দক্ষিণের সিনেমার অভিনেতাদের নিয়ে ইদানীং চর্চা হচ্ছে খুব। শাহরুখ, আমির-হৃতিকদের পাশাপাশি চর্চা হচ্ছে অল্লু অর্জুন, প্রভাস, ধনুষ, সামান্থা রুথ প্রভুদের নিয়ে।
মুখে চেনার পাশাপাশি এঁদের নামেও চিনছেন ভারতীয় সিনেমার দর্শকেরা। হবে না-ই বা কেন, ভারতের সর্বকালীন সেরা লাভজনক সিনেমার প্রথম দশের তালিকায় এখন তিনটিই তামিল ছবি।
সিনেমাপ্রেমীরা বলেন বক্স অফিসে লক্ষ্মীর অতি কৃপাদৃষ্টি এবং গল্পের, চরিত্রে অতিরঞ্জন তামিল ছবির বৈশিষ্ট্য। পর্দায় তামিল নায়ক এক গুলিতে একসঙ্গে দু’জন খলনায়ককে ঘায়েল করেন।
তবে বাস্তবে এই অভিনেতারা নাকি জব্দ হন স্কুল, কলেজে। মাত্রাছাড়া কাজের চাপে অনেক সময়ই শেষ করতেই পারেন না নিজেদের পড়াশোনা। কখনও সময়ের থেকে অনেক বেশি সময় নিয়ে ফেলেন।
অভিনেতাদের ভাল অভিনয়ের জন্য প্রথাগত শিক্ষার পাঠ নেওয়া জরুরি কি না বা স্কুলছুট হলে ভাল অভিনেতা হওয়া যায় কি না সে প্রশ্ন আলাদা, তবে দক্ষিণের ব্যস্ত অভিনেতারা সেই বিতর্কে না গিয়ে প্রথাগত শিক্ষা শেষ করারই চেষ্টা করেছেন।
সেই প্রক্রিয়ায় হয়তো কেউ দূরশিক্ষায় শেষ করছেন বাকি পড়াশোনা। কেউ এখনও পরীক্ষা দিয়েই চলেছেন।
বলিউড এবং তামিল ছবির তারকা অভিনেতা ধনুষের সমালোচকরাও তাঁর অভিনয়ের প্রশংসা করেন। সেই ধনুষকে দশম শ্রেণির পরই পড়াশোনা ছাড়তে হয়েছিল। রজনীকান্তের জামাই ধনুষ। তাঁর বাবাও তামিল চিত্রনির্মাতা।
ধনুষের কলেজ যাওয়া হয়নি, কারণ তাঁর বাবা কস্তুরী রাজা এবং দাদা সেলভারাঘবন তাঁকে ছবিতে অভিনয়ের লোভ দেখিয়ে ফিল্ম দুনিয়ায় নিয়ে আসেন। ধনুষ অভিনয়ে আসার অনেক পরে দূরশিক্ষায় নিজের স্নাতক সম্পূর্ণ করেন। তাঁর বিষয় ছিল কম্পিউটার সায়েন্স।
তামিল ছবির দুনিয়ায় এখন বড় তারকা সাই পল্লবী। ২০১৫ সালে অভিনয় শুরু করেন অভিনেত্রী সাই। তখন তিনি ইউরোপের জর্জিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। পড়াশোনা করছেন মেডিক্যাল সায়েন্স নিয়ে। ২০১৬ সালে তাঁর মেডিক্যাল ডিগ্রি সম্পূর্ণ করেন সাই।
অল্লু অর্জুনের ‘পুষ্পা’ বক্স অফিসে সুপারহিট। অল্লু তাঁর স্নাতক স্তরের পড়াশোনা সম্পূর্ণ করেছেন অভিনয়ে আসার পরই। হায়দরাবাদের এমএসআর কলেজ থেকে বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে স্নাতক হন।
পুষ্পা ও আনতাভা গানে আইটেম ডান্স করে বিখ্যাত হয়েছেন সামান্থা। অভিনয়ও করেছেন বহু ছবিতে। সামান্থা বাণিজ্য নিয়ে স্নাতক হয়েছেন। ডিস্টিংশনও পেয়েছিলেন।
বিজয় দেবারাকোণ্ডার নাম সিনেমাপ্রেমীরা জেনেছে ‘অর্জুন রেড্ডি’ সিনেমার দৌলতে। বলিউড বিশেষজ্ঞরা বলছেন বলিউডের হিট ছবি কবীর সিং নাকি এই ছবিরই হিন্দি অনুবাদ। তবে সিনেমায় জনপ্রিয় বিজয়ের প্রথাগত শিক্ষা থেমে গিয়েছে স্নাতক স্তরেই। বি কম গ্র্যাজুয়েট তিনি।
বাহুবলীর দৌলতে তামান্নাও জনপ্রিয় অভিনেত্রী। ১৩ বছর বয়সে স্কুলের বার্ষিক অনুষ্ঠানে একটি ছবির মুখ্য ভূমিকায় অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েছিলেন। সেই প্রস্তাব নিয়েওছিলেন অভিনেত্রী। পড়াশোনা সম্পূর্ণ করেন অনেক পরে। মুম্বইয়ের ন্যাশনাল কলেজ থেকে স্নাতক হন।
দক্ষিণী সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা এনটিআর জুনিয়র। সম্প্রতি রাজামৌলির আরআরআর সিনেমার জন্য তিনি চর্চায় রয়েছেন। তামিলনাড়ুর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এনটিআরের পৌত্রের পড়াশোনা থেমে গিয়েছে কলেজের আগেই। তবে স্কুল শিক্ষার পর এনটিআর জুনিয়র কুচিপুড়ি নাচের প্রশিক্ষণ নেন।