নৈসর্গিক দৃশ্যের টানে পর্যটকরা বার বার ছুটে যান হিমাচল প্রদেশে। শিমলা, মানালি, কুলু— এই শৈলশহরগুলি পর্যটকদের খুবই পছন্দের। হিমাচল প্রাকৃতিক দৃশ্য যেমন সুন্দর, তেমনই ভয়ঙ্কর। তবুও পর্যটকরা এই ভয়ঙ্কর সুন্দরের টানেই বার বার ছুটে যান হিমাচল প্রদেশে।
পাহাড়ের গা বেয়ে রাস্তা। দু’পাশে কয়েক হাজার ফুট গভীর খাদ। একচুল এক দিক-ও দিক হলেই কোনও চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যাবে না। হিমাচলের তেমনই একটি পাহাড়ি রাস্তা সাচ পাস। যা দেশের এমনকি বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক রাস্তাগুলির মধ্যে একটি।
বিপজ্জনক রাস্তার জন্যই হিমাচলের এই সাচ পাস পর্যটকদের আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু। মেরেকেটে ১০-১২ ফুট চওড়া রাস্তা। এবড়োখেবড়ো। ভয়ঙ্কর মোড়। আর এক পাশে কয়েক হাজার ফুট গভীর খাদ।
১৪,৪৮২ ফুট উচ্চতায় এই রাস্তা দিয়েই চম্বা থেকে কিলাড় যাওয়া যায়। রাস্তাটি চম্বা এবং পানজি উপত্যকার সংযোগস্থল হিসাবে কাজ করে।
হিমালয়ের পীর পঞ্জাল রেঞ্জের মধ্যে পড়ে সাচ পাস। চম্বা থেকে কিলাড় যাওয়ার সবচেয়ে ছোট পথ এই সাচ পাস।
তিন দিক দিয়ে সাচ পাসে যাওয়া যায়। পঠানকোট-ডালহৌসি রোড, মানালি-উদয়পুর রোড এবং উধমপুর, অনন্তনাগ-কিস্তওয়াড়-পাদ্দার-পাঞ্জি রোড।
জুনের শেষ থেকে মাঝ অক্টোবর পর্যন্ত এই রাস্তা গাড়ি চালানোর জন্য খুলে দেওয়া হয়। বর্ষা এবং শীতকালে ধস এবং তুষারপাতের কারণে রাস্তা বন্ধ রাখা হয়।
গোটা সাচ পাসের নৈসর্গিক দৃশ্য, বিশেষ করে সতরুন্দির ফুলের বাহার, বরফে ঢাকা পাহাড়চূড়া পর্যটকদের বার বার হাতছানি দেয়।
সাচ পাস দিয়ে চম্ব থেকে কিলাড় যাওয়ার পথে একটি বিশাল জলপ্রপাত পড়ে। সেই জলপ্রপাত ভেদ করে কিলাড় যেতে হয়। মাথার উপর আছড়ে পড়ছে বিশাল জলরাশি, এক পাশে গভীর খাদ— সব মিলিয়ে একটা ‘মন দুরু দুরু’ অথচ নৈসর্গিক এক দৃশ্য দেখার লোভও ছাড়তে পারেন না পর্যটকরা।
সাচ পাস ধরে পাঞ্জি উপত্যকায় ঢুকে পড়লে একাধিক অখ্যাত অথচ সুন্দর জায়গা রয়েছে। সেগুলি হল— ধারওয়াস, লুজ, সুরাল, হুন্দন, ফিন্দরু, ফিন্দার, মিন্ধল এবং পারমার। এই নামগুলি পর্যটকদের কাছে প্রায় অজানা।
কিলাড়ে অনেক সুন্দর গ্রাম রয়েছে। রয়েছে পূর্ত দফতরের একটি রেস্ট হাউস। এ ছাড়াও হোটেল এবং গেস্ট হাউসও রয়েছে একাধিক।
চম্বা থেকে সাচ পাস হয়ে কিলাড় যেতে গেলে পথে পড়বে টিসা, বৈরাগড়, সতরুন্দি, বাগোটু।
যাঁরা বেশ কয়েক বার ঘুরে এসেছেন এ পথে, তাঁদের অভিজ্ঞতা এবং স্থানীয়দের মতে, চম্বা থেকে সাচ পাস হয়ে কিলাড় যাওয়ার সবচেয়ে ভাল সময় জুন মাস।