলা মুশকিল, এটা বলতে পারতেন হয়তো শিপম্যান নিজেই। কিন্তু তিনি জেলে আত্মহত্যা করেন ২০০৪ সালে। শিপম্যান কোনও দিন কোনও অপরাধ স্বীকার করেননি, আর সেই অপরাধ প্রসঙ্গে একটাও কথা বলেননি। সম্ভবত ১৯৭৭ সাল থেকে তিনি এই কুকীর্তি শুরু করেছিলেন। ১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৯৮, এই দীর্ঘ একুশ বছর ধরে শিপম্যান এ ভাবেই মানুষ খুন করে গেছেন। তাঁর শিকারের সংখ্যা দুশো-আড়াইশোর বেশি বলেই মনে করা হয়। ক্যাথলিনের উইল জাল না করলে তিনি হয়তো ধরাও পড়তেন কি না সন্দেহ। কেউ কেউ মনে করেন, শিপম্যান এই বিপুল অর্থ নিয়ে পালাতে চেয়েছিলেন, অথবা এ ভাবেই ধরা দিতে চেয়েছিলেন। নিজেকে আর নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিলেন না। ডিয়ামরফিন প্রয়োগের প্রমাণ দীর্ঘ দিন মৃতদেহে থেকে যায়। ফলে একটা পোস্টমর্টেমই যথেষ্ট হত শিপম্যানকে ধরতে। এক জন ডাক্তার হিসেবে শিপম্যান নিজেও সেটা জানতেন।
গোয়েন্দা যখন স্ট্যাটিসটিক্স
আসলে শিপম্যানকে ধরার জন্য গোয়েন্দা নয়, প্রয়োজন ছিল স্ট্যাটিসটিক্স বা রাশিবিজ্ঞানের! শুনে অবাক লাগলেও অনেকটা এ রকমই ইঙ্গিত মিলেছে ২০০৩ সালে ‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল ফর কোয়ালিটি হেলথকেয়ার’-এ প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে, যার লেখকেরা হলেন স্পিজেলহল্টার, গ্রিগ, কিনসম্যান এবং ট্রেজ়ার।
ডেভিড স্পিজেলহল্টার তাঁর লেখা বই ‘দ্য আর্ট অফ স্ট্যাটিস্টিক্স লার্নিং ফ্রম ডেটা’-তে শিপম্যানের অপরাধগুলির বিষয়ে তথ্য বিশ্লেষণ করে নানা চাঞ্চল্যকর দিক উন্মোচিত করেছেন। যেমন শিপম্যান যাঁদের হত্যা করেছিলেন, তাঁদের সত্তর শতাংশের বেশি ছিলেন মহিলা। বেশির ভাগ কেসেই মৃতদের বয়স ষাটের বেশি। ফলে শিপম্যানের কাছে চিকিৎসাধীন রোগীমৃত্যুর সংখ্যা অস্বাভাবিক বেশি হলেও সে ঘটনা সন্দেহের শ্যেনদৃষ্টি এড়িয়ে যেতে পেরেছে দীর্ঘ দিন ধরে। প্রচুর মৃত্যু হয়েছে দুপুর বারোটা থেকে সন্ধে ছ’টার মধ্যে। শিপম্যান সাধারণত লাঞ্চের পর বাড়ি গিয়ে রোগী দেখতেন যখন তাঁরা বাড়িতে একদম একা থাকত। এ বার তথ্যবিশ্লেষণের খুব গুরুত্বপূর্ণ জায়গাটিতে আসা যাক। ডেভিড স্পিজেলহল্টার ‘অতিরিক্ত মৃত্যুহার’ নামে একটি বিষয় উল্লেখ করেছেন, সেটি হল, পর্যবেক্ষণ করা রোগীমৃত্যুর সংখ্যা ও প্রত্যাশিত রোগীমৃত্যুর সংখ্যার বিয়োগফল। ধরা যাক, ‘ক’ যদি ‘অতিরিক্ত মৃত্যুহার’ হয়, ‘খ’ হল ‘পর্যবেক্ষণ করা রোগীমৃত্যুর সংখ্যা’ এবং ‘গ’ হল ‘প্রত্যাশিত রোগীমৃত্যুর সংখ্যা’। তা হলে , ক = খ-গ।
রাশিবিজ্ঞানে ডেটা স্টাডি করে কোনও এলোমেলো চলরাশির প্রত্যাশিত মান নির্ণয় করার নানা পদ্ধতি আছে। বিভিন্ন ডাক্তার, যাঁরা ইংল্যান্ডে প্র্যাকটিস করছেন, তাঁদের রোগীর বিষয়ে নানা তথ্য বিশ্লেষণ করে এই প্রত্যাশিত রোগীমৃত্যুর সংখ্যা নির্ণয় করা সম্ভব। ধরা যাক, পুরনো রেকর্ড বলছে গত পাঁচ বছরে কলকাতা শহরের ডাক্তাররা সব মিলিয়ে ৫০০০ রোগীর চিকিৎসা করেছিলেন, যাঁদের বয়স ষাট থেকে আশির মধ্যে। ধরা যাক পেশেন্টদের মধ্যে ৫০০ জন মারা গেছেন। অর্থাৎ এই বয়সশ্রেণির পেশেন্টদের মৃত্যুর সম্ভাবনার (প্রোবাবিলিটি) অনুমান ৫০০/৫০০০= ০.১। এ বার বর্তমান সময়ে কোন ডাক্তার যদি ১৫০ জন ওই একই বয়সশ্রেণির রোগীর চিকিৎসা করেন তা হলে প্রত্যাশিত পেশেন্ট মৃত্যুর সংখ্যা= ১৫০ × ০.১= ১৫। এই অনুমান আমরা পেলাম তথ্যবিশ্লেষণ করে। এ বার ধরা যাক, বাস্তবে সেই ডাক্তার ১৫০ জন পেশেন্ট দেখেছেন যাঁদের মধ্যে ১৮ জন মারা গেছেন। এ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত মৃত্যুহার এর মান ১৮-১৫=৩, অর্থাৎ বেশ কম। এ বার যদি দেখা যায়, যে কোনও ডাক্তার ১৫০ পেশেন্ট দেখেছেন আর ১০০ জন মারা গেছেন, সে ক্ষেত্রে অতিরিক্ত মৃত্যুহারের মান হবে ১০০-১৫= ৮৫। বেশ সন্দেহজনক! শিপম্যানের ক্ষেত্রে এই অতিরিক্ত মৃত্যুহারের আনুমানিক মান রোগিণীদের ক্ষেত্রে ১৭৪ আর রোগীদের ক্ষেত্রে ৪৬ পাওয়া গিয়েছিল, যা বিস্ময়কর ভাবে তদন্তে উঠে আসা মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যার খুব কাছাকাছি!
বাস্তবিক সম্ভাব্যতা
প্রশ্ন হল, এই তথ্যের উপর ভিত্তি করে রাশিবিজ্ঞান প্রয়োগ করে কি শিপম্যানকে ধরা সম্ভব হত? ডেভিড স্পিজেলহল্টারের লেখা বই ও গবেষণাপত্র ঘাঁটলে দেখা যাবে এই প্রশ্নের উত্তর— হ্যাঁ, ধরা সম্ভব হত। আগেই বলা হয়েছে যে অতিরিক্ত মৃত্যুহারের মান বেশি হলে তা সন্দেহজনক। কিন্তু কতটা? নানা কারণে অতিরিক্ত মৃত্যুহারের মান বেশি আসতেই পারে। বেশি এলেই কি সেই ডাক্তার সিরিয়াল কিলার! অবশ্যই নয়। তা হলে, কতটা বেশি হল তা তাৎপর্যপূর্ণ, সেটা নির্ণয় করা জরুরি। এই ব্যাপারে রাশিবিজ্ঞানে নানা পরীক্ষা বা টেস্ট আছে। এ ক্ষেত্রে ‘সিকোয়েনশিয়াল টেস্টিং’ এর প্রয়োগ যথোপযুক্ত। ডেভিড স্পিজেলহল্টার দেখিয়েছেন, যদি কোনও ‘মনিটরিং সিস্টেম’-এর মাধ্যমে ডক্টর শিপম্যানের পেশেন্ট রেকর্ড প্রতি বছর দেখা হত, তা হলে ১৯৮৪ সাল নাগাদ রাশিবিজ্ঞানের বিশেষ ‘সিকোয়েনশিয়াল টেস্টিং’ এর ফলাফল জানান দিত যে, কোথাও একটা বড়সড় গোলমাল হচ্ছে। আর সেই সময় শিপম্যানের কোনও এক জন মৃত রোগীর ময়নাতদন্ত করলেই সব সত্যি প্রকাশ পেয়ে যেত, যা ঘটেছিল আরও চোদ্দো বছর পর, ১৯৯৮ সালে। চোদ্দো বছর আগে হলে, রাশিবিজ্ঞান ধরে ফেলত ইতিহাসের এক কুখ্যাত সিরিয়াল কিলারকে, হয়তো বেঁচে যেত প্রায় ১৭৫ জনের প্রাণ।
পরিশেষে...
একটাই প্রশ্ন থেকে যায়, শিপম্যান কেন এমন করলেন! এই নিয়ে অনেক মতামত, অনেক ধোঁয়াশা। বিশেষজ্ঞদের মতামত এক জায়গায় আনলে বলা যায় যে, মাত্র সতেরো বছর বয়সে মা-কে লাং ক্যান্সারে মরে যেতে দেখাটা শিপম্যানের মনে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করে। হয়তো সে নিজেকে ওই ডাক্তারের জায়গায় দেখতে চাইছিল, যিনি তাঁর মাকে নিয়মিত মরফিনের ইঞ্জেকশন দিতে আসতেন।
মায়ের মৃত্যু তাঁর কাছে একটা ‘সেন্স অব রিলিফ’ হিসেবে দেখা দিয়েছিল, যা পরবর্তী কালে তাঁর অপরাধপ্রবণতাকে পুষ্ট করে। যে অন্যের মৃত্যু নির্ধারণ করতে পারে সে-ই সবচেয়ে শক্তিশালী— এমন ভাবনা থেকে শিপম্যান হয়তো সে রকম কেউ হতে চেয়েছিলেন। অথবা তিনি বয়স্ক রোগীদের শেষ বয়সের যন্ত্রণা থেকে নিষ্কৃতি দিতে চেয়ে আগেভাগেই চিরনিদ্রায় পাঠিয়ে দিতে চাইতেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা গেছে সিরিয়াল কিলাররা কোনও একটা কারণে খুন করতে শুরু করে, তার পর কারণটা গৌণ হয়ে যায়, খুনের নেশা মুখ্য হয়ে মাথায় চেপে বসে, আর থামা সম্ভব হয় না। শিপম্যানের ক্ষেত্রেও এমনটাই হয়তো ঘটেছিল।