ফাওয়াদ খান থেকে মাহিরা খান— পাকিস্তানি হয়েও বলিউডে অভিনয় করেছেন একাধিক তারকা। কিন্তু পাকিস্তানের ধনী তারকাদের তালিকায় নাম লিখিয়ে ফেললেও শীর্ষস্থান দখল করতে পারেননি তাঁরা। বরং সেই স্থানের অধিকারী যে অভিনেতা, তাঁকে অনেক সময় ‘পাকিস্তানের শাহরুখ খান’ বলা হয়। তাঁর নাম হুমায়ুন সইদ।
১৯৭১ সালের জুলাই মাসে পাকিস্তানের করাচিতে জন্ম হুমায়ুনের। বাবা-মা এবং চার ভাইয়ের সঙ্গে সেখানেই থাকতেন তিনি। স্কুলের পড়াশোনা শেষ করে উচ্চশিক্ষার জন্য করাচির এক কলেজে ভর্তি হন তিনি।
করাচির কলেজ থেকে বাণিজ্য নিয়ে স্নাতক হওয়ার পর চাকরির খোঁজ শুরু করেন হুমায়ুন। পোশাক তৈরির এক কারখানায় উচ্চপদে চাকরি পান তিনি। কিন্তু তাঁর মন পড়েছিল বিনোদন জগতের দিকে।
নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে কারখানার চাকরি ছেড়ে দেন হুমায়ুন। ছোট পর্দায় ধারাবাহিক প্রযোজনার কাজের সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। পাঁচ বছর ক্যামেরার নেপথ্যে দায়িত্ব সামলানোর পর ছোট পর্দার সামনে আসেন তিনি।
১৯৯৫ সালে ছোট পর্দায় প্রথম অভিনয় করতে দেখা যায় হুমায়ুনকে। তার পর একের পর এক উর্দু ধারাবাহিক এবং টেলিফিল্মে অভিনয়ের সুযোগ পান তিনি।
অভিনয়ে কেরিয়ার শুরুর পাশাপাশি নিজের জীবনও গুছিয়ে ফেলেন হুমায়ুন। ১৯৯৫ সালে সামিনা নামে এক তরুণীকে বিয়ে করেন তিনি। বিভিন্ন উর্দু ধারাবাহিকের প্রযোজক হিসাবে কাজ করেন সামিনা।
অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজনার কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন হুমায়ুন। ১৯৯৯ সালে বড় পর্দায় অভিনয়ের সুযোগ পান তিনি। কেরিয়ারের প্রথম ছবিতে নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে।
২০০০ সালের পর নিজস্ব একটি প্রযোজনা সংস্থা খোলেন হুমায়ুন। বেশ কিছু উর্দু ছবিতে সহ-প্রযোজক হিসাবেও কাজ করেন তিনি।
২০০৯ সালে প্রেক্ষাগৃহে ‘জশন’ নামে একটি ছবি মুক্তি পায়। এই ছবির মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেন অধ্যয়ন সুমন। এই ছবিটিই হুমায়ুনের কেরিয়ারের প্রথম হিন্দি ছবি। তার পর অবশ্য কোনও হিন্দি ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায়নি তাঁকে।
পাকিস্তানের টেলিভিশন জগতের পরিচিত মুখ হুমায়ুন। তবে অভিনয়ের চেয়ে প্রযোজনা থেকেই বেশি উপার্জন করেন তিনি।
অভিনয়ের সূত্রে পাকিস্তান থেকে হুমায়ুন পাড়ি দিয়েছেন বিদেশে। ২০২২ সালে ওটিটির পর্দায় ‘দ্য ক্রাউন’ নামের একটি ইংরেজি ওয়েব সিরিজ় মুক্তি পায়। এই সিরিজ়ে এক চিকিৎসকের ভূমিকায় অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, পাকিস্তানের ধনী অভিনেতাদের তালিকার শীর্ষস্থান দখল করে রয়েছেন হুমায়ুন। বলিউডের সঙ্গে তুলনা করে তাঁকে ‘পাকিস্তানের শাহরুখ খান’ও বলা হয়ে থাকে।
বিনোদন জগতের অন্দরমহলে কান পাতলে শোনা যায়, হুমায়ুনের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ভারতীয় মুদ্রা অনুযায়ী প্রায় ৪৩৫ কোটি টাকা।
শাহরুখের সঙ্গে অবশ্য হুমায়ুনের সম্পত্তির তুলনা করলে অবাক হতে হয়। বলিপাড়া সূত্রে খবর, ২০২৪ সালের অগস্ট মাস পর্যন্ত শাহরুখের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৭৩০০ কোটি টাকা।
হুমায়ুনের সম্পত্তির প্রায় ১৭ গুণ বেশি সম্পত্তি রয়েছে শাহরুখের। তবে পাকিস্তানের ময়দানে রাজা হুমায়ুনই। সম্পত্তির নিরিখে তিনি সকল তারকার চেয়ে এগিয়ে।
সমাজমাধ্যমে নিজস্ব অনুরাগীমহল রয়েছে হুমায়ুনের। ইতিমধ্যেই ইনস্টাগ্রামের পাতায় অভিনেতার অনুগামীর সংখ্যা ৭৮ লক্ষের গণ্ডি পার করে গিয়েছে।