বৃহস্পতিবার মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত এবং শ্রীলঙ্কা। মাঠের পাশাপাশি দর্শকদের নজর ছিল ভিআইপি বক্সের দিকেও। সেখানেই বসে ছিলেন ক্রিকেটারদের স্ত্রী, বান্ধবীরা। তবে সকলের মধ্যে সব থেকে বেশি নজর কেড়েছেন এক জনই। সারা তেণ্ডুলকর।
বিশ্বকাপে প্রথম সেঞ্চুরির প্রায় দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে ছিলেন শুভমন গিল। কিন্তু না। একটুর জন্য ফসকে গেল সেই বহু প্রতীক্ষিত স্বপ্ন। সেঞ্চুরি হাতছাড়া হল।
তবে আক্ষেপ শুভমনের থেকে বেশি হল আর এক জনের। চোখেমুখে ফুটে উঠল হতাশা। তিনি সচিন তেণ্ডুলকরের কন্যা সারা তেণ্ডুলকর। তার পরেই আরও এক বার দুয়ে দুয়ে চার করে ফেললেন দর্শকেরা।
বৃহস্পতিবার ওয়াংখেড়ে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস। শুরু থেকেই ভারত বুঝিয়ে দেয় যে, এই বিশ্বকাপে তারা বাকিদের থেকে অনেকটাই এগিয়ে।
প্রথমে ব্যাট করে ভারত ৩৫৭ রান তোলে। এর মধ্যে শুভমন এবং বিরাট মিলে ১৮৯ রানের জুটি গড়েন। শুভমন করেন ৯২ রান এবং বিরাট করেন ৮৮ রান।
বিশ্বকাপে জীবনের প্রথম সেঞ্চুরি থেকে মাত্র আট রান দূরে ছিলেন শুভমন। তখনই অঘটন। স্ট্যাম্পের পিছনে দাঁড়ানো কুশল মেন্ডিসের হাতে ক্যাচ তুলে দিলেন শুভমন।
তার আগে শুভমন ১১টি চার এবং দু’টি ছয় হাঁকিয়েছেন। দর্শকেরা এক প্রকার নিশ্চিত, কিছু ক্ষণের মধ্যেই দু’হাত শূন্যে তুলে দাঁড়াবেন তরুণ ব্যাটার। তার মধ্যেই কাটল তাল।
দিলশান মধুশঙ্কর বলে আউট হয়ে যান শুভমন। গ্যালারিতে বসে সারা। অভিব্যক্তিতে আক্ষেপ। মুখের উপর দু’হাত চেপে ধরেন সারা। তার পর উঠে দাঁড়িয়ে তালি দিয়ে ভাল খেলার জন্য শুভমনকে অভিনন্দন জানান।
সারার এই ছবি এখন ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে। সেখানে নানা মুনির নানা মত। এক জন ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘‘আমি জানি না এই দুঃখ কী ভাবে প্রকাশ করব। তবে সারাদি, আমারও একই হাল।’’
অন্য এক জন আবার সমাজমাধ্যমে সংশয় প্রকাশ করেন। লেখেন, শুভমন আউট হওয়ায় কি সারা কেঁদে ফেলেছেন?
পরে সারা নিজেই এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে একটি পোস্ট দেন। সেখানে লেখেন, ‘‘ভাল খেলেছ শুভমন গিল।’’ তাঁর একটি ছবিও পোস্ট করেন।
পরে ভারত যখন ফিল্ডিং করতে নামে, তখন ঘটে আর এক কাণ্ড। স্লিপে দাঁড়িয়ে পাশাপাশি ফিল্ডিং করছিলেন কোহলি আর শুভমন।
সেই সময় শুভমনের উদ্দেশে দর্শকেরা চিৎকার করতে থাকেন, “হামারি ভাবী কাইসি হো? সারা ভাবী জাইসি হো।” (আমাদের বৌদি কেমন হবে? সারা বৌদির মতো হবে।)
সেই সময় শুভমনের পাশে এসে দাঁড়ান বিরাট। দর্শকদের উদ্দেশে থামার ইঙ্গিত করেন। তার পর শোনা যায়, শুভমনের নাম ধরে চিৎকার করছেন লোকজন।
এই প্রথম বার বিশ্বকাপ খেলছেন শুভমন। প্রথম দু’টি ম্যাচে খেলতে পারেননি তাঁর ডেঙ্গি হওয়ায়। পরের পাঁচটি ম্যাচের মধ্যে দু’টিতে অর্ধশতরান করেছেন।
এ হেন শুভমন আর সচিন-কন্যা সারার সম্পর্ক নিয়ে এখন জল্পনা তুঙ্গে। এর আগে বহু বার এক সঙ্গে দেখা গিয়েছে দু’জনকে। এমনকি বিদেশেও দেখা গিয়েছিল দু’জনকে।
দিন দুই আগে ফের সারা-শুভমনের একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়। মনে করা হয় মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে খেলার দিন জিয়ো ওয়ার্ল্ড প্লাজ়ায় গিয়েছিলেন দু’জন। সেখানকারই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসে।
গত মার্চে আমদাবাদেও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বর্ডার-গাভাস্কর ট্রফির চতুর্থ টেস্টে ওয়াংখেড়ের মতো কাণ্ড হয়েছিল। সেখানে মাঠে শুভমনকে দেখে সারার নাম ধরে চিৎকার শুরু করেন দর্শকেরা। সমবেত ভাবে বলেন, ‘‘হামারি ভাবী ক্যায়সি হো, সারা ভাবী জাইসি হো।’’
তবে সচিন-কন্যা সারার সঙ্গে সম্পর্কের জল্পনার মাঝেই অন্য এক সারার সঙ্গে নাম জড়ায় শুভমনের। তিনি সারা আলি খান। অভিনেতা সইফ আলি খান এবং অভিনেত্রী অমৃতা সিংহের কন্যা।
দু’এক বার সইফ-কন্যা সারার সঙ্গে শুভমনকে দেখাও যায়। এমনকি এক রেস্তরাঁ থেকে দু’জনকে বার হতে দেখা যায়। তবে মাস কয়েক পর ফের সচিন-কন্যার সঙ্গে নাম জড়ায় শুভমনের।
শুভমন ভক্তেরা সচিন-কন্যাকে ‘ভাবী’ বলে সম্বোধনও করতে শুরু করে দেন। মাঠে শুভমনকে দেখে উড়ে আসতে থাকে সারার নাম।
ওয়াংখেড়ের মাঠে বৃহস্পতিবার হাজির ছিলেন কেএল রাহুলের স্ত্রী তথা সুনীল শেট্টির কন্যা আথিয়া শেট্টি, রোহিত শর্মার স্ত্রী রীতিকা সজদেহ, যুজবেন্দ্র চহল এবং তাঁর স্ত্রী ধনশ্রী।
বিরাটের স্ত্রী অনুষ্কা যদিও মাঠে ছিলেন না। জল্পনা, তিনি দ্বিতীয় বার মা হতে চলেছেন। তবে সকলকে ছাপিয়ে নজরে ছিলেন এক জনই। তিনি সচিন-কন্যা সারা। বার বার তাঁকেই তাক করেছে ক্যামেরা। ক্যামেরাকে নিরাশও করেননি তিনি। শুভমনের সাফল্যে লাফিয়ে উঠেছেন আবার ব্যর্থতায় ভেঙে পড়েছেন। তবে কি সব জল্পনাই সত্য হতে চলেছে?