ছবি: পিয়ালী বালা
পূর্বানুবৃত্তি: কস্তুরীর গল্পের চরিত্রের জন্য প্রিয়তোষের বলা ‘শ্রীতমা’ নামটা কস্তুরীর পছন্দ হয়। প্রিয়তোষ ফ্ল্যাট থেকে বেরোন একটা নামের বই কিনবেন বলে। একটা বন্ধ ফ্ল্যাট থেকে সুন্দর গানের আওয়াজ শুনে দাঁড়াতে পাশের ফ্ল্যাটের ভদ্রলোক বেরিয়ে আসেন। জগঝম্প হচ্ছে, নালিশ জানাতে বেল টেপেন। নীহার সরখেলের বাড়িতে আড্ডায় সোমনাথ রসিয়ে রসিয়ে হাউজিংয়ে প্রেমলীলার গল্প শুরু করেন।
নীহার সরখেল বললেন, ‘‘বাই দি ওয়ে, আমাদের সোসাইটির কমিটি ফর্ম করার কী হল? ওটাও কি দেখছি মোডে? বিজয়া সম্মিলনী অর্গানাইজ করার কথা মনে আছে? পুজোর আর ক’দিন বাকি?’’
শ্রাবন্তী ভেতর থেকে গলা চড়িয়ে বললেন, ‘‘আহ্! এখনই বিজয়া-বিজয়া বোলো না তো! পুজোটা এখনও শুরুই হল না। আজ সবে চতুর্থী।’’
সোমনাথ বিজ্ঞের হাসি হাসলেন, ‘‘নো চিন্তা দাদা। ওয়ান বাই ওয়ান সব হবে। অপারেশন একদম মাখনের মত চলছে। উইদাউট অ্যানেসথেসিয়া। অথচ যাদের ব্যথাটা টের পাওয়ার কথা, তারা কিচ্ছু টের পাচ্ছে না। শুনুন আগে।’’
‘‘সেখানে তো আবার মাছভাজা আসার ব্রেক লাগানো আছে। কিন্তু তাসে ব্রেকটা লাগিয়ে রেখেছ কেন ভাই? ব্রেকটা যত ক্ষণ চলছে, কয়েক হাত চালিয়ে নাও। বোর্ড ডবল করবে?’’
অতনু একশো টাকার একটা নোট টেবিলে রেখে বললেন, ‘‘হোক।’’
দেখাদেখি সৌমিত্র আর হিমাংশুও টেবিলে একশো টাকার নোট রেখে বললেন, ‘‘হয়ে যাক।’’
সোমনাথ নড়েচড়ে উঠে নীহারকে বললেন, ‘‘দাদা, আমার হয়ে তুমি একটা পাতি দিয়ে দাও তো। আজ মানিব্যাগটা আনতে ভুলে গেছি।’’
‘‘সে তো তুমি ভায়া গত রবিবারেও আনোনি। দু’শো ডিউ আছে।’’
‘‘দাদা, টাকাটাই কি সব! মেজাজটাই তো আসল রাজা।’’
নীহার সরখেল দু’শো টাকা টেবিলে রাখতে রাখতে গুনগুন করে গেয়ে উঠলেন, ‘‘মেজাজটাই তো আসল রাজা আমি রাজা নয়... তা নটবর, তোমার প্রেমলীলার গল্পটা শুরু করো!’’
‘‘এখানে নটবর কোথায় দাদা? নটবর তো অন্য গানে।’’
এক প্লেট গরম মাছভাজা এনে সেন্টার টেবিলে রেখে শ্রাবন্তী বললেন, ‘‘হ্যাঁ, বলুন। তার পর কী হয়েছে?’’
মগের বিয়ার শেষ করে বোতল থেকে আবার ঢালতে ঢালতে সোমনাথ বললেন, ‘‘আরে আমাদের প্রিয়তোষ চাটুজ্যে। লোকটাকে শুধু আমরা বলেছিলাম, দাদা, আপনাকে টাওয়ার রিপ্রেজেন্টেটিভ করব ঠিক করেছি আমরা, আপনি কিন্তু সব সময় চোখকান খোলা রাখবেন। টাওয়ারে ছোটখাটো সমস্যা দেখলেই মাথাটা গুঁজে দিয়ে ইনভলভ্ড হবেন। লোকটার এনথু আছে। লিফট চলছে না। এগারো তলার ফ্ল্যাট থেকে ন’তলার ফ্ল্যাটে নেমে এসেছে প্রবলেম সলভ করতে।’’
‘‘তার পর?’’
‘‘বলেছিলাম মাথা গুঁজতে, একেবারে গুঁতিয়ে দিয়ে এসেছে। মৃত্যুঞ্জয় কাঞ্জিলালকে নিয়ে সোজা গিয়ে নাইন বি’র বেল টিপেছে। দরজা খুলতেই গোলিয়োঁ কি রাসলীলা। ফাঁকা ফ্ল্যাটে সাতসকালে ছেলেটা আর হৃষিতা। তারস্বরে গিটার বাজিয়ে ছেলেটা হৃষিতাকে গান শোনাচ্ছিল।’’
শ্রাবন্তী মন্তব্য করলেন, ‘‘আপনিও যেমন। রোববার সাতসকালে কি আর মেয়েটা গিয়েছে? আগের দিন রাত্রি থেকেই ছিল, দেখুন গিয়ে।’’
কথাটা লুফে নিলেন সোমনাথ, ‘‘আরে কাঞ্জিলাল তো এই কথাটাই চিল্লিয়ে চিল্লিয়ে বলেছে। সারা রাত ধরে নাকি জগঝম্প চলে। এক দিন আধ দিন নয়, প্রায় দিনই।’’
অতনু পাল বললেন, ‘‘কিন্তু এ তো প্রাইভেট অ্যাফেয়ার। কার কী বলার আছে?’’
‘‘প্রতিবেশীর শান্তি বিঘ্নিত হলে বলবে না? কাঞ্জিলাল আর চাটুজ্যে চেপে ধরতেই ছেলেটা বলছে, মেয়েটা ওর কাছে গিটার শিখতে আসে। এর মধ্যে কাঞ্জিলালের বউ বেরিয়ে এসে ছেলেটাকে ফুট কেটে বলেছে, গত রোববারও তোমার কাছে একটা বাচ্চা মেয়ে শিখতে আসত। কী জল খাইয়েছ যে এক সপ্তাহে সে এত বড় হয়ে গেল?’’
সবাই হাসিতে ফেটে পড়ল।
‘‘ব্যস, তেরিয়া মেয়ে। ধুন্ধুমার ঝগড়া শুরু হয়ে গেল। কাঞ্জিলালের বউ ভার্সাস হৃষিতা।’’
নীহার সরখেল আড়মোড়া ভাঙলেন, ‘‘লিফট তো চলছিল না। ন’তলার এত কিচাইনের খবর তুমি কী ভাবে পেলে?’’
‘‘আছে দাদা, আমারও সোর্স আছে। রাজনীতি-করা লোক আমি। আমার কান রেডারের মতো কাজ করে।’’
‘‘কিন্তু এ তো কাটাকুটি কেস। প্রিয়তোষ চাটুজ্যেকে লাগিয়ে কাঞ্জিলাল যদি তোমার হাতে আসে, তা হলে নাইন বি’র ছেলেটা তো ফসকে গেল। আর মেয়েটা তো আমাদের বিকাশ বাগচীর মেয়ে।’’
‘‘ধুস। আমার সব হিসেব করা আছে। ছেলেটা ফ্ল্যাটের ওনার’ই নয়। কেয়ারটেকার জাতীয় কিছু।’’
শ্রাবন্তী নাক সিঁটকোলেন, ‘‘এ মা! কী রুচি! অত বড় ডাক্তারের মেয়ে, শেষে একটা কেয়ারটেকারের সঙ্গে...?’’
সোমনাথ কথাটা উপভোগ করে বললেন, ‘‘আরে বউদি, কিছুই খবর রাখেন না। বাপের সঙ্গে মেয়ের ফাটাফাটি চলছে। বাপের মুখে ঝামা ঘষতেই তো মেয়ে এই সব করছে। না হলে বলুন না, পৃথিবীতে এত জায়গা থাকতে বেছে বেছে এই এলিফ্যান্টা হাউজিং সোসাইটির একটা ছেলের সঙ্গে লটরপটর করতে যাবে কেন? যাতে কেচ্ছাটা বাপের নাকের ডগায় হয়।’’
সৌমিত্র দত্ত ফুট কাটলেন, ‘‘ফর সাম গার্ল সামটাইমস এনি প্যান্ট উইল ডু।’’
নীহার সরখেল বললেন, ‘‘সবই তো হচ্ছে। সোসাইটির কমিটিটা এ বার করে ফেলো। খুচরো কেস তো আসছেই। সিসিটিভি চালু হচ্ছে না কেন, প্রশ্ন তুলে হল্লা করো। রাতদুপুরে কে কার বাড়িতে যাচ্ছে, হিসেবটা তো রাখতে হবে।’’
‘‘বলেছি প্রকাশ বর্মনকে। বলছে সফটওয়্যারটা আপগ্রেড করলেই হয়ে যাবে।’’
‘‘সেটা হয়ে যাওয়ার আগে মিটিংটা তো করা দরকার। ইস্যুটা তোলা দরকার। কী তুমি রাজনীতি-করা লোক বলো নিজেকে! প্রবলেম সল্ভ হওয়ার পরে কি বত্রিশ পাটি দেখিয়ে থ্যাংক ইউ বলার অপেক্ষা করছ?’’
৯
লিফটের দরজাটা খুলতেই একটু চমকে উঠল টুইটি। ভেতরে হৃষিতাদি। হাতে ধরে আছে একটা গিটারের বাক্স। মুখটা গম্ভীর। এক সপ্তাহ ধরে এই কমপ্লেক্সে কাজের লোকেদের পর্যন্ত মুখে মুখে ফিরছে হৃষিতাদির কথা। গিটার শেখার নাম করে এই টাওয়ারেরই একটা ছেলের সঙ্গে নাকি চুটিয়ে প্রেম করছে। ছেলেটাকে খুব দেখার ইচ্ছে টুইটির। কিছুতেই বুঝতে পারছে না, কোন ছেলেটার সঙ্গে হৃষিতাদি প্রেম। হৃষিতার দিকে তাকিয়ে টুইটি একগাল হাসল, ‘‘হাই হৃষিতাদিদি!’’
হৃষিতাও পালটা হেসে লিফটের ভেতরে ডাকল, ‘‘হাই! আয়।’’
‘‘তুমি কি ওপরে যাচ্ছ?’’ টুইটির মুখ ফসকে কথাটা বেরিয়ে গেল।
হৃষিতার ভুরুটা অল্প কোঁচকাল, ‘‘কেন?’’
টুইটি নিজেকে সামলে নিয়ে মিথ্যা বলল, ‘‘না, মানে আমি নীচে নামব।’’
‘‘ও!’’ হৃষিতা আর কোনও মন্তব্য করল না। লিফটের দরজাটা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর হৃষিতা ঠোঁটদু’টো শক্ত করে টিপল। ওকে নিয়ে এখানে যে অনধিকার চর্চা চলছে, সেটা কানে এসেছে। যথারীতি পাত্তা দেয়নি। কিন্তু এইটুকু একটা মেয়ে, যার সঙ্গে দু’দিনের আলাপ, তার পর্যন্ত এ রকম নোংরা ঔৎসুক্য দেখে মেজাজটা খারাপ হয়ে গেল। মেয়েটাও কিন্তু ওপরে যাওয়ার জন্যই লিফটের বোতামটা টিপেছিল। নীচে নামার বোতাম টিপলে লিফটটা ওঠার সময় দাঁড়াত না।
‘‘ড্যাম ইট!’’ লিফটটা উঠতে আরম্ভ করতেই পা দিয়ে লিফটের দরজায় হালকা ঠোক্কর মেরে হৃষিতা বিরক্তি ঝরাল।
ছয়... সাত... আট... নয়। লিফটের এলইডি আলোর সংখ্যাগুলো পালটে পালটে গিয়ে নয়ে গিয়ে দাঁড়িয়ে গেল। পাঁচ তলায় লিফটের বন্ধ দরজার সামনে দাঁড়িয়ে প্যানেলে নম্বরগুলো দেখতে দেখতে টুইটির অবশ্য মুহূর্তের কৌতূহল মিলিয়ে গেল যে হৃষিতা গিটার নিয়ে কোন তলায় নামল। তার মন এখন অন্য দিকে। চোখ বুজে বুকে হাত দিয়ে ধুকপুকানিটা টের পেল টুইটি। হৃষিতাদিদি নাহয় অনেক বড়। প্রেম করতে গিয়ে ধরা পড়ে যাওয়াকে ভয় পায় না, কেয়ারও করেনা। কিন্তু সে নিজে ধরা পড়ে গেলে বাড়িতে আর আস্ত রাখবে না। জিমে যাচ্ছি বলে বেরিয়েছে। ভাগ্যিস বাবা-মা জিমের দিক মাড়ায় না! এমনকী ইন্সট্রাক্টরকেও চেনে না। এখানে আসার পর টিটানের সঙ্গে আলাপ তো ওই জিমেই।
ওপরে যাওয়ার বোতামটাই আবার টিপল টুইটি। তার পর চোখ বন্ধ করে ঈশ্বরকে ডাকতে থাকল, ‘‘হে ঠাকুর, এ বার যেন লিফটের মধ্যে কেউ না থাকে।’’
ঈশ্বর প্রার্থনা শুনলেন। লিফটটা ন’তলা থেকে পাঁচ তলায় ফাঁকাই নেমে এল। দরজা খুলে গেল। সতর্ক টুইটি আর এক বার চারদিকে তাকিয়ে দ্রুত লিফটের ভেতর ঢুকে কুড়ির বোতামটা টিপল। এটাই টাওয়ারের সর্বোচ্চ তলা। কুড়িতে পৌঁছে লিফটের বাইরে বেরিয়ে আবার চার দিকে সতর্ক চোখ বোলাল টুইটি। কেউ কোথাও নেই। চট করে প্যাসেজটা পেরিয়ে সিঁড়ি দিয়ে দ্রুত ওপরে উঠতে থাকল। আর একটা তলা উঠলেই ছাদ। ছাদের দরজাটা অল্প ফাঁক হয়ে দুলছে।
মুখে হাসি খেলে গেল টুইটির। তবে বুকের মধ্যে ধুকপুকানিটা একই রকম চলছে। ছাদের দরজাটা তালা দেওয়া থাকে। তার একটা চাবি থাকে কেয়ারটেকারের কাছে, আর একটা সিকিয়োরিটিদের কাছে। টিটান কোন চাবিটা শেষ পর্যন্ত ম্যানেজ করতে পেরেছে, জানে না। তবে ছাদে যখন দু’জনে আসতে পেরেছে, আজকে হৃষিতাদিদির মতো একটু প্রেম-প্রেম খেলা যাবে।
দরজা ঠেলে ছাদে পা দিয়েই আকাশটার দিকে চোখ পড়তে মনটা ভাল হয়ে গেল টুইটির। কিন্তু টিটান কোথায়? গোটা ছাদে চোখ বোলাল টুইটি। এই টাওয়ারের ছাদে এই প্রথম এল সে। কিন্তু টিটানকে কোথাও দেখতে পেল না। ট্রাউজারের পকেট থেকে মোবাইলটা বার করল। আশ্চর্য, মোবাইলে সিগনালের দাঁড়ি নেই। উঁচু টাওয়ারের ছাদে এই সমস্যার কথা কোথায় যেন শুনেছিল। মোবাইলটা মুঠোতে শক্ত করে চেপে ধরে চাপা গলায় ডাকল, ‘‘টিটান... টিটান! টোটো!’’
কোনও সাড়া নেই। হঠাৎ ভীষণ চমকে উঠল টুইটি। পেছন থেকে দু’টো হাত জড়িয়ে ধরল ওকে। চিৎকার করে উঠতে যাচ্ছিল। তার আগেই একটা হাত চেপে ধরল ওর মুখ। কোনও রকমে নিজেকে ছাড়িয়ে ঘুরে দাঁড়াতেই দেখল, টিটান একমুখ হাসি মেখে দাঁড়িয়ে আছে।
বুকের ভেতরটা ধড়াস ধড়াস করছে। টিটানের বুকে কিল মেরে বলল, ‘‘যাহ্! আমি তোর সঙ্গে থাকব না। চলে যাচ্ছি।’’
টিটান টুইটির হাতটা শক্ত করে চেপে ধরে বলল, ‘‘স্যরি, স্যরি, স্যরি... বিশ্বাস কর, তোকে পেয়ে আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি। তুই শেষ পর্যন্ত আসবি কি না, তোকে না দেখা পর্যন্ত বিশ্বাস হচ্ছিল না। অনেক ক্ষণ আমার সঙ্গে থাকবি তো টুইটি?’’
‘‘বাড়িতে বলে এসেছি জিমে যাচ্ছি। আধ ঘণ্টার বেশি জিমে থাকি না।’’
‘‘আধ ঘণ্টায় জিমে ওয়ার্কআউট করে কী হয় বল?’’
‘‘মা বলেছে, আমার ফিগারে আধ ঘণ্টা জিম যথেষ্ট। তুই কী করে ছাদের তালা খোলালি?’’
টিটান বিজ্ঞের গলায় বলল, ‘‘রিসার্চ করতে হয়েছে! রবিবার লিফট মেনটেনেন্স করতে আসে। সিকিয়োরিটি সকালে তালা খুলে দেয়। সেই বিকেলবেলায় এসে বন্ধ করে।’’
‘‘এই রে, তা হলে ওরা যদি চলে আসে?’’
‘‘আসবে না। ওরা আজ সি-টাওয়ারে কাজ করছে। ’’
‘‘তুই বাড়িতে ক’ঘণ্টা ওয়ার্কআউটের কথা
বলে এসেছিস?’’
‘‘ধুস!’’ উদাস গলায় টিটান বলল, ‘‘আমার আর কে খেয়াল রাখে? বাবার সঙ্গে ঝগড়া করে মা দাদুর বাড়ি গিয়েছে। বিকেলের আগে ফিরবে না। বাবার সোনায় সোহাগা। নীহারজেঠুর বাড়িতে বিয়ার খাচ্ছে আর তাস পিটছে।’’
‘‘তুই কোথায় লুকিয়ে ছিলি বল তো?’’
টিটান টুইটির হাতটা ধরে টানল, ‘‘আয় দেখাচ্ছি। কিং লিয়ারের সিংহাসন আছে একটা।’’
ছাদের এক পাশে লিফটের শ্যাফ্ট রুম। সেখানে ওঠার একটা সিঁড়ি। তার পেছনে জলের ট্যাংক। মধ্যিখানটা ঘুরে গিয়ে এক চিলতে জায়গা। সেখানে একটা ছোট্ট বেদি। চট করে দেখা যায় না। টুইটির হাত ধরে সেখানে টেনে এনে বসাল টিটান। তার পর দু’হাতের তালু পেতে বলল, ‘‘অ্যাট লাস্ট। আমি তা হলে আজকে ফেসবুকে আপডেট দেব, ইন আ রিলেশনশিপ।’’
টুইটি টিটানের তালুতে তালু রেখে বলল, ‘‘দিতে পারিস। কিন্তু একদম আমার নাম দিবি না। আমার মা একটা ফেক প্রোফাইল দিয়ে আমাকে ফলো করে।’’
‘‘ব্লক করে দিচ্ছিস না কেন?’’
‘‘ধরতে পারছি না প্রোফাইলটা। আরে তোর নামটাও তো আমি মোবাইলে মেঘনা বলে সেভ করে রেখেছি।’’
‘‘পুরনো টেকনিক। অ্যাই টুইটি, পুজোর সময় একসঙ্গে ঘুরতে বেরোবি তো?’’
‘‘ইল্লি আর কী! মা দেবে তোর সঙ্গে বেরোতে? আমি একটা কথা ভেবেছি। সল্টলেকে আমি যে টিউটোরিয়ালে পড়ি, ওখানে তুইও ভর্তি হয়ে যা। ম্যামকে আমি ম্যানেজ করে এক টাইমিং করে নেব।’’
ক্রমশ