নয় নয় করে প্রায় তিরিশটি বছর বলিউডে কাটিয়ে ফেলেছেন। তবে যেন তেন ভাবে নয়। তিনিই নাকি বলিউডের অলিখিত ‘বাদশা’। অনেকে আবার তাঁকে ‘কিং খান’-এর তকমাও দিয়ে ফেলেছেন।
তা নিন্দকেরা বলতেই পারেন, এ সব গালভার তকমার সবটাই তো শাহরুখের জনপ্রিয়তার ফসল। ও সব মিডিয়ার দৌলতে জোটানো। হিংসুটেরা বলতেই পারেন, শুক্রবার শুক্রবার বক্স অফিসের খেলায় ভাগ্য বদলাতে দেরি হয় না! তবে শাহরুখ-ভক্তেরা পাল্টা তর্ক জুড়তেই পারেন, খানসাহেব যে কত শক্তিধর, তা কি জানেন!
শাহরুখ কতটা শক্তিধর, তা মেপে দেখার যন্ত্র আবিষ্কার হয়নি বটে। তবে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নাকি তিনি এক বার ধার দিয়েছিলেন। তবেই বুঝুন, তিনি কতটা শক্তিমান!
প্রধানমন্ত্রীকে ধার? বলেন কি মশাই! হ্যাঁ, তেমনই তো দাবি করে সংবাদমাধ্যম। তবে টাকাপয়সা নয়। মোদীকে নাকি আস্ত একটি গাড়ি ধার দিয়েছিলেন খানসাহেব। তা-ও আবার যে সে গাড়ি নয়। নিজের শখের গাড়ি।
মোদীকে আবার কবে গাড়ি ধার দিলেন শাহরুখ? গল্প বানানোর জায়গা পেলেন না? সবই খোলসা করছি। তবে তার আগে শাহরুখের শখের গাড়িটাড়ির খবর রাখেন কি?
শাহরুখের কাছে ক’টা গাড়ি রয়েছে, সে সব গোনাগুনতি হিসেবনিকেশ না হয় পরে হবে। তবে কয়েকটি গাড়ির নাম বললেই আপনাদের মুখ হাঁ হওয়ার জোগাড় হতে পারে।
সাধে কী আর ৬০ কোটি ডলার থুড়ি ৪ হাজার ৫৭৫ কোটিরও বেশির টাকার মালিক তিনি। তা তাঁর দামি গাড়িবাড়ি থাকবে না তো, কার থাকবে?
ছোটখাটো গাড়িটাড়ির কথা বাদ দিলাম। শাহরুখের গ্যারাজে যে বুগাতি ভেরন রয়েছে, তা জানা আছে? আজকের বাজারে তার দাম প্রায় ১২ কোটি টাকা। সঙ্গে প্রায় ৪ কোটি টাকার বেন্টলি কন্টিনেন্টাল জিটি এবং একটি রোলস রয়েস ফ্যান্টম ক্যুপেও রয়েছে। যার দাম প্রায় ৮ কোটি টাকা।
এখানেই শেষ নয়। বিএমডব্লিউ আই-৮ মডেলের গাড়ির কথা তো বলাই হল না। সেটির দাম ৩ কোটিরও বেশি। আর একটি পছন্দ মতো সাজানোগোছানো লাক্সারি ভ্যানিটি ভ্যানও রয়েছে। যেটি কিনতেই ১৪ লাখ টাকা লেগেছে। সঙ্গে ভ্যানের সাজগোজের খরচ আলাদা।
এ বার যে গাড়ি নিয়ে এত কাণ্ড, তার কথা বলা যাক! শাহরুখের কাছে একটি লিমুজিন রয়েছে। ওই যে হলিউডি ফিল্মে দেখা যায় না, সাঙ্গোপাঙ্গদের নিয়ে ইয়া বড় বড় সব মেশিনগান হাতে মাফিয়ারা বসেন কালো কাচ ঢাকা গাড়িতে, খানিকটা সে রকম।
তবে শাহরুখের লিমুজিন হলিউডের মারকাটারি ফিল্মের দেখানো গাড়িগুলির থেকেও বড়সড়। লম্বায় প্রায় ১০০ মিটার।
২০১৪ সালে সেই লিমুজিনে চড়েই দুবাইতে নিজের একটি রিয়েল এস্টেট প্রকল্পের উদ্বোধনে গিয়েছিলেন শাহরুখ এবং গৌরী খান। ‘রয়্যাল এস্টেট বাই শাহরুখ খান’ নামের ওই প্রকল্পটি নাকি ২৪ লক্ষ বর্গফুটের ছিল। সৌদির মুদ্রায় সে সময় প্রকল্পের দর ছিল ২৩০ কোটি দিরহাম। এ দেশের তো বটেই পাকিস্তান, কানাডা এবং গ্রেট ব্রিটেনের হোমড়াচোমড়াও সেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসেছিলেন।
সেই লিমুজিন গাড়িটি নাকি মোদীকে ব্যবহারের জন্য ধার দিয়েছিলেন শাহরুখ। ২০১৮ সালে। কমনওয়েলথ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করতে তাতে চেপে গ্রেট ব্রিটেনে গিয়েছিলেন মোদী।
৫২টি দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে ওই সম্মেলনে লিমুজিনের মতো লাক্সারি সেডানে চড়েই যেতেন মোদী। এবং তা নাকি শাহরুখের গাড়ি। মজার কথা, নিজের পরিবারের সদস্য ছাড়া মোদীই নাকি একমাত্র ব্যক্তি যিনি শাহরুখের লিমুজিনে চেপেছিলেন!
প্রধানমন্ত্রীর যাতাযাতের জন্য নিজস্ব কনভয় রয়েছে। তা তিনি সে সব বাদ দিয়ে শাহরুখের লিমুজিনের চড়তে গেলেন কেন? এ প্রশ্ন করতে পারেন। তবে দু’পক্ষই তা নিয়ে কিছু খোলসা করেননি। মৌন থাকাই কি সম্মতির লক্ষ্মণ?