সলমন খানের বাড়ির সামনে এখন কড়া নিরাপত্তা। অভিনেতাকে এক ঝলক দেখার জন্য সলমন খানের বান্দ্রার বাড়ি, গ্যালাক্সি অ্যাপার্টমেন্টের সামনে যে হামেশা অনুরাগীদের ভিড় দেখা যেত, সেই সমাগমেও নিষেধাজ্ঞা বসেছে। মুম্বই পুলিশ নয়া ফরমান জারি করে জানিয়েছে যে, চব্বিশ ঘণ্টা সলমনের নিরাপত্তায় পুলিশের দু’জন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইনস্পেক্টর এবং ৮-১০ জন পুলিশ কনস্টেবল মোতায়েন থাকবেন।
দিন কয়েক আগে মেলে হুমকি পেয়েছেন সলমন। অভিনেতাকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়, কথা না শুনলে খুব তাড়াতাড়ি ‘ঝটকা’ খাবেন তিনি। এর পর থেকেই সলমনের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করতে তৎপর হয়েছে পুলিশ। এই নিরাপত্তার খুঁটিনাটি দেখভাল করছেন সলমনের সর্বক্ষণের সঙ্গী শেরা।
সলমনের ব্যক্তিগত দেহরক্ষী হলেন শেরা। তাঁকে পরিবারের সদস্যের মতোই দেখেন অভিনেতা। বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায় যে, সলমনের ব্যাপারে তাঁর বাড়ির লোকও যা জানেন না, শেরা সেই বিষয়ে অবগত। শেরার জনপ্রিয়তাও কোনও অংশে কম নয়।
দীর্ঘ ২৯ বছর ধরে সলমনের সঙ্গে রয়েছেন শেরা। বলিপাড়া সূত্রে খবর, প্রতি মাসে ১৫ লক্ষ টাকা উপার্জন করেন তিনি। ফি বছর শেরার আয়ের পরিমাণ দু’কোটি টাকা।
৮ মার্চ শাহরুখ খানের বাড়ি ‘মন্নত’-এর ভিতর অনধিকার প্রবেশ করেন দুই যুবক। বান্দ্রা পুলিশ জানায়, বাংলোর ভিতর মধ্যরাত ২টো থেকে পরের দিন সকাল ১০টা প্রায় আট ঘণ্টা লুকিয়ে ছিলেন তাঁরা। উদ্দেশ্য একটাই। স্বপ্নের নায়ককে কাছ থেকে দেখার, ছুঁতে পারার। মেকআপ রুমে হঠাৎ অচেনা দু’জনের দেখা পেয়ে বাড়ির নিরাপত্তারক্ষীদের খবর দেন শাহরুখকে। বৃহস্পতিবার তাঁদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
‘মন্নত’-এর নিরাপত্তাকে ফাঁকি গলে কী ভাবে বাংলোর ভিতরে দুই যুবক প্রবেশ করতে পেরেছিলেন তা ভেবে শাহরুখের ব্যক্তিগত দেহরক্ষী রবি সিংহ অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। রবি আসলে শাহরুখের ছায়ার মতো। ছবির প্রচার হোক বা জন্মদিনের পার্টি— অভিনেতাকে এক মুহূর্ত একা ছাড়েন না রবি।
শুধুমাত্র শাহরুখ নন, খান পরিবারের সদস্যদেরও নিরাপত্তা দিয়ে থাকেন রবি। কানাঘুষো শোনা যায় যে, শেরার চেয়েও বেশি পারিশ্রমিক পান রবি। মাসিক বেতন জানা না গেলেও বলিপাড়া সূত্রে খবর, বছরে আড়াই কোটি টাকার বেশি পারিশ্রমিক পান তিনি।
পারিশ্রমিকের তুলনায় খুব একটা পিছিয়ে নেই অমিতাভ বচ্চনের নিরাপত্তারক্ষী জিতেন্দ্র শিন্ডেও। ২০২১ সালের অগস্ট মাস পর্যন্ত অমিতাভের সর্বক্ষণের সঙ্গী হিসাবে থাকতেন জিতেন্দ্র। পরে অবশ্য নিয়মভঙ্গের জন্য তাঁকে সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়।
২০১৫ সালে অমিতাভের ‘সিকিউরিটি কভার’ হিসাবে কাজ করা শুরু করেছিলেন জিতেন্দ্র। মুম্বই পুলিশে কনস্টেবল পদে চাকরি করতেন তিনি। পদোন্নতি হয়ে অভিনেতার ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী পদে যুক্ত হন জিতেন্দ্র।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, নিরাপত্তারক্ষা হিসাবে প্রতি বছর দেড় কোটি টাকা উপার্জন করতেন জিতেন্দ্র। বর্তমানে নিজস্ব গোয়েন্দা সংস্থা খুলেছেন তিনি।
অক্ষয় কুমার ওরফে ‘অক্কি’ বড় পর্দায় অ্যাকশন দৃশ্যে কামাল দেখালেও বাস্তবে তাঁর প্রাণরক্ষার প্রয়োজনে ছায়াসঙ্গীর মতো যিনি থাকেন তাঁর নাম শ্রেশে ঠালে। বাড়ির বাইরে পা ফেললেই অভিনেতার নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকে তাঁর উপর। এমনকি কোনও জনসমাগমে অনুরাগীরা অক্ষয়কে ঘিরে ধরলে দুই পক্ষের মাঝে প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন শ্রেশে। আলোকচিত্রীদের ক্যামেরার লেন্সে এই ঘটনা বহু বার ধরা পড়েছে।
শুধুমাত্র অক্ষয়কেই নয়, অভিনেতার পুত্র আরভের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন শ্রেশে। সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, প্রতি বছর ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা পারিশ্রমিক পান তিনি।
তবে বার্ষিক উপার্জনের ক্ষেত্রে অমিতাভ এবং অক্ষয়ের নিরাপত্তারক্ষীকে টক্কর দিয়েছেন যুবরাজ ঘোরপাড়ে। আমির খানের ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী তিনি।
শুধু ভারতেই নয়, বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরতে গেলেও আমিরের সর্বক্ষণের সঙ্গী হিসাবে দেখা যায় যুবরাজকে। বলিপাড়া সূত্রে খবর, প্রতি বছর ২ কোটি টাকা পারিশ্রমিক পান তিনি।
টিনসেল নগরীর অভিনেত্রীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বার বিতর্কে জড়িয়েছেন দীপিকা পাড়ুকোন। তাই কোনও জনসমাগমে উপস্থিত থাকলেই দীপিকার সঙ্গে দেখা যায় জালালকে। অভিনেত্রীর ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী তিনি।
বহু বছর ধরে দীপিকার নিরাপত্তারক্ষী হিসাবে কাজ করছেন জালাল। বলিপাড়া সূত্রে খবর, ফি বছর ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা পারিশ্রমিক পান তিনি।
জালালের মতো সমপরিমাণ বেতন পান অনুষ্কা শর্মার নিরাপত্তারক্ষী সোনু। যদিও তাঁর আসল নাম প্রকাশ সিংহ। অভিনেত্রী সপরিবারে বাইরে বেরোলে বিরাট কোহলি এবং অনুষ্কার কন্যা ভামিকার নিরাপত্তার দায়িত্বেও থাকেন প্রকাশ। সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, প্রতি বছর ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা পারিশ্রমিক পান তিনি।