তিনি বিবাহিত। কলেজের এক ছাত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়েছিল সেই অধ্যাপকের। যে সম্পর্ক এক সময় তাঁকে বড়সড় শাস্তির মুখে ঠেলে দেয়।
ছাত্রীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগে ওই অধ্যাপককে শিক্ষাক্ষেত্র থেকে নির্বাসিত করা হয়েছে। আর কখনও কোথাও তিনি শিক্ষকতা করতে পারবেন না।
অভিযুক্ত অধ্যাপকের নাম রবিন কাইন। ৫৪ বছর বয়সি রবিন ব্রিটেনের একটি কলেজে নাট্যসাহিত্য পড়াতেন। ২০০৪ সাল থেকে শিক্ষকতা করতেন তিনি।
২০০৭ সাল নাগাদ রবিন তাঁর কলেজের সহকারী অধ্যক্ষ পদে বহাল হন। কিন্তু নাটকের শিক্ষক হিসাবে তাঁর কেরিয়ার যখন একেবারে মধ্যগগনে, ঠিক সেই সময় তাল কাটে।
রবিনের কলেজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রী অভিযোগ করেন, তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল রবিনের। দিনের পর দিন তাঁরা ঘনিষ্ঠ হয়েছেন। এই অভিযোগ রবিনের কেরিয়ারে কালি লেপে দেয় নিমেষে।
তরুণী আরও অভিযোগ করেন, রবিন মাদকাসক্ত। মাদকের জোগান দেওয়ার জন্য তিনি তাঁকে চাপ দিতেন। তা না দিতে পারলে তরুণীকে হুমকি দেওয়া হত বলেও অভিযোগ রবিনের বিরুদ্ধে।
তরুণী জানান, ২০০৭ সাল থেকে কলেজের নাট্যসাহিত্যের শিক্ষক রবিনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। ক্লাস চলাকালীন অশালীন আচরণ করতেন রবিন। নাটক অভিনয় শেখানোর সময়েও সংশ্লিষ্ট ছাত্রীর সঙ্গে তাঁর আচরণ ছিল আপত্তিকর।
কলেজের নথিপত্র ঘেঁটে ওই ছাত্রীর যোগাযোগের নম্বর সংগ্রহ করেন রবিন। তার পর ‘হোমওয়ার্ক’ সংক্রান্ত আলোচনার ছুতোয় দিনের পর দিন ফোন করতেন।
ছাত্রীর অভিযোগ, রবিন ফোন করে প্রথম প্রথম পড়াশোনা সংক্রান্ত আলোচনা করলেও, শীঘ্রই তা অন্য দিকে মোড় নেয়। তাঁদের আলোচনা, গল্পগুজব শারীরিক চাহিদাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হত।
ছাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে শহরের একটি ‘টিচিং রেগুলেশন এজেন্সি’ রবিনের বিচার শুরু করে। দেখা যায়, ফোনের পাশাপাশি ফেসবুকেও নিয়মিত কথা হত দু'জনের।
বিচারসভায় রবিন এবং ওই ছাত্রীর মধ্যে মোট ৪৬৭ পৃষ্ঠার কথোপকথন উপস্থাপিত হয়। ২০০৭ সালের ৫ জুলাই থেকে ২০১০ সালের ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত কথোপকথন ছিল সেখানে।
কথোপকথন পর্যালোচনা করে বিচারসভায় সিদ্ধান্ত হয়, রবিন অপরাধী। তিনি ছাত্রীর সঙ্গে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছেন।
অভিযোগ, স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে ছাত্রীকে বাড়িতে ডেকে আনতেন রবিন। ফাঁকা বাড়িতে চলত অবাধ যৌনতার খেলা।
ছাত্রীর কাছে মাদক দাবি করতেন রবিন। তাঁকে মাদকের জোগান দেওয়ার জন্য চাপ দিতেন। তা না দেওয়া হলে সম্পর্ক ভেঙে দেওয়ার হুমকিও দিতেন।
রবিনের আচরণ তাঁর পেশাদারিত্বের চূড়ান্ত বিচ্যুতি হিসাবে গণ্য হয়। তাঁকে আজীবনের জন্য এই পেশা থেকে নির্বাসিত করা হয়। ভবিষ্যতে কোনও স্কুল, কলেজ, শিশুশিক্ষাস্থল বা আশ্রমে শিক্ষকতা করতে পারবেন না তিনি।