১৯৭০ দশকে বলিউড সিনেমা জগতে আমূল পরিবর্তন ঘটিয়েছিলেন প্রযোজক সেলিম খান। একের পর এক ব্লকবাস্টার ছবি উপহার দিয়ে গিয়েছেন দর্শকদের। বি-টাউনের বহু তারকার সঙ্গেই তাঁর অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিল।
তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন অভিনেতা শক্তি কপূর। প্রায়ই খান-কপূর জুটি সেলিমের বাড়ির বারান্দায় মদ্যপানের আসরে বসতেন। কিছু ক্ষণ পর সন্ধ্যার সেই আসরগুলিতে ডাক পড়ত তিন খান-পুত্রের।
সলমন, আরবাজ, সোহেলকে তাঁদের সামনেই নাচ করতে বলতেন শক্তি। সেলিমও তাঁকে বাধা দিতেন না কখনও।
পরে শক্তি কপূরের সঙ্গেই বহু সিনেমায় অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে সলমনকে। ‘অন্দাজ অপনা অপনা’, ‘হ্যালো ব্রাদার’, ‘হম সাথ সাথ হ্যায়’ ছবিতে শক্তি কপূর এবং সলমনের রসায়ন বেশ ভালই ছিল।
কিন্তু পর্দার আড়ালে দুই অভিনেতার মধ্যে কতটা তিক্ততা দানা বেঁধে ছিল, তা বোঝা যায় ‘বিগ বস’ রিয়্যালিটি শোয়ের মাধ্যমে। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন স্বয়ং ভাইজান।
প্রতিযোগীদের মধ্যে ছিলেন শক্তি কপূরও। ভাইজান সমস্ত প্রতিযোগীকে ‘বিগ বস’-এর বাড়িতে আমন্ত্রণ জানালেও শক্তিকে এড়িয়ে যান।
শো চলাকালীন সলমন এ কথাও বলেছিলেন যে, বিগ বসের বাড়ির ভিতর এমন কয়েক জন থাকতে শুরু করেছেন যাঁদের সলমন নিজের বাড়িতেও নিমন্ত্রণ জানাবেন না। এই কথাটি ভাইজান যে পরোক্ষ ভাবে শক্তি কপূরের উদ্দেশেই বলেছেন তা সকলেই বুঝতে পেরেছিলেন।
‘বিগ বস’ অনুষ্ঠানটি শেষ হওয়ার পর শক্তি এক সাক্ষাৎকারে জানান, ‘‘সলমন আমাকে ওঁর বাড়িতে ডাকলেও আমি যাব না। আমার বাড়ির স্নানঘরও সলমনের বাড়ির চেয়ে বড়।’’
তিনি ভাইজানের বিরুদ্ধে প্রচুর টুইট করেছেন। সলমন মেয়েদের গায়ে হাত তোলেন, এমনকি ‘বিগ বস’-এ কোন প্রতিযোগী জিতবেন তা-ও নির্ধারণ করেন তিনি— এমন সব অভিযোগ ছিল সেই টুইটগুলিতে।
অভিনেত্রী মেহক চহালের প্রতি সলমনের দুর্বলতা লক্ষ করেছিলেন শক্তি। ভাইজানের দাক্ষিণ্যেই মেহক পঞ্চম সিজনে দ্বিতীয় স্থান দখল করেছেন বলে দাবি শক্তির।
শক্তি কপূরের জন্যেই ছোটবেলা থেকে যথেষ্ট হেনস্থার শিকার হয়েছেন সলমন ও তাঁর দুই ভাই। এই কারণেই বোধ হয়, ভাইজান শক্তিকে সরাসরি হুমকি দিয়েছিলেন। তাঁর ছেলেমেয়েদেরও রাস্তায় নাচাবেন সলমন, বলেছিলেন শক্তিকে।
ভাইজান কথাটি মজার ছলে বললেও এর প্রকাশ ঘটে অন্য ভাবে। শক্তি কপূরের ছেলে সিদ্ধান্তকে প্রথম বার বড় পর্দায় নিয়ে আসবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সলমন।
কিন্তু ভাইজান এই প্রসঙ্গে পরবর্তীতে কোনও উচ্চবাচ্যই করেননি। অনেকে মনে করেন, সলমন হয়তো এ ভাবেই প্রতিশোধ নিয়েছেন।
শক্তি কপূরও কোনও দিন টুইটগুলি করার জন্য ক্ষমা চাননি। বরং, তাঁর অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়নি বলেই দাবি করেছিলেন তিনি।
পরে অবশ্য ভাইজানের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ করেননি তিনি। সলমনের সঙ্গে তাঁর পরিবারের ভাল সম্পর্ক রয়েছে বলেই জানিয়েছেন শক্তি কপূর।