যৌনশিক্ষা নিয়ে আজকাল বহু স্কুলেই ক্লাস হচ্ছে। পড়ুয়া এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে খোলাখুলি কথাবার্তাও হয়। তবে এই কিছু দিন আগেও তা নিয়ে কম ঢাকঢাক গুড়গুড় ছিল না। এ নিয়ে বয়ঃসন্ধিতে পা রাখা পড়ুয়াদের নানা প্রশ্ন সামলাতে গিয়ে নাজেহাল হতেন বহু শিক্ষক-শিক্ষিকা। বলিউডের শেহনাজ় গিলকেও সেই প়ড়ুয়াদের দলে অনায়াসে রাখা যায়।
স্কুলের যৌনশিক্ষার ক্লাসে নিজের অভিজ্ঞতার কথাই সম্প্রতি শুনিয়েছেন শেহনাজ়। রিয়্যালিটি শোয়ের এই তারকার শীঘ্রই বলিউডে অভিষেক হবে। তবে তার আগেই নিজের চ্যাট শো শুরু করে দিয়েছেন।
‘দেশি ভাইব্স’ নামের সে চ্যাট শোয়ে ‘ছত্রীওয়ালি’-র অভিনেত্রী রকুলপ্রীত সিংহ ছিলেন শেহনাজ়ের অতিথি। তাঁর কাছেই স্কুলজীবনের কিছু কথা খোলসা করেছেন শেহনাজ়। তাতে উঠে এসেছে যৌনশিক্ষার ক্লাসের কথাও।
স্কুলজীবনে যৌনশিক্ষার ক্লাসে কী করেছিলেন? তা শোনানোর আগে শেহনাজ়ের দিকে নজর ঘোরানো যাক।
আজকাল শেহনাজ়ের বহু কথাই ভেসে বেড়াচ্ছে বলিউডে। গুটিকয়েক পঞ্জাবি সিনেমার পর হিন্দি ছবির দুনিয়ায় অভিযান শুরু করবেন সলমন খানের সঙ্গে। ফলে তিনি তো চর্চায় থাকবেনই। তা ছাড়া, ফারহাদ সামজির ‘কিসি কা ভাই কিসি কা জান’ ছবিতে সলমন ছাড়াও পূজা হেগড়ে, বেঙ্কটেশের মতো তারকাদের ভিড়।
ভাইজানের সঙ্গে শেহনাজ়ের সে ছবি নিয়ে আলোচনা আরও একটি কারণে জমে উঠেছে। ২৫ জানুয়ারি সিনেমা হলে আসছে শাহরুখ খান এবং দীপিকা পাড়ুকোনের ‘পাঠান’। আর সে দিনই শেহনাজ়-সলমনের ছবির ঝলক প্রকাশ্যে আসবে। ফলে বলিউডের দুই সুপারস্টারকে যে তুলনায় টানা হবে এবং সমালোচক থেকে শুরু করে ভক্তেরা যে শেহনাজ়কেও ‘দাঁড়িপাল্লায় মাপবেন’, সেটাই স্বাভাবিক।
বলিউডে পা রাখার আগে থেকেই অবশ্য বেশ জনপ্রিয় শেহনাজ়। পঞ্জাবি ছবির দর্শকদের কাছে তিনি ‘পঞ্জাবের ক্যাটরিনা’। তবে ‘বিগ বস্’-এর ১৩তম মরসুমে ওই রিয়্যালিটি শোয়ে ঢোকার পর থেকে মূলধারার বিনোদন জগতে নাকি তাঁর পরিচিতি আরও বেড়েছে।
‘বিগ বস্’-এর ঘরে থাকার সময় তাঁর সঙ্গে সিদ্ধার্থ শুক্লের রসায়নে অনেকেই বুঁদ হয়েছিলেন। সিদ্ধার্থের অকালপ্রয়াণে শেহনাজ়ের দুঃখে শরিক হয়েছিলেন অনেকেই।
‘বিগ বস্’-এর ওই মরসুমে সিদ্ধার্থ ছিলেন বিজেতা। তবে পিছিয়ে ছিলেন না শেহনাজ়ও। সে বার তৃতীয় হয়েছিলেন তিনি। সে সময় থেকেই শেহনাজ়ের পরিচিতি বাড়তে থাকে। ‘বিগ বস্’-এর পর ‘মুজসে শাদি করোগে’ নামে আরও একটি রিয়্যালিটি শোয়ে দেখা গিয়েছিল শেহনাজ়কে। তাতে কম দর্শক মাতাননি তিনি।
ছোট পর্দায় জনপ্রিয়তার গুড় খাওয়ার পর এ বার বড় লাফ মারেন শেহনাজ়। সল্লু মিয়াঁর সঙ্গে তাঁর নাম জড়িয়ে রসালো আলোচনা জমে উঠতে না উঠতেই শেহনাজ়ের মঞ্চে নাকি গুরু রনধাওয়ার প্রবেশ ঘটেছিল। অবশ্য সে সব বলিউডি জল্পনা না সত্যি, তা জানার আগেই সল্লু মিয়াঁর ছবিতে জায়গা করে নেন শেহনাজ়।
সব ঠিক থাকলে ২১ এপ্রিল ভাইজানের সঙ্গে শেহনাজ়ের ছবি মুক্তি পাবে। সেই প্রতীক্ষার প্রহর গোনার মাঝে নিজের চ্যাট শোয়ে একের পর এক বলিউড তারকার সঙ্গে খুনসুটি করেছেন তিনি।
সম্প্রতি রকুলপ্রীতকে সেই শোয়ে ডেকেছিলেন শেহনাজ়। ‘ছত্রীওয়ালি’-র মতো ছবিতে যৌনশিক্ষার গুরুত্বের কথা বুঝিয়ে দিয়েছেন রকুলপ্রীত। শোয়ে তাঁর সঙ্গে কথাবার্তায় সে প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। তখনই নিজের স্কুলজীবনের কথা তুলে আনেন শেহনাজ়।
আদতে পঞ্জাবের বাসিন্দা হলেও হিমাচলের একটি নামী আবাসিক স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। সেখানে যৌনশিক্ষার ক্লাস নেওয়া হত বলে জানিয়েছেন শেহনাজ়।
শেহনাজ় বলেন, ‘‘বিজ্ঞানের বিষয়গুলির মধ্যে একমাত্র এই ক্লাসটিই আমার পছন্দের ছিল। যত বারই প্রজনন নিয়ে আলোচনা করতেন টিচার, কান খাড়া করে রাখতাম।’’
এমনই একটি যৌনশিক্ষার ক্লাসে শিক্ষিকাকে বেয়াড়া প্রশ্নটি করেছিলেন শেহনাজ়। কী সেটি? তিনি বলেন, ‘‘এক দিন প্রজনন নিয়ে পড়াচ্ছিলেন টিচার। সে সময় আমি বলে উঠেছিলাম, ‘ম্যাম, আমরা এটা হাতেকলেম শিখতে পারি না?’ টিচ়ারের জবাব ছিল, ‘চুপ কর।’ ’’
শেহনাজ় জানিয়েছেন, স্কুলে ওই ক্লাসগুলি দারুণ লাগত তাঁর। সেই সঙ্গে রকুলপ্রীতকে সে দিনের কথা বলতে গিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘সে দিন টিচার যদি আমাকে চুপ না করিয়ে বলতেন, ‘এগুলো তোমার শেখানোর জন্যই বলা হচ্ছে’, তবে ভাল হত। আমার মনে হয়, যৌনশিক্ষা নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে বদল ঘটলে সমাজেও সে পরিবর্তন দেখা যাবে।’’
শেহনাজ়ের কথায় সহমত রকুলপ্রীতও। যৌনশিক্ষার ক্লাসে পড়ুয়াদের যাবতীয় কৌতূহলের নিরসন করা উচিত বলে মনে করেন তিনি। এ নিয়ে খোলামেলা আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে বলেও মনে করেন রকুলপ্রীত।