মোদী সরকারের নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি মাঝেমধ্যেই রাজনৈতিক বিতর্কের মুখে পড়েন। সম্প্রতি তাঁর মেয়েও বিরোধী পক্ষের রোষের মুখে পড়েছেন।
জনৈক মৃত ব্যক্তির নামে পানশালার লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ করার অভিযোগ উঠেছে স্মৃতি-কন্যা জোয়িশের রেস্তরাঁর বিরুদ্ধে।
উত্তর গোয়ার ‘সিলি সোলস্ ক্যাফে অ্যান্ড বার’ নামের একটি পানশালা রয়েছে জোয়িশ ইরানির। ১৮ বছর বয়সেই তিনি এই পানশালার মালকিন।
কিন্তু এই পানশালা তাঁর নিজের নামে নয়। বরং ভুয়ো লাইসেন্স ব্যবহার করেই তিনি এই পানশালাটি চালান, এমনই অভিযোগ করেছেন কংগ্রেসের মুখপাত্র পবন খেরা।
এমনকি, ইরানি-কন্যার পানশালাকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠিয়েছে গোয়ার আবগারি দফতর। যে ব্যক্তির নামে আসল লাইসেন্সটি ছিল তিনি মুম্বইয়ের ভিলে পার্লের বাসিন্দা ছিলেন। লাইসেন্সের মালিক অ্যান্টনি ডিগামার মৃত্যু হয়েছে ২০২১ সালের ১৭ মে মাসে।
এক আইনজীবীর অভিযোগ অনুযায়ী নথিপত্র জাল করে লাইসেন্স পেয়েছেন জোয়িশ। অবশ্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এই বিষয়ে সরব হয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, বিরোধী পক্ষের এই ধরনের মন্তব্যের প্রভাব শুধু স্মৃতির মেয়ের উপরেই নয়, তাঁর রাজনৈতিক জীবনেও পড়বে।
কংগ্রেস দলকে নিশানা করে স্মৃতি জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ের দোষ হল— ২০১৪ ও ২০১৯ সালে ওঁর মা রাহুল গাঁধীর বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। শুধু তা-ই নয়, জোয়িশ এই নামের কোনও রেস্তরাঁর মালকিন নয়, তা জানান স্মৃতি।
পবন খেরা এই প্রসঙ্গে একটি টুইটও করেছেন। পবনের দাবি, নেটমাধ্যমে স্মৃতি তাঁর মেয়ের সঙ্গে একটি ছবি পোস্ট করেছিলেন। নতুন রেস্তরাঁ খুলেছেন বলে অভিনন্দনও জানিয়েছিলেন জোয়িশকে।
প্রমাণ-সহ টুইট করে পবন জানান, স্মৃতি মিথ্যা কথা বলছেন। মেয়েকে অভিনন্দন জানানোর সময় মিথ্যা কারণ দেখিয়েছেন নয়তো তিনি এখন মেয়ের দোষ আড়াল করার জন্য মিথ্যা বলছেন।
কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ স্মৃতির বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বলেছেন, তাঁকে যেন অবিলম্বে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দায়িত্বভার থেকে মুক্ত করা হয়।
এমনকি, প্রশান্ত প্রতাপ একটি ভিডিয়ো শেয়ার করেছেন। এই ভিডিয়োতে জনৈক এক খাদ্যপ্রেমী জোয়িশকে সেই রেস্তরাঁর মালকিন হিসাবেই সম্বোধন করেছেন।
এ প্রসঙ্গে স্মৃতি কোনও মন্তব্য না করলেও তিনি কংগ্রেসের তিন নেতাকে আইনি নোটিস পাঠান। নোটিসে অভিযোগ প্রত্যাহারের পাশাপাশি লিখিত ভাবে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করার দাবি জানানো হয়েছে।
জোয়িশকে নিয়ে তিনি এই প্রথম সরব হননি। জোয়িশের স্কুলজীবনেও এমনই এক ঘটনা ঘটেছিল। স্মৃতি তাঁর সঙ্গে জোয়িশের একটি ছবি নেটমাধ্যমে আপলোড করেছিলেন। সেই ছবি দেখে জোয়িশের সহপাঠী মন্তব্য করেন।
‘জোয়িশ দেখতে ভাল নয়’ এমনটাই বলেছিলেন সেই সহপাঠী। পরে জোয়িশ তাঁর মাকে সেই ছবিটি সরিয়ে দিতেও বলেন। মেয়ের কথা মতো ছবি সরিয়ে দিলেও পরে জোয়িশের অন্যান্য সহপাঠী এই নিয়ে আরও হাসাহাসি করে। পুরো ঘটনা জানার পর তিনি সেই একই ছবি আবার পোস্ট করেন এবং জোয়িশের সঙ্গে স্কুলে কী কী ঘটেছে তার বিবরণও দেন।
জোয়িশ স্মৃতির কাছে বড় আদরের। দশম শ্রেণির পরীক্ষার ফল প্রকাশ হলে স্মৃতি জানতে পারেন, জোয়িশ ৮২ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করেছেন। এই সুখবরটিও অনুরাগীদের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছিলেন তিনি।
সংবাদ সূত্রের খবর, যাঁরা জোয়িশের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ দায়ের করেন, তাঁদের দফতর থেকে বদলি করার প্রক্রিয়াও শুরু করেছে বিজেপি সরকার।