নব্বইয়ের দশকে প্রায় একার জোরে বহু বলিউডি ছবিকে টেনে তুলেছিলেন মাধুরী দীক্ষিত। আশপাশে সুদর্শন নায়ক থাকলেও মাধুরীর নামেই যে কত ছবি বক্স অফিসে কামাল করেছে তার ইয়ত্তা নেই! ইন্দ্র কুমারের ‘রাজা’–ও তেমনই একটি ছবি। সেই ছবিতেই নাকি মাধুরীর কাজে নাক গলাতেন নানা পটেকর।
‘রাজা’-তে তো নানাকে দেখা যায়নি! ঠিকই বলেছেন। পর্দায় তাঁকে দেখা যায়নি বটে। তবে ওই ছবির জন্য কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। ওই ছবির নায়ক সঞ্জয় কপূরের দাদার চরিত্রে অভিনয়ের কথা ছিল তাঁর। অনেকে বলেন, ‘রাজা’র শ্যুটিংয়ের সময় মাধুরীর কাজে নাকি এতটাই নাক গলাতে শুরু করেছিলেন যে নানাকে বাদ দেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না পরিচালক ইন্দ্র কুমারের।
এ তো প্রায় ২৭ বছর আগেকার কথা। এত দিন পর আবার এ প্রসঙ্গ উঠছে কেন? আসলে ‘রাজা’র সেই জুটিকেই আবার একসঙ্গে দেখা যাচ্ছে। একটি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে কর্ণ জোহরের ‘দ্য ফেম গেম’ নামে ওয়েব সিরিজে।
ওয়েব সিরিজের দুনিয়ার মাধুরী দীক্ষিতের অভিষেক। কৌতূহল তো তুঙ্গে উঠবেই। ‘দ্য ফেম গেম’ নিয়েও তা-ই হয়েছে। ওটিটি প্ল্যাটফর্মে তা শুরুর আগেই এর খুঁটিনাটির দিকে নজর রেখেছিলেন ভক্তরা।
প্রায় ২৫ বছর পর পর্দায় ফিরেছে সেই পুরনো জুটি— মাধুরী দীক্ষিত এবং সঞ্জয় কপূর। সেই ১৯৯৭ সালে তাঁদের ‘মহব্বত’ দেখা গিয়েছিল। সেটি মুখ থুবড়ে পড়লেও তার আগে ‘রাজা’-র কথা এখনও অনেকেই ভুলতে পারেননি।
ইন্দ্র কুমারের ‘রাজা’ এতটাই সফল হয়েছিল যে অনেকে বলতেন, ওই ছবির নাম বদলে ‘রানি’ রাখা উচিত! মাধুরী প্রায় একার হাতেই সেটি টেনে নিয়ে গিয়েছিলেন। এত দিন পর মাধুরী-সঞ্জয়ের জুটি ঘিরে নানা পুরনো কথাও ভেসে উঠেছে। নানার ‘খবরদারি’র কথাও সামনে চলে এসেছে।
‘রাজা’য় পরেশ রাওয়ালের ভূমিকায় নানাকেই ভেবেছিলেন ইন্দ্র। বেশ কয়েক দিন কাজও করেছিলেন তিনি। এমনকি, একটি গানেরও শ্যুটিং সেরে ফেলেছিলেন বলে শোনা যায়। তবে ছবি মুক্তির পর দেখা যায়, নানা গায়েব। কেন?
সে কারণই খোলসা করেছেন ইন্দ্র। একটি সংবাদমাধ্যমে তাঁর দাবি, প্রতিটি খুঁটিনাটি বিষয়ে নিজের মতামত দিতে শুরু করেছিলেন নানা। ছবির কোন দৃশ্যে মাধুরী কী ভাবে অভিনয় করবেন, তা নিয়েও নাকি অযাচিত পরামর্শ দিতেন তিনি। এমনকি দিলীপ তাহিল বা মুকেশ খন্নাকে নিয়েও নাকি নানার ‘বাণী’র অভাব ছিল না।
অনেকেই বলেছিলেন, নানা যে কাজটি শুরু করেছিলেন, তা তো পরিচালকের করার কথা! সে সব দেখেশুনেই নাকি তিতিবিরক্ত হয়ে গিয়েছিলেন ইন্দ্র। তাঁর মন্তব্য, ‘‘অভিনেতারা যখন পরিচালকের কাজ করতে শুরু করেন, তখন পরিচালকের বোঝা উচিত যে ওই ছবিটি শেষমেশ বাজে হতে চলেছে অথবা অভিনেতারা খারাপ কাজ করবেন।’’
নানার অতিরিক্ত নাক গলানোর ফলে মাধুরীরও অসুবিধা হচ্ছিল বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন ইন্দ্র। তাঁর দাবি, ‘‘(নানার পরামর্শের পর) কয়েকটি দৃশ্যে অভিনয়ের সময় বিভ্রান্ত হয়ে যাচ্ছিলেন মাধুরী। আগেও তো আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি। ফলে আমার সঙ্গে বোঝাপড়া থাকায় মাধুরী আঁচ করে নিতেন, ছবির দৃশ্যে ওঁর থেকে আমি কী চাইছি!’’
এ হেন কড়া মন্তব্যের পর নানার সম্পর্কে কিছু প্রশংসাও করেছেন ইন্দ্র। তিনি বলেন, ‘‘ওই ছবিতে তো ভালই কাজ করছিলেন নানা। তবে প্রথম দিকে বিশেষ কিছু না বললেও পরে বেশ পরামর্শ দিতে শুরু করেছিলেন। অবশ্য পরেশও সে রোলটা ভালই করেন।’’
ছবি থেকে বাদ দেওয়া হলেও ‘রাজা’র পুরো পারিশ্রমিকই ফেরত দিয়েছিলেন নানা। জানিয়েছেন ইন্দ্র। তাঁর কথায়, ‘‘ওঁর বাড়িতে গিয়ে আমি ভাল ভাবে নানাকে বুঝিয়েছিলাম। তিনি বুঝেওছিলেন। বলেছিলেন, ‘ইন্দু, এ ভাবেই আমি কাজ করি। ফলে (এ ছবিতে) আমাদের আলাদা হয়ে যাওয়াই ভাল।’ ’’