কেন যে ব্রিটেনের যুবরাজ চার্লসের সঙ্গে দেখা হল! যুবরাজের জন্যই নাকি তাঁর যৌনজীবনের দফারফা হয়ে গিয়েছে। সংবাদমাধ্যমের কাছে এমনই আক্ষেপ আমেরিকার গায়িকা শীলা ফার্গুসনের।
একটি ব্রিটিশ ট্যাবলয়েডের কাছে শীলার দাবি, যুবরাজের জন্যই তাঁর কাছেপিঠে ঘেঁষতে চান না কোনও পুরুষসঙ্গী। ফলে সঙ্গী খোঁজার জন্য এই ৭৪ বছর বয়সেও ডেটিং সাইটগুলিই তাঁর ভরসা।
সত্তরের দশকে সোল মিউজিকের ব্যান্ড ‘দ্য থ্রি ডিগ্রিজ’-এর সদস্য ছিলেন শীলা। ফিলাডেলফিয়া সোল, রিদম অ্যান্ড ব্লুজ ছাড়া ডিস্কো গোত্রের গানও গাইতেন ব্যান্ডের সকলে। ১৯৬৩ সালে পথচলা শুরুর পর থেকে বহু মহিলাই ব্যান্ডের হয়ে গেয়েছেন। তবে সবচেয়ে বেশি দিনের জন্য সদস্য ছিলেন শীলা।
‘দ্য থ্রি ডিগ্রিজ’-এর হয়ে ১৯৬৭ থেকে ’৭৬ সাল পর্যন্ত পারর্ফম করেছেন ফিলাডেলফিয়ার এই গায়িকা। ’৭৪-এ শীলার কণ্ঠে ‘হোয়েন উইল আই সি ইউ এগেইন’ সিঙ্গলসটি তাঁদের আন্তর্জাতিক খ্যাতি এনে দেয়। এর চার বছর পরে যুবরাজের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল শীলার।
উপলক্ষ ছিল, রাজকুমারের ৩০তম জন্মদিন। ১৯৭৮ সালের জুলাই মাসে সে দিনটি উদ্যাপনের জন্য একটি চ্যারিটি শোয়ে আমন্ত্রিত ছিলেন শীলারা। ইস্টবোর্ন সাসেক্সের কান্ট্রি ক্লাবে ওই শোয়ে রাজকুমারের জন্য গেয়েছিলেন তাঁরা।
শীলাদের সঙ্গে ওই জন্মদিনের পার্টিতে বেদম নেচেছিলেন রাজকুমার। ব্রিটিশ ট্যাবলয়েডগুলিতে সে ছবি, রিপোর্ট ফলাও করে ছাপা হয়েছিল।
ব্রিটিশ ট্যাবলয়ে়ডগুলির দাবি ছিল, জন্মদিনের পার্টিতে শীলার গানের পাশাপাশি তাঁর প্রতিও মজেছিলেন চার্লস। এমনকি, সে সময় থেকেই নাকি যুবরাজের প্রিয় গায়িকাদের তালিকায় ঢুকে পড়েছিলেন শীলা।
ব্রিটেনের সিংহাসনের হবু উত্তরাধিকারী তাতে মজে— এ নাকি সে সময়কার বহু মেয়েরই স্বপ্ন ছিল। তবে তাতে নাকি লাভের বদলে লোকসান হয়েছিল শীলার।
ওই পার্টির পর দীর্ঘ সময় কেটে গিয়েছে। তবে আজও নাকি সে লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারেননি শীলা। তাঁর দাবি, ‘‘আমার যৌনজীবনের দফারফা করে ছেড়েছিলেন তিনি (যুবরাজ চার্লস)। পরের বার আমাদের দেখা হলে ওঁকে এ কথা বলতে আমার বাধবে না।’’
ওয়েলসের প্রয়াত যুবরানি ডায়ানার সঙ্গে তখনও বিয়ে হয়নি চার্লসের। ওই শোয়ের পর বছর তিরিশের চার্লসের সঙ্গে ৩১ বছরের গায়িকার নাকি চিঠির আদানপ্রদানও হয়েছিল। তবে এত বছর পর শীলার দাবি, চার্লসের সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক ছিল না। তাঁরা শুধুই বন্ধু!
যদিও সে সময় চার্লস এবং শীলার প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন কম হয়নি। শীলার মতে, ওই গুঞ্জনের জেরেই তাঁর কাছে আসতেন না কোনও পুরুষ। সে কারণেই তিনি সঙ্গীহীন হয়ে পড়েছিলেন।
যদিও ১৯৮০ সালে ক্রিস রবিনসন নামে এক ব্যবসায়ীকে বিয়ে করেন শীলা। অ্যালিসিয়া এবং আলেকজান্দ্রিয়া নামে তাঁদের যমজ মেয়েও হয়। তবে ২০০৪ সালে বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায় দম্পতির। তার পর থেকে নাকি অন্য কেউ শীলার সঙ্গী হতে রাজি হননি।
শীলার দাবি, যুবরাজের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের জল্পনার জেরেই পিছিয়ে গিয়েছেন সকলে। তিনি বলেন, ‘‘এর জেরে আমার যৌনজীবন ছারখার হয়ে গিয়েছিল। এক বার একটি ডিস্কোয় এক ব্যক্তির কাছে গিয়ে বলেছিলাম, ‘আমার সঙ্গে নাচতে ইচ্ছুক?’ তাঁর জবাব ছিল, ‘আমি আপনার সঙ্গে নাচ করতে পারব না। আপনি যুবরাজ চার্লসের প্রিয়!’ ’’
শীলা অস্বীকার করলেও চালর্সের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের গুঞ্জন কখনই থিতিয়ে যায়নি। গত গ্রীষ্মে ন্যাশনাল হেল্থ সার্ভিসেস-এর করোনাযোদ্ধাদের জন্য কিছু গান বেছেছিলেন চার্লস। সে তালিকায় ছিল শীলাদের গান— ‘গিভিন আপ গিভিন ইন’। ফলে জল্পনা আরও বেড়েছে।
চার্লস এবং শীলার দীর্ঘ দিনের ‘বন্ধুত্বে’ও নাকি চি়ড় ধরেছিল। বছর দু’য়েক আগে শোনা গিয়েছিল, যুবরাজের একটি তহবিলের দূতের পদ থেকে সরে যাওয়ার কথা চিন্তা-ভাবনা করছেন শীলা।